অবৈধ বালু উত্তোলনে রাজবাড়ীর পদ্মাপাড়ে ভাঙনের শঙ্কা
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের পাশ থেকেই বালু তুলে বিক্রি করছে একটি চক্র। স্থানীয়দের শঙ্কা, এতে বর্ষায় নদীভাঙন বৃদ্ধি পাবে কয়েকগুণ।  জানা যায়, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই দিন রাতে বালু তুলে বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রটি। তবে দিন থেকে রাতের বেলা বালু তোলার গতি বৃদ্ধি পায় কয়েকগুণ। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন পদ্মার তীর থেকে এভাবে কয়েক লাখ টাকার বালু লুট করছে চক্রটি। অব্যাহতভাবে বেশ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে নদী তীরে সৃষ্টি হয়েছে অনেক বড় বড় গর্তের। ফলে বর্ষায় এই এলাকায় নদীভাঙন বৃদ্ধি পাবে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অথচ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০-এর ৫ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্যকোনো মাধ্যমে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এ ছাড়া সেতু, কালভার্ট, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন করা যাবে না। কিন্তু এ আইনকে বৃদ্ধাঙুলী দেখিয়ে দৌলতদিয়া ৭নং ফেরি ঘাট থেকে মাত্র ৫শ গজ দূরে বাহিরচর দৌলতদিয়া ছাত্তার মেম্বার পাড়ায় পদ্মা নদীর পাড়ে এক্সকাভেটর দিয়ে নদীপাড়ের জমি খনন করে বালু তোলা হচ্ছে। এই বালু তোলায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী বেলায়েত মণ্ডল। সরেজমিনে দেখা যায়, বাহিরচর দৌলতদিয়া ছাত্তার মেম্বার পাড়ায় পদ্মা নদীর পাড়ের জমি থেকে এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এই বালু নিতে বেশ কয়েকটি ডাম্প ট্রাক অপেক্ষা করছে। বালু ভর্তি ডাম্প ট্রাক চালাচলের জন্য পদ্মা নদীর পাড় থেকে শুরু করে ৭ নম্বর ফেরি ঘাট পর্যন্ত করা হয়েছে বিশেষ রাস্তা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে অন্তত ১০টি ট্রাক বালু ভর্তি করে ছুটে যায়। এসব বালু উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এবং উপজেলার বাইরেও বিক্রি করা হয়। নদীপাড়সহ আশপাশের কৃষি জমি থেকেও গভীর গর্ত করে বালু তোলা হয়েছে। বালু কাটায় নেতৃত্বদানকারী বেলায়েত মণ্ডলের জমি বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।  নাম জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে এক ড্রাম ট্রাক চালক বলেন, ‘এখানকার জমির মালিক বিলা মণ্ডল বালু বিক্রি করছেন। তাতে কার কী সমস্যা। এসময় ভেকুচালক বলেন, ‘রাত দিন দিয়ে ১০/১৫ গাড়ি মাটি বিক্রি করা হয়। এসময় তাকে গত এক ঘণ্টায় ১০/১৫টি ট্রাক বালু বোঝাই করে চলে যাওয়ার কথা বললে তিনি চুপ করে থাকেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ এই বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের ভূমিকা বড়াবড়ই প্রশ্নবিদ্ধ। আর স্থানীয়রা কিছু বলতে গেলে তাদের দেখানো হয় নানা ধরনের ভয়-ভীতি। খোলা ট্রাকে বালু পরিবহন করায় ধুলায় বাড়ি ঘরে থাকা দায় বলে জানান অনেকেই। নদীর পার থেকে বালু উত্তোলন দ্রুত বন্ধের দাবি পদ্মা পারের মানুষের। স্থানীয় মুরাদ হোসেন জানান, প্রশাসনের লোকজন মাঝে মধ্যেই এসে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। আবার রহস্যজনক কারণে ফের শুরু হয় বালু উত্তোলন।  আল আমিন নামের এক ট্রাকচালক বলেন, প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ ট্রাক বালু বিক্রি করা হয়। মাঝে মধ্যে প্রশাসন থেকে অভিযান চালিয়ে বালু তোলা বন্ধ করে। কিন্তু কয়েক দিন পর আবার বালু তোলা শুরু হয়। অভিযুক্ত বেলায়েত মণ্ডল জানান, নদীর পাড় থেকে বালু কাটার জন্য প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেই। জমির মালিকদের টাকা দিয়ে বালু কাটা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র জানান, বালু ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলনের পক্ষে কিছু কাগজ-পত্র প্রদর্শন করেছিলেন। তবে সেসব কাগজ-পত্রের তেমন কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়নি। তাই বালু উত্তোলন বন্ধে বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে। তারপরও রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করছে বলে জানতে পেরেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৭ মার্চ, ২০২৪

‘বিএনপি রাজবাড়ীর অনেক রেলপথ বন্ধ করে দিয়েছিল’
রাজবাড়ী জেলাকে রেলের শহর বলা হয়। বিএনপি রাজবাড়ীতে অনেক রেলপথ বন্ধ করে দিয়েছিল। আস্তে আস্তে আমরা পিছনের দিকে হাটছিলাম বলে মন্তব্য করেছেন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে আবার রাজবাড়ীসহ বাংলাদেশে অনেক রেললাইন চালু করেছেন। সকলে জেনে খুশি হবেন রাজবাড়ীর লোকোশেডকে আবার জীবিত করা হচ্ছে। গোয়ালন্দে নকশিকাঁথা ট্রেন ও মধুমতি দুইটি ট্রেন পুনরায় ফেরত আসবে। বরিশাল পর্যন্ত রেললাইন করা হবে। মাগুরায় একটা রেললাইন চালু হচ্ছে।  বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে দৌলতদিয়া ৫ নং ফেরিঘাট এলাকায় গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে যে ট্রেনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলো যেন চালু হয়, তার সর্বাত্মক চেষ্টা করব। রেলের জায়গা দখল করে অনেকেই নানান স্থাপনা তৈরি করেন, এটা করা যাবে না। এটা অন্যায় কাজ। অবৈধভাবে রেলের জায়গা কেউ দখল করবেন না। রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করাটাই হবে আমার কাজ। গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সালমা চৌধুরী রুমা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলজার হোসেন মৃধা, পৌর মেয়র মো. নজরুল ইসলাম মন্ডল, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল।
১৮ জানুয়ারি, ২০২৪

পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন রাজবাড়ীর বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। নতুন মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রীর জন্য প্রথমবার ডাক পেয়েছেন রাজবাড়ী-২ (পাংশা-বালিয়াকান্দি-কালুখালী) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম। বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে পূর্ণমন্ত্রী হি‌সে‌বে মন্ত্রিসভা থে‌কে ডাক পাওয়র বিষয়টি জিল্লুল হাকিম নিজেই মোবাইল ফোনে কালবেলাকে নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন। ত‌বে ঠিক কোন মন্ত্রণাল‌য়ের দা‌য়িত্ব দেওয়া হ‌বে সেটি তি‌নি জা‌নেন না ব‌লে জানিয়েছেন। জিল্লুল হাকিমের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার খবরে রাজবাড়ী ও পাংশা শহরসহ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম ১৯৫৪ সালের ২ জানুয়ারি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার আনন্দবাজার গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মো. আবুল হোসেন নিজেও ছিলেন একজন সমাজসেবক এবং শিক্ষানুরাগী। তার পৈতৃক বাড়ি পাংশা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে। জিল্লুল হাকিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর (এমএ) পাস করেছেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন গোয়ালন্দ মহকুমা কমান্ডার ছিলেন তিনি। তিনি সংসদ সদস্যের পাশাপাশি একজন সফল ব্যবসায়ী। তার স্ত্রী সাঈদা হাকিম ও দুই ছেলে মিতুল হাকিম ও রাতুল হাকিমও সফল ব্যবসায়ী। বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম ৬ বার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পাঁচবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। ১৯৯৬ সালে প্রথম নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরের বার অর্থাৎ ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নাসিরুল হক সাবুর কাছে হেরে যান তিনি। পরবর্তী ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির নাসিরুল হক সাবুকে পরাজিত করে ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন রণাঙ্গনের এই লড়াকু সৈনিক। জিল্লুল হাকিম সংসদ সদস্যের পাশাপাশি রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ তিনি ২০২১ সালের ১৬ অক্টোবর ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তৃতীয়বারের মতো রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। সংসদ সদস্যের পাশাপাশি তিনি জেলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে তৃণমূল পর্যায়ে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর আমরা সংবাদটি পাওয়ার পর থেকেই পাংশা শহর আতশবাজি ফুটিয়ে উৎসব করেছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দলীয় নেতাকর্মী ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিমের মন্ত্রী হওয়ার খবরে তাকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। জিল্লুল হাকিম মন্ত্রী হলে পাংশা-বালিয়াকান্দি-কালুখালী তথা রাজবাড়ী জেলার ব্যাপক উন্নয়ন হবে। আমরা পাংশাবাসী গর্বিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম খায়ের ঢাকা বলেন, জিল্লুল হাকিমের মন্ত্রী হওয়ার খবরে আমরা কালুখালীবাসী আনন্দিত। রাজবাড়ী-২ আসন থেকে এবারই প্রথম পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন তিনি। বালিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হান্নান মোল্লা বলেন, বালিয়াকান্দির আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে জিল্লুল হাকিম রাতদিন খেটেছেন। তিনি এই এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, ব্রিজ কালভার্টের উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছেন। তৃণমূল পর্যায় থেকে জিল্লুল হাকিমের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু। তৃণমূলের থেকে উঠে আসা জিল্লুল হাকিম মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। এটা তার প্রাপ্য ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফখরুজ্জামান মুকুট বলেন, এমপি জিল্লুল হাকিমের নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগ অত্যন্ত শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। তিনি বারবার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এমপি জিল্লুল হাকিম আস্থার নাম। তিনি প্রতিটি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়, উপজেলা পর্যায় ও জেলা পর্যায়ের প্রতিটি নেতাকর্মীদের যেকোনো বিপদ আপদে পাশে থাকেন। তাদের সুখ-দুঃখের কথা শোনেন। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পাঁচবারের মতো বিজয় লাভ করেছন। এবার তিনি প্রধানমন্ত্রীর ডাকে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন, এটা তার প্রাপ্য ছিল। তিনি জেলা আওয়ামী লীগ ও রাজবাড়ীবাসীর জন্য গর্ব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই জিল্লুল হাকিমকে সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় দেওয়ার জন্য। জেলা আওয়মী লীগের সহসভাপতি সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফকির আব্দুল জব্বার কালবেলা বলেন, জিল্লুল হাকিম বাংলাদেশ সরকার মন্ত্রিপরিষদে নিয়োগ পেয়েছেন। তার প্রতি আমার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইল। আমি আশা করি, রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে। সেই সঙ্গে রাজবাড়ী জেলার সর্বসাধারণ মানুষের সকল চাওয়া বাস্তবায়নে অবদান রাখবেন বলে আমার বিশ্বাস।
১১ জানুয়ারি, ২০২৪

মানব পাচারকারীর খপ্পরে রাজবাড়ীর ৬ যুবক মালয়েশিয়ায়
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ৬ যুবক মানব পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে মালয়শিয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের মানবেতর জীবনযাপনের ভিডিও চিত্র দেখে ও আকুতির কথা শুনে কান্নায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাদের মা-বাবা। এ ছাড়া তারা পাওনাদারদের চাপে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন।  তাদের অভিযোগ, মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার আয়ুব আলী মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তিন মাস আগে ওই যুবকদের মালয়েশিয়ায় পাঠায়। এ বিষয়ে দফাদার আয়ুব আলীর বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে রাজবাড়ীর আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া ওই যুবকদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে ও ইউপি দফাদারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ওসিসহ বিভিন্ন দপ্তরের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। ভুক্তভোগী যুবকরা হলেন গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিযনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী গফুর মন্ডল পাড়ার শফি শেখের ছেলে শিপন শেখ, আকমল শেখের ছেলে আশিক শেখ, শামসু শেখের ছেলে রোমান শেখ, কানচু মৃধার ছেলে সিরাজ মৃধা, ও মোশারফ শেখ, এবং ফজের শেখের ছেলে জহিরুল শেখ। তারা সবাই একই এলাকার বাসিন্দা।  আটকে পড়া ব্যক্তিদের পরিবারের দাবি, স্থানীয় ইউপি দফাদার দালাল চক্রের সদস্য আয়ুব আলীর মাধ্যমে ৬ যুবককে মালয়েশিয়া নিয়ে যায় মানব পাচারকারী চক্র। মালয়েশিয়া নেওয়ার সময় তাদের ৩ জনের পরিবারের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা এবং অপর ৩ জনের প্রত্যেকের পরিবারের কাছ থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেন আয়ুব আলী। পরে তাদেরকে মালয়েশিয়া একটি সন্ত্রাসী দলের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। মালয়েশিয়ার ওই সন্ত্রাসী চক্রটি সেখানে একটি রুমে বন্দি করে এবং তাদের পাসপোর্ট আটকে রেখে নির্যাতন চালায়। এভাবে তারা যুবকদের পরিবারের কাছ থেকে আরও ১ লাখ করে টাকা আদায় করে।  এ বিষয়ে মালয়েশিয়া থেকে জহিরুল ও শিপনসহ ওই যুবকরা মোবাইলে তাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে জানায়, বাংলাদেশ থেকে আনা তাদের মতো আরও ৩৫ জনকে একই সঙ্গে ছোট একটি ঘরে বন্দি করে তাদের পাসপোর্টও হাতিয়ে নেওয়া হয়। ৩৫ জনকে এক সপ্তাহের খাবার হিসেবে ৩০ কেজি চাল, ৪ কেজি আলু, ২ কেজি পেঁয়াজ, এক প্যাকেট লবণ দেওয়া হয়। কোনো কিছু বললে মারধর করে। সেই সঙ্গে বলে বাড়ি থেকে টাকা পাঠাইতে বলে। টাকা পাঠালে তাদের কাজ ও ভালো খাবার দেওয়া হবে। তা না হলে নৌকায় করে তোদের সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। ভুক্তোভোগী সিরাজ মৃধার স্ত্রী মর্জিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী ক্ষেত খামারে কাজ করে তিনটি ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসারটা ভালো চলছিল। আয়ুব দফাদার সরকারি পোশাক পরে প্রতিদিন আমার বাড়িতে এসে তাকে ফুসলিয়ে বিদেশে ভালো চাকরি দেওয়ার লোভ দেখাইয়া সহায় সম্বল বিক্রি করিয়ে ও দেনা করে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা নিয়া বিদেশ পাঠিয়েছে। এখন তাকে কোনো কাজ না দিয়ে আটকে রেখে আরও টাকা চাচ্ছে। আমি এখন কোথায় টাকা পাব? আমার ঘরে খাবার নেই। ছেলেমেয়েরা না খেয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। মোশাররফের বোন মুক্তা বেগম বলেন, শিশুকালে মা-বাবা মারা যাওয়ার পর এতিম হয়ে ছোট ভাইটাকে নিয়ে অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছি। আয়ুবের প্রলোভনে পড়ে স্বামীকে অনুরোধ করে ধার করা ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় তাকে বিদেশ পাঠিয়েছি। এখন আমার ভাই যখন মোবাইলে বলে বুবু আমারে বাঁচাও, না খেয়ে আছি। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। তখন কেমনে কি করি বুঝতে পারি না। রোমান শেখের পিতা শামসু শেখ ও শিপনের বাবা শফিক শেখ জানান, আয়ুব দফাদারের প্রলোভনে ছেলেরা মালয়েশিয়া গিয়ে আটকে আছে। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪ লাখ ৬৫ হাজার করে টাকা নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাজবাড়ী আদালতে মানব পাচার আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। তারা এর বিচার চায়। এ ছাড়া ছেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে মানব পাচারকারী আয়ুবের শাস্তি নিশ্চিত করতে ইউএনও, থানা পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য লিয়াকত হোসাইন লিপু বলেন, আমাদের ওই দফাদার মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য এটা আমাদের জানা ছিল না। শুনেছি আয়ুব সামান্য বেতনে দফাদারি চাকরির আড়ালে অবৈধ মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত হয়ে দুইটি ট্রাক, অনেক জায়গা জমি ও বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছেন। এলাকার যুবক ছেলেদের ফুসলিয়ে বিদেশে পাচার করে তাদের পরিবারকে নিঃস্ব করে অবৈধ টাকা কামিয়ে নিজে রাতারাতি বড়লোক হচ্ছে। এটা অনেক বড় অন্যায়। এর বিচার হওয়া দরকার। অভিযোগের বিষয়ে দফাদার আয়ুব বলেন, আমি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠাই। মানব পাচার করি না। আমি যাদের পাঠিয়েছি তারা সবাই বই পেয়েছে এবং কাজও পেয়েছে। তারা এখন ভালো আছে।  এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, আয়ুব দফাদারের বিষয়ে কোর্টে মামলা হয়েছে। থানাতেও লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত কাজ চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৮ অক্টোবর, ২০২৩

রাজবাড়ীর কারাগারে কয়েদির মৃত্যু
রাজবাড়ীর জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে সাইদুর রহমান (৫২) নামে এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৭ অক্টোবর) ভোররাত ৪টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে আনলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সাইদুর রহমান রাজবাড়ী সদর উপজেলার মোতালেব হোসেনের ছেলে। রাজবাড়ী জেলা কারাগারের জেল সুপার আব্দুর রহিম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  তিনি কালবেলাকে বলেন, কয়েদি সাইদুর রহমান ভোর রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে দ্রুত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা প্রদানের পর মৃত ঘোষণা করেন। তিনি স্ট্রোক করেছিলেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
০৭ অক্টোবর, ২০২৩

সাঈদীর জানাজায় অংশ নেওয়া রাজবাড়ীর সেই স্কুলশিক্ষককে শোকজ
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজায় অংশগ্রহণ ও আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ এনে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক খোন্দকার মনির আযম মুন্নুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।  শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কুতুব উদ্দিন মোল্যা। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ওই স্কুল শিক্ষককে নোটিশ দেওয়া হয়। বালিয়াকান্দি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, তিনি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। জানাজা পরবর্তীতে তিনি বক্তব্য দেন। বক্তব্যে সরকারবিরোধী ও আপত্তিকর নানা কথা বলেন। এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। পরে এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির সঙ্গে আলোচনা হয়। গত বৃহস্পতিবার তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে তাকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষক খোন্দকার মনির আযম মুন্নুকে মোবাইলে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে এ বিষয়ে তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খোন্দকার মনির আযম মুন্নুর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
১৯ আগস্ট, ২০২৩

রাজবাড়ীর পদ্মা ইলিশশূন্য
একসময় ইলিশের জন্য বিখ্যাত ছিল রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ। বর্তমানে পদ্মা নদীতে আগের মতো মাছ পাচ্ছেন না জেলেরা। এতে রাজবাড়ীর প্রায় ১৪ হাজার জেলে পরিবারে অভাব বেড়েছে। বর্ষা ছাড়া বাকি মৌসুমগুলোতে পদ্মায় তেমন মাছ মিলছে না বলে দাবি জেলেদের। তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, নদীতে চর জেগে ওঠা ও শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। গোয়ালন্দের অন্যান্য মাছের সুনামও ছিল সারা দেশে। কিন্তু সেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে গোয়ালন্দ তথা রাজবাড়ী। পদ্মায় সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ডুবোচর। এখন আর আগের মতো জেলের জালে ধরা পড়ে না সেইসব মাছ। পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ অংশ এখন ইলিশশূন্য বললেই চলে। বর্ষায় কিছু ইলিশ ধরা পড়লেও সারা বছর জেলেদের ফিরতে হয় খালি হাতে। হতাশার মধ্যে দিন পার করতে হচ্ছে জেলেদের। নদীতে মাছ না মেলায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জেলেদের। মানিক নামে এক জেলে জানান, সবকিছুর দাম বেড়েছে অথচ নদীতে মাছ নেই বললেই চলে। আমরা এ পেশা ছাড়া তো কিছুই করতে পারি না। বর্তমানে আমরা ছেলেমেয়ে নিয়ে খুবই অভাবে আছি। বাদল নামে আরেক জেলে জানিয়েছেন, এটা আমাদের বাপ-দাদার পেশা। অনেক আগে থেকেই আমরা এ পেশায় জড়িত। এখন নদীতে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। আগে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ত। এখন আগের মতো ইলিশ নেই। কার্তিক নামে এক জেলে বলেন, আড়ত থেকে আমরা টাকা নিয়ে জাল-দড়ি কিনে নদীতে এসেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় মাছ পাচ্ছি না। তবে টাকা তো পরিশোধ করতেই হবে। খুব চিন্তায় আছি এবং হতাশার মধ্যে দিনযাপন করছি। ইলিশ ও অন্যান্য মাছের প্রজনন নিশ্চিত করতে নদী বাঁচাতে হবে। নদীর গভীরতা ও স্রোতের প্রবাহ বাড়লে ইলিশের প্রজনন বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মসিউর রহমান কালবেলাকে জানিয়েছেন, নদীতে পানি কমে যাওয়া আর ডুবোচরের কারণে পদ্মায় ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ কমে গেছে। তাই জেলেদের সরকারি অনুদান হিসেবে বিভিন্ন সময় খাদ্যশস্য দেওয়া হয়ে থাকে। জেলেদের কথা বিবেচনা করে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে তাদের বকনা বাছুর দেওয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
২৪ জুন, ২০২৩
X