হাছান মাহমুদের সঙ্গে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। বৃহস্পতিবার (৯ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী জানান ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাতে দ্বিপাক্ষিক বিষয়াবলি নিয়ে আন্তরিক আলোচনা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক, অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক, যে সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বৈঠকে কানেক্টিভিটি নিয়ে এবং বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা সহজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতিবছর বাংলাদেশের ১৬ থেকে ১৭ লাখ মানুষের জন্য ভিসা ইস্যু করে ভারত। বিশ্বে সর্বোচ্চ ভিসা ভারত ইস্যু করে বাংলাদেশে। অনেক সময় ভিসা পেতে অপেক্ষা করতে হয়। সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বাংলাদেশে ভারতীয় মিশনের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তারা আরও লোকবল নিয়োগ করছেন। হাছান মাহমুদ বলেন, আমি এ বিষয়ে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ার কথা আলোচনা করেছি। অনলাইনে আবেদনের কথা বলেছি যেন সহজে মানুষ ভিসা পায়। তারা বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে দেখছেন। শক্তির উৎসের কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, আমরা ফিজিক্যাল কানেকটিভিটি নিয়ে আলোচনা করেছি। সেটা অনেক দূর এগিয়েছে। বিশেষ করে, নেপাল ও ভুটানকে ট্রানজিট দেওয়া এবং এ দুই দেশ থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা। ইতোমধ্যে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে। ট্যারিফ নিয়েও আলোচনা অনেকটা চূড়ান্ত হয়েছে। সেটি আমাদের ক্রয় কমিটিতে যাবে। সেটি হলে ভারতের ওপর দিয়ে আমরা নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারব। বৈঠকে সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নন-লেথাল (প্রাণঘাতী নয়) এমন অস্ত্র ব্যবহার করার ওপর আমরা গুরুত্বারোপ করেছি। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন- তারা তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। এটি নিয়ে দুই দেশের সরকারি ও রাজনৈতিক পর্যায়ে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিস্তায় আমরা একটা বৃহৎ প্রকল্প নিয়েছি। ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। আমি বলেছি, তিস্তায় যে প্রকল্পটি হবে, সেটা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হবে। আমাদের প্রয়োজন যেন পূরণ হয়।’ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির সদস্য লায়ন মশিউর আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির, মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার, অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম প্রমুখ।
২ ঘণ্টা আগে

বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র স‌চিব
আগামী বৃহস্প‌তিবার (৯ মে) ঢাকা সফরে আস‌ছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ পৌঁছে দেওয়ার কথা রয়েছে তার। কূটনৈ‌তিক সূত্র কোয়াত্রার ঢাকা সফরের তথ্য নি‌শ্চিত করেছেন। সূত্র জানায়, আগামী ৯ মে ভারতীয় পররাষ্ট্র স‌চিবের ঢাকায় আসার তা‌রিখ চূড়ান্ত হয়েছে। ঢাকা সফরে তার মূল বৈঠক হবে পররাষ্ট্র স‌চিব মাসুদ বিন মোমেনের স‌ঙ্গে। চলতি বছরের মাঝামাঝি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকা সফর করছেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে। ভারতের জাতীয় নির্বাচনের পরপরই দ্বিপাক্ষিক সফরে দিল্লি যাবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে গত ২০ এপ্রিল ঢাকায় আসার কথা ছিল বিনয় কোয়াত্রার। তবে অনিবার্য কারণে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের পূর্বনির্ধারিত সেই সফরটি স্থগিত হয়। জানা গেছে, এক‌দিনের এই সফরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রস‌চিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিল্লি সফরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানাতে কোয়াত্রা ঢাকা সফরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। এছাড়া দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে বৈঠকে চলমান বিভিন্ন ইস্যু আলোচনা হবে।
০৫ মে, ২০২৪

ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানিতে থাকছে না নিষেধাজ্ঞা
প্রায় ৬ মাস পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রাখার পর অবশেষে তা তুলে নিল ভারত সরকার। শনিবার (৪ মে) দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য নিশ্চিত করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়—রপ্তানি করা প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য (মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইস- এমইপি) ধার্য করা হয়েছে ৫৫০ ডলার, যা নির্ধারণ করে ডিজিএফটি। পেঁয়াজ রপ্তানির এমন সিদ্ধান্ত ভারতীয় রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, চলমান লোকসভা নির্বাচনের কারণে কেন্দ্রীয় সরকারে আসীন দল বিজেপি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে ভারত সরকারের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন কৃষকরা। গত বছর ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। এ সময় দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের কৃষকদের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ক্ষোভ বাড়ে। অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে রাজ্যটির প্রতিটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপি প্রার্থীরা, যা সামাল দিতেই এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে বলে ধারণা অনেক রাজনীতি বিশ্লেষকের। ভারতের মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়ে থাকে। দেশটির মোট উৎপাদিত পেঁয়াজের বেশিরভাগ আসে এই রাজ্য থেকে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পর বাংলাদেশ, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরিশাসসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করে ভারত। উল্লেখ্য, গত বছর ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। প্রথম পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত হলেও পরে তা আরও বাড়ানো হয়। তার আগে ২০২৩ সালের আগস্টে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছিল নয়াদিল্লি।
০৪ মে, ২০২৪

ভারত-পাকিস্তানের যেসব তারকার মধ্যে গড়ে উঠেছে প্রেম (ভিডিও)
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত-পাকিস্তান।  রাজনৈতিক রেষারেষি ছাড়াও দুই দেশের বাসিন্দার মধ্যে আদর্শিক দ্বন্দ্বও রয়েছে।  তবে সংস্কৃতি ক্ষেত্রে দুদেশের এই দ্বৈরথের আঁচ খুব একটা পড়েনি।  এক দেশের শিল্পীরা আরেক দেশে গিয়ে দিব্যি পারফর্ম করছেন।  এমনকি দুদেশের তারকাদের মধ্যে হয়েছে মনের লেনাদেনাও।  প্রেমের সম্পর্ককে আরেক কদম এগিয়ে বিয়ের পিঁড়িতেও বসেছেন তাদের অনেকে।  বলিউডের যারা পাকিস্তানি সেলিব্রেটিদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন বিপাশা বসু, রণবীর কাপুর, রেখা, সুস্মিতার মতো তারকার নাম।  ভারতীয় অভিনেত্রী সুস্মিতা সেনকে মন দিয়েছিলেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম।  এই পাক বোলারের অবশ্য সংসার ছিল।  তবুও সুস্মিতার প্রেমে মজেছিলেন তিনি।  ২০০৮ সালে একটি রিয়্যালিটি শোর সেটে সুস্মিতার সঙ্গে পরিচিত হন ওয়াসিম।  তখনই বন্ধুত্ব হয় দুজনের।  স্ত্রীর মৃত্যুর পর সুস্মিতার সঙ্গে ওয়াসিমের বন্ধুত্ব গভীর হয়। সে সময় দুজনের বিয়ের খবরও ছড়িয়ে পড়েছিল।  যদিও ওয়াসিম এই সম্পর্কের কথা স্বীকার করেননি।  প্রশ্ন করলে বলতেন, তিনি নাকি এই রটনাগুলো অস্বীকার করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।  পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের সঙ্গেও বলিউডের বেশ কজন অভিনেত্রীর প্রেম ছিল। তাদেরই একজন হলেন রেখা। শোনা যায়, তাদের সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়িয়েছিল।  পুরনো সংবাদপত্রের কিছু খবর থেকে জানা যায়, ১৯৮৫ সালের পুরো এপ্রিলটাই মুম্বাইয়ে কাটিয়েছিলেন ইমরান।  এ সময় তার সঙ্গী ছিলেন রেখা।  অভিনেত্রীর সঙ্গে নানা সময় ইমরানকে সমুদ্রসৈকত, পার্টি ও নাইটক্লাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।  এ ছাড়াও ভারতীয় অভিনেত্রী মুনমুন সেন ও শাবানা আজমির সঙ্গেও ইমরানের প্রেমের কথা শোনা যায়।  বলিউড স্টার রণবীর কাপুরের সঙ্গে পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাহিরা খানের প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয় ২০১৭ সালে।  ওই বছর মাহিরা অভিনীত বলিউড সিনেমা ‘রাইস’ মুক্তি পেয়েছিল।  একই বছর মাহিরা ও রণবীবেরর একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।  তাতে দুজনকে লন্ডনের রাস্তায় ধূমপান করতে দেখা গিয়েছিল।  এরপরই রণবীরের সঙ্গে মাহিরার সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়।  তবে সে সময় সংবাদমাধ্যমকে মাহিরা জানিয়েছিলেন, রণবীর শুধু তার বন্ধু।  কিন্তু ছবিটিকে কেন্দ্র করে তাদের বাজেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি।  এতে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেস মাহিরা।  এমনকি মনোবিদের শরণাপন্নও হতে হয়েছিল তাকে। ২০১৪ সালে বাঙালি অভিনেত্রী বিপাশা বসুর বিপরীতে অভিনয় করেন পাকিস্তানের তারকা ইমরান আব্বাস।  এরপরই ইমরান-বিপাশার প্রেমের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।  যদিও দুজনের কেউই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।  ভারতীয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা ও পাকিস্তানি ক্রিকেটার শোয়েব মালিকের বিয়ের বিষয়টি বহুল চর্চিত।  যদিও তাদের সংসার টেকেনি।  ভারত-পাকিস্তানের তারকাদের মধ্যে প্রেম হলেও, নিজেদের সম্পর্কের গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেছেন সেলিব্রেটিরা।  দুই দেশের বৈরী সম্পর্কের কথা ভেবে নিজেদের সম্পর্কের বিষয়ে সরব হননি তাদের অনেকে।
০২ মে, ২০২৪

নিষেধাজ্ঞার মুখে ভারতীয় সহঅধিনায়ক
এবারের আইপিএল রীতিমতো দুঃস্বপ্নের মতো কাটছে আসরটির অন্যতম সফল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক ও সদ্য ঘোষিত ভারতীয় দলের সহঅধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার। টানা হারে রীতিমতো খাদের কিনারায় রোহিত-পান্ডিয়ার দল। সর্বশেষ ম্যাচে লক্ষ্নৌ সুপার জায়ান্টসের কাছে হেরে আইপিএল থেকে বিদায়ের সন্নিকটে মুম্বাই ফ্রাঞ্চাইজি। তবে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) একানাতে হারের বড় দুঃসংবাদ পেয়েছে মুম্বাই অধিনায়ক। সেই সঙ্গে আরেকবার এই ভুল হলে নিষিদ্ধও করা হতে পারে তাকে।   লক্ষ্নৌর সাথে ম্যাচে নিয়ম ভাঙার জন্য শাস্তি হচ্ছে মুম্বাই দলের সব খেলোয়াড়েরই। তবে মূল কালপ্রিট হিসেবে মুম্বই দলনায়ক হার্দিক পান্ডিয়াকে ভোগ করতে হবে সবচেয়ে বেশি শাস্তি। শাস্তির সঙ্গে সতর্কও করা হয়েছে ভারতের অলরাউন্ডারকে কেননা ফের যদি একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হয় তাহলে জরিমানা দেওয়ার পাশাপাশি এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধও থাকতে হবে। এবারের আইপিএলে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ওভার-রেট বজায় রাখতে পারেনি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। অর্থাৎ, নির্ধারিত সময়ে তারা নিজেদের ২০ ওভারের বোলিং কোটা শেষ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে ফের স্লো ওভার-রেটেয় দায়ে পড়ে দলটি। মৌসুমে দ্বিতীয়বার নূন্যতম ওভার-রেট সংক্রান্ত অপরাধের দায়ে পড়ায় তাদের ক্যাপ্টেন-সহ সব ক্রিকেটারকে শাস্তি দেওয়া হয়। দ্বিতীয়বার আইপিএলের আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য হার্দিক পান্ডিয়াকে ভারতীয় মুদ্রায় ২৪ লক্ষ রুপি বাংলাদেশি মুদ্রায় যা সাড়ে ৩১ লাখ টাকা তা জরিমানা করা হয়। প্রথমবার এমন অপরাধের জন্য তার জরিমানা হয়েছিল ১২ লক্ষ রুপি। অর্থাৎ, এবার জরিমানার অঙ্ক দ্বিগুণ হলো তার। প্রথমবার অবশ্য মুম্বাই স্লো ওভার-রেটের দায়ে পড়ার সময় শাস্তি হয়েছিল একা হার্দিকের। দলের বাকি খেলোয়াড়রা সেক্ষেত্রে রক্ষা পেলেও এবার আর তা হচ্ছে না। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার-সহ মুম্বাইয়ের বাকি সব ক্রিকেটারকে ৬ লক্ষ রুপি অথবা তাদের ম্যাচ ফি-র ২৫ শতাংশ অর্থ, যেটার পরিমাণ কম, সেই পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হয়। সুতরাং, দলের বাকি খেলোয়াড়দের তুলনায় ক্যাপ্টেনের শাস্তি হয় চারগুণ। একই আইপিএল মৌসুমে তৃতীয়বার স্লো ওভার-রেটের দায়ে পড়লে সংশ্লিষ্ট দলের ক্যাপ্টেনের ৩০ লক্ষ রুপি জরিমানার বিধান রয়েছে আইপিএলের আচরণবিধিতে। সেই সঙ্গে ক্যাপ্টেনকে একটি ম্যাচ নিষিদ্ধ করার কথাও উল্লেখ রয়েছে আইপিএলের কোড অফ কন্ডাক্টে। পাশাপাশি সেই দলের সব ক্রিকেটারকে ভারতীয় মুদ্রায় ১২ লক্ষ রুপি অথবা ম্যাচ-ফির ৫০ শতাংশ অর্থ খোয়াতে হবে তৃতীয়বার একই অপরাধের জন্য। যার অর্থ, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স যদি আইপিএল ২০২৪-এ ফের স্লো ওভার-রেটের দায়ে পড়ে, তবে একটি ম্যাচে মাঠের বাইরে থাকতে হবে হার্দিককে।
০১ মে, ২০২৪

পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে ভারতীয় নারী ড্রাইভার
বেনাপোল স্থলবন্দরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো ভারত থেকে পণ্যবোঝাই ট্রাক চালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে এক নারী ট্রাকচালক। রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তিনি। বাংলাদেশে প্রবেশের পর তাকে একনজর দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে বেনাপোল বন্দরের ১নং শেডে। নারী ওই ট্রাকচালকের নাম অর্নাপূর্না রাজকুমার (৩৯)। তার বাড়ি ভারতের তামিলনাড়ুর অমল রাজ্যে। জানা গেছে, বিহার থেকে ডেনিম ফেব্রিক্স বোঝাই করে তামিলনাড়ুর অমল রাজ্যের কন্যা অর্নাপূর্না রাজকুমার দুপুর ১২টার সময় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে পৌঁছান। পরে বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ওই নারী চালক দুপুরের দিকে ট্রাক নিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেন। এ সময় নারী ড্রাইভারকে এক নজর দেখতে বাংলাদেশ গেটে ছুটে আসেন বন্দর ব্যবহারকারীসহ অনেকেই।  সূত্র জানায়, স্বাধীনতার পর এই প্রথম ভারতের কোনো নারী ট্রাকচালক রোববার বাংলাদেশে প্রবেশ করে পণ্যবোঝাই ট্রাক নিয়ে। উপস্থিত ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, তামিল নাড়ু থেকে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে আসার ঘটনা এটিই প্রথম। এর আগে এই বন্দরে আর কোনো নারী ট্রাকচালক পণ্য নিয়ে বন্দরে আসার ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি নারী জাগরণ বা মাইলফলক বলেও অনেকেই মন্তব্য করেন। ট্রাকচালক অর্নাপূর্না বলেন, ট্রাক চালিয়ে পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসতে পেরে ভালো লেগেছে তার। তিনি জানান, দীর্ঘ প্রায় ২ হাজার কিমি পথ পাড়ি দিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসেন তিনি। বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, রোববার ওই নারী চালক একটি কার্গোভ্যানে করে পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেন। পরে তার ট্রাকে থাকা মালামাল বন্দরে দ্রুত খালাস করে ওপারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

সেই বিতর্কিত আউটের আম্পায়ার তানভীর থাকছেন না ভারত সিরিজে
আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত সবসময় যে ক্রিকেটারদের পছন্দ হবে এরকম কিন্তু নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত পছন্দ না হওয়ায় তাদের সাথে তর্কে জড়ান ক্রিকেটাররা। তবে গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশ ও ভারত নারী দলের মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজে ভারতীয় নারী দলের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর যা করেছিলেন তা আসলে সব সীমাই অতক্রম করে গিয়েছিল। জুলাইয়ের সেই ওয়ানডে সিরিজে ভারতের নারী ক্রিকেটাররা বাংলাদেশের আম্পায়ারিং নিয়ে বিস্তর অভিযোগ তুলেন। এমনকি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে যেয়ে স্ট্যাম্পে ব্যাট দিয়ে আঘাত করেন ভারত অধিনায়ক হারমনপ্রীত কৌর। এরপর আম্পায়ারিং নিয়ে অযাযিত মন্তব্য করে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধও হয়েছিলেন ভারতীয় এই ক্রিকেটার । এমনকি এরপর বাংলাদেশে সিরিজ খেলতে আসার আগে আম্পায়ারিং নিয়ে নিশ্চিত হয়ে আসার ঘোষণা পর্যন্ত দিয়েছিলেন তিনি। গত জুলাইয়ের সেই ঘটনার পর এবার ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসছে ভারত। নতুস খবর হলো হারমনপ্রীতকে আউট দেওয়া সেই বাংলাদেশী আম্পায়ার তানভীর আহমেদকে এবার এই সিরিজের দায়িত্বে রাখছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির এক সূত্রের বরাত দিয়ে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্রটির বরাত দিয়ে ক্রিকবাজ জানায়, ‘আসলে সমালোচনা এড়াতে তানভীরকে এবার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তার কোনো সিদ্ধান্ত যদি সঠিকও হয় তাহলে সেটি নিয়ে অযাচিত সমালোচনা করা হয়।’  এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার তৃতীয় ওয়ানডের ৩৪তম ওভারে বিতর্কিত ঘটনাটি ঘটে। নাহিদা আক্তারের ঘূর্ণিতে সুইপ করতে চেয়েছিলেন হারমনপ্রীত। টাইমিং মিস করেন তিনি, বল গ্লাভস-প্যাডে লেগে চলে যায় স্লিপে। ক্যাচ ধরেন ফাহিমা খাতুন। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার তানভীর। আউটের সিদ্ধান্তে ক্ষেপে যান হারমনপ্রীত। ব্যাট দিয়ে আঘাত করে ভেঙে ফেলেন স্ট্যাম্প। আম্পায়ারের দিকে লক্ষ্য করে উত্তপ্ত প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায় তাকে। হেলমেট-ব্যাট হাতে নিয়ে ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পথেও তাকে বেশ ক্ষিপ্ত দেখাচ্ছিল। হারমানপ্রীত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আম্পায়ারিং নিয়ে সরাসরি হতাশা প্রকাশ করেন, ‘এই ম্যাচ থেকে আমাদের অনেক শেখার আছে। যে ধরনের আম্পায়ারিং হয়েছে, বিস্ময়কর। পরেরবার আমরা যখন বাংলাদেশে আসব, তখন আমাদের এটি নিশ্চিত থেকেই আসতে হবে যে এমন আম্পায়ারিং হতে পারে এবং আমরা সেভাবেই নিজেদের প্রস্তুত করব।’ সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মতো এবার ভারতের বিপক্ষেও একজন নিরেপক্ষ আম্পায়ার থাকবে। ২৩ এপ্রিল সিলেটে পৌঁছাবে ভারত। ২৮ এপ্রিল থেকে শুরু হবে সিরিজ। দ্বিতীয় ম্যাচ ৩০ এপ্রিল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচটি হবে দিবারাত্রির। শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে। ২ মে ও ৬ মে হবে তৃতীয় ও চতুর্থ টি-টোয়েন্টি। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের আউটারে ম্যাচ দুটি হবে দিনের আলোতে। শুরু হবে দুপুর ২টায়। সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচ হবে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। প্রথম দুই ম্যাচের ন্যায় এটি হবে দিবারাত্রির। শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।
২১ এপ্রিল, ২০২৪

যা দেখি যা শুনি / ভারতীয় পণ্য বয়কট: ইতিহাসের কথা
প্রায় দুই মাস আগে হঠাৎ করে ইউটিউবে একটা সংবাদ নিয়ে হৈচৈ পড়ে যায়। যেটাকে বলা হয় ‘ভাইরাল’। আমাদের দুর্ভাগ্য, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও ভারতপন্থি বাংলাদেশি ও পাকিস্তানপন্থি বাংলাদেশি অবস্থান দিনে দিনে খুবই স্পষ্ট হচ্ছে। প্রতিবেশী ভারতের কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা নেই। বাংলা ভাষায় ‘কৃতজ্ঞ’ শব্দের অর্থ হলো, যারা উপকারীর উপকার স্বীকার করে। অন্যদিকে ‘কৃতঘ্নতা’ শব্দের অর্থ, যারা উপকারীর অপকার করে। আমাদের সংস্কৃতিতে অনেক ক্ষেত্রে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ঘাটতি আছে; কিন্তু ‘কৃতঘ্নতা’ কতটা ভয়ংকর হতে পারে, তা তো দেখছিই। আমাদের দেশে একটা মুখচেনা গোষ্ঠী কারণে-অকারণে ভারতবিরোধী চেতনা ধারণ করে। তাদের মধ্যে একটা অংশ বেশ কৌশলী। তারা খুব কায়দা করে বলে থাকেন, ‘এর চেয়ে তো পাকিস্তানই ভালো ছিল।’ সে রকম একটা ঘটনার কথা বলছি। মানবিকতা প্রদর্শনে পাকিস্তানও অনেকখানি এগিয়ে, তা বলার সুযোগ তারা হাতছাড়া করতে চান না। একজন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় ঢাকা থেকে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদগামী সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের একটি বিমান পাকিস্তানের বন্দরনগরী করাচিতে জরুরি অবতরণ করেছে। এর আগে বিমানটি ভারতে নামার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সেটি অবতরণের অনুমতি দেয়নি। উড্ডয়নের একটু পরই ৪৪ বছর বয়সী আবু তাহের নামে এক বাংলাদেশি যাত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। সে সময় উড়োজাহাজটি ভারতের আকাশসীমায় অবস্থান করছিল। সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের সূত্র বলেছে, ফ্লাইটটি মাঝ আকাশে থাকাকালে ওই যাত্রীর উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি বমি শুরু হয়। তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। এ সময় যাত্রীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় পাইলট বিমানটি মুম্বাইয়ের দিকে ঘুরিয়ে দেন এবং জরুরি অবতরণের জন্য মুম্বাইয়ের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের (এটিসি) কাছে অনুমতি চান। মুম্বাই এটিসির পক্ষ থেকে অসুস্থ যাত্রীর জাতীয়তা এবং অন্যান্য তথ্য জানতে চাওয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে মুম্বাইয়ে অবতরণের অনুমতি না মেলায় বাধ্য হয়ে বিমানের গতিপথ বদলে পাকিস্তানের করাচি শহরের দিকে যান পাইলট। পাকিস্তানের আকাশসীমা থেকে করাচির এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের কাছে বিমানটির জরুরি অবতরণের অনুমতি চান তিনি। অনুমতি মেলায় সকাল ৭টা ২৮ মিনিটে করাচির জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে সৌদিগামী ওই বিমান। বিমানটি অবতরণের পরপরই পাকিস্তানের সিভিল এভিয়েশন অথরিটির (সিএএ) মেডিকেল টিম বিমানবন্দরে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করে। বিমানবন্দরের চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিকভাবে ওই রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং চিকিৎসাসেবা দেন। পরে অবস্থার উন্নতি হলে তাকে নিয়ে ফ্লাইটটি রিয়াদের উদ্দেশে রওনা হয়। ওপরের অংশটিও অপ্রচলিত একটি অনলাইন পত্রিকা থেকে নেওয়া এবং পত্রিকাটির ওই প্রতিবেদনটির পাঠক সংখ্যা তাদের যে কোনো প্রতিবেদন থেকে অনেক বেশি। তা হলে বলা যায়, ওই সংবাদটি যে খ্যাতনামা সাংবাদিক প্রথম ইউটিউবে নিয়ে এসেছিলেন, তিনি বুঝেশুনেই তা দর্শক-পাঠকদের সামনে এনেছিলেন। সন্দেহ নেই, ভারতবিরোধী মনোভাবের বাজার লক্ষ্য করেই এ রকম কনটেন্ট তৈরি করা হয়। মাঝে মাঝেই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে কলাম প্রকাশিত হয়। যেমন—মো. তৌহিদ হোসেনের ‘বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক: রোল মডেল বনাম মাঠ বাস্তবতা’ (প্রথম আলো, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩), ড. আসিফ নজরুলের ‘বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব কেন? কিংবা টাইমস অব ইন্ডিয়া’র একটি প্রতিবেদন বাংলা তর্জমায় মানবজমিনের একটি প্রতিবেদন (২৫ নভেম্বর ২০২৩) ‘বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব কেন বাড়ছে?’ আমাদের যাপিত জীবনে মানুষের অভিমত খুবই গুরুত্ব বহন করে। প্রশ্ন থেকে যায়, ওই ঘটনার কোনো সরকারি ব্যাখ্যা আমরা পাইনি। আর সত্যাসত্য যাচাইয়ের সুযোগ না থাকলে বিভ্রান্তি বিস্তৃত হয়। একদিকে বলা হচ্ছে, ভারতবিরোধী মনোভাব ক্রমান্বয়ে বাড়ছে আবার অন্যদিকে ভারতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। নাকি দুটোই একসঙ্গে বাড়ছে। বোঝা বড় দায়। একটি রাজনৈতিক জোট প্রকাশ্যে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে। ৫৩ বা ৫৬টি দল ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ভায়তীয় চাদর ছুড়ে ফেলে ফটোসেশন করেছেন। এই ভদ্রলোক ‘অসহযোগ আন্দোলন’ (?) ঘোষণা করে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছেন। কভিডের দু-তিন বছরে কলকাতার নিউমার্কেটের হোটেল-দোকানগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার একটি প্রতিবেদন পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সম্পর্ক হৃদয়ের, ভালোবাসার। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১৬ লাখ মানুষ ভিসা নিয়ে ভারতে যাচ্ছে। এ সংখ্যা কখনো কখনো বাড়েও। বাংলাদেশের মানুষ ভারতে চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কারণে যাচ্ছেন। এজন্য বাংলাদেশে ১৫টি ভিসা সেন্টার খোলা রয়েছে। যমুনা ফিউচার পার্কে যে ভারতীয় ভিসা সেন্টারটি রয়েছে, তা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভিসা সেন্টার। প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজারের ওপরে ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। এ সংখ্যা বাড়ছেই। সবই করছি সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে। দুদেশের মধ্যে যে সম্পর্ক, তা অসাধারণ ও অনন্য। কিন্তু যারা প্রগতিশীল মানুষ তাদের অনেকে আমাকে বলেছেন, ভারত সরকারের নানাবিধ কার্যকলাপেও ভারতবিরোধী মনোভাবের মাত্রা যুক্ত হচ্ছে। যারা সড়কপথে ভারতে যান, তাদের ভারত অংশে ইমিগ্রেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অকারণে অপেক্ষায় থাকতে হয়। সেখানে ভারতের ইমিগ্রেশন অফিসারদের আচার-ব্যবহার অনেক খারাপ। বাংলাদেশ অংশে বেশ তাড়াতাড়ি অনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলেও ভারত অংশে অপেক্ষাকৃত অনেক সময় লাগে। গত কয়েক বছর ধরে আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কেননা আগরতলা থেকে দিল্লি, চেন্নাই, মুম্বাই, বেঙ্গালুরুর ভাড়া বেশ কম। কিন্তু সেখানেও ইমিগ্রেশনের ভারতীয় অংশের ধীরগতির কারণে অনেকে দিল্লি-চেন্নাই ফ্লাইট মিস করেন। ভারতীয় রাজনীতিবিদরা ও আমলারা এ বিষয়গুলো বিবেচনায় আনেন? দুই. সীমান্তে হত্যা নিয়ে দেশের মানুষ খুবই বিরক্ত। ফেলানী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বারবার মানুষের আলোচনায় চলে আসে। বিএনপি ও এক-এগারো সরকারের আমলে সীমান্তে হত্যা হয়েছিল ৭৫০ জন আর আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে তুলনামূলকভাবে অনেক কমে এসেছে। কিন্তু মানুষের কথায় যুক্তি আছে। বলা হচ্ছে—এখন দুদেশের মধ্যে সম্পর্ককে অভিহিত করা হচ্ছে ‘সম্পর্কের সোনালি অধ্যায়’ হিসেবে, তাহলে সীমান্তে মানুষ হত্যা হবে কেন? অনেকবার বলা হয়েছে, দুদেশের লক্ষ্য একটি মানুষও সীমান্তে মারা যাবে না। চোরাচালানে কি শুধু বাংলাদেশের নাগরিকরা যুক্ত? ভারতীয় নাগরিকরা যারা চোরাচালানে যুক্ত তাদের বিচার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ করে; কিন্তু তারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় না। বেশ কয়েকটি কারণে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধাপরাধী দলের অবস্থান রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে ওই এলাকার মানুষজনকে জামায়াতিরা বিভ্রান্ত করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে। বস্তুত, এবার লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীন বিজেপি ৭৬ পৃষ্ঠার নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে। বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারে রয়েছে— ভারত-চীন, ভারত-পাকিস্তান, ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে ‘শক্তিশালী অবকাঠামো’ গড়ে তোলা হবে। লক্ষণীয়, এখানে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কথা নেই। কোনো কোনো বিশ্লেষক বলেছেন, এই সীমান্তে ইতোমধ্যে কাঁটাতারসহ যথেষ্ট ‘শক্তিশালী অবকাঠামো’ নির্মাণের পর আর কঠোর হওয়ার সুযোগই নেই। আবার এটাও হতে পারে, ইশতেহারের এই প্রতিশ্রুতি ‘বাংলাদেশ কার্ড’ না খেলার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সম্পর্কিত। চীন যখন প্রধান প্রতিপক্ষ, পাকিস্তান যখন চিরবৈরী, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ যখন বেইজিংয়ের দিকে ঝুঁকে, নেপাল ও ভুটান যখন দোদুল্যমান, তখন বাংলাদেশই একমাত্র নির্ভরযোগ্য প্রতিবেশী। আমাদের দেশে পাকিস্তানকে মনে-প্রাণে ঘৃণা করে এ রকম লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু পাকিস্তানি পণ্য বর্জন করার কথা কেউ কখনো বলেনি। চীনা পণ্য বর্জনের কথা কেউ কখনো বলেছে? বরং কয়েকদিন আগে বাংলাদেশে চীনা ভিসা প্রসেসিং সেন্টার খোলা হয়েছে। তিন. ১৯৭২-৭৩ সালে শুধু খাদ্য বা ভোগ্যপণ্য নয়, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মেরামত এবং পুনর্গঠনের জন্য ও শিল্প-কারখানায় কাঁচামাল সরবরাহেও ভারত ব্যাপক সহায়তা প্রদান করে। ভারত নিজে তেলের আমদানিকারক হয়েও বাংলাদেশের জ্বালানি তেল শোধনাগারের (রিফাইনারি) জন্য অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করে জরুরি সহায়তা করেছিল। ভারত বেসামরিক বিমান ও জাহাজ সরবরাহ করে। নতুন দেশটির জন্য সবচেয়ে জরুরি ছিল খাদ্য। ১৯৭২-এর শুরুতে বাংলাদেশ একদিকে যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষতি এবং আরেক দিকে পরপর দুবার শস্যহানির কবলে পড়ে। ভারত সহায়তা হিসেবে শুধু ৪ লাখ টন খাদ্যশস্যই দেয়নি, খাদ্যশস্য পরিবহনেও সহায়তা করে। প্রথম ছয় মাসে মোট প্রাপ্ত খাদ্য সহায়তার ৭৪ শতাংশই ভারত দিয়েছিল। ১৯৭১-এর ডিসেম্বর থেকে ১৯৭২-এর জুনের মধ্যে ২০ কোটি মার্কিন ডলার দান হিসেবে এবং পণ্য আমদানি ও প্রকল্পের জন্য অত্যন্ত সহজ শর্তে ৪.২ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ প্রদান করে। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৪-৭৫ সময়ে ভারত ৩০.৮ কোটি মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫৭.৭ কোটি মিলিয়ন মর্কিন ডলার সহায়তার পর দাতাদের মধ্যে এটাই ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সহায়তা। [তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ জাতি গঠনকালে এক অর্থনীতিবিদের কিছু কথা: অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, ইউপিএল] পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের পাওনা নিয়ে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলো টুঁ শব্দটিও করে না। এক হিসাব অনুসারে, মুক্তিযুদ্ধের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি ২১-২৩ বিলিয়ন ডলার বলে ধারণা করা হয়। এর মধ্যে অবকাঠামোগত পুঁজি (Physical Capital) দাঁড়ায় ২০ বিলিয়ন ডলার এবং মানব পুঁজি (Human Capital) ৩ বিলিয়ন ডলার। এসএ চৌধুরী ও এসএ বাশার, “দি এনডিওরিং সিগনিফিক্যান্স অব বাংলাদেশ’স ওয়ার অব ইনডিপেনডেন্টস: অ্যান অ্যানালাইসস অব ইকোনমিক কস্টস অ্যান্ড কল্পিকোয়েন্সেস”, ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি, কানাডা (অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি), ২০০১। ১৯৭৪ সালে দুদেশের পারস্পরিক কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেওয়ার ও সম্পর্ক স্থাপন করার পরের দিনগুলোতে এ বিষয়ে দেন-দরবার অব্যাহত থাকে। জুলফিকার আলী ভুট্টোর ১৯৭৪ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ সফরের সময় এ বিষয়টি উল্লেখ করে দুপক্ষের মনোমালিন্য ও অসন্তুষ্টির কারণ ঘটিয়েছিল। এমনকি ভুট্টোর বাংলাদেশ সফরের আগেও বাংলাদেশ এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা ও সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করার জন্য ইসলামাবাদে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল। বলা হয়, এরপর যখন ঢাকায় ভুট্টো ও শেখ মুজিবের বৈঠক হবে তখন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। এর উত্তরে পাকিস্তান জানায়, ইসলামাবাদে এমন আগাম বৈঠকের প্রয়োজন নেই এবং তারা নিশ্চয়তা দেয় যে, ভুট্টোর ঢাকা সফরকালে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিতে আলোচনা করা হবে এবং সিদ্ধান্তেও পৌঁছানো সম্ভব হবে। ভুট্টোর সফরের সময় বাংলাদেশ যা যা প্রস্তাব করে: (ক) পাকিস্তান নীতিগতভাবে সব সম্পদ ও দায় সমানভাবে ভাগ করে নেবে, (খ) একটি যৌথ কমিশন এ বিষয়ে বিস্তারিত পরীক্ষা করে দেখবে এবং (গ) পাকিস্তান দুই মাসের মধ্যে কিছু অর্থ তার সদিচ্ছার প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশকে প্রদানের উদ্যোগ নেবে। প্রথম কিস্তিতে সহজে হিসাবযোগ্য সম্পদ দিয়ে পরিশোধ করা হবে, যেমন—স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রা, বেসামরিক বিমান ও জাহাজ। এই প্রতীকী অর্থ প্রদানের পরিমাণ ২০০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ধার্য করা হয়। এটি ছিল সমগ্র পরিশোধ ও বণ্টনযোগ্য সম্পদের একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। তা ছাড়া অন্যদিকে বাংলাদেশ এরই মধ্যে পাকিস্তানের বৈদেশিক দায় ভাগ করে নিয়েছিল। এই প্রতীকী টাকা প্রদানের বিষয়টি ছিল ১৯৭২-পূর্ব সম্পদ বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার অঙ্গীকারকে নিশ্চিত করা। এর ফলে পরবর্তী আলোচনায় এ ব্যাপারে পাকিস্তানের সদিচ্ছার ওপর বাংলাদেশের বিশ্বাস সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশ এটাও প্রস্তাব করে যে, যদি পাকিস্তানের টোকেন দায় মেটাতে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার সংগ্রহ না থাকে, তেল উৎপাদনকারী বন্ধু দেশ (যারা বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনাকালে দুদেশের বিবাদ মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য উৎসাহ দেখিয়েছে) পাকিস্তানকে এ ব্যাপারে সহযোগিতাদানে প্রস্তুত। বাস্তবে ভুট্টো সম্পদ ভাগ করে নেওয়ার কোনো রকম আলোচনায় রাজি হননি। প্রস্তাব মেনে নেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। তিনি যুক্তি দেন যে, সঙ্গে কোনো বিশেষজ্ঞ তিনি নিয়ে আসেননি। অথচ তিনিই আগে কথা দিয়েছিলেন যে, সফরকালে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। এর ফল হিসেবে দুদেশের সম্পর্ক উন্নত ও স্বাভাবিক হয়ে এসেছে—এমন ঘোষণা করে কোনো সরকারি যৌথ ইশতেহার প্রকাশ করা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর শাসনকালে এটি ছিল পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। এ ইস্যুর কারণে দুদেশের সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি এবং কূটনৈতিক সম্পর্কও পুরোপুরি স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। ১৯৭৫ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত সব আন্তর্জাতিক ফোরামে এ বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। ১৯৭৪ সালের অক্টোবর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষণ দেন, তাতে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণের (বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল ইসলামাবাদ যাবে, এমন প্রস্তাবসহ) প্রসঙ্গে এ বিষয়টি উত্থাপন করেন। ১৯৭৫ সালে কমনওয়েলথ রাষ্ট্রের প্রধানদের কনফারেন্সেও তিনি এই ইস্যু উত্থাপন করেন। এমনকি ১৯৭৫-এর জুলাই মাসে ইসলামী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনেও প্রসঙ্গটি আলোচিত হয়। ১৯৭৫ সালের এপ্রিল মাসের কমনওয়েলথ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক ইশতেহারে এসব অনিষ্পন্ন ইস্যুতে আলোচনার আহ্বান করা হয়। এতে সম্পদের ভাগাভাগি না হওয়া, যা সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার প্রস্তাব ছিল। ১৯৭৫-এর জুলাইতে ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে কামাল হোসেন প্রস্তাব করেন যে, এ ব্যাপারে আরব দেশগুলো (সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত) মধ্যস্থতা করতে পারে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, এরা সবাই অথবা যে কোনো দেশ ‘মধ্যস্থতাকারী’র কাজটি করতে পারে। তারা দুপক্ষের প্রাসঙ্গিক আলোচনা পরীক্ষা করে ‘সমাধানের সূত্রগুলো’ প্রস্তাব করতে পারে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে আগাম আশ্বাস দিয়ে রাখতে রাজি যে, সে মধ্যস্থতাকারীর প্রস্তাব মেনে নেবে। বাংলাদেশ এর আগেও পাকিস্তানের কাছে বন্ধু আরব আমিরাতের নাম মধ্যস্থতাকারী হিসেবে প্রস্তাব করে। কিন্তু পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় রাজি ছিলেন না। বাংলাদেশের উদাত্ত আহ্বানে তারা সাড়া দেননি। ইসলামাবাদ ফিরে পাকিস্তান সরকার এ বিষয়ে উত্তর জানাবে বলে আশ্বাস দেয়। সেই উত্তর কখনো আসেনি। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্র ক্ষমতা দখলের পর এ বিষয়টি হিমাগারে পাঠানো হয়েছিল। বরং খুনিচক্র ক্ষমতা দখলের সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে। এখন ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেয়, যখন রমজান মাসে ভারতীয় পেঁয়াজের খুবই প্রয়োজন হয়। গুগলের নির্বাহী প্রধান একজন ভারতীয় নাগরিক সুন্দর পেল্লাই; বর্জনকারী কি গুগল বর্জন করবেন? পুনশ্চ: আমাদের দুর্ভাগ্য মুক্তিযুদ্ধের কথা, বাঙালি সংস্কৃতির কথা, মঙ্গল শোভাযাত্রার কথা, ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বললে ট্যাগ দেওয়া হয় ‘র’-এর এজেন্ট। আবার ন্যায্য কথা বললে, কারও স্বার্থে আঘাত লাগলে সেখানেও ট্যাগ দেওয়া হয় ‘রাজাকার’। লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক
২১ এপ্রিল, ২০২৪

২৩ এপ্রিল ঢাকায় আসছে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল
ব্যস্ত সময় পার করছে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা, সদ্যই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ শেষ করেছে জ্যোতিরা। সেই সিরিজের রেশ না কাটতেই পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে সফরে আসছে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল। সিলেটে হতে যাওয়া পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ঢাকায় ২৩ এপ্রিল পৌঁছাবে স্মৃতি মান্ধানা-হারমান প্রীতরা। সেই উপলক্ষে সোমবার (১৫ এপ্রিল) ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। বাংলাদেশের মাটিতে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে গুরুত্বপূর্ণ এই সিরিজের জন্য ভারতীয় দলে দুজন নতুন মুখ রাখা হয়েছে। আশা সোভানা ও সাজানা সজীবন প্রথমবারের মতো দলে ডাক পেয়েছেন। এ ছাড়া দুই বছর পর দলে ফিরেছেন শ্রেয়াঙ্কা পাতিল ও দয়ালন হেমলতা। সিরিজের ম্যাচগুলোর সময় অবশ্য একটু অন্যরকম। প্রথম দুটি ও শেষ ম্যাচটি দিবারাত্রির। এ ছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ ম্যাচ দুটি শুরু হবে বেলা দুটায়। ২৮ এপ্রিল হবে সিরিজের প্রথম ম্যাচ। সিরিজের বাকি চারটি ম্যাচ ৩০ এপ্রিল, ২ মে, ৬ মে ও ৯ মে। এবারের সফর নিয়ে মোট তৃতীয়বার টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসবে ভারতের মেয়েরা। ২০১৪ সালে প্রথম সফরে ৩-০ ব্যবধানে জেতে ভারত। গত বছরের জুলাইয়ে সর্বশেষ সফরে ভারত সিরিজ জেতে ২-১ ব্যবধানে। ভারতের স্কোয়াড: হারমানপ্রীত কৌর (অধিনায়ক), স্মৃতি মান্ধানা (সহ–অধিনায়ক), শেফালি ভার্মা, দয়ালন হেমলতা, সাজানা সজীবন, রিচা ঘোষ (উইকেটকিপার), যষ্টিকা ভাটিয়া (উইকেটকিপার), রাধা যাদব, দীপ্তি শর্মা, পূজা বস্ত্রকর, আমানজোত কৌর, শ্রেয়াঙ্কা পাতিল, সাইকা ইসহাক, আশা সোভানা, রেনুকা সিং ও তিতাস সাধু।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

ইরানের হাতে ১৭ ভারতীয় ক্রু আটক
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যেই ইসরায়েলি জাহাজ আটক করেছে দেশটির কমান্ডোরা। ফিল্মি স্টাইলে হরমুজ প্রণালি থেকে জাহাজটিকে আটক করা হয়। আটক এ জাহাজে ২৫ নাবিক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৭ জনই ভারতীয়। রোববার (১৪ এপ্রিল) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, শনিবার এমএসসি এআরআইইএস নামের জাহাজটি জব্দ করেন বিপ্লবী গার্ডের সেনারা। ইরানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পর্তুগালের পতাকাবাহী জাহাজটি জোডিয়াক মেরিটাইম শিপিং কোম্পানির। আর এই কোম্পানিটির মালিক হলেন ইসরায়েলের ধনকুবের ইয়াল ওফার। হরমুজ প্রণালি থেকে জব্দ করার পর জাহাজটি এখন ইরানের সমুদ্রসীমায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুক্রবার দুবাই থেকে মুম্বাইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল জাহাজটি।  ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, জাহাজটি উদ্ধারের জন্য ইরানের প্রশাসনের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে যোগাযোগ করা হয়েছে। বিষয়চি নিয়ে নয়াদিল্লিতে ইরানের দূতাবাসের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।  যুক্তরাষ্ট্রও জাহাজটিকে অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেন, ‘আমরা ইরানকে জাহাজটি এবং তার আন্তর্জাতিক ক্রুকে অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। উসকানি ছাড়াই একটি বেসামরিক জাহাজ জব্দ করা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কর্পসের জলদস্যুতার একটি কাজ৷ মধ্যপ্রাচ্যের এক সামরিক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এপিকে এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও পাঠিয়েছেন। সেটিতে দেখা গেছে, বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডোরা হেলিকপ্টার নিয়ে জাহাজটিতে নামছেন। ভিডিওতে জাহাজটির এক ক্রুকে বলতে শোনা যায়, ‘কেউ বাইরে যাবেন না।’ পরে তিনি সবাইকে জাহাজের ব্রিজে যাওয়ার জন্য বলেন। ভিডিওটিতে আরও দেখা যায়, বিপ্লবী গার্ডের এক কমান্ডো হাঁটু গেড়ে বসে অন্যদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন। ওই সময় হেলিকপ্টার থেকে অন্য আরও কমান্ডোরা নেমে আসেন। জাহাজটি শুক্রবার দুবাইয়ে ছিল। শনিবার এটি হরমুজ প্রণালিতে আসে। ওই সময় জাহাজটি ট্র্যাকিং ডাটা বন্ধ করা ছিল। নিরাপত্তার জন্য গালফ অঞ্চল দিয়ে চলাচল করা সব ইসরায়েলি জাহাজ গত কয়েক দিন ধরে ট্র্যাকিং ডাটা বন্ধ করে চলছে। তবে পার পাচ্ছে না।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪
X