শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
কবি নজরুল কলেজে ফরিদপুর জেলা ছাত্রকল্যাণের নতুন কমিটি
রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত ফরিদপুর জেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন ফরিদপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে ) সকালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রকল্যাণের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন টুটুল, কায়জার তুহিন, মো. নাসির মোল্লা, সাইফুর রহমান মৃধা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এক বছরের জন্য এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মোজাফফর ইসলাম ইমন সভাপতি এবং মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মারজিউর রহমান মিতুল (রেহান) সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি দ্রুতই প্রকাশ করা হবে জানিয়ে ফরিদপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের উপদেষ্টারা বলেন, আমাদের জেলার ছেলে মেয়েদের পিছিয়ে পড়ার কোনো সুযোগ নেই। এ কমিটির মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে ভাতৃত্ববোধ ও আস্থা আরও দৃঢ় হবে। একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের দক্ষ নাগরিক হিসেবে তৈরি করবে। নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মারজিউর রহমান মিতুল বলেন, আমরা আশা করব এ কমিটির মধ্য দিয়ে ফরিদপুর জেলার সকল শিক্ষার্থী একত্র হবেন। এতে করে আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ আরও বৃদ্ধি পাবে এবং নির্ভরতার একটি জায়গা তৈরি হবে।
০২ মে, ২০২৪

ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবির, সম্পাদক পিকুল
ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির বার্ষিক নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে কবির-পিকুল-শিপন পরিষদ বিজয়ী হয়েছেন। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিরতিহীন ভোটগ্রহণ হয়। পৃথক চারটি বুথে ৯৭ জন ভোটারের মধ্যে ৯৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোটগণনা শেষে সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার। প্রেস ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি বার্ষিক নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এম এ সালাম। সহকারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. আসাদুল হক আসাদ ও মঞ্জুয়ারা স্বপ্না। নির্বাচনে সভাপতি পদে ৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন দৈনিক নাগরিক বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দৈনিক ভোরের রানারের সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান হাবিব পেয়েছেন ৩৯ ভোট। সহ-সভাপতি পদে ৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন দৈনিক বাংলার মাহবুব হোসেন পিয়াল, ৫০ ভোট পেয়ে এন টিভির সঞ্জিব দাস ও ৪৮ ভোট পেয়ে থেকে টিভির তরিকুল ইসলাম হিমেল নির্বাচিত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ৫১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ডিবিসি টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মাহবুবুল ইসলাম পিকুল। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাইফুল ইসলাম অহিদ পেয়েছেন ৩৯ ভোট। সহসাধারণ সম্পাদক পদে ৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন এখন টেলিভিশনের শেখ মফিজুর রহমান শিপন। অর্থ সম্পাদক পদে ৫৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন এশিয়া বানীর খন্দকার আলী আরশাদ কাজল। দপ্তর সম্পাদক পদে ৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের এস এম মাসুদুর রহমান তরুন। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বাংলার চোখ এর আবিদুর রহমান নিপু। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ভোরের কাগজের বিভাষ দত্ত। তথ্য-প্রযুক্তি ও পাঠাগার সম্পাদক পদে ৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আজকের সারাদেশ এর মো. মুইজ্জুর রহমান রবি। ক্রীড়া সম্পাদক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন কানাইপুর বার্তার মো. জাহিদুল ইসলাম। এছাড়াও ৫৬ ভোট পেয়ে মানিক কুমার দাস (সময়ের প্রত্যাশা), ৫৪ ভোট পেয়ে বি.কে সিকদার সজল (সময় টিভি), ৫৩ ভোট পেয়ে সিরাজুল ইসলাম (এশিয়ান টিভি), ৫২ ভোট পেয়ে নুরুল ইসলাম আনজু (দৈনিক খবরপত্র), ৫১ ভোট পেয়ে রুহুল আমিন (দৈনিক প্রভাতি), সেবানন্দ বিশ্বাস (ভোরের রানার) ৪৮ ভোট পেয়ে কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। হাবিব-সাইফুল পরিষদ থেকে সহ-সভাপতি পদে যমুনা টিভির তরিকুল ইসলাম হিমেল এবং কার্যনির্বাহী সদস্য পদে দৈনিক ভোরের রানারের সেবানন্দ দাস নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র‍্যাব, ডিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিয়োজিত ছিলেন।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ফরিদপুরে অধ্যক্ষের অপসারণের ‌দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ফরিদপুর ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলামের দ্রুত অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে ফরিদপুর প্রেস ক্লাব ‌ চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রতিষ্ঠানের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিসাদ রহমানের সভাপতিত্বে ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির ক্যাম্পাস হতে ফরিদপুর প্রেস ক্লাব পর্যন্ত এ বিক্ষোভ মিছিল ও মিছিল পরবর্তীতে প্রেস ক্লাবে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।  এ সময় বক্তব্য রাখেন ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান, ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থী হামিম প্রধান, রাহি সরকার, দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী জীবন দাস, তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী অহিদুল ইসলাম, প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী  তুরাগ আহনাফ প্রমুখ। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য ‌শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।  বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, অধ্যক্ষের অনিয়ম, দুনীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে। অবিলম্বে অধ্যক্ষের অপসারণ দ্রুত বাস্তবায়ন পূর্বক যোগ্য নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি জানান।
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

শেখ হাসিনাকে বরণে প্রস্তুত ফরিদপুর
নির্বাচনী জনসভায় অংশ নিতে আজ ফরিদপুর যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে বক্তব্য দেবেন তিনি। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের মাঠ জনসভা উপলক্ষে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইসতিয়াক আরিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনে ফরিদপুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। জনসভাস্থলে নারী ও পুরুদের জন্য আলাদা বসার জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, ভিআইপি ও সাধারণ দর্শক শ্রোতার মাঠে প্রবেশের পথ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি শহরজুড়ে শুরু হয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। সমাবেশ মাঠসংলগ্ন এলাকাজুড়ে সড়কের পাশের গাছের নিচের অংশ সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য রঙ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সভায় সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম হক। এ সভায় ফরিদপুরের বাকি তিনটি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা উপস্থিত থাকবেন।
০২ জানুয়ারি, ২০২৪

শেখ হাসিনাকে বরণে প্রস্তুত ফরিদপুর
নির্বাচনী জনসভায় অংশ নিতে আজ ফরিদপুর যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে বক্তব্য দেবেন তিনি। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের মাঠ জনসভা উপলক্ষে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইসতিয়াক আরিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনে ফরিদপুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দ বন্যা বইছে। জনসভাস্থলে নারী ও পুরুদের জন্য আলাদা বসার জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, ভিআইপি ও সাধারণ দর্শক শ্রোতার মাঠে প্রবেশের পথ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি শহরজুড়ে শুরু হয়েছে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা। সমাবেশ মাঠ সংলগ্ন এলাকাজুড়ে সড়কের পাশের গাছের নিচের অংশ সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য রঙ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সভায় সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম হক। এ সভায় ফরিদপুরের বাকি তিনটি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা উপস্থিত থাকবেন।
০২ জানুয়ারি, ২০২৪

আজ ফরিদপুর যাচ্ছেন শেখ হাসিনা
নির্বাচনী জনসভায় অংশ নিতে আজ ফরিদপুর যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে বক্তব্য দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে প্রস্তুত করা হচ্ছে রাজেন্দ্র কলেজ মাঠ। সভামঞ্চের রং করার কাজ চলছে জোরেশোরে। এ ছাড়া শহরের রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। এ ছাড়াও চলছে রঙের কাজ। ফরিদপুর শহরে বিরাজ করছে সাজসাজ রব। ফরিদপুর আওয়ামী লীগ নানা প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতিমধ্যে দলটির সহযোগী সংগঠনগুলো প্রস্তুতি সভা করেছে। জেলার বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় মাইকে আওয়ামী লীগের উন্নয়নের প্রচার করা হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন সড়কে বসানো হয়েছে তোরণ। ব্যানার-ফেস্টুনে পাল্টে গেছে জেলার চিত্র। সর্বশেষ গত ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ ফরিদপুরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন বিকেলে তিনি এই রাজেন্দ্র কলেজ মাঠেই বক্তব্য দিয়েছিলেন। দীর্ঘ ছয় বছর নয় মাস ২ দিন পর মঙ্গলবার ফরিদপুর শহরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
০২ জানুয়ারি, ২০২৪

ফরিদপুর সদরে স্বতন্ত্রের শান্তির বার্তায় পাল্টাতে পারে ভোটের অঙ্ক
ফরিদপুর সদরে নানা পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, গত কয়েক বছরের উন্নয়নে তারা তৃপ্ত। এই উন্নয়নের মধ্যেই তারা দেখেছেন, ক্ষমতাসীন দলের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে সহোদর বরকত-রুবেলের দাপট আর সমালোচনায় ভরা কর্মকাণ্ড। এবারের জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা চাচ্ছেন শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল ফরিদপুর। ভীতিহীন শহরের চাহিদা এলাকার জনগণের। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ফরিদপুর সদর (ফরিদপুর-৩) আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটারের মন জোগাতে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। এই আসনে এবার পাঁচ প্রার্থী থাকলেও মূল লড়াই হচ্ছে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শামীম হক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের আব্দুল কাদের আজাদের (এ. কে. আজাদ) মধ্যে। শামীম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং আজাদ উপদেষ্টা সদস্য। দুদিন ধরে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই প্রার্থীর গণসংযোগ কার্যক্রমের সঙ্গে থেকে দেখা গেছে, অন্যান্য নির্বাচনী এলাকার মতো তারা রাস্তাঘাট বা এ ধরনের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন না। তারা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন শান্তিপূর্ণ ফরিদপুরের। চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলছেন প্রার্থীরা। এরই মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ. কে. আজাদ জেলার তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিয়ে লোকজনের মধ্যে সাড়া ফেলেছেন। দেশের অন্যতম শীর্ষ এই শিল্পপতি বলছেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগেও তিনি তার প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফরিদপুরের শত শত মানুষের কাজের ব্যবস্থা করেছেন। কর্মী হিসেবে দক্ষ করে গড়ে তুলতে এরই মধ্যে গেরদা ইউনিয়নে প্রশিক্ষণ সেন্টার গড়ে তুলেছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে এ ধরনের প্রশিক্ষণ সেন্টার গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি চান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঘোষিত ইশতেহারে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে। তিনি আরও বলেছেন, নির্বাচনে এসে তার এসব উদ্যোগ বাধার মুখে পড়ছে। নৌকার প্রার্থী শামীমের সমর্থকরা এরই মধ্যে হামলা চালিয়ে গেরদা ইউনিয়নে ট্রেনিং সেন্টার ভেঙে দিয়েছে। সেখানে এক শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়েছে তার লোকজন। প্রতিদিনই শামীমের সমর্থকরা তার কর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, ভয় দেখাচ্ছে এবং নির্বাচনী ক্যাম্প ভেঙে ফেলছে। এতকিছুর পরও তিনি শান্তির বার্তা দিচ্ছেন। ফরিদপুরের মানুষকে শান্তিতে রাখতে ঝুঁকি নিয়ে নির্বাচনী কাজ করছেন। ফরিদপুর সদরের বিভিন্ন এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী এ. কে. আজাদের কর্মসংস্থানের জন্য এলাকায় শিল্পকারখানা গড়ার প্রতিশ্রুতি তারা ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন। নির্বাচনের মাঠে প্রতিদিন যেভাবে ঈগল প্রতীকের কর্মীরা হামলার শিকার হচ্ছেন, তার বিপরীতে এই প্রতীকের প্রার্থী এসব মামলায় দায়ীদের বিচারের ভার ভোটারদের হাতেই তুলে দিচ্ছেন। নিজের কর্মীদের বিশৃঙ্খলায় না জড়িয়ে প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে চাচ্ছেন তিনি। তার এমন ভাবমূর্তি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন লোকজন। অম্বিকাপুর এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী মোজাম্মেল হক বলছিলেন, নানা কারণেই তারা শান্তি চান। একজন সজ্জন মানুষ হিসেবে এ. কে. আজাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা ও শেখ রাসেল পৌর পার্ক এলাকায় কথা হয় গাড়ির যন্ত্রাংশের কয়েক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তারা বলছিলেন, নৌকার প্রার্থী বহু বছর দেশের বাইরে ছিলেন। নির্বাচনে তার সঙ্গে দলীয় লোকজন থাকলেও জনসম্পৃক্ততা কম। তা ছাড়া বিভিন্ন সময়ে দলীয় পদ ব্যবহার করে নানা কর্মকাণ্ড হয়েছে এখানে। এবারের ভোটে এসব বিষয়ও তারা মাথায় রাখছেন। ব্যবসায়ীরা সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ মুক্ত ফরিদপুর চান। ফরিদপুরে নাগরিক সংগঠন নাগরিক মঞ্চের সভাপতি আওলাদ হোসেন বাবর বলেন, এখানকার মানুষ শান্তিপ্রিয়। উন্নয়নের সঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চান তারা। ভোটের মাঠে কোনো ধরনের সংঘাত চায় না। যিনি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ আর প্রভাবমুক্ত ফরিদপুর দিতে পারবে, জনতা তাকেই ভোটের মাধ্যমে বেছে নেবে। সে ক্ষেত্রে ভোট দানের পরিবেশও থাকতে হবে। ফলে বড় প্রভাবক হবে বিএনপির ভোট: বিএনপি এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়নি বরং ভোট ঠেকাতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ফরিদপুরে ভিন্ন চিত্র। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের পদধারীরা চুপ থাকলেও দলটির সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা যদি ভোটকেন্দ্রে যান, তাহলে এই আসনে তা হবে নৌকা ও ঈগলের ফল নির্ধারণে অন্যতম ফ্যাক্টর। বৃহত্তরর ফরিদপুরের মধ্যে এই আসনে বরাবরই বিএনপির একটি ভোটব্যাংক রয়েছে। সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন নৌকা প্রতীকে টানা তিনবারের এমপি হলেও ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ধানের শীষের চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ ৬২ হাজার ভোট পেয়ে অর্ধেক ব্যবধানে নৌকার প্রার্থী ইমাম উদ্দিন আহম্মদকে হারিয়ে ছিলেন। ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার খন্দকার মোশাররফকে ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছিলেন চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের এই প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন প্রায় সোয়া লাখ ভোট পেয়ে। পুরোনো হিসাব দিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির সমর্থকরা যার সঙ্গে থাকবেন, জয়ের পাল্লা তার দিকেই যাবে। জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য না মিললেও পৌরসভা বিএনপি ও ওয়ার্ড বিএনপির একাধিক পদধারী নেতা কালবেলাকে জানান, তারা ভোটকেন্দ্রে না গেলেও সমর্থকদের অনেকেই হয়তো যাবেন। সে আভাস মিলেছে দলটির তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেও। পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির পদধারী এক নেতা বলেন, পরিবেশ ভালো মনে হলে ভোট দিতে যাবেন। তবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে দেবেন না। পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন: গতকাল আওয়ামী লীগের ও স্বতন্ত্র প্রার্থী পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ. কে. আজাদ শহরের ঝিলটুলীর বাসভবনে এবং শামীম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেছেন, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের হামলাসহ চিহ্নিত অস্ত্রধারী-সন্ত্রাসীদের নির্বাচনের মাঠে নামিয়ে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছেন নৌকার প্রার্থী। ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে শামীম হকই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছেন। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চান। শামীম বিএনপি-জামায়াতের মতো নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে চাচ্ছেন। এ পর্যন্ত যে ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছেন, তাতে তার প্রার্থিতা থাকা উচিত নয়। আজকে ফরিদপুরে একটা ভয়ার্ত পরিবেশ। শামীমের পক্ষে কাজ করছে এলাকার শীর্ষ চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফারুক হোসেন, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাস্টারসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। অন্যদিকে শামীম পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মিথ্যা মামলা, নির্বাচন বানচালের জন্য বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী নিয়ে মাঠে নেমেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচন বানচাল করতে নানা ধরনের পাঁয়তারা করছে তারা। নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী চান আমি যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারি। তাই আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, পৌর মেয়র অমিতাভ বোসসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

ফরিদপুর সদরে জনপ্রিয়তা বনাম পেশিশক্তির লড়াই
ঢাকা থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপে ফরিদপুর জেলা শহরের পাশে রেলস্টেশনে নেমেই নির্বাচনী উত্তাপটা বোঝা গেল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সারি সারি পোস্টার শোভা পাচ্ছিল রাস্তার দুই পাশে। স্টেশন থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় চলতে চলতে চালকের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। শহরের নির্বাচনী হালচাল জানতে চাইলে চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, কয়েকজন প্রার্থী থাকলেও এখানে (ফরিদপুর-৩ আসনে) জনপ্রিয় আর ক্ষমতাবান—দুই প্রার্থীর লড়াইটা জমে উঠেছে। পেশিশক্তিও রয়েছে এখানে। রিকশা থেকে নেমে কে জনপ্রিয় আর কে ক্ষমতাবান প্রার্থী, সেই তথ্যানুসন্ধান চলতে থাকল ফরিদপুর শহর ও আশপাশের এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে। লোকজন বলছিলেন, ক্ষমতার দিক থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শামীম হক এগিয়ে। তবে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে এগিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কাদের আজাদ (এ. কে. আজাদ)। তিনি এ আসনে ঈগল প্রতীকে নির্বাচন করছেন। শহরের কমলাপুর অনাথের মোড়ে কথা হয় দোকানি শমসের উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ফরিদপুরে এ. কে. আজাদ সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন সময়ে এলাকার লোকজনকে নানাভাবে সহায়তা করেছেন, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। সে তুলনায় নৌকার প্রার্থীর জনসম্পৃক্ততা কম। তবে তার দলীয় ক্ষমতা আছে। কী ক্ষমতা জানতে চাইলে শমসের উদ্দিন তা পরিষ্কার করলেন না। শুধু বললেন, খোঁজ নিয়ে দেখেন, প্রতিদিনই হামলার শিকার হচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আজাদের লোকজন। তার নির্বাচনী ক্যাম্পও ভেঙে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। ফরিদপুরের একটি কলেজের শিক্ষক কালবেলাকে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হওয়ায় শামীম হক ক্ষমতাবান। প্রকাশ্যে তার সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের পদধারী নেতারা রয়েছেন। তারা প্রভাব নিয়ে নির্বাচনী মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে না পারলেও ভেতরের চিত্র ভিন্ন। তার মতে, ফরিদপুরে এমন ক্ষমতার দাপট আগেও ছিল। মানুষ তা ভালোভাবে নেয়নি। এবার লোকজন একটা আশ্বাস পেয়েছে, ভোট দিতে পারবে। সেই সুযোগটা নিতে ভোটাররাও প্রস্তুত। মূল শহরের কিছুটা বাইরে অম্বিকাপুর এলাকা। ওই এলাকায় কথা হয় ব্যবসায়ী এখলাস উদ্দিনসহ নানা পেশার কয়েকজনের সঙ্গে। তারা বলেন, নৌকার প্রার্থী আর স্বতন্ত্র ঈগলের প্রার্থীর সঙ্গে লড়াইটা বেশ জমে উঠেছে। নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাই সবাই প্রকাশ্যে তার সঙ্গে রয়েছেন। নিজেদের প্রভাব, বলয় আর সামর্থ্য দেখাতে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও মাঠ গরম রাখছেন। এতে প্রায় প্রতিদিনই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর ছোটখাটো হামলা, নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটছে। কোথাও কোথাও স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন তা প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষ বেধে যাচ্ছে। এই আসনে প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঝামেলা হচ্ছে নৌকা আর ঈগল প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে ভোটাররাও রয়েছেন অজানা আতঙ্কে। গতকাল মঙ্গলবার ফরিদপুর শহরের তেঁতুলতলা, খাবাসপুর, আলীপুর, টেপাখোলা, পুরান বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘুরে লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আতঙ্কের আভাস মিলেছে। তারা বলছেন, পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। গতকাল নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জনসংযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ. কে. আজাদ। পরে তিনি পথসভায় বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে বলা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং দলীয় প্রার্থী সমান অধিকার পাবে। পার্টির লোকজনও তার ইচ্ছেমতো নৌকার পক্ষে বা স্বতন্ত্রের পক্ষে কাজ করতে পারে দলীয় বাধা নেই। এই আশ্বাসে নির্বাচনে এসেছি। কিন্তু অনেকেই এটা সহ্য করতে পারছেন না। নৌকার প্রার্থীর নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, তারা এমন কিছু লোককে, সন্ত্রাসীকে এখানে সম্পৃক্ত করেছে, তাদের নাম বলতে আমি নিজেও ভয় পাই। সন্ত্রাসীরা এখন আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করছে। এ. কে. আজাদের সমর্থকরা জানান, এ পর্যন্ত ১৮ হামলা ও হুমকির ঘটনায় ১৩টি সাধারণ ডায়েরি করেছেন তারা। মামলা হয়েছে পাঁচটি। পুলিশ কিছু চুনোপুঁটিকে গ্রেপ্তার করলেও চিহ্নিতরা প্রকাশ্যেই মিছিল-মিটিং করে চলেছে। গতকালও পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা হয়। কুপিয়ে ঈগল প্রতীকের পাঁচ সমর্থককে আহত করা হয়। তাদের মধ্যে আবদুর রহমান নামে একজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের অভিযোগ, ঈগল ঠেকাতে নৌকার সমর্থকরা চোরাগোপ্তা হামলা শুরু করেছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের বক্তব্য জানতে তাকে ফোন দেওয়া হয়। তবে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অবশ্য জেলা আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক ও শামীম হকের সমর্থক আলী আজগর মানিক কালবেলাকে বলেন, শুরু থেকেই নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্রের এ. কে. আজাদ নানা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আসছেন। বাস্তবতা হচ্ছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনই নৌকার পোস্টার ছিঁড়ছে এবং ঝামেলার সৃষ্টি করছে। তারা কোথাও অভিযোগ না দেওয়ায় বিষয়গুলো কেউ জানতে পারছে না। অবশ্য ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান কালবেলাকে বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সব সময় তৎপর। অভিযোগ ও মামলা অনুযায়ী অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, ফরিদপুর-৩ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৪ হাজার ৩১১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২ হাজার ৭৭৫ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১ হাজার ৫৩৩। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন তিনজন। এই আসনে নৌকা ও স্বতন্ত্রের ঈগল প্রতীক ছাড়াও জাতীয় পার্টিসহ আরও তিন প্রার্থী রয়েছেন। যদিও তারা আলোচনায় নেই। এই আসনে ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ এমপি ছিলেন। এরপর নবম সংসদ থেকে বর্তমান একাদশ সংসদ পর্যন্ত এমপি রয়েছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

ফরিদপুর ডিসি অফিসের চুরি হওয়া ১১টি ল্যাপটপ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫
ফরিদপুরে ডিসি অফিসের চুরি হওয়া ১২টি ল্যাপটপের মধ্যে ১১টি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় চুরি ও চোরাই ল্যাপটপ কেনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া জব্দ করা হয়েছে একটি মোবাইল ফোন। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ সুপার বলেন, গত রোববার রাতে ডিসি অফিসের রেকর্ড রুমে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়। এ মামলা হওয়ার একদিনের মধ্যে রেকর্ড রুম থেকে চুরি হওয়া ১১টি ল্যাপটপসহ চোরচক্রের সদস্য ও ক্রেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলো- ফরিদপুর শহরের চর কমলাপুর এলাকার সুলতান মুন্সী (২৬), শহরের পূর্ব  খাবাসপুর মহল্লার সহিদুল শেখ (২২) ও শহরের লক্ষ্মীপুর মহল্লার পারভেজ শেখ (২২) এবং চোরাই ল্যাপটপ ক্রেতা ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার বিনোকদিয়া এলাকার বাসিন্দা শহরের ধানসিঁড়ি হোটেলের ওয়েটার মো. লিয়ান শেখ (৩০) ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট এলাকার উত্তর দৌলতদিয়া এলাকার মীম খান (৩০)। অভিযানের বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, প্রথমে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের লক্ষ্মীপুর মহল্লার পারভেজ খানের বাসা থেকে পারভেজ খান ও সুলতান মুন্সীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। পরে সুলতানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শহরের চরকমলাপুর মহল্লায় তার বাড়ি থেকে চারটি ল্যাপটপ, চোরাই মুঠোফোন, চোরাইকাজে ব্যবহৃত একটি সেলাই রেঞ্জ, একটি লোহার হাতুড়ি ও একটি লোহার রড উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সহিদুলকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। পরে শহরের আলীপুর হতে লিয়নকে গ্রেপ্তার করা হয় ও তিনটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। এরপর দুটি ল্যাপটপসহ শামীমকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সুপার জানান, এ ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় জড়িত তিন সদস্য মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী। মাদকের টাকা সংগ্রহ করার জন্যই তারা চুরির পথ বেছে নেন। এর মধ্যে সুলতান মুন্সীর নামে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় পাঁচটি এবং পারভেজ শেখের নামে ১২টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার বেশির ভাগই মাদক সংক্রান্ত। প্রসঙ্গত, রোববার (১৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১২টায় রেকর্ড রুমের দরজার তালা ও দরজা সেলাই রেঞ্জ, লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে রুমের ভেতরে ঢুকে ল্যাপটপ ও মোবাইল চুরি করে তারা। এ ব্যাপারে ফরিদপুরের রেকর্ড কিপার মো. আবু বকর সিদ্দীক (৫২) বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
২২ ডিসেম্বর, ২০২৩

নাব্য সংকটে অচলাবস্থার পথে ফরিদপুর নদীবন্দর
পদ্মা নদীতে নাব্যতা সংকটের কারণে ডুবোচরে নৌযান আটকে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে ফরিদপুর নদীবন্দর ব্যবহারকারীরা। অনতিবিলম্বে এ নৌবন্দরে প্রবেশের চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে ড্রেজিং না করা হলে বন্দরটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে জাহাজ কম আসায় রাজস্বও করতে শুরু করেছে বন্দরের। যদিও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার। মেসার্স মুজিবুর রহমান এর প্রতিনিধি মো. আলাউদ্দিন শেখ, ঠিকাদার মো. ওয়াহিদসহ ব্যবসায়ীরা জানান, ফরিদপুরের একমাত্র নদীবন্দরটি দিয়ে চাউল, গম, সিমেন্ট, সিলেকশন বালিসহ প্রায় ৪০ ধরনের পণ্যসামগ্রী আনা-নেওয়া করা হয়। চলতি শুকনো মৌসুমের শুরুতেই গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি অস্বাভাবিভাবে শুকিয়ে যাওয়ায় বড় বড় জাহাজগুলো বন্দর পর্যন্ত আসতে পারছে না। এতে সংকটে পড়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।  নুর ফার্মা জাহাজের মাস্টার মো. সাদেক মোল্লা, তানিসা জাহাজের মাস্টার মো. মিন্টু, জাহাজ চালক মো. ইকরামসহ বন্দর ব্যবহারকারী জাহাজের অন্যান্য নাবিক-শ্রমিকরা জানান, একটি জাহাজ স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পানির ১০ থেকে ১২ ফুট গভীরতা প্রয়েজন হলেও এই চ্যানেলের কোথাও কোথাও তা চার থেকে ছয় ফুটে নেমে এসেছে, ফলে বড় জাহাজগুলো ঘাটে আসতে পারছে না। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। দিনের পর দিন নদীর মধ্যে জাহাজ নোঙর করে রাখতে হচ্ছে, এতে সময় ব্যয় হচ্ছে কয়েকগুণ। এই বন্দরে পণ্য খালাসে কাজ করেন সহস্রাধিক শ্রমিক। শ্রমিক সর্দার মো. রঘু সর্দার, ট্রাক চালক মহিদসহ শ্রমিকরা জানান, বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে পথে বসতে হবে তাদের। এ ছাড়া জাহাজগুলো ঘাটে ভিড়তে না পারায় চালকসহ অন্যদেরও ব্যবসায়ীকভাবেও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে মনে করেন তারা।   ঘাটসংশ্লিষ্ট ডিক্রির চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মেহেদী হাসান মিন্টু পকির জানান, এরই মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হলেও অদ্যবদি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অবিলম্বে ড্রেজিং কাজ শুরু না হলে কিছু দিনের মধ্যেই বন্দর অচল হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় তারা। তারা জানান, এরই মধ্যে নিয়মিত আদায়ের রাজস্বও কমতে শুরু করেছে বন্দরটির। যদিও দ্রততম সময়ের মধ্যে এ অবস্থা নিরসনে আশ্বাস দিয়েছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহ্সান তালুকদার। তিনি জানান, এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। শিগগিরই ড্রেজিংয়ের কাজ শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।  তিনি আরও জানান, খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি এ বন্দর দিয় বিপুল পরিমাণ নির্মাণসামগ্রী আনা হয়, সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করানো যায়। উল্লেখ্য, পদ্মা নদীর ফরিদপুরের সিএ্যান্ডবি ঘাটকে ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট ‘ফরিদপুর নদী বন্দর’ ঘোষণা করা হয়। ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুর নদী বন্দর হিসেবে ইজারা প্রদান করা হয়।
৩০ নভেম্বর, ২০২৩
X