ইসরায়েল কি বাইডেনের ভিয়েতনাম হচ্ছে
গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা ও দেশটিকে মার্কিন সহায়তা বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, তা ১৯৬৮ সালে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিক্ষোভের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। সে সময় বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে সেই শিক্ষার্থীদের দাবি মানতে বাধ্য হয় কলাম্বিয়া কর্তৃপক্ষ। যুদ্ধে পরাজিত হয় যুক্তরাষ্ট্র। ঠিক ৫৬ বছর পর একই মাসে গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে সেই কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। কলাম্বিয়াতে সেই আন্দোলনের সূচনা হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সেই ছাত্রবিক্ষোভ। এরকম প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে ইসরায়েল কি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জন্য আরেক ভিয়েতনাম হয়ে উঠছে। দীর্ঘ ৫৬ বছর পর ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি ফিরে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। গত ১৭ এপ্রিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ লনে ‘গাজা সলিডারিটি ক্যাম্প’ স্থাপন করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি জানায়, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ব্যবসা করে এমন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে। আর গাজায় যুদ্ধরত ইসরায়েলি বাহিনীকে মার্কিন সহযোগিতা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন। ঠিক একইভাবে ১৯৬৮ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ভিয়েতনামে মার্কিন আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানিয়েছিল। আর দাবি জানিয়েছিল, ভিয়েতনাম যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারবে না কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এসব মিলের কারণেই বর্তমান ইসরায়েলবিরোধী ছাত্রবিক্ষোভটি ১৯৬৮ সালের ছাত্রবিক্ষোভের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক। ১৯৬৮ সালের ছাত্রবিক্ষোভের দাবিগুলো মেনে নিলেও চলমান বিক্ষোভের দাবিগুলো এখনো মেনে নেয়নি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বরং বিক্ষোভ দমাতে এখনো যুদ্ধংদেহি অবস্থানে আছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলতি সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা হ্যামিলটন হল নামে একটি স্কুলভবন দখল করে নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মিনোচে শফিক নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগকে তলব করেন। এরপর পুলিশ সেখানে যায় শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে এবং গুলির ঘটনাও ঘটে। সেখানে পুলিশ যাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। শিক্ষার্থীদের তাঁবু সরিয়ে ফেলে জোর করে সেখান থেকে তাদের বের করে দেয়। এখন পর্যন্ত আমেরিকার ৪৫টি অঙ্গরাজ্যের অন্তত ১৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত আড়াই হাজারেরও বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনে পুলিশের মারমুখী আচরণে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে দেশটিতে। দেশটির বিভিন্ন নাগরিক ও ধর্মীয় সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, পুলিশ দিয়ে তাদের তাঁবু সরানো যেতে পারে, সাময়িক সময়ের জন্য তাদের বাধা দেওয়া যেতে পারে কিন্তু এতে তাদের আন্দোলন বন্ধ হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধ ও দেশটিকে মার্কিন সহায়তা বন্ধ হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। এ বিক্ষোভের শেষ পরিণতি কী, তা এখনো অজানা। ১৯৬৮ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছিল। কিন্তু এবারও কি মানবে? উত্তর অজানা। কারণ, সময় পাল্টেছে। ১৯৬৮ আর ২০২৪ এক নয়। বিক্ষোভের গতি-প্রকৃতিও এক নয়। তবে এরই মধ্যে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের এ বছরে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। ১৫ মে এ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। এ ধরনের অনুষ্ঠানে সাধারণত ৫০ হাজার মানুষের উপস্থিতি থাকে। ঠিক একইভাবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছে। অনেকেই বলছে, ইসরায়েল বাইডেনের জন্য আরেক ভিয়েতনাম হয়ে উঠছে। মার্কিন সিনেটর ও বামপন্থি রাজনীতিক বার্নি স্যান্ডার্সও একই কথা বলেছেন। এক সাক্ষাৎকারে ভারমন্টের এ সিনেটর বাইডেনকে তুলনা করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসনের সঙ্গে, যিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে শিক্ষার্থী-বিক্ষোভের জেরে ১৯৬৮ সালে পুনর্নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। স্যান্ডার্স বলেছেন, এবার ইসরায়েল নিয়ে তার অবস্থানের জন্য যুব সম্প্রদায় ও ডেমোক্র্যাটদের বড় অংশের সমর্থন খুইয়ে বাইডেনের হেরে যাওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি। তা ছাড়া মুসলিম ভোটের একটা প্রভাব তো আছেই। কারণ গাজায় ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থনের কারণে মার্কিন মুসলিমরা এরই মধ্যে বাইডেনকে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
০৯ মে, ২০২৪

‘বাইডেনের ভিয়েতনাম হবে ইসরায়েল’
ইসরায়েল নিয়ে ঢেঁকি গেলার মতো অবস্থায় পড়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধ এবং ফিলিস্তিনের মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নেমেছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শাস্তির মুখে পড়েও পিছু হটছেন না তারা। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছেন প্রভাবশালী মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স।  ফিলিস্তিনপন্থিদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘বাইডেনের ভিয়েতনাম’ হয়ে উঠতে পারে ইসরায়েল। বার্নি স্যান্ডার্স এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন।   বার্নি স্যান্ডার্স তার সাক্ষাৎকারে বাইডেনের তুলনা করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসনের সাথে। সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে শিক্ষার্থী-বিক্ষোভের জেরে ১৯৬৮ সালে পুনর্নিবাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।  এবার ইসরায়েল নিয়েও নিজের অবস্থানের জন্য যুব সম্প্রদায় ও ডেমোক্র্যাটদের বড় অংশের সমর্থন খোয়াতে পারেন বাইডেন। আর এর ফলে আগামী নভেম্বর মাসের নির্বাচনে বাইডেন হেরে যেতে পারেন বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স।  আমেরিকাজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ ক্রমেই আরও জোরদার হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন যে, ইসরায়েল নিয়ে ঢেঁকি গেলার মতো অবস্থায় পড়েছেন জো বাইডেন। এদিকে, শাস্তির মুখে পড়া ওইসব শিক্ষার্থীর পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেবে বলে বার্তা দিয়েছে ইয়েমেনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিরা। শিক্ষার্থী-বিক্ষোভ এবং ভিন দেশের যুদ্ধে প্রচুর খরচের প্রশ্নে নির্বাচনের আগে সব মিলিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেন। হুথি পরিচালিত সানা ইউনিভার্সিটির এক কর্মকর্তা বলেছেন, ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন যারা, তাদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনের পাশে এই লড়াইয়ে যত রকমভাবে থাকা সম্ভব, আমরা রয়েছি। নির্দিষ্ট ইমেল-ঠিকানা দিয়ে সানা ইউনিভার্সিটির সাথে যোগাযোগ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার পরই সরাসরি ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ায় পশ্চিম এশিয়ার বেশ কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন। তার মধ্যে ইয়েমেনের হুথি অন্যতম। তারা লোহিত সাগরের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক নৌপথে হামলা শুরু করে।  উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে দুই হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার হয়েছে। 
০৬ মে, ২০২৪

আমার দেখা ভিয়েতনাম
পৃথিবীতে যে কয়েকটি দেশ তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত তার মধ্যে ভিয়েতনাম অন্যতম। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই দেশটিতে যাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। আমার বাবা ভিয়েতনাম প্রবাসী। তার অফিসের কারণে এবার রোজার ঈদে বাংলাদেশে আসতে পারবে না জেনে হঠাৎ সিদ্ধান্ত হয় যে, আমরা বাবার কাছে যাব। ৪ এপ্রিল ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সে কলকাতা হয়ে ভিয়েতনাম পৌঁছাই আমি, আম্মু ও আমার ছোট বোন।  এশিয়ার সবচেয়ে সুন্দর দেশগুলোর মধ্যে একটি ভিয়েতনাম। ভিয়েতনামের উত্তরে চীন, পশ্চিমে লাওস ও কম্বোডিয়া, দক্ষিণ ও পূর্বে দক্ষিণ চীন সাগর অবস্থিত। হানয় ভিয়েতনামের রাজধানী। হো চি মিন সিটি হলো বৃহত্তম শহর। এবারের আমাদের ভ্রমণের স্থানগুলো ছিল শুধু দক্ষিণ ভিয়েতনাম অর্থাৎ হো চি মিন সিটির আশপাশে।  ভিয়েতনামে প্রথম রাস্তায় বের হয়ে অবাক হয়েছিলাম। রাস্তায় শুধু মোটরসাইকেল আর মোটরসাইকেল। ছেলেমেয়ে বৃদ্ধ সবাই মোটরসাইকেল চালায়। গাড়ি থেকে মোটরসাইকেল বেশি। তবে এরা আমাদের মতো রোদ সহ্য করতে পারে না। তাই মোটরসাইকেল চালানোর সময় এরা মাস্ক পরে হাত পা ঢেকে মোটরসাইকেল চালায়।  আমাদের বেড়াতে যাওয়ার প্রথম জায়গা ছিল হো চি মিন থেকে প্রাইভেট গাড়িতে চার ঘণ্টার দূরে 'ভুং তাও' সমুদ্রসৈকতে। ৬ এপ্রিল সেখানে গিয়েছিলাম আমরা। সেদিন যাওয়ার সময় ভিয়েতনামের হাইওয়েগুলো দেখে আমি অভিভূত হই। মোটরসাইকেল এবং গাড়ির জন্য আলাদা লেন করে দেওয়া আছে। কিছুদূর পরপরই গতিসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে।  দেখলাম, আমাদের গাড়ি চালক কখনোই সেই গতি সীমার বাইরে এক চুলও বেশি গতিতে যাচ্ছেন না। আরেকটি জিনিস যেটি আমার মনে ধরল সেটি হলো টোল নেওয়ার ব্যবস্থা। বাংলাদেশে যেমন টোল হাতে হাতে দিতে হয় সেখানে সে রকম না। গাড়ির সামনে একটি স্টিকার লাগানো আছে যেটি স্ক্যান করলেই টোল দেওয়া হয়ে যায় এবং গাড়ির মালিকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেয়। টোল প্লাজার সামনে গিয়ে গাড়িকে শুধু একটু ধীরে চালাতে হয়। ব্যাস, টোল দেওয়া শেষ।  ভুং তাও বিচে একটা ফোর স্টার রিসোর্টে আমরা একদিন ছিলাম। আমাদের রিসোর্টে সামনের দিকে ছিল সমুদ্র এবং পেছনে ছিল পাহাড়। তবে সত্যি কথা বলতে সেই সমুদ্রসৈকতটি বাংলাদেশের কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতের মতো এত সুন্দর ছিল না, পলিথিন ও আবর্জনায় ভরা।  ভিয়েতনামে গিয়ে আমি প্রথমবারের মতো উপলব্ধি করলাম প্রবাস জীবন কেমন হয়। আশপাশে কোনো পরিচিত নেই, কোনো বাঙালি পরিবার নেই, কেউ কথা বলার নেই। আমি বুঝতে পারলাম দিনের পর দিন প্রবাসে থাকা আমার বাবা কীভাবে দিনযাপন করে। পরিবারকে কাছে পেয়ে বাবা খুশি হয়। আমাদেরকে ভিয়েতনামের সব জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে, সর্বোচ্চ ভালো হোটেলের রাখার ব্যবস্থা করেছে, ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেছে। সেই জন্য আমি আমার বাবাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। তার কারণেই আমি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি দেশ ঘুরে আসতে পেরেছি। আমার প্রবাসী বাবার বাসার সামনের বিল্ডিংটিই ভিয়েতনামের সর্বোচ্চ বিল্ডিং, যেটা ৮১ তলা এ বিল্ডিংয়ের নাম ‘ল্যান্ডমার্ক ৮১’। এই বিল্ডিং এর টপ ফ্লোরে ওঠার জন্য আগেই টিকিট কাটতে হয়। টিকিট কেটে আমরা লিফটে চড়ে সরাসরি ৮১ তলায় উঠে যাই। উপরে উঠে পুরো শহরের দৃশ্য দেখা যায়। মনে হতে থাকে আমরা যেন মেঘের মধ্যে আছি। এখানে আমরা বেশকিছু ছবি তুললাম। এখানে একটি ভি আর গেম খেলা যায়। ভি আর হলো ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি। শুধু একটা চশমার মতো জিনিস পরিয়ে দেবে আর একটা ভিডিও চালিয়ে দেবে। তাতেই মনে হবে আসলেই সেই জায়গাতে আছি। ভি আর গেমটিতে এই ৮১ তালা বিল্ডিংয়ে উঠিয়ে সরাসরি লাফ দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। যদিও এটি একটি গেম, শুধু একটি ভিডিও কিন্তু মনে হয় যেন সত্যি সত্যি নিচে পড়ে যাচ্ছি। ভিয়েতনামের জাতীয় খাবার 'ফাও'। স্যুপের মধ্যে নুডুলস, মাংস আর কিছু সবজি। হালাল ফাও পাওয়া অনেক মুশকিল। বেশিরভাগই তৈরি হয় শূকরের মাংস দিয়ে। তবে বাবা অনেক খুঁজে একটা হালাল রেস্টুরেন্টে আমাদের নিয়ে যায়। রেস্টুরেন্টটা হো চি মিনের সেন্ট্রাল মসজিদের ঠিক সামনেই। আমরা সেখানে 'ফাও' স্যুপটা খাই। এই দেশে সবাই চপস্টিক ব্যবহার করে। আমরাও চপস্টিক দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করলাম। আমাদের ফাও টা গরুর মাংস দিয়ে তৈরি। মুরগির মাংসও পাওয়া যায়। ভিয়েতনামে আমরা রোজার ঈদ উদযাপন করি। হো চি মিন সিটিতে একটি মসজিদ রয়েছে যেটা সেখানকার ভারতীয় ও পাকিস্তানি মুসলিমরা বানিয়েছে। আমরা সবাই সেখানে গিয়ে নামাজ পড়ি। সেখানে মেয়েরা মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়তে পারে। মসজিদে মেয়েদের নামাজের জন্য আলাদা জায়গা করা আছে। ঠিক যেমন থাকে মক্কা মদিনার মসজিদগুলোতে। ঈদের দিন সেখানে অনেক মেয়েরা নামাজ পড়তে যায়।  ঈদের দিন নামাজ পড়ে আমার বাবার এক বাংলাদেশি বন্ধুর বাসায় দাওয়াত খেতে যাই। এরপর শুরু হয় আমাদের ছয় ঘণ্টার রোড ট্রিপ। গন্তব্য 'দা লাত', হো চি মিন থেকে ৬ ঘণ্টা দূরে পাহাড়ি এলাকা। আগেই বলেছি ভিয়েতনামের রাস্তাগুলো অনেক সুন্দর। আর পাহাড়ি রাস্তা হলে তো কথাই নেই। বাংলাদেশেও পাহাড় দেখেছি। কিন্তু এত পাহাড় একসঙ্গে দেখিনি। কিন্তু বাংলাদেশের পাহাড়ি রাস্তাগুলো এত সুন্দর হয় না। দা লাত এলাকায় বছরের ছয় মাসই শীতকাল থাকে। তাই যখন থেকে দা লাত এলাকা শুরু হয় তখন থেকে আশপাশে অনেক গ্রিন হাউস দেখা যায়। গ্রিন হাউসের মধ্যেই এখানে সব চাষ করা হয়। উন্মুক্ত কোনো কৃষি জমি নেই।  দা লাত শহরটির আশপাশে অনেক পাহাড় মাঝখানে উপত্যকার মধ্যে শহরটি অবস্থিত। আমাদের হোটেলটি শহর থেকে কিছুটা দূরে ছিল। তাই আমরা আরও বেশি পাহাড় উপভোগ করতে পেরেছিলাম। পাহাড়গুলো লম্বা লম্বা পাইন গাছে ঢাকা ছিল। আমাদের হোটেলের নাম ছিল সুইস বেল রিসোর্ট। ইউরোপিয়ান ধাঁচে তৈরি। হোটেলের আশপাশে অনেক পাহাড়ও ছিল। পরদিন আমরা যাই 'দাতান লা' জলপ্রপাত দেখতে। সেখানে যেতে হলে প্রথমে টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকতে হয়। ঝর্ণাটার কাছে যাওয়ার জন্য দুইটা পথ আছে। একটা হলো হেঁটে যাওয়া আরেকটি একটি ছোট রোলার কোস্টারে চড়ে যাওয়া। আমরা রোলার কোস্টারে চড়ে যাই। পুরো জঙ্গলের ট্যুর দিয়ে আমরা জলপ্রপাতের কাছে পৌঁছাই। জলপ্রপাতটি অনেক বড় এবং সুন্দর ছিল। এত বড় জলপ্রপাত আগে দেখিনি। এবং এখানে সবকিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। কোথাও এক টুকরো ময়লা ছিল না। সব জায়গায় ডাস্টবিন ছিল। কিন্তু আমাদের দেশে ডাস্টবিন থাকলেও মানুষ বাইরে ময়লা ফেলে। এখানে ডাস্টবিনের বাইরে কেউ ময়লা ফেলছিল না। এটা দেখে আমার খুব ভালো লাগল। জলপ্রপাত থেকে পানি পড়ার শব্দ শুনতে খুব ভালো লাগে। আর রোদ এবং গরমের মধ্যে জলপ্রপাতের পানি যখন গায়ে এসে লাগে তখন মনে হয় কত শান্তি। ইচ্ছে করছিল এখানেই থেকে যাই।  আমাদের পরবর্তী গন্তব্য দা লাত এর সর্বোচ্চ পাহাড়। সেখানে যাওয়ার জন্য একটি জায়গার পর অন্যান্য সাধারণ প্রাইভেটকার আর যেতে পারে না। শুধু জিপে করে যাওয়া যায়। কারণ এখানকার রাস্তাগুলো অনেক খাঁড়া এবং প্যাঁচানো। উপরে একটি পার্কের মতো জায়গা আছে। উপর থেকে আশপাশের পাহাড় এবং উপত্যকাগুলো অনেক সুন্দর দেখা যায়। আমরা যখন উপরে ছিলাম তখন প্রায় সূর্য ডুবে যাচ্ছিল সে কারণে আশপাশ অনেক সুন্দর দেখাচ্ছিল। এখানে কিছুক্ষণ ঘুরেফিরে আমরা আবার জিপে করে নিচে নেমে যাই।  এরপর আমাদের গাড়িতে করে আমরা ইচিগো স্ট্রবেরি ফার্মে যাই। জায়গাটা অনেক সুন্দর। গ্রিনহাউসের মধ্যে স্ট্রবেরি চাষ করা হয়। আমরা নিজেরা গাছ থেকে স্ট্রবেরি তুলি। সেখানে আমরা গোল্ডেন বেরি নামক এক ফলের সঙ্গে পরিচিত হই। এই ফলটি নিয়ে নাকি আমার আম্মু ছোটবেলায় খেলা করেছে। তারমানে বাংলাদেশেও এই ফলটি পাওয়া যায়। স্ট্রবেরি ফার্মে আমরা কিছুক্ষণ থেকে আবার হোটেলে ফিরে যাই।  পরদিন আমরা যাই আরেকটি সমুদ্রসৈকতে। এই জায়গার নাম 'ফান থিয়েট'। যাওয়ার পথে আমরা রেড স্যান্ড নামের এক জায়গায় থামি। এটা অনেকটা মরুভূমির মতো জায়গা। মরুভূমির মতো উঁচু-নিচু লাল বালির পাহাড়। এখানে জিপে করে আমরা সেরকম উঁচু-নিচু পাহাড়ের ওপর দিয়ে ড্রিফ্টিং করেছিলাম। এমন কিছু জায়গা ছিল যেখানে সোজা খাঁড়াই থেকে নিচে নেমেছে। এই জায়গাটা অনেক মজার ছিল। আশপাশে বিশাল বড় বড় উইন্ডমিল দেখা যাচ্ছিল। যেহেতু এটা সমুদ্র এলাকা সে কারণে এখানে অনেক বাতাস। এখানে টাকা দিয়ে উট এবং উটপাখির পিঠে চড়া যায়। তবে উটে আমরা আগেই চড়েছি আর উটপাখিতে চড়া অনেক ভয়ংকর মনে হলো। সে কারণেই আর চড়লাম না।  আমরা সন্ধ্যার দিকে আমাদের রিসোর্টে পৌঁছাই। রিসোর্টটা অনেক বড় এবং সমুদ্রের অনেক কাছাকাছি। এই রিসোর্টের মধ্যেই একটা ছোট পুকুর মতো ছিল। এখানে বড় বড় ড্রাগন ফিস নামে চারটা মাছ ছিল। সন্ধ্যার সময় এই মাছগুলোকে দেখে আমরা প্রথমে কুমির ভেবেছিলাম। এই মাছগুলো লম্বায় ৬ ফিট পর্যন্ত হয় এবং এ কালো গায়ে লাল ডোরাকাটা খাজ থাকে ঠিক ড্রাগনের মতো। সে কারণেই এর নাম ড্রাগন ফিস। এক একটি মাছ দেখে মনে হচ্ছিল আমি পড়ে গেলে বুঝি আমাকেই খেয়ে ফেলবে। যেহেতু রাত হয়ে গেছিল তাই আমরা সেদিন আর সমুদ্রে নামিনি। এই রিসোর্টের মধ্যেই একটি সুন্দর রেস্টুরেন্ট আছে।  রেস্টুরেন্টে লাইভ সি ফুড ডিনার করা যায়। অর্থাৎ এখানে জীবন্ত শামুক ঝিনুক কাকড়া লবস্টার আর মাছ একুরিয়ামের মধ্যে রাখা হয়। সেখান থেকে যে কোনো কিছু বেছে নিয়ে রাঁধুনীদের বললে তারা সেটা রান্না করে দেয়। আমরা চিংড়ি ফ্রাইড রাইস, চিংড়ি বারবিকিউসহ চিংড়ির আরও বেশকিছু আইটেম খেয়েছিলাম। আরও খেয়েছিলাম আমার পছন্দের রূপচাঁদা মাছের বারবিকিউ। খাবারগুলো অনেক টেস্টি ছিল। একদম ফ্রেশ খাবার সেটা খেয়েই বোঝা যাচ্ছিল।  পরদিন সকালে আমরা সমুদ্রে নামি। এখানকার সমুদ্র কিছুটা ভিন্ন ছিল। আগেরটার থেকে পরিষ্কার এবং সুন্দর। এই সমুদ্রসৈকতে আমরা অনেক শামুক ঝিনুক কুড়াই বাসায় রাখার জন্য। সেদিন বারোটার সময় আমাদের চেক আউট ছিল। আমরা সেখান থেকে আবার হো চি মিন ফিরে যাই। পরশুদিন আমাদের চলে যাওয়ার তারিখ। পরের দিন আমরা রেস্ট নিই। আমাদের চলে যাওয়ার ফ্লাইট ছিল রাত ৮টার দিকে। তাই সকালে আমার বাবা আমাদের সেই ৮১ তালা বিল্ডিং যেটার নাম ল্যান্ডমার্ক ৮১, সেটার ৬৬ তলায় সকালের নাস্তা করতে নিয়ে গিয়েছিল। আসলে পুরা বিল্ডিংটার উপরের দিকে হোটেল এবং নিচে শপিং মল এবং রেস্টুরেন্ট। আমরা বাংলাদেশে ফিরি ১৭ এপ্রিল।  ভিয়েতনামে আমরা যে ১২ দিন ছিলাম সে কদিন থেকে বুঝতে পেরেছি যে ভিয়েতনাম একটি ট্যুরিস্ট ফ্রেন্ডলি দেশ। এখানে সবাই ট্যুরিস্টদের অনেক রেস্পেক্ট করে। এখানকার যাতায়াত ব্যবস্থাও অনেক ভালো। সে কারণেই তো গত বছর ভিয়েতনামে প্রায় এক মিলিয়ন এর বেশি ট্যুরিস্ট বেড়াতে এসেছিল। তার মানে ট্যুরিস্ট ইকোনমি এখানে অনেক বড় একটা বিষয়। বাংলাদেশও ট্যুরিস্ট ইকোনোমির অনেক বড় সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তার জন্য দরকার ট্যুরিস্ট ফ্রেন্ডলি পরিবেশ, ভালো যাতায়াত ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা। রিসানা জাইয়ান জারা অষ্টম শ্রেণি, হলি ক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

ভারত নেপাল ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে এডেফি
বাংলাদেশের ‘আউট অব হোম (ওওএইচ)’ বিজ্ঞাপনের অগ্রদূত ‘এডেফি’ সম্প্রতি তাদের পরিষেবা ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে। এই পদক্ষেপটি ওই চার দেশের কোম্পানিগুলোকে নিজ ব্র্যান্ডের আঞ্চলিক প্রসার লাভে একটি শক্তিশালী মাধ্যম প্রদান করবে। ফলে বিষয়টি ওওএইচ বিজ্ঞাপন রীতিতে আমূল পরিবর্তন করতে যাচ্ছে। এডেফি দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের ওওএইচ বিজ্ঞাপন জগতে ব্র্যান্ড উপস্থিতিকে প্রচারের নতুন নতুন সমাধান এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে আসছে। প্রগতিশীল বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে এডেফির সাফল্য আঞ্চলিক ব্যবসায়ীদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অতুলনীয় দৃশ্যমানতা এবং সম্প্রচার লাভের পথ খুলে দিয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড—এই পাঁচ দেশের ব্যবসায়ীদের বিজ্ঞাপন প্রচারণা প্রদর্শনের জন্য এডেফি অসংখ্য সুবিধা তৈরি করছে। এডেফির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিনয় বর্মণ বলেন, এই রোমাঞ্চকর বিজ্ঞাপনী কুরুক্ষেত্রে আমাদের প্রবৃদ্ধি এডেফির একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জনই নয়; এটি এই অঞ্চলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য তাদের ব্র্যান্ড প্রদর্শন এবং সম্ভাব্য ওওএইচ বিজ্ঞাপনী প্রচারণা গ্রহণ করার একটি মাধ্যমও বটে। আগ্রহী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এডেফির বিস্তৃত ওওএইচ পরিষেবা সম্পর্কে এই ওয়েবসাইটে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
০৮ মার্চ, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীকে ভিয়েতনাম সফরের আমন্ত্রণ
বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অনুষ্ঠেয় তৃতীয় ইইউ ইন্দো-প্যাসিফিক মন্ত্রী পর্যায়ের ফোরামে ভিয়েতনাম, বেলজিয়াম, চেক ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৈঠকে ভিয়েতনামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুই থান সন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভিয়েতনামে সরকারি সফরের জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফা মিন চিনহের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ-ভিয়েতনামের ৫০ বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে ড. হাছান মাহমুদকেও ভিয়েতনাম সফরের আমন্ত্রণ জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বেলজিয়ামের পররাষ্ট্র, ইউরোপীয় বিষয় ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী হাদজা লাহবিব বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় অব্যাহত সমর্থনের জন্য বেলজিয়াম সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী চারটি দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য ও বাংলাদেশের উদীয়মান খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ অধিকারসহ নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান উল্লেখ করে এ বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন চার দেশের মন্ত্রী।
০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহযোগিতায় আগ্রহী ভিয়েতনাম
বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানে আগ্রহী ভিয়েতনাম। গতকাল শুক্রবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেমব্লির (এনএ) চেয়ারম্যান ভুং দিন হিউর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেমব্লির চেয়ারম্যান স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সব ধরনের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ যৌথভাবে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, যোগাযোগ, কৃষি, মৎস্য ও সংস্কৃতি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যমান সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগাতে পারে। ভিয়েতনামের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ভিয়েতনামের সঙ্গে এবং প্রতিবেশী দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের সঙ্গে ভালো সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে উল্লেখ করে তিনি ভিয়েতনামের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপ্রধান অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারের সদস্য হতে ভিয়েতনামের পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করেছেন। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে ভিয়েতনাম সরকার ও জনগণ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রপ্রধান। সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধির জন্য যথাক্রমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভিয়েতনামের মহান নেতা হো চি মিনের ঐতিহাসিক অবদানের কথাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বাংলাদেশ ভিয়েতনাম সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের বৈঠক
বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের প্রথম বৈঠক গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুহাম্মদ ফারুক খান এমপির সভাপতিত্বে বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার, আব্দুল মজিদ খান, হাবিবে মিল্লাত, নাহিম রাজ্জাক এবং মৈত্রী গ্রুপের সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, জুয়েল আরেং, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, বাসন্তী চাকমা ও উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম এমপি অংশগ্রহণ করেন। মৈত্রী গ্রুপের এ বৈঠকে ভিয়েতনামের সংসদীয় প্রতিনিধি দল আমেরিকার কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। এ সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আধুনিক ভিয়েতনামের রূপকার হো-চিমিনকে বৈঠকে উভয় দেশের সংসদীয় প্রতিনিধি দল গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X