কুয়াকাটায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে আহত ১১
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ১১ জন আহত হয়েছেন।  রোববার (৫ মে) রাত ১০টার দিকে কুয়াকাটার তুলাতুলির বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আহতদের মধ্যে সাতজনকে কুয়াকাটা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।   আহতদের মধ্যে কুয়াকাটা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মোশাররফ আকন (৪৭), আমির আকন (৪৪), হাসান আকন (১৮), জাহিন আকন (২৪), সুমি বেগম (৩৫), চানবরু বিবি (৬৭) ও হ্যাপি বেগম (৪০)।  এ ছাড়া গুরুতর আহতরা হলেন, জাহিদুল ইসলাম খান (২৫), মনিরুল ইসলাম খান (৩২), আবুল বাশার (২৫) ও সালমান (২৩)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা সংলগ্ন আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য আবু হানিফ খান গংয়ের সঙ্গে তুলাতলী এলাকার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারেফ আকন গংয়ের দীর্ঘদিন জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। শনিবার রাত ১০টার দিকে তুলাতুলি এলাকায় বিরোধীয় জমি নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হয়েছে।  এ বিষয়ে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদ দুজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৬ মে, ২০২৪

রাস্তায় বেড়া দিয়ে প্রবাসীর বাড়ির লোকজনকে জিম্মি
ময়মনসিংহের ত্রিশালে জমিসংক্রান্ত বিরোধে বাড়ির রাস্তায় বেড়া দিয়ে ওমান প্রবাসী এক ব্যক্তির বাড়ির পাঁচ পরিবারকে জিম্মি করে রেখেছে তারই প্রতিবেশীরা। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই পরিবারগুলো।   ঘটনাটি উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী খারহর গ্রামের। সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওমান প্রবাসী ফরহাদ হোসেনের বাবা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই ও চাচাদের মোট ৫টি পরিবারের লোকজনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ থাকায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রতিবেশী আব্দুল মালেক, স্বজল, শান্তরা জোরজবরদস্তি করে বিভিন্ন অজুহাতে তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তায় টিন দিয়ে, বেড়া দিয়ে ও কাঁটা বিছিয়ে রেখে তাদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।  ভোক্তভুগী পল্লী চিকিৎসক আব্দুল হাই বলেন, চলাচলের রাস্তা বন্ধ করায় আমরা ৫টি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছি। বছর দুয়েক আগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সহায়তায় উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে রাস্তা খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি সে রাস্তায় আব্দুল মালেক, স্বজল, শান্ত আবারও টিনের বেড়া ও কাঁটা বিছিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। আমরা প্রশাসনের কাছে এর বিচার দাবি করছি। ওমান প্রবাসী ফরহাদ হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, আমি একজন প্রবাসী। পরিবার-পরিজনের কষ্ট দূর করার জন্যই প্রবাসে আছি। যাদের কষ্ট দূর করতে আমার এই প্রবাসে থাকা। অথচ দেশে তারাই ভালো নেই। প্রতিনিয়ত শুনতে হয় তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা। এসব শুনে কী ভালো লাগে? আমার পরিবারের লোকজন বেশ কিছুদিন ধরে এক প্রকার বন্দি জীবন কাটাচ্ছে। প্রভাবশালী প্রতিবেশীরা তাদের চলাচলের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার মা মারা যাওয়ার পর মায়ের মরদেহটা পর্যন্ত বের করার সুযোগ দেয়নি তারা। অনেক কষ্ট করে ঝোপঝাড় পাড়ি দিয়ে মাকে কবরস্থ করা হয়েছে। এসব শুনতে হয়েছে প্রবাসে থেকেই। আমি আমার অসহায় পরিবারকে একপ্রকার জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পেতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি। স্থানীয় প্রতিবেশী মজিবুর রহমান বলেন, রুহুল আমিনের পৈতৃক সম্পত্তিতে মালেকের পরিবার অবৈধভাবে বেরিকেট সৃষ্টি করে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। এটা নিয়ে অনেক দেন দরবার হলেও তারা কারও কথা শুনছে না। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাড়িতে গেলে তারা প্রতিবেদক আসার খবরে অন্যত্র চলে যায়।  স্থানীয় ইউপি সদস্য তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি মীমাংসার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। তারা আমার কথা শোনে না। আমি কি এ বিষয় নিয়ে মারামারি করব? ত্রিশাল উপজেলার উপজেলা কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল আহমেদকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমি মাত্রই শুনলাম। মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

বাণিজ্য বিরোধ নিয়ে কাজ করবে এফবিসিসিআই এসএলএনএসি
বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দ্রুত ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরোধ নিষ্পত্তিসহ নানা বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চায় এফবিসিসিআই আর্বিট্রেশন ট্রাইব্যুনাল এবং শ্রীলঙ্কা ন্যাশনাল আর্বিট্রেশন সেন্টার (এসএলএনএসি)। গতকাল রোববার এফবিসিসিআইর মতিঝিল কার্যালয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৈঠকে এই আগ্রহের কথা জানায় দুপক্ষ। বৈঠকে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, এফবিসিসিআই আর্বিট্রেশন ট্রাইব্যুনাল দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া পরিচালনা করে থাকে। এফবিসিসিআই আর্বিট্রেশন ট্রাইব্যুনাল এবং এসএলএনএসের অভিজ্ঞতা বিনিময় আঞ্চলিক বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। এ সময় আর্বিট্রেশন ও এডিআর ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে এফবিসিসিআইর সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এসএলএনএসের চেয়ারম্যান হিরান ডে অ্যালুইস। এ সময় ছিলেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি এবং এফবিসিসিআই আর্বিট্রেশন ট্রাইব্যুনালের সদস্য মুনির হোসেন, এফবিসিসিআইর পরিচালক এবং এফবিসিসিআই আর্বিট্রেশন ট্রাইব্যুনালের সদস্য প্রীতি চক্রবর্তী, এফবিসিসিআইর মহাসচিব আলমগীর প্রমুখ।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার হুমকি / ‘খুঁটি তুল নইলে গুলি করমু’
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দেশীপাড়া এলাকায় ১৯নং ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী রাশেদুজ্জামান মাসুমের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে শর্টগান উঁচিয়ে প্রতিপক্ষকে জমির খুঁটি তুলে ফেলার জন্য ওই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে নিজের ওই আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে দাবি করে অভিযুক্ত মাসুম বলেছেন, বিরোধপূর্ণ জমিটি তার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের জানান, দেশীপাড়া মৌজায় তাদের নানা জমির উদ্দিন মুন্সি ও নানী শুকুর জান বিবি ১ একর ৪২ শতাংশ জমির মালিক। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে স্থানীয় ফজল হাজীর ছেলে মাসুম (৪৫) ও বুলু হাজীর ছেলে সাইম (২৫) এবং তাদের পরিবারের লোকজন দখল করে রেখেছে। এ বিষয়ে ইতোপূর্বে স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের জানিয়ে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করলেও মাসুম গং তাদের কথা কর্ণপাত করেনি। এমতাবস্থায় ২০১৯ সালে গাজীপুর সদরের সহকারী কমিশন (ভূমি) অফিসে বিবিধ মিস মোকাদ্দমা দায়ের করি। এতে আমাদের পক্ষে রায়ও হয়। এমতাবস্থায় শনিবার সকালে আমি এবং আমার পরিবারের লোকজন নিয়ে সার্ভেয়ার দ্বারা ওই জমি মেপে খুঁটি পুঁততে গেলে তারা সশস্ত্র অবস্থায় আমাদের জমিতে ঢুকে জমি মাপের কাজে বাধা দেয়। তারা কয়েকজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক নিয়ে আমাদের জমিতে পোঁতা মাপের খুঁটি তুলে ফেলতে এবং জমি থেকে চলে যেতে বলেন। একপর্যায়ে মাসুম বলে ‘খুঁটি তুল নইলে গুলি করমু’। সে আমার বুকে-মাথায় শর্টগানের নল লাগিয়ে ধরে। এ সময় আমরা তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে কিল-ঘুষি ও হতাহাতি করে। আমার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা অস্ত্র উঁচিয়ে আমাকে খুন করার কিংবা মামলায় জড়িয়ে জেল খাটানোর হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে রাশেদুজ্জামান মাসুম বলেন, আমি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। আমি পৈতৃক ওয়ারিশমূলে ওই জমির মালিক আমি। আমার জমি জবরদখল করতে এসেছিল, আমার সেফটি বেল্টের (নিরাপত্তা) জন্য আমার লাইসেন্স করা অস্ত্রটা গাড়ি থেকে আমার হাতে করে নিয়া আমি ওইখানে গেছি। যারা আমার জমিতে জমিতে অবৈধভাবে আসছিল, তারা ওই জমির মালিক না। আমরা ক্রয়সূত্রে ওই জমির মালিক। আমি থানায় একটা অভিযোগও করছি। তিনি দাবি করেন, ১২ বোরের শর্টগানটির লাইসেন্স আছে। ওই লাইসেন্সকৃত অস্ত্রটি নিয়েই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ওসি সৈয়দ রাফিউল করীম বলেন, শর্টগান নিয়ে জমি মাপজোখ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি নজরেও এসেছে। তদন্তসাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩০ নভেম্বর, ০০০১

লোহাগড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ / কুপিয়ে জখম ৩
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া ইউনিয়নের চরবকজুড়ি গ্রামের এরশাদ মোল্যার বাড়িতে গত ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে একই গ্রামের মো. মহিউদ্দিন মোল্যার নেতৃত্বে ১৪/১৫ জন দুর্বৃত্ত বোন নাজমা বেগম, এরশাদ মোল্যা, হারুন মোল্যাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।  এজাহার ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চরবকজুড়ি গ্রামের হুমায়ুন মোল্যার পরিবারের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন একই গ্রামের মো. মহিউদ্দিন মোল্যার পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছিলো। এরই জের ধরে বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় মহিউদ্দিন মোল্যা, আফজাল মোল্যা, উজ্জল মোল্যা, খোকা মোল্যা, লিঠু মোল্যা, মনসুর মোল্যা, জাহিদ মোল্যা, উজ্জ্বল মোল্যা, মুকিত মোল্যা, রঞ্জু মোল্যা, সাইদ মোল্যাসহ আরও ৩/৪ জন মোট ১৪/১৫ জন মিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নাজমা বেগম, এরশাদ মোল্যা, হারুন মোল্যাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।  এ সময় স্থানীয় লোকজন আহতদেরকে দ্রুত লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুরুতর আহত নাজমা বেগমকে নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠায়। এ ছাড়া আহত বাকি ২ জন এরশাদ মোল্যা ও হারুন মোল্যা লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময় আহত এরশাদ মোল্যা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আহত ভাই-বোনের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ফার্মেসি থেকে ঔষধ কেনার জন্য আসলে পুনরায় দুর্বৃত্তরা এরশাদ মোল্যাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। এ সময় নিজেকে রক্ষা করার জন্য এরশাদ মোল্যা দৌড়ে লোহাগড়া থানায় আশ্রয় নেন। পরবর্তীতে পুলিশি হেফাজতে তাকে চিকিৎসার জন্য লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৮এপ্রিল) আহতদের বোন লোহাগড়া উপজেলার লংকারচর গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বাদী হয়ে উল্লিখিত ১১ জনকে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ কে আসামি করে লোহাগড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বরটি ২১/১৮। এ বিষয়ে আহত মহিউদ্দিন মোল্যা বলেন, এ ঘটনায় আমার কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নেই, এরশাদ মোল্যার পরিবারের সঙ্গে আফজাল মোল্যার মারামারি হচ্ছিলো। তখন আমি মারামারি ঠেকাতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে মারপিট করে আমার বাম হাত ভেঙে দেয়। আমি এখন লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি। এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ইনস্পেক্টর তদন্ত আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মারামারির খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ দ্রত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ১১ জনসহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। প্রতিপক্ষের কেউ থানায় এখনো কোন অভিযোগ করেনি, তবে অভিযোগ পেলে সেটিও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।  
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

বৈশাখী সংস্কৃতি- বিরোধ কোথায়? 
ছোটবেলায় বাপ-চাচাদের প্রায়ই পান্তা ভাত খেতে দেখেছি। আমিও খেয়েছি। সেই সময়ে পান্তা ভাত ছিল অধিকাংশ কৃষক-শ্রমিকের সকালের নাস্তা। তবে পান্তা ভাত ইলিশ মাছ নয়, বরং গুড়, চিনি, কলা, ডিমভাজি বা তরি-তরকারি, এমনকি কেবল লবণ-মরিচ দিয়ে খাওয়া হতো।  বৈশাখে সারা দেশে বিভিন্ন এলাকায় বৈশাখী মেলা আয়োজিত হতো, যেখানে জিলাপি, মুড়ি, বাতাসা, মিষ্টি, পিঠা, পায়েসসহ বিভিন্ন খাবার-দাবার বিক্রি হতো। মাটির তৈরি পুতুল, হাঁড়ি-পাতিল, কাগজের ঘুড়ি, বেতের বাঁশি, বিভিন্ন কারুকাজ ও আসবাবপত্র প্রদর্শিত হতো। ছোট বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য চরকির ব্যবস্থা থাকত। বৈশাখ মাসের শুরুতে, ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা তাদের পাওনা আদায়ের জন্য ‘হালখাতা’ আয়োজন করতেন। এসব কার্যক্রম ধর্মীয় রীতিনীতির সঙ্গে কোনো সংঘাত সৃষ্টি করত না।  কিছু মেলায় নাচ-গানের পাশাপাশি জুয়া খেলার ব্যবস্থা থাকত, ইসলাম যা সমর্থন করে না। এসব কারণে, আলেম সমাজ মুসলমানদের বিশেষ করে তাদের সন্তান-সন্ততিকে মেলায় যাওয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করতেন। পরে স্থানীয় আলেমদের প্রচণ্ড প্রতিবাদের মুখে অনেক স্থানে জুয়া খেলা বন্ধ হয়ে যায়। নব্বইয়ের দশকে রমনা বটমূলে বৈশাখী সংস্কৃতিতে পান্তা ভাতে ইলিশের সংযোজন এবং আনন্দ শোভাযাত্রা পরিবর্তে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ প্রবর্তন ঘটে। যদিও কিছু ইসলামিক স্কলার মঙ্গল শোভাযাত্রা ও এতে প্রদর্শিত প্রতিমা, হুতোম প্যাঁচায় মুখোশ ব্যবহারের বিরোধিতা করছেন, কারণ তা তাদের মতে মুসলমানদের আকিদা বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। প্রশ্ন উঠেছে, মঙ্গল শোভাযাত্রা, পান্তা-ইলিশ, হুতোম প্যাঁচায় মুখোশ ধারন, উল্কি আঁকা ইত্যাদি বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যগত উপাদান কি না! আর ইসলামিক স্কলাররা এসব উপাদানের মধ্যে ইসলামী সংস্কৃতির সংঘাত খুঁজে পান। অনেকেই মনে করেন, পহেলা বৈশাখ উদযাপন কোনো বিশেষ ধর্মের অনুষ্ঠান নয়। অন্যদিকে এটি কোনো ধর্ম বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়া উচিত নয়। ভারতের পশ্চিমবাংলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ধর্মবিশ্বাসের ভিত্তিতে সাংস্কৃতিক চর্চা করবে- এটাই স্বাভাবিক। তবে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশি বাঙালিদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চা- এখন সময়ের দাবি। নচেৎ বৈশাখী আয়োজন কখনোই সার্বজনীন হবে না। আমরা যদি আমাদের ঐতিহ্যগত বৈশাখী সংস্কৃতিতে ফিরে যাই, তাহলে দল-মত, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে বাংলা বর্ষবরণকে গ্রহণযোগ্য ও আনন্দময় করতে পারব বলে মনে হয়। এদেশের বৈশাখী সংস্কৃতির বিশ্লেষণে দেখা যায়, আমাদের ঐতিহ্য পান্তা ভাতের সংস্কৃতি, বিশেষ পোশাক পরিধান,‌ মেলার আয়োজন, বর্ষবরণে সংগীতানুষ্ঠান, ব্যবসায়িক হালখাতা ও আতিথেয়তা। তাই নববর্ষ পালিত হোক আমাদের ঐতিহ্য ও নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চায়, যা সম্প্রীতি ও শান্তি বয়ে আনবে। সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। লেখক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী প্রফেসর, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি  প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ সোসাইটি ফর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি একাডেমিক্স 
১৫ এপ্রিল, ২০২৪

কোদালের আঘাতে স্কুল শিক্ষক নিহত
নাটোরের নলডাঙ্গায় জমি নিয়ে বিরোধে আপন চাচাতো ভাইয়ের কোদালের আঘাতে গুরুতর আহত আরেক ভাই জিল্লুর রহমান নামের স্কুল শিক্ষক মারা গেছেন। শনিবার (৩০ মার্চ) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত জিল্লুর রহমান (৫০) উপজেলার খাজুরার চাঁদপুর গ্রামের মোজাহার আলীর ছেলে ও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার থল ওলমা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আটককৃত আহাদ আলী ওই গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। নলডাঙ্গা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার দুপুরে নলডাঙ্গা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে আপন চাচাতো ভাইদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। আহতদের নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করালেও স্কুল শিক্ষক জিল্লুর রহমানের মাথায় চাচাতো ভাইয়ের কোদালের আঘাতে গুরুতর জখম হয়। নাটোর সদর হাসপাতালে অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।শনিবার সকালে স্কুল শিক্ষক জিল্লুর রহমানের মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষননে মৃত্যু হয়। নলডাঙ্গা থানার ওসি মনোরুজ্জামান বলেন, খাজুরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের রেজাউল রহিদুল ও জিল্লুর রহমানের সঙ্গে আপন চাচাতো ভাই আবেদ আলী, হামেদ ও সামাদের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে জিল্লুর রহমান গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করান স্বজনরা।শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই খোরশেদ হোসেন বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে নলডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় একজনকে আটক করে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
৩০ মার্চ, ২০২৪

বসতবাড়ির এক ফুট সীমানার বিরোধে ছোট ভাই ‘খুন’
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে বসতবাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে বড় ভাইয়ের পরিবারের হামলায় ছোট ভাই নিহত হয়েছেন। সোমবার (১১ মার্চ) সকাল ৬টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিঙ্গাইর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম। নিহতের নাম কোহেল উদ্দিন (৬৫)। তিনি উপজেলার জামিত্তা ইউনিয়নের মধুর চর গ্রামের মৃত ইন্তাজ উদ্দিনের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রোববার (১০ মার্চ) দুপুরের দিকে নিহত কোহেল উদ্দিন ও তার বড় ভাই মো. ইসলাম মুন্সির পরিবারের মধ্যে বসতবাড়ির সীমানার এক ফুট জায়গা নিয়ে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ইসলাম মুন্সিসহ তার সন্তানরা কোহেল উদ্দিনের পরিবারের ওপর হামলা করেন। এ ঘটনায় কোহেল উদ্দিন ও তার ছেলে শাহিনুর গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সিঙ্গাইর থানার অফিসার ইনচর্জ (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত নিহতের পরিবারের কেউ অভিযোগ করেনি। তবে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
১১ মার্চ, ২০২৪

‘ভূমি বিরোধ মোকাবিলায় আইনের শাসন বাস্তবায়ন করতে হবে’
দেশে চলমান ভূমি বিরোধের ব্যাপকতার জন্য জমির রেকর্ড অব রাইটস বা খতিয়ানসংক্রান্ত জটিলতা অন্যতম প্রধান কারণ। ভূমি বিরোধের ইতিহাস অনেক পুরোনো হলেও আইনের শাসন বাস্তবায়নের মাধ্যমে একে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপের এ টি এম শামসুল হক মিলনায়তনে এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ভূমি বিরোধ পরিবীক্ষণ নাগরিক প্রতিবেদন ২০২৩’- শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।  ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, কোনো প্রকল্প গ্রহণ করার আগে স্থানীয়দের বিশেষত ভূমি যারা ব্যবহার করছেন তাদের স্বাধীন মতামত নিতে হবে, সেক্ষেত্রে তাদের ভালোভাবে জানাতে হবে কী হতে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও এএলআরডি-র ভাইস চেয়ারপারসন ড. রওশন আরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন- বাংলাদেশ মহিলা পষিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম দিনাজপুরের সিডিএ-র নির্বাহী পরিচালক শাহ ই মবিন জিননাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, এএলআরডি-র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।   এর আগে ভূমিবিরোধ পরিবীক্ষণ নাগরিক প্রতিবেদন ২০২৩-এর খসড়া উপস্থাপন করেন এএলআরডি-র উপনির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি এবং উপব্যবস্থাপক এ কে এম বুলবুল আহমেদ। প্রতিবেদনে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের ২১ জেলা থেকে বড় আকারের ভূমি বিরোধের ৩৪টি কেস বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিরোধীয় ভূমির প্রকৃতি, ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী ও বিরোধীয় পক্ষের ধরন, ভূমি বিরোধের কারণ, বিরোধের প্রভাব এবং প্রতিকার প্রাপ্তি সম্পর্কে মূল্যায়ন ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে তারা দেখান, কেসগুলোতে বিরোধীয় জমির মোট পরিমাণ ১০,৮৫৩ হেক্টর এবং ক্ষতিগ্রস্ত মোট পরিবারের সংখ্যা ৫১, ২২৭টি, যেখানে কৃষক (২৪ টি কেসে) ও আদিবাসী (৯টি কেসে) বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এইসব বিরোধের কোনো কোনোটি ২ বছরের কম সময় ধরে চলমান (৫টি), কোনোটি ৫ বছরের কম সময় ধরে চলমান (৯টি) আবার কোনো কোনোটি ১৫ বছরের বেশি (৪টি) এমনকি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান (৮টি)। এগুলোর মাত্র ৪টির নিষ্পত্তি গত বছর (২০২৩) এ হয়েছে, বাকি বিরোধগুলো চলমান রয়েছে। এসব বিরোধের বড় কারণ স্থানীয় প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবস্থানে থাকা কৃষক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জমির মালিকানার দ্বন্দ্ব (২০টি কেসে), এরপর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প (৮টি কেসে)। দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাবের কারণে নারীর ভূমি কেন্দ্রিক মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ভূমির অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রেও বৈষম্য আছে। লিংগ, সমাজ, গোষ্ঠী/জাতিগোষ্ঠী, রাষ্ট্রীয় ভাবেও বৈষম্য হচ্ছে। ভূমিতে নারীর অধিকারে বৈষম্য আছে। আইনে নারীকে সম্পত্তিতে যতটুকু অধিকার দেওয়া আছে সেটারও বাস্তবায়ন নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, উন্নয়নকে আদিবাসী ও কৃষকরা ভয় পান কারণ তারা মনে করেন এর ফলে তাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ভূমিকে হারাতে হবে। কাজেই উন্নয়ন করতে গেলে তাদের কথা শুনতে হবে। উন্নয়ন চাপিয়ে দিলে হবে না, এটিকে জনগণকেন্দ্রিক করতে হবে, জনগণের মতামত নিয়ে করতে হবে।  এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ভূমি ও কৃষি সংস্কারের গোড়ার কথা যারা ভূমিবঞ্চিত তাদের অধিকারের সুরক্ষা দিতে হবে। ভূমি বিরোধের কারণে তাদের বড় একটি অংশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হতে হয়। প্রান্তিক মানুষের অধিকার নিয়ে যা করার কথা সেটি আমরা করছি কি না সেটিই উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় প্রশ্ন হওয়া উচিত।  কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট এসোসিয়েশন (সিডিএ) নির্বাহী পরিচালক শাহ ই মবিন জিন্নাহ বলেন, ভূমি বিরোধের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ক্ষতিসহ জীবন ও জীবিকার ক্ষতি হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। এই মানবাধিকার লঙ্ঘনগুলোর প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ফোকাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের একটি অভিন্ন অবস্থানে আসা দরকার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আদিবাসী নেতা অজয় এ মৃ, ফিলিমন বাস্কে, শেফালিকা ত্রিপুরা, মংচিন থান, নারায়ণ হাজং বিভিন্ন জেলা নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধি নাসিরুদ্দিন ময়নুল, রফিকুল আলম, আব্দুর রউফ, ভূমিহীন নেতা আলম বাচ্চু মেলকার, সখিনা খাতুন, সিরাজ খান, আব্দুল গাফফার প্রমুখ।   
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

তালাকাণ্ডে আ.লীগে বিরোধ দৃশ্যমান
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের ১৭টি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা কেন্দ্র করে দুপক্ষের বিরোধ দৃশ্যমান হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। একই সঙ্গে তার অনুসারীরা দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদ জানান। যদিও দলের শীর্ষ নেতাদের অনুরোধে দলীয় কার্যালয়ের তালা খুলে দিয়েছেন এবং কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন, তার পরও বিষয়টি সুরাহা না হলে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন পদবঞ্চিতরা। গত শুক্রবার বিকেলে এক সভায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভী মহানগরের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। ওই সভায় আইভী বলেন, ‘আনোয়ার কাকা প্রতিহিংসার মনোভাব নিয়ে এ কমিটি দিয়েছেন। তিনি দেওভোগকে বুঝিয়েছেন, উনি যা চাইবেন, তা হবে এখানে। দেওভোগে যে পূর্বপুরুষরা নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগের, তাদের অসম্মানিত করেছেন তিনি। আজ এখানে দাঁড়িয়ে দেওভোগের মানুষ হিসেবে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম আমি।’ পরে ওইদিন রাতে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাব্বির আলম সাগর নেতাকর্মীদের নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই ঘটনার দুদিন পর রোববার দুপুরে এক সভায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেন, ‘পার্টি অফিসে তালা দেওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে কেউ ভালো চোখে দেখবেন না। তাদের (পদবঞ্চিত) ক্ষোভ থাকতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ অফিস শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অফিস নয়, আওয়ামী লীগ অফিস হচ্ছে স্বাধীনতার পক্ষের সব মানুষের অফিস। তাই তালা দেওয়ার দরকার নেই। আমরা বসে এ বিষয়ের সমাধান করব।’ তিনি সবাইকে মিলেমিশে থাকার অনুরোধ করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় শীর্ষ দুই নেতা শামীম ওসমান ও সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর অনুরোধে পদবঞ্চিত নেতারা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের তালা খুলে দেন। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাকর্মীরা পদবঞ্চিতদের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আনোয়ার হোসেন বলেন, তালা খোলার বিষয়টি জানতে পেরেছি। আর ওয়ার্ড কমিটির কাগজ আমি কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। এটা আমার একক সিদ্ধান্তে হয়নি। কমিটি পরিবর্তনের বিষয়ে আমি কাউকে আশ্বাস দিইনি। অন্যদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির মৃধা বলেন, এমপি শামীম ওসমান বলেছেন কমিটির বিষয়টি দেখবেন। যদি এ বিষয়ের কোনো সুরাহা না হয়, তবে কেন্দ্রীয় কমিটিকে নালিশ করা হবে। তিনি আরও বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ওয়ার্ড কমিটির অনুমোদন দেয় মহানগর কমিটি। আর সেই সুযোগে তারা রাজাকারপুত্র, হাইব্রিড ও বিতর্কিতদের কমিটিতে পদায়ন করেছে। বিতর্কিতরা কমিটিতে থাকলে আমরা পাল্টা কমিটি দেব। আন্দোলন চালিয়ে যাব। ১৬ নম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সাব্বির আলম সাগর বলেন, দলের সিনিয়রদের নির্দেশে আমরা তালা খুলে দিয়েছি। প্রতিবাদ করার প্রয়োজন ছিল প্রতিবাদ করেছি। এখন কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে আছি। মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত বলেন, তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, কমিটি নিয়ে সমস্যার সুরাহা হবে। যদি এর সুরাহা না হয়, তাহলে আমাদের প্রতিবাদ চলবে। এটা তো শুরু মাত্র। স্থানীয় রাজনীতিক বিশ্লেষকদের মতে, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন কখনো মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলয় আবার কখনো সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বলয়ে ভিড় করেন। তা ছাড়া ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে মেয়র আইভীর বিরোধিতা করে প্রকাশ্যে মেয়র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ে মেয়র আইভীর তীব্র সমালোচনা করেন আনোয়ার হোসেন। সেই থেকে তাদের মধ্যে এক ধরনের বিরোধ চলে আসছে। পরে নানা কারণে সেই বিরোধে আগুন জ্বলেনি। তবে এবার ওয়ার্ড কমিটি দেওয়াকে কেন্দ্র করে সেই ক্ষোভ ঝেড়েছেন এবং প্রকাশ্যে মেয়র আইভী অতীতের স্মৃতিচারণ করে আনোয়ার হোসেনের সমালোচনা করেছেন।
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X