ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে ২ পরীক্ষার্থী আটক
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মোবাইল ও ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহারের অভিযোগে দুই পরীক্ষার্থী আটক করা হয়েছে।  শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে কক্সবাজার সিটি কলেজ কেন্দ্র থেকে আটক হন তারা। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও ইলেকট্রনিকস ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে । আটকরা হলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল তেতৈয়া এলাকার নুরুল হকের ছেলে বশির আওহমেদ এবং চকরিয়া চিরিঙ্গা ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শামসুল আলমের ছেলে তোহিদুল ইসলাম। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রসচিব কলেজ অধ্যক্ষ ক্যথিং অং। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল দশটা থেকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়। কক্সবাজার সিটি কলেজ কেন্দ্রে দুই পরীক্ষার্থী ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর তথ্যের ভিত্তিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওশের ইবনে হালিম অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় পৃথক দুটি রুম থেকে তাদের আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও ইলেকট্রনিকস ডিভাইস জব্দ করা হয়। আটককৃতদের কক্সবাজার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনজিও সেল) নওশের ইবনে হালিম বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তারপরও দুই পরিক্ষার্থী ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে। গোয়েন্দাদের দেওয়া সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়েছে। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের সাজা না দিয়ে নিয়মিত মামলা করতে কেন্দ্রসচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কক্সবাজার মডেল থানার ওসি মো. রাকিবুজ্জামান বলেন, আটক দুজন আমাদের হেফাজতে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে। 
৩০ মার্চ, ২০২৪

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ, ডিজিটাল নকল ধরবে ‘সুরক্ষা’ ডিভাইস
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইসের জালিয়াতি ধরতে অভিনব এক মেশিন বানিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ‘সুরক্ষা’ নামে এ যন্ত্রটি পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারকারীকে চিহ্নিত করবে। পরীক্ষার হলে কোনো পরীক্ষার্থীর কানে বা অন্যকোনো অঙ্গে কোনো ডিজিটাল ডিভাইস ঢোকানো থাকলে হলে অথবা কোনো পরীক্ষার্থী ওই ধরনের ডিভাইস কানে রেখে থাকলে বুয়েট উদ্ভাবিত যন্ত্রে একটি লাইট জ্বলে উঠবে এবং শব্দ সংকেত বেজে উঠবে। আগামী ২৯ মার্চ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৫টি জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে এ যন্ত্র ব্যবহার করা হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বুয়েটের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইটি) এই যন্ত্র তৈরি করেছে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। তিনি জানান, কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় জালিয়াতির উদ্দেশ্যে কানের ভেতরে ডিজিটাল ডিভাইস রাখলে এ যন্ত্র তার সন্ধান দেবে। জালিয়াতির ডিভাইস কোনো পরীক্ষার্থীর কানে ঢোকানো হলে অথবা কোনো পরীক্ষার্থী ওই ধরনের ডিভাইস কানে রেখে থাকলে এ যন্ত্রে একটি লাইট জ্বলে উঠবে এবং শব্দ সংকেত বেজে উঠবে। যন্ত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুরক্ষা’। সচিব জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার প্রতিরোধে যন্ত্র উদ্ভাবনের জন্য বুয়েটের আইআইটিসিকে ইনোভেশন ফান্ডের আওতায় ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এ যন্ত্র তৈরিতে প্রাথমিকভাবে ৮ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হবে। পরে বেশি উৎপাদন করা হলে দাম পড়বে ৫ হাজার ৫০০ টাকা। ফরিদ আহাম্মদ বলেন, আগামী ২৯ মার্চ তৃতীয় ধাপের নিয়োগ পরীক্ষা থেকেই এই যন্ত্র ব্যবহার করা হবে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় ২৫টি যন্ত্র দিয়ে ৫টি টিম করে পরীক্ষা কেন্দ্রে এই যন্ত্রের পাইলটিং করা হবে। পরীক্ষার্থী বেশি এমন ৫টি জেলা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ এই জেলাগুলোতে আমরা পাইলটিং করব। শিগগিরই এর শতভাগ ব্যবহার শুরু হবে।
২১ মার্চ, ২০২৪

পুলিশের রেডিও ডিভাইস কেনায় অনিয়ম নিষ্পত্তির নির্দেশ ৭ দিনে
পুলিশের ‘রেডিও ডিভাইস’ কেনার প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া আবেদন সাত দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। গতকাল রোববার এ-সংক্রান্ত রিটের লিখিত আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটকারী প্রতিষ্ঠান হাইটেরা কমিউনিকেশন্স করপোরেশন লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিন্টু কুমার মণ্ডল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। মিন্টু কুমার মণ্ডল জানান, ২০২৩ সালের ২ আগস্ট পুলিশ টেলিকম সংস্থা বাংলাদেশ পুলিশের রেডিও ডিভাইস ও যন্ত্রাংশ কেনার জন্য দুটি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। এতে তিনটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো সিঙ্গাপুরের টেকনিক্স কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস পিটিআই লিমিটেড, চীনের হাইটেরা কমিউনিকেশন্স করপোরেশন লিমিটেড ও চীনের কালটা টেকনোলজিস কোম্পানি লিমিটেড। এর মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান শর্তপূরণ করতে না পারায় শুধু হাইটেরা কমিউনিকেশন্স টিকে থাকে। এরপর পরবর্তী প্রক্রিয়া শেষ করতে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগার কথা থাকলেও ৭০ থেকে ৭৫ দিনেও দরপত্র নিষ্পত্তি করা হয়নি। তিনি আরও জানান, পরবর্তী সময়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শর্তপূরণ করতে পারেনি—এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে রি-টেন্ডারের প্রক্রিয়া চলছে। এই প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম তুলে ধরে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আরজি জানিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত আবেদন করে হাইটেরা কমিউনিকেশন্স করপোরেশন লিমিটেড। তবে দীর্ঘদিনেও সেটি নিষ্পত্তি না করায় পরে কোম্পানিটি হাইকোর্টে রিট করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হাইটেরা কমিউনিকেশন্সের চিঠিতে বলা হয়, পুলিশ টেলিকম সংস্থার একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী ‘সিঙ্গাপুরের টেকনিক্স কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস পিটিআই লিমিটেডের’ স্থানীয় প্রতিনিধি এমডিএম ট্রেডার্স লিমিটেডের যোগসাজশে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে মানহীন রেডিও ডিভাইস সরবরাহ করে আসছে। ৯ বছর ধরে এমডিএম ট্রেডার্স এককভাবে টেন্ডার পাচ্ছে এবং রেডিও ডিভাইস সরবরাহ করছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০১৫ থেকে ২০২৩ থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশ টেলিকম সংস্থার রেডিও ডিভাইস কেনায় ৪১টি টেন্ডারের মধ্যে এমডিএম ট্রেডার্স লিমিটেডই পেয়েছে ৪০টি। সূত্র জানায়, সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠানটির স্থানীয় প্রতিনিধি এমডিএম ট্রেডার্স লিমিটেডের নেপথ্যে কিছু অসাধু কর্মকর্তা রয়েছেন। সম্প্রতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাদের সরবরাহ করা মালপত্রের গুণগত মানও নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, বিটিআরসির অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে রেডিও ডিভাইস এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, এমডিএম ট্রেডার্স লিমিটেড গত কয়েক বছরে এককভাবে পুলিশ টেলিকমের অন্তত ৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫৬৬ কোটি টাকার কাজ পেয়েছে। এবারও সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ দিতে নানা কারসাজি করেছে।
১৮ মার্চ, ২০২৪

বিনামূল্যে শতাধিক শিশুর হার্টে প্রয়োজনীয় ডিভাইস স্থাপন
জন্মগতভাবে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত শিশুদের বিনামূল্যে ১০ দিনে শতাধিক রোগীকে সেবা দিয়েছে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা কাতার চ্যারিটি। রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শুরু হওয়া এই হেলথ ক্যাম্পের মাধ্যমে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১০০-এর বেশি শিশুর হার্টে প্রয়োজনীয় ডিভাইস স্থাপন করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান, ফিলিস্তিন ও কাতার থেকে আসা একটি মেডিকেল টিম এই মেডিকেল ক্যাম্পে অংশ নিয়েছে। দেশের বিশিষ্ট পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট ও হেলথ ক্যাম্পের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ডা. নুরুন নাহার ফাতেমা বলেন, আমরা বেশ কয়েক বছর ধরেই কাতার চ্যারিটির সঙ্গে কাজ করছি। জন্মগত হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত এসব শিশুরা খুবই দরিদ্র পরিবারের। ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা বহন করার সামর্থ্যই এদের অভিভাবকদের নেই। কাতার চ্যারিটি সম্পূর্ণ ব্যয়বহন করে দরিদ্র এই পরিবারগুলোর সন্তানদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তারা এখন একটি সম্পূর্ণ সুস্থ জীবন ফিরে পাবে। জর্ডান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসক পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট আইয়াদ আমরী বলেন, কাতার চ্যারিটির এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে জন্মগতভাবে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত ১০০-এর বেশি শিশুকে প্রয়োজনীয় ডিভাইস দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গত ৪ দিনে আমরা ৩৫ জনের বেশি শিশুর দেহে ডিভাইস স্থাপন করেছি। সবাই সুস্থ আছে। কাতার চ্যারিটির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. আমিন হাফিজ ওমর বলেন, কাতারের ডোনারদের সহায়তায় অসহায় ও গরীব শিশুদের সুস্থ জীবন উপহার দিতে এই হেলথ ক্যাম্প। কাতার চ্যারিটির এই উদ্যোগ আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সাক্ষাৎকার / ডিভাইস আসক্তিতে বাড়ছে শিশুর ক্যান্সার
জিনগত, পরিবেশ দূষণ, খাদ্যে ভেজাল, ক্ষতিকর রাসায়নিকের যথেচ্ছ ব্যবহার ও স্মার্টফোন আসক্তির কারণে শিশুদের মধ্যে ক্যান্সার প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শিশু হেমাটোলজি অ্যান্ড অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ টি এম আতিকুর রহমান। কালবেলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শিশু ক্যান্সার প্রায় ৮০ শতাংশ পর্যন্ত নিরাময়যোগ্য। তবে এর জন্য সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কালবেলার নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান। কালবেলা: শিশুর ক্যান্সার মূলত কী? আতিকুর রহমান: বড়দের মতো শিশুদেরও ক্যান্সার হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে শিশুদের ক্যান্সারের পার্থক্য হলো, বড়দের ক্যান্সার সাধারণত চিকিৎসার পরেও ভালো নাও হতে পারে। কিন্তু শিশুদের ক্যান্সার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণে নিরাময় হয়। বাংলাদেশে শিশুদের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সারের সংখ্যাই বেশি। ৭০ থেকে ৮০ শতাংশে ব্লাড ক্যান্সার হয়। ব্লাড ক্যান্সার ছাড়াও ব্রেইন টিউমার, নিউরোব্লাস্টোমা, চোখের টিউমার বা রেটিনোব্লাস্টোমা, যকৃতের টিউমার বা হেপাটোব্লাস্টোমা, কিডনির টিউমার বা নেফ্রোব্লাস্টোমা, হাড়ের টিউমার বা অস্টিওসারকোমা, মাংসপেশির টিউমার বা র্যাবডোমায়োসারকোমাসহ আরও বিভিন্ন রকম ক্যান্সার প্রতিনিয়ত নির্ণীত হচ্ছে। এক কথায় বলা যায়, শরীরের যতগুলো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আছে, সবগুলোতেই শিশু ক্যান্সার আক্রমণ হতে পারে। কালবেলা: শিশুদের ক্যান্সার কেন হয়? আতিকুর রহমান: শিশুদের ক্যান্সার হয় মূলত জেনেটিক কারণে। আবার এমনিতেও অজানা কারণে হতে পারে। প্রতিদিন হাজার হাজার শিশুর যে জন্ম হয়, তার মধ্যে অনেক শিশুর সেলগুলো ঠিকভাবে কাজ করে না। এই সমস্যার একটা বড় কারণ প্রাকৃতিক। এ ছাড়া খাদ্যে ভেজাল, রাসায়নিকের অপব্যবহার, পরিবেশ ও শব্দদূষণ শিশু ক্যান্সার আক্রান্তের একটা বড় কারণ। এর বাইরে এখন আমরা শিশু ক্যান্সার আক্রান্তের অন্যতম বড় কারণ হিসেবে ধারণা করছি অতিরিক্ত স্মার্টফোন বা ইলেকট্রিক ডিভাইসের ব্যবহার। শিশু কিংবা তার আশপাশে অতিরিক্ত ইলেকট্রিক ডিভাইসের ব্যবহারে সৃষ্ট রেডিয়েশন থেকে শিশুর শরীরের সেলের কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। এতে শিশুর ক্যান্সার হতে পারে। এই ধারণার বিষয়ে আমরা নিশ্চিত যে, কমিউনিটি বেজড স্টাডি করা হলে এ-সংক্রান্ত আরও প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। কালবেলা: দেশে শিশু ক্যান্সারের প্রকৃত চিত্র কী? আতিকুর রহমান: সংক্রামক রোগের হার ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করলেও এখন অসংক্রামক রোগ অতীতের চেয়ে বেড়েছে। তার মধ্যে শিশুদের বিভিন্ন রকম ক্যান্সার অন্যতম। রোগ নির্ণয়ের আধুনিকায়নের ফলে শিশুদের ক্যান্সার ক্রমেই দৃশ্যমান হচ্ছে। দেশে যদিও ক্যান্সারের হার পরিসংখ্যানগতভাবে এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে নির্ণীত হয়নি। তবুও বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক রোগের পরিসংখ্যান থেকে অনুমান করা হচ্ছে, প্রতি বছর প্রায় ৬-৮ হাজার শিশু বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু সচেতনতার অভাব এবং আমাদের চিকিৎসাসেবার যথাযথ প্রচারের অভাবে অনেকেই শিশুর ক্যান্সার চিকিৎসায় পূর্ণাঙ্গ সক্ষমতার কথা জানতে পারছে না। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক অভিভাবকই ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুকে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা শুরু করতে পারছেন না। প্রাথমিক অবস্থায় শিশুর ক্যান্সার চিকিৎসা শুরু করা গেলে চিকিৎসায় সফলতা আসবে। কালবেলা: দেশে শিশু ক্যান্সারের চিকিৎসা কি ব্যয়বহুল? আতিকুর রহমান: না, শিশু ক্যান্সারের চিকিৎসা দেশে ব্যয়বহুল নয়। বাংলাদেশে শিশু ক্যান্সার চিকিৎসায় বিএসএমএমইউর শিশু রক্তরোগ এবং ক্যান্সার বিভাগ ১৯৯৩ সাল থেকে কাজ করছে। এই বিভাগ ক্যান্সার চিকিৎসার আধুনিকায়ন ও উন্নত বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় করে শিশুদের ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রায় সব ধরনের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এই বিভাগে উন্নত বিশ্বের বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের চিকিৎসকদের ব্যবহৃত চিকিৎসা পদ্ধতি বা প্রটোকলে ব্যবহৃত মেডিসিনসহ প্রায় সব চিকিৎসা বিদ্যমান আছে এবং এসব চিকিৎসা পদ্ধতির সফল প্রয়োগ চলছে। শিশুদের চিকিৎসায় বেশিরভাগ ওষুধ সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে দেওয়া হয়। কিছু স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি ক্যান্সার চিকিৎসার ওষুধ দিয়ে থাকে। যার ফলে রোগীর স্বজনকে খুব কম ওষুধ নিজেদের কিনতে হয়। কাজেই মূল জিনিসটা হলো আমাদের সচেতনতা সৃষ্টি করা। অভিভাবকদের বলব, ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেই বিদেশে যেতে হবে এই প্রবণতা ত্যাগ করে বাংলাদেশেই শিশু ক্যান্সার চিকিৎসায় আস্থা রাখুন, দেশেই চিকিৎসা করান। কালবেলা: বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা গ্রহণ করা সুস্থ রোগীর পরিসংখ্যান কেমন? আতিকুর রহমান: ১৯৯৩ সালে অফিসিয়ালি বিএসএমএমইউতে শিশু ক্যান্সার ও রক্তরোগের চিকিৎসা শুরু হয়। ১৯৯৩ সালের ২৪ জুলাই অধ্যাপক ডা. এম এ মান্নানের নেতৃত্বে বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে শিশু রক্তরোগ এবং ক্যান্সার বিভাগে একটি শেখ রাসেল চাইল্ডহুড ক্যান্সার সার্ভাইভার গ্যালারি’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে ক্যান্সার আক্রান্ত সম্পূর্ণ সুস্থ শিশুদের একটি ছবিসহ বিস্তারিত তালিকা বিদ্যমান আছে। এখন পর্যন্ত যে পরিসংখ্যান রয়েছে, সেই হিসেবে গত ৩৩ বছরে প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি শিশু বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে সম্পূর্ণভাবে ভালো হয়ে গেছে। সুস্থতার হিসাবে এই সংখ্যা জাতির জন্য একটা মাইলফলক। কালবেলা: দেশে এখন কতজন শিশু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ আছেন? আতিকুর রহমান: সারা দেশে এখন ৫৫ জন উচ্চতর ডিগ্রিধারী শিশু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন। তারা শিশু ক্যান্সার ও রক্তরোগ বিষয়ে এমডি ও এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করে রোগীর সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। এ ছাড়া বিএসএমএমইউর শিশু ক্যান্সার ও রক্তরোগ বিভাগ শিশুদের ক্যান্সার চিকিৎসার পাশাপাশি উচ্চতর ডিগ্রির কোর্স চালু করেছে। প্রতি বছর এসব কোর্সে ৫ থেকে ৬ জন চিকিৎসক ভর্তি হচ্ছেন। এর মাধ্যমে সারা দেশে এই বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ এবং ডিগ্রিপ্রাপ্ত চিকিৎসক সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। কালবেলা: আপনাকে ধন্যবাদ। আতিকুল ইসলাম: আপনাকে ও কালবেলার পাঠকদের ধন্যবাদ।
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ইলেকট্রনিক ডিভাইস লাগিয়ে পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষার্থী আটক
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে আজিম রেজা নামে এক পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক কেন্দ্র থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক পরীক্ষার্থী আজিম রেজা (২৯) শিবগঞ্জ উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের এনামুল হকের ছেলে। তিনি কানের মধ্যে ও বগলে বিশেষ ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা হলে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। এ সময় কক্ষ পরিদর্শকদের সন্দেহ হলে তার দেহ তল্লাশি করতে চাইলে আজিম দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে তার দেহ তল্লাশি করে ইলেকট্রনিক ডিভাইস পাওয়া যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক কেন্দ্রের সচিব ও ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ এজেএম মাসুদুর রহমান বলেন, ডিজিটাল ডিভাইসসহ আজিম রেজাকে আটকের পর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ওসি মিন্টু রহমান এ ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ আটক পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

রেলের নিরাপত্তা / দুর্ঘটনা ঠেকাবে কাফির ডিভাইস
কয়েক মাস ধরে দেশজুড়ে একের পর এক নাশকতা ও দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে ট্রেন। এসব ঘটনায় জানমালের ক্ষতির পাশাপাশি বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে রেলওয়ের। ট্রেনে নাশকতা ও দুর্ঘটনা রোধে নাটোরের নলডাঙ্গার মাধনগরের আবদুল্লাহ আল কাফি (১৮) তৈরি করেছেন ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’। কাফি পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিকস বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র। তিনি পশ্চিম মাধনগর জোয়ানপুর গ্রামের কৃষক মো. মাহবুব আলম হোসেনের একমাত্র ছেলে। এই সাফল্যে এলাকাবাসী ও তার পরিবারের সদস্যরা বেশ খুশি। তার ডিভাইসটি দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। জানা গেছে, তার ডিভাইসটি ব্যবহারের মাধ্যমে রেললাইনের কোথাও ভেঙে গেলে বা কাটা হলে, সিগন্যাল বেজে উঠবে ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টেশন মাস্টারের কাছে ফোন চলে যাবে। ফলে ট্রেন দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাবে। এই ডিভাইসটি উদ্ভাবনে তার খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। ডিভাইসটি আরও শক্তিশালী করতে গবেষণার প্রয়োজন। কাফি জানান, বেশ কিছুদিন চেষ্টার পর এতে সফল হন তিনি। প্রতিটি স্টেশনে একটি কন্ট্রোল বক্স স্থাপন ও রেললাইনের সঙ্গে ওয়ারিংয়ে খরচ পড়বে মাত্র ১০ হাজার টাকা। ওই স্টেশনের আওতায় রেললাইন কাটা পড়লে বা ফেটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোল বক্সের অ্যালার্ম বাজবে। একই সঙ্গে অ্যালার্ম বক্সে থাকা মোবাইল থেকে স্টেশন মাস্টারের মোবাইলে যাবে কল। তার বাবা-মা জানান, সন্তানের এই আবিষ্কারে তারা গর্বিত। ছেলের তৈরি এই ডিভাইস দেশের ও জনগণের কাজে লাগলেই তারা খুশি। নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোস্তাফিজুর রহমান রকি জানান, এলাকাবাসী ডিভাইসটি দেখতে ভিড় করছেন। রেলযাত্রাকে নিরাপদ করতে ডিভাইসটি পরীক্ষা করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান তিনি। মাধনগর রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার মো. মমিন উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, তিনি এ ডিভাইসের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।
২৩ জানুয়ারি, ২০২৪

ডিভাইস জালিয়াতি করে আটক ১০৮ জন
রংপুর ব্যুরো ডিভাইস জালিয়াতির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। গতকাল শুক্রবার রংপুর, বরিশাল ও সিলেট—এই তিন বিভাগের পরীক্ষা হয়। এর মধ্যে রংপুর বিভাগের ৬টি উপজেলায় নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক জালিয়াতি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব উপজেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে শিক্ষক-পরীক্ষার্থী ও ডিভাইস জালিয়াতি চক্রের ১০৮ জনকে আটক করেছে। তাদের কাছ থেকে বিশেষ ধরনের ব্লুটুথ ডিভাইস, মোবাইল ফোন ও জালিয়াতির চুক্তিপত্র জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাব জানায়, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রংপুরে ১৯ জন, গাইবান্ধায় ৩৫ জন, দিনাজপুরে ১৮ জন, কুড়িগ্রামে ১২ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭ জন, লালমনিরহাটে ১০ জন এবং পঞ্চগড়ে ৭ জন রয়েছেন। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্রের উত্তর প্রদানের চুক্তি করে একটি চক্র। চুক্তি অনুযায়ী তাদের ডিভাইস সরবরাহ করা হয়েছিল। গোপন সংবাদ পেয়ে পরীক্ষার আগে বৃহস্পতিবার রাতে ও পরীক্ষা শুরুর আগে গতকাল সকালে রংপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার জানান, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন রংপুরের পৃথক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ১১ জন পরীক্ষার্থী এবং পাঁচজন ডিভাইস জালিয়াতি সিন্ডিকেটের সদস্য। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে আটজন নারী রয়েছেন, যাদের পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে ডিভাইসসহ আটক করা হয়। তিনি বলেন, গোয়েন্দা বিভাগ ডিভাইস জালিয়াতি চক্রটিকে পরীক্ষার আগের রাতে, সকালে ও পরীক্ষা শুরুর আগেই কেন্দ্র থেকে আটক করে। এ কারণে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারেনি চক্রটি। এ ঘটনায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো ঘটনা ঘটেনি। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১১টি ডিভাইস, ৮০টি ফোন ও পরীক্ষার প্রবেশপত্র জব্দ করা হয়। কালবেলার গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, গাইবান্ধায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইলের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে পরীক্ষা দেওয়ার মূলহোতা পাঁচজনসহ ৩৫ জনকে আটক করেছে র্যাব-১৩। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গাইবান্ধা র্যাব ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৩ অধিনায়ক আরাফাত ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইলের মাধ্যমে অসৎ উপায় অবলম্বন করে গাইবান্ধা জেলা শহরের বিভিন্ন কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। পরীক্ষা শুরুর আগেই সন্দেহজনক কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান নেয় র্যাব। পরীক্ষা চলাকালে বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে ও ভেতর থেকে অভিযান চালিয়ে মূলহোতা পাঁচজনসহ ৩৫ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ডিভাইস সরবরাহের হোতা মারুফ, মুন্না, সোহেল, নজরুল ও সোহাগ রয়েছে। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মোবাইল ফোন, ২৪টি মাস্টার কার্ড, ২০টি ব্লুটুথ, ১৭টি মোবাইল, ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প পাওয়া গেছে। দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় প্রক্সি ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার এবং অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ১৮ জনকে আটক ও ১৮ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আটক ১৮ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও ৯ জন পুরুষ। তাদের কাছ থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইস সংযুক্ত মাস্টার কার্ড, ব্লুটুথ ডিভাইস ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম ও কোতোয়ালি থানার ওসি মো. ফরিদ হোসেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, দিনাজপুর জেলায় ৫৪টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩৮ হাজার ৯ জন। অনুপস্থিত রয়েছেন ৯ হাজার ৬৩৪ জন। পরীক্ষায় প্রক্সি ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার এবং অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ১৮ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার ওসি মো. ফরিদ হোসেন জানান, প্রক্সি ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহারের দায়ে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কুড়িগ্রামে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রক্সি ও ইলেকট্রিক ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতি করে পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে ১২ পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী। ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে বিভিন্ন কেন্দ্র ৭ চাকরিপ্রার্থীকে আটক ও তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সদর থানার ওসি মো. ফিরোজ কবির বলেন, সকালে পরীক্ষা চলাকালীন আটক পরীক্ষার্থীরা অভিনব কায়দায় আধুনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে বাইরে সরবরাহ করে। এরপর বাইরে থেকে উত্তর সরবরাহের মাধ্যমে তারা পরীক্ষা দেয়। অসদুপায় অবলম্বন করায় আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, পঞ্চগড়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার ও প্রক্সি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে ৭ জনকে আটক করেছে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ। তাদের মধ্যে পরীক্ষায় কানের মধ্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করার ৫ জন, মোবাইল ব্যবহার করার অপরাধে ১ জন ও প্রক্সি পরীক্ষা দেওয়ার অপরাধে ১ জনকে আটক করা হয়। পঞ্চগড় সদর থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বলেন, এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করছেন। লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, লালমনিরহাট শহরের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ১০ নারীসহ ১৩ জন পরীক্ষার্থী আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। তাদের মধ্যে এক নারী পরীক্ষার্থী ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এবং এক নারীর দেড় মাসের সন্তান রয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার চৌধুরী জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রে অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে আটক পরীক্ষার্থীদের নামে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত আবেদনকারীরা নিজ নিজ জেলায় পরীক্ষায় অংশ নেন। প্রথম পর্বে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮টি জেলার ৫৩৫টি কেন্দ্রে এ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ওই তিন বিভাগের সরকারি প্রাথমিকে শূন্য পদ রয়েছে ২ হাজার ৭৭২টি। সেই হিসাবে প্রতি পদের বিপরীতে লড়বেন ১৩০ জন।
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

গাইবান্ধায় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিভাইস জালিয়াতি, মূলহোতাসহ আটক ৩৫
গাইবান্ধায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইলের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে পরীক্ষা দেওয়ার ঘটনায় মূলহোতা পাঁচজনসহ মোট ৩৫ জন পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে র‍্যাব-১৩। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে গাইবান্ধা র‍্যাব ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে রংপুর র‍্যাব-১৩ অধিনায়ক আরাফাত ইসলাম এসব কথা বলেন। এ ঘটনায়  ডি -ভাইস সাপ্লাইয়ের মূলহোতারা হলেন মারুফ, মুন্না, সোহেল,নজরুল ও সোহাগ। র‍্যাব-১৩ অধিনায়ক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব জানতে পারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইলের মাধ্যমে অসৎ উপায় অবলম্বন করে গাইবান্ধা জেলা শহরের বিভিন্ন কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছে। বিষয়টি জানতে পেয়ে র‍্যাব সদস্যরা পরীক্ষা শুরুর পূর্বে থেকেই সন্দেহজনক কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান নেন। পরে পরীক্ষা চলাকালে বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে ও ভেতর থেকে অভিযান চালিয়ে এ অপরাধের  মূলহোতা পাঁচজনসহ ৩৫ জনকে আটক করে। আটককৃতদের কাছ থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মোবাইল ফোন, ২৪টি মাস্টার কার্ড, ২০টি ব্লুটুথ, ১৭টি মোবাইল, ব্যাংক চেক ও স্টাম্প পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততা  স্বীকার করছে।  আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে নিকটতম থানায় হস্তান্তর করা হবে।  
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

রংপুরে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিভাইস জালিয়াতি, কারাগারে ১৯
রংপুরে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিভাইস জালিয়াতি সিন্ডিকেটের ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ সময় বেশকিছু ডিভাইস ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর পায়রা চত্বরে ডিবি কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান। তাদের নামে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হবে।  পুলিশ জানায়, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্রের উত্তর প্রদানের চুক্তি করে একটি চক্র। চুক্তি অনুযায়ী তাদের ডিভাইস সরবরাহ করে তারা। আমরা গোপন সংবাদ পেয়ে পরীক্ষার আগের রাতে ও সকালে রংপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৯ জনকে আটক করি।  তিনি বলেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন রংপুরের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ১১ জন পরীক্ষার্থী এবং পাঁচজন ডিভাইস জালিয়াতি সিন্ডিকেটের সদস্য। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে আটজন নারী রয়েছেন, যাদের পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে ডিভাইসসহ আটক করা হয়।   এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১টি ডিভাইস, ৮০টি ফোন ও এডমিট কার্ড জব্দ করা হয়। পুলিশ জানায়, ডিভাইস জালিয়াতি সিন্ডিকেটের সদস্যদের আটক অভিযানে মোট চারটি দল কাজ করে।  রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ ডিভাইস জালিয়াতি চক্রটিকে পরীক্ষার আগে রাতে, সকালে ও পরীক্ষা শুরুর আগেই কেন্দ্র থেকে আটক করে। এ কারণে, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারেনি চক্রটি। এ ঘটনায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি নিশ্চিত করেন। পরে তাদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। 
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩
X