আফতাবনগরে পশুর হাট নয়: হাইকোর্ট
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর আফতাবনগরে পশুর হাট বসানোর ইজারা বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সঙ্গে ওই আবাসিক এলাকায় হাট বসানো কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এ বিষয়ে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। এর ফলে কোরবানিতে আফতাবনগরে পশুর হাট বসানো যাবে না বলে জানান আইনজীবীরা। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক ও আইনজীবী এস এম শামীম হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত। আফতাবনগর হাটের অংশের বৈধতা নিয়ে রিট করেন আফতাবনগর জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ঢালী এবং সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন কাজল।
০৯ মে, ২০২৪

আফতাবনগরে পশুরহাট বসানোয় নিষেধাজ্ঞা
রাজধানীর আফতাবনগরে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুরহাট বসানোর ইজারার বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। বুধবার (৮ মে) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে কোরবানির ঈদে আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট বসানো যাবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় হওয়ায় আদালত এ আদেশ দিয়েছে বলে জানা গেছে। আদালতে এ রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক ও অ্যাডভোকেট এস এম শামীম হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। এর আগে আফতাবনগরে গরুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ওই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ঢালী। গত ৪ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ঈদুল আজহা ২০২৪ উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেন। ওই বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান ভূমি অফিসারসহ ৯ জনকে বিবাদী করা হয়। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) ২০০৯ আইনের ধারা ৩ (২) ও ১ম তপশিল অনুযায়ী আফতাবনগর (ইস্টার্ন হাউজিং) বাড্ডা থানার ৩৭ নং ওয়ার্ড অধীন, যা ঢাকা নর্থ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অন্তর্ভুক্ত।
০৮ মে, ২০২৪

রাজধানীর যে ২২ স্থানে বসছে পশুর হাট
সামনে পবিত্র ঈদুল আজহা। হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৬ বা ১৭ জুন ঈদুল আজহা উদযাপন করবে বাংলাদেশের মুসলমানরা। কোরবানির এই ঈদকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই শুরু হয়েছে পশু বেচাকেনা।    এবার রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার ২২টি স্থানে কোরবানির পশুর হাট বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সারুলিয়ায় স্থায়ী মার্কেটের পাশাপাশি ১১টি অস্থায়ী হাটের আয়োজন করবে। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) গাবতলীতে স্থায়ী হাট ব্যবহারের পাশাপাশি ৯টি অস্থায়ী হাট স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। ডিএসসিসির যেসব জায়গায় হাট বসতে যাচ্ছে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১১টি অস্থায়ী হাট বসাতে ইজারা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ ছাড়া সারা বছরজুড়েই সারুলিয়ায় হাট বসে দক্ষিণ সিটি এলাকায়। এটি তাদের স্থায়ী হাট। এবারের ১১টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে আছে- উত্তর শাহজানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার মৈত্রী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, পোস্তাগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গাসহ কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আফতাব নগর (ইস্টার্ন হাউজিং) ব্লক ই, এফ, জি, এইচ, সেকশন ১ ও ২ এর খালি জায়গা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা এবং শ্যামপুর কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গা। ডিএনসিসির যেসব জায়গায় হাট বসতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন গাবতলী স্থায়ী হাট ছাড়াও এবার আরও ৯টি অস্থায়ী হাট বসাবে সংস্থাটি। সে লক্ষ্যে তারা হাটগুলোর ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এবারের অস্থায়ী হাটগুলো মধ্যে রয়েছে- ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গা (ভাটারা সুতিভোলা), কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তরা দিয়াবাড়ী ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টর বউ বাজার এলাকার খালি জায়গা, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাবনগর ব্লক ই, এফ, জি, এইচ, এল, এম, এন এবং আশপাশের জায়গা, মিরপুর সেকশন ৬ ওয়ার্ড নম্বর ৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গা, মোহাম্মাদপুর বছিলার ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউউট সংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচকুড়া বেপারীপাড়া রাহমান নগর আবাসিক প্রকল্পের জায়গা এবং খিলক্ষেত থানার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের মস্তুল চেকপোস্ট সংলগ্ন পাড়ার খালি জায়গা।
০৬ মে, ২০২৪

ঢাকা দক্ষিণে ফের পশুর হাট পেলেন আ.লীগ নেতারা
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর পোস্তগোলা শ্মশানঘাটসহ আশপাশের খালি জায়গায় বসবে পশুর হাট। ইজারাদার চেয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দরপত্র আহ্বানে মাত্র দুজন অংশ নেন। তবে শিডিউল কিনেছিলেন তিনজন। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারা পেয়েছেন মো. মইন উদ্দিন চিশতী। তিনি ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত টানা ছয়বার এই হাটের ইজারা পেয়েছেন তিনি। পোস্তগোলার মতোই ডিএসসিসির ৯টি অস্থায়ী পশুহাটের ইজারা পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। শিডিউল জমা না পড়ায় দুটি হাটের ইজারা এখনো হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিটি হাটের ইজারা সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে হচ্ছে। গত কয়েক বছরের মতো এবারও প্রভাব খাটিয়ে হাট দখলে নিয়েছেন সরকারি দলের প্রভাবশালীরা। অনেকে দরপত্র কিনলেও জমা দেওয়ার সাহস পাননি। তবে দক্ষিণ সিটির কর্মকর্তারা বলছেন, হাট ইজারার দরপত্রে যারা অংশ নেন, তাদের কাগজপত্রে রাজনৈতিক পরিচয় লেখা থাকে না। সর্বোচ্চ দরদাতাকেই ইজারা দেওয়া হয়। প্রতি বছরই হাটের মূল্য বাড়ছে। এদিকে, গত কয়েক বছর দেখা গেছে কিছু হাটের ক্ষেত্রে একই ব্যক্তি বারবার ইজারা পাচ্ছেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ডিএসসিসি এলাকায় পশুর হাটের ইজারাপ্রাপ্তদের তালিকায় দেখা গেছে, লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গায় পশুহাটের ইজারা পেয়েছেন মোহাম্মদ সালমান সেলিম আশিক। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি হাজী সেলিমের পুত্র। ঢাকা-৭ আসনের এমপি সোলায়মান সেলিম চারবার এ হাটের ইজারা পেয়েছিলেন। হাটটির সরকারি মূল্য ছিল ৫০ লাখ ২৯ হাজার টাকা। সালমান সেলিম ইজারা মূল্য দিয়েছেন ৬০ লাখ টাকা। যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজ-সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গার জন্য এ বছর তিনটি শিডিউল বিক্রি হলেও জমা দিয়েছেন শুধু আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান। তিনি স্থানীয় কাউন্সিলর, সংসদ সদস্য আর আওয়ামী লীগ নেতাদের সিন্ডিকেটের প্রতিনিধি। হাটটির সরকারি মূল্য ৪ কোটি ১৭ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। তিনি ইজারা মূল্য দিয়েছেনে ৪ কোটি ২১ লাখ টাকা। কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ড-সংলগ্ন খালি জায়গার হাটের ইজারা পেয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম। হাটের সরকারি মূল্য ৬৭ লাখ ৩১ হাজার টাকার বিপরীতে ইজারা হয়েছে ৬৮ লাখ টাকায়। এ হাটে ছয়টি শিডিউল বিক্রি হলেও জমা পড়েছে তিনটি। হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকায় পশুহাটের ইজারা পাচ্ছেন মুহাম্মদ আবুল হাসনাত। তিনি হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তিনটি দরপত্র বিক্রি হলেও জমা পড়েছে দুটি। হাটটির সরকারি মূল্য ৩ কোটি ৩১ লাখ। ইজারা হয়েছে ৬ কোটি ৬ লাখ টাকায়। ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকায় হাটের ইজারা পেয়েছেন ৪১ নম্বর ওয়ার্ড ইউনিট আওয়ামী লীগ সভাপতি আসফাক আজিম। তিনি ছাড়া আর কেউ শিডিউল ক্রয় করেননি। পুরান ঢাকার ৯ কাউন্সিলর আর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সিন্ডিকেটের প্রতিনিধি তিনি। প্রতি বছরের মতো এবারও এই সিন্ডিকেট নির্ধারণ করে দিয়েছে কে পশুর হাটের ইজারা নেবে। ধোলাইখাল ট্রাক স্ট্যান্ডের উন্মুক্ত জায়গায় হাটের ইজারা দেওয়া হলেও এর পরিধি রায়সাহেব বাজার, দয়াগঞ্জ, মুরগিটোলা থেকে লোহারপুল এলাকাও ছাড়িয়ে যায়, যা ৯ কাউন্সিলরের এলাকার সীমানার মধ্যে পড়ে। আগে দুটি হাটের ইজারা স্থানীয় কাউন্সিলররা ভাগাভাগি করে নিতেন। এখন এই ৯ কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা একটি হাট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ইজারা নেন। হাট ইজারার সঙ্গে আছেন স্থানীয় ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর ছেলে ইমতিয়াজ মন্নাফী, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রোকন উদ্দিন আহমেদ, ৪০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ, ৪১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজি সারোয়ার হোসেন, ৪২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ সেলিম, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফ হোসেন ছোটন, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদউল্লাহ মিনু এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। হাটটি ইজারার সরকারি দর ছিল ৩ কোটি ৯১ লাখ, ইজারা হয়েছে ৪ কোটি ৩ লাখ টাকায়। ৪৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বলেন, গত বছর আমি পশুর হাটের মধ্যে ছিলাম না। কিন্তু এ বছর ৯ কাউন্সিলর আর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মিলে হাট নিয়েছেন। ইজারাদার আমাদের ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সারোয়ার হোসেন আলোর বন্ধু। আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গায় হাটের ইজারা পেয়েছেন এস এম নেওয়াজ সোহাগ। তিনিও ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিতে যুক্ত। সোহাগ ছাড়া আরেকজন দরপত্র কিনলেও জমা দেননি। মেরাদিয়া বাজার-সংলগ্ন খালি জায়গার ইজারা পেয়েছেন খিলগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আবু সাঈদ। হাটটির সরকারি মূল্য ২ কোটি ৩৬ লাখ। ইজারা হয়েছে ৩ কোটি ৭১ লাখ টাকায়। এই হাটের ইজারা নিতে চারজন দরপত্র কিনলেও জমা দিয়েছেন দুজন। উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গায় হাটের ইজারা পেয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর হামিদুল হক। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। এই হাটটি সাত বছর ধরে শাহজাহানপুর থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল লতিফ ইজারা নেন। কিন্তু এ বছর তিনি হজে যাবেন বলে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে সাবেক কাউন্সিলরের নামে হাটের ইজারা নেওয়া হয়েছে। নামমাত্র দরপত্রে অংশ নেন আব্দুল লতিফ। তবে এই হাটটি বরাবরের মতো সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে নিশ্চিত করেছেন আব্দুল লতিফ। তিনি বলেন, হজে যাওয়ার কারণে এ বছর হাটটি নিজের নামে নেওয়া হয়নি। ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ডিএসসিসি ১১টি কোরবানির পশুর হাটের ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেয় গত ৪ এপ্রিল। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার প্রথম পর্যায়ের দর আহ্বান হয়েছিল। এতে ৯টি হাটের ইজারার উন্মুক্ত দরপত্র করা হয়। বাকি দুটি হাটের মধ্যে লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব-সংলগ্ন খালি জায়গাসহ কমলাপুর স্টেডিয়াম-সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গায় কেউ কোনো শিডিউল কেনেননি। তবে এ হাটটি বরাবরের মতো ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম ভাট্টি নিয়ন্ত্রণ করেন। গত বছরও প্রথম পর্যায়ে এই হাট ইজারা নিতে কেউ দরপত্র কেনেননি। আর আফতাবনগর খালি জায়গায় দুটি শিডিউল বিক্রি হলেও কেউ জমা দেননি। আগামী ১৩ ও ২৮ মে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের দরপত্র আহ্বান করা হবে। কোরবানি পশুর হাট বরাবরের মতো সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে কি না—এমন প্রশ্নে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (উপসচিব) কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী কালবেলাকে বলেন, ‘দরপত্র আবেদন প্রক্রিয়া উন্মুক্ত করে দিয়েছি। শিডিউল বিক্রি হয়েছে সংখ্যায় বেশি। তবে সবাই দরপত্র জমা দেননি। এটি প্রথম পর্যায়। আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখবে। প্রয়োজনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়েও দরপত্র নেওয়া হবে।’
০৪ মে, ২০২৪

রাজধানীর যে ২০ স্থানে বসছে পশুর হাট
পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি দুমাসেরও কম সময়। আগামী ১৬ বা ১৭ জুন ঈদুল আজহা উদযাপন করবে বাংলাদেশের মুসলমানরা। ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে বসবে অস্থায়ী পশুর হাট। এবার রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে বসবে ২০টি বৈধ অস্থায়ী পশুর হাট। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় বসবে ১১টি, আর উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় বসতে যাচ্ছে ৯টি। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গাবতলী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সারুলিয়া এই ২টি স্থায়ী হাটেও কেনা-বেচা হবে কোরবানির পশু। সব মিলিয়ে কোরবানির ঈদের আগে রাজধানীতে পশুর হাটকেন্দ্রিক একটি উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।  দক্ষিণ সিটির ১১ হাট আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ১১টি অস্থায়ী হাট বসাতে ইজারা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ ছাড়া সারা বছরজুড়েই সারুলিয়ায় হাট বসে দক্ষিণ সিটি এলাকায়। এটি তাদের স্থায়ী হাট। এবারের ১১টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে আছে- উত্তর শাহজানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার মৈত্রী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, পোস্তাগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গাসহ কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আফতাব নগর (ইস্টার্ন হাউজিং) ব্লক ই, এফ, জি, এইচ, সেকশন ১ ও ২ এর খালি জায়গা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা এবং শ্যামপুর কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গা। উত্তর সিটিতে হাট বসবে ৯টি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন গাবতলী স্থায়ী হাট ছাড়াও এবার আরও ৯টি অস্থায়ী হাট বসাবে সংস্থাটি। সে লক্ষ্যে তারা হাটগুলোর ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এবারের অস্থায়ী হাটগুলো মধ্যে রয়েছে- ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গা (ভাটারা সুতিভোলা), কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তরা দিয়াবাড়ী ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টর বউ বাজার এলাকার খালি জায়গা, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাবনগর ব্লক ই, এফ, জি, এইচ, এল, এম, এন এবং আশপাশের জায়গা, মিরপুর সেকশন ৬ ওয়ার্ড নম্বর ৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গা, মোহাম্মাদপুর বছিলার ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউউট সংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচকুড়া বেপারীপাড়া রাহমান নগর আবাসিক প্রকল্পের জায়গা এবং খিলক্ষেত থানার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের মস্তুল চেকপোস্ট সংলগ্ন পাড়ার খালি জায়গা।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

কাল থেকে বসছে রাজধানীর পশুর হাট
রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় আগামীকাল রোববার থেকে বসছে ২০টি কোরবানির পশুর হাট। এর মধ্যে ১৮টি অস্থায়ী এবং গাবতলী ও ডেমরার সারুলিয়ায় দুটি স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে। এসব হাটে পশু কিনতে যাবেন হাজারো মানুষ। লেনদেন হবে কোটি কোটি টাকা। হাট ঘিরে সক্রিয় হতে পারে চুরি, ছিনতাই ও অজ্ঞান পার্টি চক্র। এজন্য পশুর হাটে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় থাকছে পুলিশ-র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নানাবেশে তারা পশুর হাটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, যে কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে ইজারাদারদের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক করেছে ডিএমপি। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা ও হাটের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডিএমপির এক কর্মকর্তা জানান, এবার হাটে সাদা পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করবেন। র‌্যাব জানিয়েছে, হাটে থাকবেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কেউ পশু মোটাতাজাকরণে ওষুধ ব্যবহার করলে তা ঠেকাতে থাকবেন পশু চিকিৎসকও। ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি হাটে কন্ট্রোল রুম, ওয়াচ টাওয়ার এবং সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম থেকে সিসিটিভি ফুটেজ মনিটরিং করা হবে। এ ছাড়া জাল টাকা শনাক্তের জন্য ইলেকট্রিক মেশিন ও প্রজেক্টর থাকবে। প্রজেক্টরের মাধ্যমে জাল টাকা ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা রোধে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করা হবে নিয়মিত। ওয়াচ টাওয়ার থেকে দুরবিন হাতে হাটের সার্বক্ষণিক চিত্র পর্যবেক্ষণ করবেন পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়া হাট ও হাটের আশপাশে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পোশাকধারী ও সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। সর্বাত্মক নিরাপত্তা ব্যবসায়ীদের পশু বিক্রির টাকা বহনে ডিএমপির এসকর্ট ব্যবস্থা থাকবে। হাটের কাছাকাছি ব্যাংক ও বুথগুলোতেও অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, ইজারাদারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হাট শুরুর আগে গরু ওঠানো যাবে না। হাটের আশপাশে ব্যাপারীদের জন্য নির্দিষ্ট খাবার হোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। ভেতরে কোনো ধরনের ভ্রাম্যমাণ দোকান থাকতে দেওয়া যাবে না। পশুবাহী কোনো ট্রাক থেকে কোথাও গরু নামাতে বাধ্য করা যাবে না, ব্যবসায়ীকে তার পছন্দমতো হাটে গরু নিয়ে যেতে দিতে হবে। পুলিশ সূত্র জানায়, হাটগুলোতে হাসিল নিয়ে প্রতিবছর ঝামেলা হয়। তবে এবার নির্ধারিত হাসিলের তালিকা বড় করে ব্যানারে প্রকাশ্য স্থানে লাগতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে হাটের নির্দিষ্ট জায়গার বাইরে গরু না রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এদিকে রাজধানীসহ সারা দেশে পশুর হাটের নিরাপত্তায় বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এরই মধ্যে র‌্যাব স্মার্ট পেট্রোলিং টিমের কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে, অস্থায়ী ক্যাম্প ও চেকপোস্ট স্থাপন করা হচ্ছে। মহাসড়কে পশুবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি ও ডাকাতিরোধে এবং গরুর হাটে চাঁদাবাজি, ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টি প্রতিরোধে সাদা পোশাকে র‌্যাবের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্থায়ী পশুর হাট গাবতলী থেকে অজ্ঞান পার্টির সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন কালবেলাকে বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও র্যাব হাটকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। সব হাটে ওয়াচ টাওয়ার ও অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হয়েছে। পশুর হাটে নগদ টাকার লেনদেন করা হয়, তাই ক্যাম্পগুলোতে জাল টাকা শনাক্তের মেশিন থাকবে। হাটগুলোকে কেন্দ্র করে অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা সক্রিয় হয়, এ ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এন্ট্রি পয়েন্ট, রেলপথ, নৌপথ ও সড়কপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে রয়েছেন র্যাব সদস্যরা। ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) জাফর হোসেন বলেন, প্রতিটি হাটে পুলিশের কন্ট্রোল-রুম ও ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে। কিছু সময় পরপর মাইকের মাধ্যমে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সতর্ক করা হবে। এ ছাড়া ইজারাদাররা যাতে অতিরিক্ত হাসিল না নেন, সেদিকে লক্ষ রাখা হবে। কোনোভাবেই হাটের জন্য নির্ধারিত জায়গার বাইরে গিয়ে গরু রাখা যাবে না। প্রতিটি হাটে ব্যাপারীদের জন্য নির্দিষ্ট খাবার হোটেলের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে ইজারাদারদের। এতে তারা প্রতারকের হাতে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।
২৪ জুন, ২০২৩
X