ছাদে ধান শুকাতে গিয়ে প্রাণ গেল গৃহবধূর
যশোরের মনিরামপুরে ছাদে ধান শুকাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শে লাবনী বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।  মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে পৌরশহরের কামালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লাবনী বেগম ওই গ্রামের শাহিন হোসেনের স্ত্রী। সংশ্লিষ্ট কামালপুর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাবুল আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, কামালপুর গ্রামের মিজান হোসেনের দ্বিতল ভবনের ছাদে লাবনী ধান শুকাতে যান। ওই ভবনের ছাদে পল্লী বিদ্যুতের হাই ভোল্টের সঞ্চালন লাইন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, লাবনীর হাতে থাকা ছাতার সঙ্গে খোলা তারের স্পর্শ লাগে। এতে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে ছাদে পড়ে যান তিনি। দুপুর দেড়টার দিকে উর্মি নামে এক নারী ওই ছাদে গিয়ে লাবনীকে ধানের ওপর পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের স্বামী শাহিন হোসেন জানান, দেড় বছর বয়সী হাবিবা খাতুন ও আট বছরের সাজিম হোসেন নামে তাদের দুই সন্তান রয়েছে। ছাদে ধান শুকাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে স্ত্রী লাবনী বেগম মারা গেছেন। মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। মনিরামপুর থানার ওসি এ বি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল লতিফ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১১ ঘণ্টা আগে

সড়কে ধান মাড়াই, বিড়ম্বনায় পথচারীরা
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় সড়কের ওপর চলছে বোরো ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর কাজ। সড়কের বড় অংশ দখল করে একটু পর পর ধানের স্তূপ ও মাড়াইয়ের মেশিন রাখার কারণে সড়ক অনেকটাই সরু হয়ে গেছে। এতে যানবহান চলচলে বিঘ্ন ঘটছে। এমনকি দুর্ঘটনারও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি রান্তায় ধান শুকাতে দেওয়ায় ও খড় বিছিয়ে রাখায় পথচারীরাও পড়ছেন বিপাকে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে বোরো ধানমাড়াই এবং ধান ও খড় শুকানোর চিত্র দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে উপজেলার বানিয়াবাড়ী, পচাবহুলা, ধর্মকুড়া ও আমতুলী সড়কগুলোতে। এই উপজেলার কুলকান্দী বাজার মোড় হতে উপজেলা শহর পর্যন্ত পাকা সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধান স্তুপ করে রাখা হয়েছে। এ যেন এক ধান মাড়াইয়ের উঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকরা পাশেই শ্যালোচালিত ইঞ্জিন দিয়ে মাড়াই করছেন এসব ধান। মাড়াই শেষে অনেকে ধান বাড়ি নিয়ে গেলেও খড় সড়কের ওপরেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছেন শুকানোর জন্য। শুকানোর পর সড়কের পাশেই খড় স্তুপ করে রেখেছেন অনেকে। এ ছাড়া কেউ কেউ ভুট্টাও শুকাচ্ছেন সড়কে। এর মধ্য দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রাক, অটোরিকশা, ভ্যান মোটরসাইকেল ও ট্রাক্টরসহ অন্যান্য যানবাহন। অটোরিকশা চালক সমুনসহ আরও অনেকে বলছেন, সড়কজুড়ে ধানমাড়াইয়ের কাজ করছেন কৃষকরা। খড় বিছানো সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়ছেন। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটছে। রবিউর ইসলাম নামের এক পথচারী বলেন, ‘কয়েক দিন আগে সড়কে বিছানো খড়ে পিছলে পড়ে আহত হয়েছেন কয়েকজন মোটরসাইকেল চালক।’ মুখশিমলা ব্রিজ এলাকায় পথচারী মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘ধানমাড়াই শেষে কৃষকরা খড় সড়কে ফেলে রাখেন শুকানোর জন্য। বৃষ্টি হলে ওই খড় সড়কে কর্দমাক্ত হওয়ার পরেও সেগুলো সরানো হয় না। পরে পচে গিয়ে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে প্রায়ই দেখা যায়।’ ট্রাকচালক আব্বাস আলী বলেন, ‘সড়কের দুই পাশে খড়, ধান শুকানো ও মাড়াইয়ের কারণে রাস্তা সরু হয়ে যায়। এতে সড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। জ্যামে আটকা পড়লে অনেক সময় ধান অন্য জায়গায় সরিয়ে গাড়ি নিয়ে আসতে হয়।’ এসব অভিযোগের বিষয়ে ধানমাড়াইকারীরা বলছেন, তারা অল্প সময়ের জন্য রাস্তায় ধানমাড়াই করছেন। এতে যানবাহনের সাময়িক একটু ক্ষতি হলেও তাদের অন্য কোনো উপায় নেই। এ বিষয়ে ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিরাজুল ইসলাম  বলেন, ‘সড়ক দখল করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করা বেআইনি। ঘটনাস্থলে গিয়ে এসব বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
১৮ ঘণ্টা আগে

নতুন ধান উদ্ভাবন, একবার রোপণে ফসল হবে পাঁচ বছর
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) কৃষি অনুষদের গবেষকরা চীনের ইউনান ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় বহুবর্ষজীবী ধানের গবেষণার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বহুবর্ষজীবী ধানের বিশেষত্ব হলো, এটি পাঁচ বছরে টানা দশটি ফসল ফলাতে পারে। অর্থাৎ প্রতিবছর দুবার করে ফসল পাওয়া যাবে। আইইউবিএটি কলেজ অব অ্যাগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফারজানা সুলতানার তত্ত্বাবধানে গবেষকরা ২০২০ সাল থেকে বহুবর্ষজীবী ধানের গবেষণার কাজ তাদের নিজস্ব গবেষণা কেন্দ্রে চালিয়ে যাচ্ছেন। আইইউবিএটির কৃষি অনুষদ ২০১৯ সালে এমটিএ এর মাধ্যমে  চীনের ইউনান ইউনিভার্সিটি থেকে বহুবর্ষজীবী ধানের বীজ সংগ্রহ করেন।   গত শনিবার (১৮ মে ) গাজিপুরের রাজেন্দ্রপুরে এই বহুবর্ষজীবী ধান কাটার নবম পর্বের উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। আরও উপস্থিত ছিলেন আইইউবিএটির  উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিনা নার্গিস, কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল্লাহ মিয়া,  কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) পরিচালক  ড. নরেশ চন্দ্র দেব বর্মা,  ইরি  বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ব্রিডিং লিড, ইরি  ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, এবং বিটিভি এর মাটি-ও-মানুষ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক  অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকসহ আইইউবিএটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।    অনুষ্ঠানে আগত সকল অথিতিদের বহুবর্ষজীবী ধানে জাতগুলোর পরিচয় করিয়ে দেন এবং উৎপাদনের সাফল্য নিয়ে কথা বলেন  ড. ফারজানা সুলতানা। তিনি বলেন বহুবর্ষজীবী ধান সামগ্রিকভাবে এটি একটি টেকসই ফসল হিসেবে গণ্য হবে। কেননা, প্রতিবার ধান চাষ করতে যে বীজ, পানি, সার, রাসায়নিক ও শ্রমের দরকার হয়- সেগুলোর খরচ বহুলাংশে কমিয়ে আনবে। পরিবেশগত দিক থেকেও এর ভূমিকা অনেক। কারণ, ধান উৎপাদনে যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হয়, তা অনেকাংশে কমিয়ে আনবে, মাটির ক্ষয়রোধ করবে এবং মাটির গুণগতমান বৃদ্ধি করবে।   বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান, ইরি বাংলাদেশের কান্ট্রি ব্রিডিং লিড এবং সভায় উপস্থিত অন্য অতিথিরা বাংলাদেশে আইইউবিএটির অ্যাগ্রিকালচার রিসার্চ ফিল্ডে বহুবর্ষজীবী ধানের অসামান্য পারফরম্যান্স দেখে প্রশংসা করেন এবং তারা এটির সাফল্য দেখতে চান। উল্লেখ্য, আইইউবিএটি বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯১ সালে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. এম আলিমউল্যা মিয়ানের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে এটি। বর্তমানে উত্তরায় ২০ বিঘার নিজস্ব সবুজ ক্যাম্পাসে ৬টি অনুষদে ১৪টি প্রোগ্রাম চালু আছে এই প্রতিষ্ঠানে। যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আট হাজার  শিক্ষার্থীর সঙ্গে এশিয়া ও আফ্রিকার ১২টি দেশের শতাধিক শিক্ষার্থীরাও নিয়মিত পড়াশোনা করছেন।  
২১ মে, ২০২৪

দিনাজপুরে বোরো সংগ্রহের উদ্বোধন
দিনাজপুরের খানসামায় আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যন্তরীণ বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। সোমবার (২০ মে) সকালে খানসামা খাদ্য গুদাম প্রাঙ্গণে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তাজ উদ্দিন। জানা যায়, খানসামা এলএসডিতে ১৪৫৯ টন চাল ও ৩৫৬ টন ধান ক্রয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলায় ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রতি কেজি ধান ৩২ টাকা ও সিদ্ধ চাল প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে কৃষক ও মিলারদের কাছ থেকে কেনা হবে। ক্রয়ের উদ্বোধনী দিনে মেসার্স তছিল উদ্দিন হাস্কিং মিল থেকে চাল সরবরাহ করা হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে ধান ও চাল সংগ্রহ করলে কঠোর ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কৃষক ও মিলার উভয়ই যেন ন্যায্যমূল্য পায় সেজন্য সরকারিভাবে মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। শতভাগ নির্দেশ মেনে সবাইকে ধান ও চাল কিনতে হবে। যারা এসব নির্দেশ অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফিরোজ আহমেদ মোস্তফা, ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আখতার, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, মিল মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলামসহ কৃষক ও মিলাররা।
২০ মে, ২০২৪

হবিগঞ্জে ধান সংগ্রহের শুরুতেই হযবরল
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে শুরু হয়েছে সরকারি মূল্যে কৃষকের কাছ থেকে বোরো ধান সংগ্রহ। উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়নের প্রায় দেড় হাজার কৃষক-কৃষাণী সরকার নির্ধারিত মূল্যে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রির জন্য ‘কৃষকের অ্যাপ’ নামক অ্যাপসের মাধ্যমে আবেদন করেছিলেন। সব আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পর অনলাইনে লটারির মাধ্যমে শনিবার (১৮ মে) সন্ধ্যায় উপজেলা খাদ্যশস্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাপ্তরিক ফেসবুক আইডি ‘উপজেলা প্রশাসন আজমিরীগঞ্জ’ থেকে প্রথম পর্যায়ে ৬১৩ জন কৃষক-কৃষাণীর নামের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকা প্রকাশের পর থেকেই উপজেলার সাধারণ কৃষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। চলছে নানান আলোচনা ও সমালোচনা। তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তালিকায় কৃষকের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরের পাশাপাশি মোবাইল ফোনের যে সমস্ত নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে তার অধিকাংশই সচল নয়। সাধারণ কৃষকরা বলছেন, ঘরে ধান না থাকা কৃষকদের কার্ড ব্যবহার করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কয়েকটি মধ্যস্বত্বভোগী চক্র সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে এই তালিকায় নাম বসিয়েছে। যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সঠিক যাচাই বাছাইয়ের কাজ করতেন, তবে প্রকৃত সাধারণ কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পেত। উপজেলা খাদ্যশস্য সংগ্রহ কমিটি ও কৃষি বিভাগ বলছে, অ্যাপসের মাধ্যমে যারা আবেদন করেছেন যাচাইয়ের পর তাদের মধ্য থেকে অনলাইনে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচিত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তারপরও ধান সংগ্রহের সময় যাদের নামে কার্ড তাদের স্ব-শরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। যাচাই করা হবে কৃষি কার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ মোবাইল ফোন নম্বর। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো সংগ্রহ মৌসুমে উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৮৯৩ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ৬১৩ জন কৃষক জনপ্রতি ৩ মেট্রিক টন ধান সরকারি মূল্যে খাদ্য গুদামে বিক্রি করতে পারবেন। প্রকাশিত তালিকার সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৬১৩ জন কৃষক-কৃষাণীর মধ্যে প্রায় ১৫৬ জন বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র কৃষাণীর নামে রয়েছে কৃষি কার্ড। তাদের অধিকাংশের কৃষি কার্ড থাকলেও তারা কখনোই ধান বিক্রি করেননি। মূলত মধ্যস্বত্বভোগীদের চক্রগুলো তাদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে কৃষি কার্ড সংগ্রহ করে নিজেরাই সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করেন। তালিকায় থাকা বিভিন্ন কোম্পানির অন্তত ৪০টি মোবাইল ফোন নম্বরে কল দেওয়া হলে কোনটিই সচল নয় বলে জানায় মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম। কৃষক আমিনুল মিয়া, সিদ্দিক আলী, আকছির মিয়াসহ একাধিক কৃষক বলেন, বহু টাকা খরচ করে জমিতে ধান ফলাই। সরকারি মূল্যে যদি ধান না দিতে পারি তাহলে লাভের পরিবর্তে লোকসান হয়। অনেক কৃষকই জানেন না এ বছর নিবন্ধন করতে হবে। তা ছাড়া উপজেলার প্রকৃত অনেক কৃষককে বাদ দিয়ে সিন্ডিকেট চক্র শুধু কার্ডধারী কৃষক-কৃষাণিদের নাম দিয়ে নিবন্ধন করেছে। এতে শতশত প্রকৃত কৃষকরা সরকার প্রদত্ত ধানের মূল্য থেকে বঞ্চিত হবে বলেও জানান তারা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফে আল মুঈজ বলেন, অনলাইনে যে আবেদন জমা হয়েছে আমরা তা গ্রহণ করেছি। মোবাইল নম্বর আত্মীয় স্বজনের হতে পারে। তবে দেখার মূল বিষয় হচ্ছে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্র ঠিক আছে কিনা এবং সেগুলো এই উপজেলার কিনা। উপজেলা খাদ্য গুদামের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সামসুল হুদা বলেন, মোবাইল নম্বর যারই হউক আমরা ধান সংগ্রহ করবো কৃষকের কৃষি কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে। উপজেলা খাদ্যশস্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক বলেন, আবেদন যে কেউই করতে পারেন। লটারিতে আসার আগ পর্যন্ত কৃষি ও খাদ্য অধিদপ্তর থেকে আবেদনগুলো সঠিক আছে বলে আমাকে নিশ্চিত করার পর আমি আইডি থেকে লটারি সম্পন্ন করে তালিকা প্রকাশ করেছি। তারপরও যদি কেউ কোনো তথ্য গোপন করে থাকেন কিংবা বাছাইয়ের সময় পরেন নাই। যখন গুদামে ধান সংগ্রহ করা হবে তখন কৃষকের জাতীয় পরিচয়পত্র, কৃষি কার্ড ও মোবাইল ফোন নম্বর সঙ্গে নিতে হবে। সেটা আবার যাচাই হবে। যারা এগুলো না নিয়ে যাবেন তাদের কার্ড বাতিল বলে গণ্য হবে এবং যাদের আবেদন জমা আছে সেগুলো থেকে আবার লটারি হবে। 
২০ মে, ২০২৪

ধান ক্ষেতে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বোডিংয়ের অংশের ধান কাটতে গিয়ে ইউনুস আলী (৬০) নামে এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করার অীভিযোগ উঠেছে।   শনিবার (১৮ মে) সকালে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোদ্দর্বনগ্রামে নিহতের মালিকানাধীন বোডিংয়ের ধান কাটতে গেলে মাঠের মধ্যেই নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।  এ সময় গুরুতর যখম হন আরও চারজন। আহতদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কা জনক হলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত ইউনুস আলী খোদ্দর্বন এলাকার মৃত আকবর আলীর ছেলে এবং হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিলাইদহ ইউনিয়নের মাজগ্রামের হাসেন আলীর ছেলে মুক্তার হোসেনের সম্বন্ধী। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর পূর্বে ছেলে-মেয়ে উভয়ের সম্পর্কের জেরে মুক্তার শেখের মেয়ে জুঁইয়ের সঙ্গে ইউনুস আলীর ছেলে হোসেনের পারিবারিকভাবে মৌখিক বিয়ে দেওয়া হয়। বনি-বনা না হওয়ায় বিয়ের কয়েক মাসের মাথায় উভয় পক্ষের সমঝোতায় কনে পক্ষকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রদান সাপেক্ষে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হয়। পরবর্তীতে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে একাধিক দিন ধার্য করেও ছেলেপক্ষ কনে পক্ষকে মিটমাটের ধার্যকৃত টাকা না দিলে বাড়তে থাকে অন্ত কলহ। উল্লেখ্য, ঘটনার কয়েকদিন পূর্বেও ধান কাটতে গিয়ে একইভাবে বাধার সম্মুখীন হন ইউনুস আলী। সহিংসতা ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি আঁচ করে গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) কুমারখালী থানায় একটি অভিযোগ ও দায়ের করেন তিনি। মুক্তার হোসেনকে প্রধান আসামি করে তিনজনের নাম উল্লেখ পূর্বক ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে অভিযোগ দেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাতেও। অভিযোগ প্রদানের একদিনের মাথায় সকালে মুক্তার হোসেনের হাতেই খুন হন তিনি। এ বিষয়ে নিহত ব্যক্তির ছেলে হোসেন আলী জানান, সকালে পানি সেচের ভাগের ধান কাটতে গেলে তার মামা মুক্তারসহ ২০-২৫ জন দেশীয় অস্ত্র কাঁচি, রামদা, হাসুয়া নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় তার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনিসহ অন্তত পাঁচ জন আহত হয়েছেন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ক্ষয়-ক্ষতির ভয়ে মালামাল নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। সহিংসতা এড়াতে এলাকায় মোতায়ন রয়েছে পর্যাপ্ত পুলিশ। কুমারখালী সদর হাসপাতালের আর এম ও ডা. সাইদ সাকিব বলেন, সকালে শিলাইদাহ ইউনিয়নের খোদ্দর্বন গ্রাম থেকে কয়েক জন মারামারির রোগী এসেছিল। এদের মধ্যে ইউনুস আলীর হাসপাতালের আসার পূর্বে মারা গেছে। সেই সঙ্গে দুইজন কুমারখালীতে চিকিৎসাধীন আছে এবং একজনের অবস্থা আংশকাজনক হওয়ায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। কুমারখালী থানার ওসি আকিবুল ইসলাম জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে একজন নিহত হয়েছে। অপরাধীধের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তিনাথ জানান, দীর্ঘদিন ধরে দুই পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। সকালে ইউনুস আলী ধান কাটতে গেলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে মুক্তার হোসেনের লোকজন। এঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।
১৯ মে, ২০২৪

ধান কাটা নিয়ে দ্বন্দ্ব, নিহত ১
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ধান কাটা নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম ইউনুস আলী (৬০)। তিনি শিলাইদহ ইউনিয়নের খোদ্দ বনগ্রামের বাসিন্দা।  শনিবার (১৮ মে) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার খোর্দ্দ বনগ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, শনিবার সকালে ৭টার দিকে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে ইউনুস আলী ও মুক্তার আলীর মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মুক্তার আলী ও তার লোকজন মিলে ইউনুস আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইউনুসকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় দুজন আহত হয়েছেন, তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কুমারখালী থানার ওসি আকিবুল ইসলাম জানান, সকালে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে ইউনুস আলী ও মুক্তার আলীর মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ইউনুস আলী জখম হন। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর মারা যান।  তিনি আরও জানান, নিহত ইউনুস আলী ও মুক্তার আলী একে অপরের আত্মীয়। সম্পর্কে বেয়াই। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
১৮ মে, ২০২৪

সাতক্ষীরায় ধান বোঝাই ট্রাক উল্টে নিহত ২
সাতক্ষীরার তালায় ধান বোঝাই ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১১ জন। শনিবার (১৮ মে) ভোর ৬টার দিকে খুলনা-পাইকগাছা সড়কের হরিশচন্দ্রকাটী সরদারবাড়ী বটতলা এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই মরদেহ দুটি উদ্ধার করেছে। নিহতরা হলেন- কয়রা উপজেলার বামিয়া ইউনিয়নের বগা গ্রামের তালেব গাজীর ছেলে সাইদুল গাজী (৩৮) ও মহারাজপুর ইউনিয়নের মাদারবাড়িয়া গ্রামের তোফাজ্জেল সরদারের ছেলে মনিরুল ইসলাম (৩০)। কয়রা এলাকার শ্রমিক জাহিদুল ইসলাম জানান, কয়রা থেকে ১৩ জন শ্রমিক গোপালগঞ্জ এলাকায় ধান কাটতে গিয়েছিল। মজুরি হিসাবে তারা ২০-৩০ মণ ধান পায়। সেটা নিয়ে ট্রাকে করে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় সাইদুর ও মনি নিহত হয়। স্থানীয়রা জানান, সড়কের দুই ধারের রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য খুঁড়ে রাখার কারণে মূলত এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তালা থানার ওসি মো. মমিরুল ইসলাম জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে এবং ট্রাকটি আটক করা হয়েছে।
১৮ মে, ২০২৪

দিনে হিটস্ট্রোকের ভয়, রাতে ধান কাটছেন কৃষকরা
মাঠের অধিকাংশ জমির ধান এখন পেকে গেছে। কিন্তু তীব্র গরমের কারণে দিনের বেলায় ধান কাটতে বেশি টাকা দিয়েও মিলছে না শ্রমিক। তাই তীব্র গরম ও হিটস্ট্রোকের ভয়ে  চাঁদপুর মতলব উত্তরের ধানচাষিরা রাতের বেলায় চাঁদের আলোতে ধান কাটছেন। চাঁদপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মতলব উত্তর উপজেলায় এবার আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৯৫০ হেক্টর। চলতি মৌসুমে মতলব উত্তর উপজেলায় বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ২৮৩ টন।  সরেজমিনে কয়েকটি এলাকায় দেখা গেছে, মাঠজুড়ে দুলছে সোনালি ধান। অধিকাংশ জমির ধান পুরোপুরি পেকে গেছে। দিনের বেলা প্রখর রোদের তাপ থাকায় রাতের বেলা চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা। পৌরসভার আদুরভিটি গ্রামের চাষি বোরহান মিয়াজী। এ বছর ৫০ শতাংশ জমিতে করেছেন বোরো ধানের চাষ। ধানের ফলন ভালো হওয়ায় অনেকটা খুশি এ চাষি। তবে বিপাকে পড়েছেন ধান পাকার পর। প্রচণ্ড গরমে দিনের বেলা ধান কাটতে রাজি হচ্ছে না শ্রমিকরা। পরে সিদ্ধান্ত নেন রাতেই কাটবে জমির ধান। তাই চারজনকে সঙ্গে নিয়ে চাঁদের আলোয় ধান কাটা শুরু করেন তিনি। মধ্য রাত পর্যন্ত চলে ধান কাটার কাজ। কৃষক বোরহান মিয়াজী বলেন, আমরা সব সময় দিনের বেলাতেই ধান কাটি। এ বছর প্রচণ্ড তাপের কারণে দিনের বেলা কাজের লোক পাওয়া সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে আমি বেশ বিপদে পড়ে যাই। দিনের বেলা ধান কাটতে চায় না কেউ। সন্ধ্যার পর থেকে ধান কাটার কথা বলায় রাজি হয়েছে।  মতলবের চাঁনখার বিলের ধানচাষি রহমত উল্লাহ বলেন, আমি রাতের বেলায় ৩০ শতাংশ জমির ধান কাটার কাজ শুরু করেছি। মূলত দিনের বেলা হিটস্ট্রোকের ভয়ে অনেকেই ধান কেটে দিতে রাজি হয়নি। পরে রাতের বেলা ধান কাটা শুরু করি। রাতের বেলা কাটলে গরম কম লাগে। আমি মনে করি, এ সময়ে রাতই ধান কাটার উপযুক্ত সময়। চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সাফায়াত আহমেদ সিদ্দিকী কালবেলাকে বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহে আমাদের কৃষকদের দিনের বেলা ধান কাটা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ অতিরিক্ত গরমে কাজ করলে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। যারা এ গরমে মাঠে কাজ করবেন তাদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করার পাশাপাশি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে। রাতের বেলা ধান কাটার বিষয়ে চাষিদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে জেলার বিভিন্ন জায়গায় রাতে ধান কাটা হচ্ছে। এতে হিটস্ট্রোক এড়ানো সম্ভব হচ্ছে। তবে এ সকল চাষিরা যদি আমাদের হারভেস্টার মেশিনগুলো ব্যবহার করেন তাহলে আরও দ্রুত ধান সংগ্রহ করতে পারবেন।
১৫ মে, ২০২৪

দুবেলা খাবার, এক মণ ধান তবু মিলছে না শ্রমিক
ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মাঠে-মাঠে এখন পাকা ধান। তবে শ্রমিক সংকটে সময়মতো ধান কাটাতে পারছেন না কৃষক। এক মণ ধানের দামেও মিলছে না একজন শ্রমিক। শ্রমিক মিললেও জনপ্রতি মজুরি দিতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকা। সঙ্গে দুবেলা খাবার। এতে শুধু ধান কাটতেই প্রতি মণের জন্য খরচ পড়ছে দেড় হাজার টাকার মতো। এদিকে বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৮২০ থেকে ৮৫০ টাকা। উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় একই চিত্র দেখা গেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ৩ হাজার ৩২৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড়ে ৫ থেকে সাত টন করে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, এ বছর শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি থাকায় কৃষক অনেকে নিজেরা ধান কাটার কাজ করছেন। প্রতিটি এলাকায় কমবেশি বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সত্যনগর গ্রামের কৃষক আবদুল খালেক, নিজ কালিকাপুর গ্রামের মো. হাসান জানান, তিনি এবার আড়াইশ শতক জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। চলতি বোরো মৌসুমে ঝড়, শিলাবৃষ্টি, পোকামাকড়, রোগবালাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকলেও ফলন ভালো হয়েছে; কিন্তু বাজারে ধানের চাহিদা ও বাজারমূল্য অনেক কম থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। আবদুল খালেক আরও বলেন, ধান কাটা, জমি চাষ, সেচ, চারা, সার, কীটনাশকসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে প্রতি মণ ধানের জন্য খরচ দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মতিউর রহমান জানান, বোরো ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের ভালোভাবে ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। কয়েক দিন পর সরকারি উদ্যোগে ধান ক্রয় শুরু হলে বাজারে ধানের দাম বেড়ে যাবে। যেহেতু ঝড়বৃষ্টি নেই, ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ করে রাখলে পরে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন কৃষক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে শ্রমিকের দাম বেশি। কিন্তু তার বিপরীতে ধানের বাজার দাম কম হওয়ায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, পরশুরামে বিভিন্ন এলাকায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের প্রতি পরামর্শ থাকবে, কম্বাইন্ড হারভেস্টার যন্ত্রের মাধ্যমে ধান কাটলে কৃষকদের খরচ বাঁচবে।
১৩ মে, ২০২৪
X