ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে টানা দুই দিনের বৃষ্টি এবং শুক্রবারের (১৭ নভেম্বর) ঝড়ো বাতাসে হেলে পড়েছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির পাকা ও আধাপাকা আমন ধানগাছ। পাশাপশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আগাম শীতকালীন সবজি ক্ষেতও। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করেছেন কৃষকরা। ধান কাটার আগে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে এ ক্ষতিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, শিলা বৃষ্টি হলে চাষিরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। এখন পানিতে ডুবে যাওয়া ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হবে কৃষকদের।
সরেজমিনে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার বারখাইন, চাতরী, বরুমচড়া, বটতলী ও বারশত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে পাকা ও আধাপাকা ধান ডুবে গেছে। কৃষকরা ঘুরে ঘুরে ক্ষেত দেখছেন। বৃষ্টি থামলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবেন বলে তারা জানান।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১ ইউনিয়নে চলতি বছর ৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ করেছেন কৃষকরা। এ ছাড়া হাইধর, বটতলী, বরুমচড়া, বারখাইন, চাতরী, আনোয়ারা সদর, বৈরাগ ও রায়পুর ইউনিযনে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেন কৃষকরা।
এসব সবজির মধ্যে আলু, মরিচ, বেগুন, টমেটু, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, বরবটিসহ নানা ধরনের সবজি রয়েছে। অনেক কৃষক আগাম সবজি চাষও করেছেন। তবে অধিকাংশ কৃষক কেবল সবজির বীজ বপন করেছেন।
বারখাইন শিলাইগড়া এলাকার কৃষক মো. মনসুর (৪৫) বলেন, ‘বন্যার কারণে আউশ ধান মাঠেই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমন ধান ঘরে উঠার সময়। কিছু ধান পেকেছে আবার কিছু আধাপাকা। এ সময় ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে । এতে আমার দুই কানি জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
হাজিগাঁও এলাকার সবজি চাষী নুর হোসেন (৫৫) বলেন, ‘এক কানি জমিতে মরিচ, বেগুন ও টমেটোর চারা রোপন করেছি। বৃষ্টি বেশি হলে সব শেষ হয়ে যাবে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী কালবেলাকে বলেন, ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মানুষের কিছু করার নেই, তবে পানিতে ডুবে যাওয়া ধান কেটে নিতে অথবা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
মন্তব্য করুন