‘অনেক লেখক নিজের কবিতার ভালো ব্যাখ্যা করতে পারেন না’
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেছেন, বাঙালির জাগরণ ৩টি। উনিশ শতকের নবজাগরণ, ভাষা আন্দোলন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। উনিশ শতকে রবীন্দ্রনাথকে বলা হয় শ্রেষ্ঠ প্রতিবাদী। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ শুধু সাহিত্যই রচনা করেননি পাশাপাশি সেটির প্রত্যেকটি শব্দের ব্যাখ্যাও প্রদান করেছেন। আমাদের দেশে অনেক লেখক আছেন যারা নিজেদের কবিতাও ভালো করে ব্যাখ্যা করতে পারেন না, গানও না, আর ছন্দ বুঝা তো দূর। বৃহস্পতিবার (৯ মে) ‘সোনার বাংলার স্বপ্ন ও বাস্তবতা : রবীন্দ্রনাথ থেকে বঙ্গবন্ধু’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ২য় দিনে জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘বরীন্দ্রনাথ এক সময় ইংরেজি কবিতা ও সাহিত্যের খুব ভক্ত ছিলেন। কিন্তু যখন দেখলেন ইংরেজদের দ্বারা এ বাংলার নিরীহ মানুষগুলো নিপীড়িত তখন তাদের প্রতি তার ঘৃণা সৃষ্টি হয়। তিনি স্বপ্ন দেখেন এ পূর্ব দিগন্তে একজন মানবের আগমনের। যার মাধ্যমে মুক্ত হতে পারে এ দেশ। আর তার স্বপ্নের মানবই হয়তো ছিল এই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশ ও ভারত—দুই দেশের শিল্পকলা, ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাসের মেলবন্ধন অটুট রাখা এবং শিক্ষা বিষয়ক অধ্যয়ন ও গবেষণা করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে ও অর্থায়নে নানামুখী কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন তিনি। অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ফকরুল আলম । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো এ ধরনের অনুষ্ঠানের ভিতর দিয়ে যেন চিত্তের উৎকর্ষ সাধিত হয়, স্বপ্ন তৈরি হয়। রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু; আমাদের জীবনে তাদের যে বিশাল প্রভাব, সেখান থেকে আমাদের প্রজন্মকে ঋদ্ধ করে যেতে হবে। রবীন্দ্রনাথ শুধু কবি, গীতিকার, সুরকার, নাট্যকার, অভিনেতা বা চিত্র শিল্পী তা নন, তিনি একটি দর্শন। যে দর্শনে আমাদের সামনে এগোতে হবে। তিনি ভাষা সাহিত্যে আমাদের সমাজকে, জীবনকে সাজিয়ে গেলেন আর রাজনৈতিকভাবে সেটা পরিপূর্ণ করে গেলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ২য় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় রবীন্দ্র পরিবেশনা। শুরুতেই যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেন ইফতেখার আনোয়ার এবং যন্ত্রশিল্পীরা ‘তোমার খোলা হাওয়া’। এরপর ‘এসো শ্যামল সুন্দর’ সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতিশ্রুতিশীল নৃত্যদল। গান ও কবিতা পরিবেশন করেন সামিউল ইসলাম পুলক এবং মাহনাজ করিম হোসেন ‘প্রেমিক রবীন্দ্রনাথ’। একক সংগীত পরিবেশন করেন অনিমা রায় এবং ফাহিম হোসেন চৌধুরী ‘আজি প্রণমি তোমারে’, ‘তোমারেই করিয়াছি’, ‘জীবনের ধ্রুবতারা’। একক সংগীত পরিবেশন করেন জান্নাত আরা হেনরি। এরপর সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশু-কিশোর সংগীত দল ‘আজি ধানের ক্ষেতে’; এবং ‘ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি’; সবশেষে ‘বাল্মিকী প্রতিভা’ নৃত্যনাট্য পরিবেশন করে পি.এফ.ডিএর ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের শিশুরা।
০৯ মে, ২০২৪

প্রতিভা প্রকাশ লেখক সম্মিলন অনুষ্ঠিত
প্রতিভা প্রকাশ প্রকাশনা সংস্থার ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে প্রতিভা প্রকাশ লেখক সম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। লেখকদের এ মিলনমেলায় সেমিনার, সাহিত্য পুরস্কার ও ছড়া-কবিতা পাঠের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দিনব্যাপী এ সম্মিলনে ৫ কৃতিমান লেখককে ‘এনআরবি লাইফ-প্রতিভা প্রকাশ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ প্রদান করা হয়। ‘এনআরবি লাইফ-প্রতিভা প্রকাশ আজীবন সম্মাননা পেলেন লেখক ইমদাদুল হক মিলন এবং ‘এনআরবি লাইফ-প্রতিভা প্রকাশ সাহিত্য পুরস্কার পেলেন- রোকেয়া খাতুন রুবী (কথাসাহিত্য), মজিদ মাহমুদ (কবিতা), রিফাত নিগার শাপলা (শিশুসাহিত্য), ফখরুল হাসান (প্রবন্ধ/গবেষণা)। প্রতিভা প্রকাশ থেকে এ যাবত আট শতাধিক সৃজনশীল বই প্রকাশ হয়েছে। সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খ্যাতিমান ও প্রতিশ্রুতিশীল লেখকরা এ লেখক সম্মিলনে অংশগ্রহণ করেছেন। লেখক সম্মিলনে অতিথি হিসেবে বিভিন্ন পর্বে উপস্থিত ছিলেন- লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক, শিশুসাহিত্যিক আনজীর লিটন, কবি ও কথাসাহিত্যিক ঝর্না রহমান, বাংলা ভিশনের প্রধান সম্পাদক ড. আবদুল হাই সিদ্দিক, শিশুসাহিত্যিক রহীম শাহ, কবি ও শিক্ষাবিদ দিলারা হাফিজ, কবি ও গবেষক ড. তপন বাগচী, শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম, শিশুসাহিত্যিক আহমেদ জসিম, শিশুসাহিত্যিক আসলাম সানী, কথাসাহিত্যিক মাহফুজুর রহমান, প্রকাশক আলমগীর সিকদার লোটন, এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লি.-এর সিইও মো. শাহ জামাল হাওলাদার, প্রতিভা প্রকাশ-এর প্রকাশক মঈন মুরসালিন।
০৪ মে, ২০২৪

লেখক পূরবী বসুর অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’
স্বনামধন্য ছোটগল্পকার, বিজ্ঞানী ও প্রাবন্ধিক ড. পূরবী বসু স্ট্রোক করায় তাকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তার স্বামী সাহিত্যিক জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে পূরবী বসুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত গণমাধ্যমকে বলেন, মঙ্গলবার রাতে পূরবী স্ট্রোক করেন। আমরা তাৎক্ষণিক তাকে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক ট্র্যাডিশন হাসপাতালে নিয়ে যাই। এরই মধ্যে তার মস্তিষ্কে জটিল অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তিনি এখন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। ইতোমধ্যে সিটি স্ক্যানসহ বেশ কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এ মুহূর্তে তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। তবে গতকাল বুধবার বিকেলের দিকে তিনি হাত-পা নেড়েছেন। আজ চিকিৎসকরা তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন। পূরবী বসুর মেয়ে জয়ীষা দত্ত ফেসবুকে লিখেছেন, গত রাতে মায়ের একটি বড় স্ট্রোক হয়েছিল এবং গত ২৪ ঘণ্টা মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার, সিটি স্ক্যান এবং ভীতিকর পরিস্থিতিগুলোর মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এ মুহূর্তে কেবল আপনাদের প্রার্থনাই কাম্য। আমরা আপনাকে ভালোবাসি— মা, আপনি কতটা শক্তিশালী সুপারওম্যান, তা দেখার জন্য আমরা অপেক্ষায়। ১৯৪৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন পূরবী বসু। তার লেখালেখির হাতেখড়ি ছোটবেলায় শুরু হলেও ১৯৮৯ সালে তার প্রথম বই প্রকাশিত হয়। তার গল্প ও প্রবন্ধে বারবার উঠে এসেছে সমাজের অবহেলিত ও নিপীড়িত মানুষের কথা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও দরিদ্র জনগণের বিবরণ। কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। পূরবী বসু পেশায় একজন বিজ্ঞানী। তিনি নিউইয়র্কের বিশ্ববিখ্যাত মেমোরিয়াল স্লোন কেটারিং ক্যানসার সেন্টারে গবেষণা ও কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করেছেন। এ ছাড়াও ব্র্যাকের স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক পদেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
০২ মে, ২০২৪

‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০২৩’ পেলেন চার তরুণ
আইএফআইসি ব্যাংক নিবেদিত ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০২৩’ পেলেন চারজন তরুণ লেখক। শনিবার (২৭ এপ্রিল) ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে এক আড়ম্বর অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এবারের বিজয়ীরা হলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাহিত্যে ‘ফাড়াবাড়ি হাট গণহত্যা আদর্শ বাজার গণহত্যা’ বইয়ের জন্য ফারজানা হক, কথাসাহিত্যে ‘ভাতের কেচ্ছা’ বইয়ের জন্য কাম্রুন্নাহার দিপা, প্রবন্ধ ও গবেষণা বিভাগে ‘জনসংস্কৃতির রূপ ও রূপান্তর’ বইয়ের জন্য শারফিন শাহ ও শিশু-কিশোর সাহিত্যে ‘আলোয় রাঙ্গা ভোর’ গ্রন্থের জন্য রহমান বর্ণিল। প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা ও স্মারক দেওয়া হয়। বিচারকমণ্ডলীর সিদ্ধান্ত অনুসারে কবিতা বিভাগে মানসম্মত গ্রন্থ জমা না পড়ায় এ বছর ৪টি বিভাগে পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে।      অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালি ও কলম-এর সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কালি ও কলম তার দীর্ঘদিনের পথচলায় কখনো লক্ষ্য থেকে সরে যায়নি। আমাদের পূর্বের অনেক বিজয়ী এখন দাপটের সঙ্গে সাহিত্যাঙ্গনে বিরাজ করছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এবারের বিজয়ী লেখকরাও আগামীতে অনেক ভালো কাজ করবেন। নতুনরা সবসময় একটা ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসেন, এবারো ব্যতিক্রম হবে না       প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, সাহিত্যের পথচলা অনেক অমসৃণ যাত্রা। এই পথে এরকম স্বীকৃতি আগামী দিনে ভালো লেখার প্রণোদনা দেয়। আশা করি এই সঞ্জীবনী শক্তিতে ওরা এগিয়ে যাবে এবং বাংলা সাহিত্যে নতুন মাত্রা যোগ করবে। তিনি বলেন, পুরস্কার নয়, লেখালেখি সবসময় পাঠকের জন্য। আপনার লেখা যেন পাঠককে ভাবায়, কিছু অনুভব করায়, সেই উদ্দেশ্যে কাজ করে যাবেন এই আশা রাখছি। আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম সারওয়ার, কালি ও কলমের সম্পাদক সুব্রত বড়ুয়া এবং কালি ও কলমের প্রকাশক আবুল খায়ের। স্বনামখ্যাত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এবারের আয়োজন শেষ করা হয়।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

জামালপুরে অবরুদ্ধ সাব-রেজিস্ট্রার, দলিল লেখকদের বিক্ষোভ
জামালপুরের বকশীগঞ্জে নিজ কার্যালয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন সাব-রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম। নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, দলিল লেখক ও জমির দাতা গ্রহীতাদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে দলিল লেখকরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এই ঘটনা ঘটে। তবে দলিল লেখকদের সব অভিযোগ অস্বীকার করে সাব-রেজিস্ট্রার বলেন, দলিল লেখকদের অনৈতিক আবদার না মানার কারণেই তারা তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। এই ঘটনায় তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।  দলিল লেখকরা জানান, গত বছরের ১৫ অক্টোরব বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম। এর আগে তিনি লক্ষীপুর জেলার রামগতি সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই দলিল লেখকসহ জমির দাতা গ্রহীতাদের সঙ্গে অসদাচরণ করে আসছেন। কথায় কথায় তিনি দলিল লেখকদের সনদ বাতিলের হুমকি দেন। সকালের দলিল তিনি রাতে পাস করেন। মনগড়াভাবে চালাচ্ছিলেন সরকারি অফিস। সব দলিল লেখকরা তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন। দিন দিন তার হয়রানি বেড়েই চলছিল। বুধবার রেহেনা বেগম নামে এক নারী তারই সহোদর বোন রুবিনা আক্তারকে ৫৮ শতাংশ জমি হেবা মুলে দলিল করে দিতে যান। ওই দলিল নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রারের কামরায় যান দলিল লেখক শহিদুল্লাহ। এ সময় সাব-রেজিস্ট্রার জমিদাতার কাছে জানতে চান, কেন তিনি তার বোনকে হেবা মূলে জমির দলিল করে দিচ্ছেন। কত টাকা নিয়েছেন। তার এমন প্রশ্নে একপর্যায়ে জমির দাতা বলেন, তার বোন তাকে কিছু টাকা দিয়েছেন তাই দলিল করে দিচ্ছেন। এই কথা শোনেই সাব-রেজিস্ট্রার  রেগে যান এবং দলিলটি সম্পাদন না করেই ফিরিয়ে দেন। বিষয়টি জানতে দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি আলী আহসান খোকা সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে যান। এ সময় সাব-রেজিস্ট্রার আলী আহসান খোকা ও শহিদুল্লাহর সঙ্গে অসদাচরণ করেন এবং তাদের দুজনকেই বরখাস্ত করেন। মুহূর্তেই এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে অন্যন্যা দলিল লেখকদের মাঝেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করে সাব-রেজিস্ট্রারের অপসারণ দাবি করেন। একপর্যায়ে সাব-রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন দলিল লেখকরা। সেই সঙ্গে তাকে অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। ফলে বেকায়দায় পড়ে যায় দাতা গ্রহীতারা। বকশীগঞ্জ দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি আলী আহসান খোকা বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার কাউকে মানুষ মনে করেন না। অনিয়মকে তিনি নিয়মে পরিণত করেছেন। কথায় কথায় দলিল লেখকদের সনদ বাতিলের হুমকি দেন। বুধবার বৈধ এক দলিল না করে তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। জানতে চাইলে তিনি একাধিক দলিল লেখকের সঙ্গে খারাপ আচরণ এবং আমিসহ দুইজনকে বরখাস্ত করেন। আমরা দলিল লেখকরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি তার অপসারণের দাবিতে। দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ফিরোজ মিয়া বলেন, বকশীগঞ্জের কোনো দলিল লেখক সাব-রেজিস্ট্রারকে এই অফিসে দেখতে চায় না। তার আচরণে সবাই অতিষ্ঠ। কোনো কারণ ছাড়াই দলিল লেখকসহ জমির দাতা গ্রহীতাদের সঙ্গে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন। মনগড়াভাবেই চলছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। আমরা তার অপসারণ চাই। বগারচর এলাকার আল আমিন বলেন, ঢাকার কর্মস্থল থেকে একদিনের ছুটি নিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করতে এসেছিলেন তিনি। ব্যাংক চালানসহ সকল কাজই সম্পন্ন করেন। হঠাৎ করেই সাবরেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের দ্বন্দ্বে  তিনি আর দলিলটি করতে পারেননি। পুনরায় আবার ছুটি নিয়ে তাকে আসতে হবে বলে হতাশা প্রকাশ করেন।  এ ব্যাপারে সাব-রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই কিছু দলিল লেখক তার কাছ থেকে অনৈতিক আবদার করে আসছিলেন। তাদের কথামত কাজ না করায় তারা আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, কাউকে বরখাস্ত করার সুযোগ আমার নেই, তাদের শোকজ করেছি মাত্র। তারা সরকারি সম্পদ নষ্টের চেষ্টা এবং কিছু বিনষ্ট করেছে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করেছে। দলিল লেখকরা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। এই ঘটনায় তিনি মামলা করবেন বলে জানান।  বকশীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান জানান, এ বিষয়ে লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ পাইনি। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।  উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর থেকে টানা ৭ দিন সাব-রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীমের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন ও কর্মবিরতি পালন করেছিলেন দলিল লেখকরা। বুধবার দ্বিতীয়বারের মতো আন্দোলনে নামলেন দলিল লেখকরা।
২৮ মার্চ, ২০২৪

বইমেলা স্মরণ করল প্রগতিশীল লেখক হুমায়ূন আজাদকে
বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদের ওপর মৌলবাদী চক্রের সন্ত্রাসী হামলার বার্ষিকী স্মরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় ‘হুমায়ুন আজাদের দিবসের ডাক-একুশে বইমেলা হোক প্রকৃত সৃজনশীল লেখক ও প্রকাশকদের’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এবার বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসের সামনে লেখক প্রকাশক পাঠক ফোরামের আয়োজনে স্মরণসভা করা হয়। সভায় বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কবি আসলাম সানী, কবি মোহন রায়হান, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, হুমায়ুন আজাদের মেয়ে মৌলি আজাদ, হুমায়ূন আজাদের ভাই সাজ্জাদ কবীর, অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন আগামী প্রকাশনীর নির্বাহী ওসমান গনি। স্মরণসভায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নূরুল হুদা বলেন, হুমায়ূন আজাদ ছিলেন বাংলাদেশের এক প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তি তিনি যা করেছেন তার জন্য বাঙালি কৃতজ্ঞ। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন ৭ মার্চ বলেছিলেন আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি আমার দেশের মানুষের অধিকার চাই। হুমায়ূন আজাদও ছিল সেই মাপের একজন প্রগতিশীল সৃজনশীল লেখক যিনি তার লেখার প্রতি শতভাগ সৎ ছিলেন। সভার অন্যান্য বক্তারা বলেন, হুমায়ুন আজাদের হত্যাচেষ্টার বিচার অবিলম্বে বাস্তবায়ন এবং মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমাজ-রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই তাকে যথাযোগ্যভাবে স্মরণ করা হবে।
২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

শব্দঘরের সেরা বই পুরস্কার ও লেখক সম্মাননা পেলেন ৬ জন
সাহিত্য সংস্কৃতির মাসিক পত্রিকা শব্দঘর তাদের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নির্বাচিত সেরা বই-২০২৩ পুরস্কার ও লেখক সম্মাননার আয়োজন করেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৬টায় বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্রের ইসফেনদিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শব্দঘরের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সম্মাননা দেওয়া হয় প্রাবন্ধিক মফিদুল হক এবং কথাসাহিত্যিক মঞ্জু সরকারকে। শব্দঘর উপদেষ্টা চিত্রশিল্পী রফিকুন নবীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। এবারের পুরস্কারপ্রাপ্ত বইগুলো হলো কথাসাহিত্যে শাহনাজ মুন্নীর নির্বাচিত গল্প (চৈতন্য-২০২২), কবিতায় মিনার মনসুরের ব্রাসেলসের সন্ধ্যাটি ছিল মনোরম (কথাপ্রকাশ-২০২২), প্রবন্ধে মাহবুবুল হকের লোকসংস্কৃতি চর্চা (আগামী প্রকাশনী-২০২২) এবং অনুবাদের জন্য এমদাদ রহমানের নৈঃশব্দ্যের সংলাপ (জলধি-২০২১)।
২৪ জানুয়ারি, ২০২৪

জামালপুরে সাব-রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে দলিল লেখকদের কর্মবিরতি
জামালপুরের বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করছেন দলিল লেখকরা। গত ১২ নভেম্বর থেকে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন। সাব-রেজিস্ট্রারের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলিল লেখকরা। এদিকে সাব-রেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন জমির দাতা-গ্রহীতারা। বকশীগঞ্জ দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ফিরোজ মিয়া বলেন, চলতি বছরের ১৫ অক্টোরব বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম। এর আগে তিনি লক্ষীপুর জেলার রামগতি সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন। যোগদানের পর দলিল লেখকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। ফিরোজ মিয়া আরও বলেন, বৈঠকে সাব-রেজিস্ট্রার দলিল লেখকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন, আমি আপনাদের পাশে থাকব। এ সময় দলিল প্রতি বাড়তি সাড়ে ৫ হাজার টাকা চান তিনি। বাড়তি টাকা না দিলে একটা দলিলও পাস হবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিক দলিল লেখকরা বাড়তি টাকার বিষয়ে আপত্তি জানালে সনদ বাতিলের হুমকিও দেন সাব-রেজিস্ট্রার। সনদ হারানোর ভয়ে তাৎক্ষণিক দলিল লেখকরা আর কিছু বলার সাহস করেনি। ফলে বাড়তি টাকা দিয়েই দলিল করতে বাধ্য হয় দলিল লেখকরা। এতে জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা দাতা গ্রহীতারা দারুণভাবে ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছিলেন। এই নিয়ে দলিল লেখকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার দলিল প্রতি বাড়তি টাকা দিতে পারবেন না বলে সাব-রেজিস্ট্রারকে জানান দলিল লেখকরা। এতেই দারুণভাবে ক্ষিপ্ত হন তিনি। বনিবনা না হওয়ায় দলিলের প্রতি পাতার জন্য ১৫ টাকা দিতে হবে জানিয়ে দেওয়া হয়। এসব নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এতে তার অপসারণের এক দফা দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা দেন দলিল লেখকরা। বকশীগঞ্জ দলিল লেখক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন হিলারী বলেন, বকশীগঞ্জে যোগদানের পরেই দলিল প্রতি বাড়তি অর্থ দাবি করেন সাব-রেজিস্ট্রার। তার দাবি না মানায় কোনো কারণ ছাড়াই সনদপ্রাপ্ত দলিল লেখকদের সঙ্গে অসদাচরণ, সনদ বাতিলের হুমকি, দলিলের দাতা গ্রহীতাদের নানাভাবে হয়রানি ও তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে আসছেন তিনি। এ কারণেই সাব-রেজিস্ট্রারের অপসারণের এক দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছি। তাকে অপসারণ না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।   মেরুরচর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করে কষ্ট করে এলাকায় ৫ শতক জমি কিনেছি। জমি রেজিস্ট্রি নিতে দুই দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন। কর্মবিরতির কারণে দলিল করতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। পুনরায় আবার ছুটি নিয়ে আসতে হবে বলে আমি চরম হতাশ। এ ব্যাপারে সাব-রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম বলেন, আমার নাম ভাঙিয়ে দলিল লেখকরা জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা দাতা ও গ্রহীতাদের কাছে বাড়তি টাকা নেয় বলে জানতে পারি। ঠিক তখনই আমি দুর্নীতি বন্ধের ঘোষণা দেই। এতেই দলিল লেখকরা আমার প্রতি মনোক্ষুণ্ন হন। দলিল লেখকরা অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও কর্মবিরতি করছেন। অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করে আমি আমার নীতিতে অটল থাকব।
১৪ নভেম্বর, ২০২৩

আমাদের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করা হলেও বিশ্ব নীরব : গাজার লেখক
গাজার মানুষের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করা হলেও বিশ্ব নীরব বলে অভিযোগ করেছেন গাজার লেখক ইউসোরি আল ঘোল। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  ইউসোরি বলেন, গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখানকার সবার জীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। বিচ রিফুজি ক্যাম্প থেকে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এখানে প্রতিদিন বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। আমরা খেতে বা ঘুমাতেও পারছি না। আমাদের জ্বালানি নেই। ফলে আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। এমনকি আমরা বাথরুমেও যেতে পারছি না।  গাজার ওই লেখক বলেন, তারা আমাদের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করছে। এ ব্যাপারে বিশ্ব নীরব রয়েছে। এমনকি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে যা ইচ্ছা আচরণ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে আইনি বৈধতা দিচ্ছে। তারা সম্মিলিতভাবে আমাদের শাস্তি দিচ্ছে। সবকিছু লক্ষ্য করেই করা হচ্ছে।   
৩১ অক্টোবর, ২০২৩

নড়াইলে দলিল লেখক বরকত হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
নড়াইলের লোহাগড়ায় দলিল লেখক এসএম বরকত আলী (৬০) হত্যা ঘটনায় হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।  বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে নড়াইল আদালত সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।  মানববন্ধনে ইতনা ইউনিয়নের পাংখারচর এলাকার কয়েকশ নারী-পুরুষ অংশ নেন। এ সময় নিহত বরকতের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন, মেয়ে ফারজানা খানম ও ভাগ্নে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কাজী জাহিদুর রহমান ও সাজ্জাদুর রহমান পলাশ বক্তব্য দেন।   বক্তরা বলেন, হত্যাকারীরা জামিনে মুক্ত হয়ে আমাদের জিম্মি করে ফেলেছেন। আমরা এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি চাই। আসামিরা নানাভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে, যাতে আমরা মামলা তুলে ফেলি। এমনকী মানববন্ধনে এসেও হুমকি দিচ্ছে। খুনিরা যেন কোনোভাবেই ক্ষমা না পায়। আমরা আমাদের পরিবারের নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি।  পুলিশ এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনদের সূত্র জানায়, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাংখারচর গ্রামের এস এম বরকত আলী ওরফে সাহেবের সাথে একই গ্রামের কেরামত মোল্লা ওরফে কুমি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। বিরোধপূর্ণ জমিতে ১৪৪ ধারা বিদ্যমান থাকায় আদালত লোহাগড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিরোধপূর্ণ জমির সমাধানের জন্য ভূমি অফিসের নায়েব পংকজ কুমারের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষ দক্ষিণ পাংখারচর গ্রাম চৌরাস্তা বাজার সংলগ্ন দাই পাড়া সমাজসেবা ক্লাবে সালিশে বসেন। জমির কাগজপত্র দেখার এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে কেরামতের ছেলে নেপাল ও রকির নেতৃত্বে রুনু, হামীম, আমীনসহ ১০ থেকে ১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে এসএম বরকত আলী ওরফে সাহেবকে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডে নিহতের স্ত্রী ফাতেমা খানম বাদী হয়ে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) ১২ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  এ মালায় এ পর্যন্ত ১২ আসামির মধ্যে ৪ জন গ্রেপ্তার ও ৫ জন আসামি বিজ্ঞ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বর্তমানে তারা নড়াইল জেলা কারাগারে আটক আছে। এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ওসি মো. নাসির উদ্দীন জানান, দলিল লেখক বরকত হত্যা মামলায় ১২ জনের মধ্যে ৪ জন জেলহাজতে আটক রয়েছেন। জামিনে আছেন ৪ জন। অন্যান্য পলাতক আসামিদের উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
১২ অক্টোবর, ২০২৩
X