পানির অভাবে ২ হাজার হেক্টর ধানক্ষেত নষ্টের শঙ্কা
লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জের ইছাপুর ও চন্ডিপুর ইউনিয়নে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প থেকে এন-থ্রি খাল এবং বিএডিসির খালে পানি না আসায় প্রায় দুই হাজার হেক্টর ধানক্ষেত নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে অধিকাংশ মাঠ ফেটে গেছে। ফলে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকরা। পানি না থাকায় চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, নয়নপুর, চন্ডিপুর, নারায়ণপুর, নুনিয়াপাড়া, শ্যামদানপুর গ্রামের অধিকাংশ আবাদি জমি শুকিয়ে গেছে। ধানক্ষেতে ফাটল দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও ধানগাছ পানির অভাবে হলুদ রং ধারণ করেছে। জমির পাশে মূল খালেও পানি নেই। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সবুজ বলেন, ‘আমার নিজস্ব জমি রয়েছে এক একর। সব জমিতে আবাদ করেছি। কিন্তু পানির অভাবে ধান গাছের চারার রং হলুদ হয়ে যাচ্ছে। খাল সংস্কার ও খনন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই।’ শ্যামদানপুর গ্রামের কৃষক এরশাদ মিয়া বলেন, ‘জমি ও বীজতলা তৈরি, বীজ কেনা, চারা রোপণ, সার ও কীটনাশক বাবদ এ পর্যন্ত কয়েক হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন পানির অভাবে চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ কৃষক আবদুল হান্নান বলেন, ‘ধান রোপণের শুরুতে পানি পেয়ে আশায় বুক বেঁধেছি। কিন্তু ধানের চারা সবুজ হওয়ার কিছুদিন পরেই আমাদের আশা ফিকে হতে থাকে। খালে পানি না থাকায় জমিতে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না।’ নয়নপুর এলাকার বিএডিসির প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. সবুজ বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমাদের এলাকার খাল খনন না করা এবং সংযোগ খালগুলো মূল খাল থেকে উঁচু হওয়ার কারণে চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের পানি এদিকে আসতে পারে না।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার বলেন, ‘আমি সভায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন অল্প কিছুদিনের মধ্যে পানির ব্যবস্থা করা হবে।’ লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান বলেন, ‘সেচ প্রকল্পটিতে যে পাম্প আছে এটির সক্ষমতা রয়েছে মাত্র ৩০ ভাগ। ৪৫ বছর আগের পুরাতন পাম্পটি কয়েকদিন পর পর অকেজো হয়। খালটি দ্রুত খনন বা সংস্কার করা জরুরি। রামগঞ্জ অঞ্চল থেকে পাম্পের এলাকা কিছুটা নিচু হওয়ার কারণে পানি ঠিকমতো প্রবাহিত হয় না। ফলে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।’ চাঁদপুর পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন খাল খনন না করা এবং পানির লেয়ার বার বার নেমে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। খাল খননের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ অবগত। আশা করি অচিরেই সমাধান হবে।’
১৮ মার্চ, ২০২৪

নিখোঁজের ৮ দিন পর ধানক্ষেত থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
সিলেটের জকিগঞ্জের আটগ্রাম এলাকায় নিখোঁজের আট দিন পর ধানক্ষেত থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে জকিগঞ্জ উপজেলার ৩নং কাজলসার ইউনিয়নের আটগ্রাম এলাকার কাজিরপাতন গ্রামের পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত আব্দুল হামিদ (৩১) স্থানীয় চারিগ্রাম (কাজিরপাতন) গ্রামের মরহুম মুজম্মিল আলীর ছেলে। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আব্দুল হামিদ গত ১১ নভেম্বর বাড়ি থেকে মাগরিবের নামাজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে জকিগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। রোববার দুপুরে নিখোঁজ আব্দুল হামিদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী ধান ক্ষেতে একটি লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। জকিগঞ্জ থানার ওসি মো. জাবেদ মাসুদ জানান, ‘পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। নিখোঁজের বিষয়ে নিহত আব্দুল হামিদের ভাই জকিগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।’
১৯ নভেম্বর, ২০২৩

ঝড়ো বাতাসে হেলে পড়েছে আধাপাকা ধানক্ষেত
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে টানা দুই দিনের বৃষ্টি এবং শুক্রবারের (১৭ নভেম্বর) ঝড়ো বাতাসে হেলে পড়েছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির পাকা ও আধাপাকা আমন ধানগাছ। পাশাপশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আগাম শীতকালীন সবজি ক্ষেতও। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করেছেন কৃষকরা। ধান কাটার আগে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে এ ক্ষতিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।  উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, শিলা বৃষ্টি হলে চাষিরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। এখন পানিতে ডুবে যাওয়া ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হবে কৃষকদের। সরেজমিনে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার বারখাইন, চাতরী, বরুমচড়া, বটতলী ও বারশত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে পাকা ও আধাপাকা ধান ডুবে গেছে। কৃষকরা ঘুরে ঘুরে ক্ষেত দেখছেন। বৃষ্টি থামলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবেন বলে তারা জানান।  উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১ ইউনিয়নে চলতি বছর ৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ করেছেন কৃষকরা। এ ছাড়া হাইধর, বটতলী, বরুমচড়া, বারখাইন, চাতরী, আনোয়ারা সদর, বৈরাগ ও রায়পুর ইউনিযনে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেন কৃষকরা। এসব সবজির মধ্যে আলু, মরিচ, বেগুন, টমেটু, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, বরবটিসহ নানা ধরনের সবজি রয়েছে। অনেক কৃষক আগাম সবজি চাষও করেছেন। তবে অধিকাংশ কৃষক কেবল সবজির বীজ বপন করেছেন।  বারখাইন শিলাইগড়া এলাকার কৃষক মো. মনসুর (৪৫) বলেন, ‘বন্যার কারণে আউশ ধান মাঠেই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমন ধান ঘরে উঠার সময়। কিছু ধান পেকেছে আবার কিছু আধাপাকা। এ সময় ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে । এতে আমার দুই কানি জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ হাজিগাঁও এলাকার সবজি চাষী নুর হোসেন (৫৫) বলেন, ‘এক কানি জমিতে মরিচ, বেগুন ও টমেটোর চারা রোপন করেছি। বৃষ্টি বেশি হলে সব শেষ হয়ে যাবে।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী কালবেলাকে বলেন, ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মানুষের কিছু করার নেই, তবে পানিতে ডুবে যাওয়া ধান কেটে নিতে অথবা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
১৭ নভেম্বর, ২০২৩
X