আইন ভেঙে কলেজ শিক্ষক করছেন ‘চেয়ারম্যানগিরি’
নোয়াখালীর সুবর্ণচরের সৈকত সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক তিনি। যদিও তিনি নিজেকে অধ্যাপক বলে দাবি করেন। অথচ অধ্যাপক পদটি সহকারী অধ্যাপকের দুই ধাপ ওপরে। তার নাম বেলায়েত হোসেন। সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ অনুযায়ী তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারেন না। অথচ বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়ী হন তিনি। এখন চেয়ারম্যান হিসেবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন। ব্যস্ততার কারণে কলেজে ক্লাস নেন না। অথচ নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন। আইনের লঙ্ঘন করে চেয়ারম্যান পদে বসে থাকা বেলায়েতের বিষয় নিয়ে কলেজের শিক্ষকদের পাশাপাশি এলাকার সচেতন মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা-১৯৭৯-এর ২৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হইতে অথবা অন্য কোনোভাবে উহার সহিত যুক্ত হইতে পারিবেন না, অথবা বাংলাদেশে বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করিতে বা কোনো প্রকারেই সহায়তা করিতে পারিবেন না। এ ছাড়া সরকারি কর্মচারী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিতে অথবা নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করিতে বা অন্য কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করিতে বা প্রভাব খাটাইতে পারিবেন না।’ এ বিষয়ে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মো. ফিরোজ মিয়া কালবেলাকে বলেন, এমপিওভুক্ত কলেজ সরকারি হয়ে গেলে শিক্ষক-কর্মচারীরা পুরোপুরি সরকারি কর্মচারী হয়ে যান। সুতরাং সরকারি কর্মচারী হিসেবে কোনোভাবে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে এবং ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এটা আইনের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চরবাটা ইউনিয়নে সৈকত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার তিন বছর পর ১৯৯৬ সালে পৌরনীতি বিষয়ের প্রভাষক পদে চাকরি হয় বেশিরভাগ তৃতীয় শ্রেণির সনদধারী বেলায়েত হোসেনের। কোনো পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণি পাননি। এসএসসিতে দ্বিতীয় শ্রেণি, এইচএসসিতে তৃতীয় শ্রেণি, বিএ-তে তৃতীয় শ্রেণি আর এমএ-তে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পাস করেন বেলায়েত। চাকরিতে যোগদানের পর প্রথম কয়েক বছর তিনি নিয়মিত কলেজে ক্লাস নিতেন। কিন্তু ২০০৩ সালে প্রথমবার সুবর্ণচরের চর আমান উল্যাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। পরপর দুইবার জয়ী হয়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত ‘চেয়ারম্যানগিরি’ করেন এই শিক্ষক। এরপর সর্বশেষ ২০২১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি ফের ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০১৮ সালেই সৈকত কলেজ জাতীয়করণ হয়। অর্থাৎ এমপিওভুক্ত কলেজটি সরকারি হয়। সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারেন না। কিন্তু তিনি আইনের তোয়াক্কা না করেই চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে ‘চেয়ারম্যানগিরি’ চালিয়ে যাচ্ছেন। নিয়মিত কলেজে না এলেও হাজিরা খাতায় বেলায়েতের নিয়মিত স্বাক্ষর রয়েছে। মাস শেষে বেতন-ভাতাও তুলে নেন তিনি। নিজে ক্লাসে না গিয়ে নিজাম উদ্দিন নামে একজনকে দিয়ে ভাড়া করে তাকে দিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন বেলায়েত হোসেন। নিজামকে মাসে হাজার দশেক টাকা দেন তিনি। এ নিয়ে সৈকত সরকারি কলেজের অন্য শিক্ষকরা চরম ক্ষুব্ধ। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরাও বেলায়েতের চেয়ারম্যান পদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, বেলায়েত হোসেন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে কলেজে নিয়মিত আসেন না। এলেও তিনি ক্লাস নেন না। অবশ্য তিনি তার পরিবর্তে নিজাম উদ্দিন নামে একজনকে বদলি খাটাচ্ছেন। নিজামকে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা দেন বেলায়েত। বাদ বাকি বেতন-ভাতা তিনি ভোগ করেন। সরকারি কর্মচারী হয়েও বেলায়েত চেয়ারম্যান পদে থেকে নৈতিকতাবিরোধী কাজ করছেন বলেও অভিযোগ অন্য শিক্ষকদের। এ প্রসঙ্গে বেলায়েত হোসেন চেয়ারম্যান বলেন, আমি নিয়ম মেনেই চেয়ারম্যান পদে আছি। নিয়মটি সরকারি চাকরি আইনের কোথায় আছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটি সময় হলে বলব। এরপর ফোন কেটে দেন তিনি।
০৬ মে, ২০২৪

সৈকত সরকারি কলেজ / আইন ভেঙে ‘চেয়ারম্যানগিরি’ করছেন কলেজের শিক্ষক
নোয়াখালী সুবর্ণচরের সৈকত সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক বেলায়েত হোসেন আইন ভেঙে ‘চেয়ারম্যানগিরি’ করছেন। এ ছাড়াও নিজেকে অধ্যাপক বলেই দাবি করেন তিনি। অথচ অধ্যাপক পদটি সহকারী অধ্যাপকের দুই ধাপ উপরে।  সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ অনুযায়ী তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারেন না। অথচ বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়ী হন বেলায়েত। এখন চেয়ারম্যান হিসেবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন। ব্যস্ততার কারণে কলেজে ক্লাস নেন না। অথচ নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন তিনি। আইন লঙ্ঘন করে চেয়ারম্যান পদে বসে থাকা বেলায়েতের বিষয় নিয়ে কলেজের শিক্ষকদের পাশাপাশি এলাকার সচেতন মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা,১৯৭৯- এর ২৫ ধারায় বলা হয়েছে, (১) সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা, রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হইতে অথবা অন্য কোনোভাবে উহার সহিত যুক্ত হইতে পারিবেন না, অথবা বাংলাদেশে বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করিতে বা কোনো প্রকারেই সহায়তা করিতে পারিবেন না। (৩) সরকারি কর্মচারী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিতে অথবা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করিতে বা অন্য কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করিতে বা প্রভাব খাটাইতে পারিবেন না। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মো. ফিরোজ মিয়া কালবেলাকে বলেন, এমপিওভুক্ত কলেজ সরকারি হয়ে গেলে শিক্ষক-কর্মচারীরা পুরোপুরি সরকারি কর্মচারী হয়ে যান। সুতরাং সরকারি কর্মচারী হিসেবে কোনোভাবে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে এবং ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এটা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চরবাটা ইউনিয়নে সৈকত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার তিন বছর পর ১৯৯৬ সালে পৌরনীতি বিষয়ের প্রভাষক পদে চাকরি হয় শিক্ষাজীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় তৃতীয় শ্রেণির সনদধারী বেলায়েত হোসেনের। কোনো পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণি পাননি। এসএসসিতে তার ফল দ্বিতীয় শ্রেণি, এইচএসসিতে তৃতীয় শ্রেণি। বিএ পাস করেন তৃতীয় শ্রেণি পেয়ে। আর দ্বিতীয় শ্রেণি পেয়ে এমএ পাস করেন বেলায়েত। চাকরিতে যোগদানের পর প্রথম কয়েক বছর তিনি নিয়মিত কলেজে ক্লাস নিতেন। কিন্তু ২০০৩ সালে প্রথমবার সুবর্ণচরের চরআমান উল্যাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বেলায়েত। পরপর দুইবার জয়ী হয়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত ‘চেয়ারম্যানগিরি’ করেন এই শিক্ষক। এরপর সর্বশেষ ২০২১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি ফের ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০১৮ সালেই সৈকত কলেজ জাতীয়করণ হয়। অর্থাৎ এমপিওভুক্ত কলেজটি সরকারি হয়। সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে বেলায়েত হোসেন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারেন না। কিন্তু তিনি সরকারি চাকরি আইনের তোয়াক্কা না করেই চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে ‘চেয়ারম্যানগিরি’ চালিয়ে যাচ্ছেন।  নিয়মিত কলেজে না আসলেও হাজিরা খাতায় বেলায়েতের নিয়মিত স্বাক্ষর রয়েছে। মাস শেষে বেতন-ভাতাও তুলে নেন তিনি। নিজে ক্লাসে না গিয়ে নিজাম উদ্দিন নামে একজনকে দিয়ে ভাড়াটিয়া ক্লাস নিচ্ছেন বেলায়েত হোসেন। নিজামকে মাসিক হাজার দশেক টাকা দেন তিনি। এ নিয়ে সৈকত সরকারি কলেজের অন্যান্য শিক্ষকরা চরম ক্ষুব্ধ। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরাও বেলায়েতের চেয়ারম্যান পদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, বেলায়েত হোসেন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে কলেজে নিয়মিত আসেন না। আসলেও তিনি ক্লাস নেন না। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অবশ্য তিনি তার পরিবর্তে নিজাম উদ্দিন নামে একজনকে বদলি খাটাচ্ছেন। নিজামকে মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা দেন বেলায়েত। বাদ বাকি বেতন-ভাতা তিনি ভোগ করেন। সরকারি কর্মচারী হয়েও বেলায়েত চেয়ারম্যান পদে থেকে নৈতিকতাবিরোধী কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করেন অন্য শিক্ষকরা।  এ প্রসঙ্গে বেলায়েত হোসেন চেয়ারম্যান বলেন, আমি নিয়ম মেনেই চেয়ারম্যান পদে আছি। নিয়মটি সরকারি চাকরি আইনের কোথায় আছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটি সময় হলে বলব। এরপর ফোন কেটে দেন তিনি। 
০৫ মে, ২০২৪

মাদ্রাসার দুই ছাত্র বলাৎকার, অভিযুক্ত শিক্ষক আটক
তৃতীয় শ্রেণিপড়ুয়া দুই শিশুশিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে এক মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের রাজনগর মুহাম্মদিয়া জামিয়া শরিফ নামের এক মাদ্রাসার। যা ঢাকার রাজারবাগ দরবার শরিফ হতে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়। শুক্রবার (৩ মে) অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে আটক করে পুলিশ। পরে শনিবার থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মোহাম্মদ ফারুক (৭০)। তিনি এই মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ে শিশুদের পড়ান কয়েক বছর হলো। এর আগে তিনি পুলিশে কর্মরত ছিলেন বলে জানায় এলাকাবাসী। এ ছাড়াও তিনি গুলশাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদে আছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। শিশুদের অভিভাবকরা জানান, শিক্ষক ফারুক আহমেদ বাগান থেকে বাঁশ আনবে বলে গত বুধবার শিশুশিক্ষার্থী আমার ভাগিনাকে বাঁশ বাগানে নিয়ে যায়। বাগানের টং ঘরে শিশুটিকে বলাৎকার করে এবং কাউকে বলতে নিষেধ করে। এ সময় সে চকলেট খেতে ৫০ টাকা দেয়। এরপর গতকাল শুক্রবার আমার শিশুপুত্রকেও বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বাঁশ বাগানের একই স্থানে নিয়ে গিয়ে বলাৎকার করে। শিশুটি বাড়িতে ফিরে অসুস্থ বোধ করলে পুরো ঘটনা জানতে পারি আমরা। এরপর আমরা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িকে জানালে তারা শুক্রবার রাতেই অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে। এরপর শনিবার সকালে আমরা থানায় মামলা করি। আমরা এই ভণ্ড শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার চাই। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও একই মাদ্রাসার অন্য কয়েকজন ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠলে এলাকার মানুষজন তা স্থানীয়ভাবে সমাধান করে দেন।  বিষয়টি নিয়ে কথা হলে মাদ্রাসা প্রধান মাওলানা হাফিজ বলেন, গতকাল শুক্রবার আমাদের মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। ফারুক স্যার আমাকে কল দিয়েছিল, তিনি বাগান থেকে কিছু বাঁশ আনবে। সেই সুবাদে মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে লোকমুখে শুনি তিনি সেই ছাত্রদের বলাৎকার করেছেন। যদি এর সত্যতা পাই তাহলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম মাওলা বলেন, শিশুদের পরিবার আমার কাছে আসলে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসি। দুই পক্ষের কথা শুনে আমি তাদের আইনের আশ্রয় নিতে সহযোগিতা করি। গুলশাখালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওলি উল্লাহ জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে আসলে অভিযুক্ত ফারুক আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফাঁড়িতে নিয়ে আসি। পরে তাকে লংগদু থানায় হস্তান্তর করি। লংগদু থানার ওসি হারুনুর রশিদ জানান, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযোগ আমলে নিয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০৪ মে, ২০২৪

জ্যামিতির কম্পাস দিয়ে শিক্ষক বাবাকে মেরেই ফেলল ছেলে
জ্যামিতি বক্সের কম্পাসের আঘাতেই জীবন গেল স্কুল শিক্ষক মজিবুর রহমান পান্নার। কম্পাস দিয়ে কলেজ পড়ুয়া ছেলে মারুফ আহম্মেদ রাব্বি এলোপাতাড়ি বুকে আঘাত করায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। বাবার দ্বিতীয় বিয়ে এবং মায়ের ওপর হওয়া অত্যাচার মেনে নিতে না পেরে এমন কাণ্ড ঘটান তিনি। ছেলের হাতে বাবার এমেন মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার পূর্ব ভালুকার কোনাপাড়া এলাকায়। নিহত মজিবুর রহমান পান্না ওই এলাকার মৃত সালামত শেখের ছেলে। তিনি স্থানীয় মিরকা হাসিনা বানু উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আর অভিযুক্ত রাব্বি, মজিবুর রহমান পান্নার প্রথম স্ত্রীর সন্তান। স্থানীয়রা জানান, মজিবুর রহমান পান্না দ্বিতীয় বিয়ে করায় অনেক দিন থেকেই তাদের পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পরেও সেখানে যাতায়াত থাকায় ক্ষুব্ধ ছেলে ঝগড়ার এক পর্যায়ে বাবাকে আঘাত করে। ভালুকা ইউ‌নিয়ন প‌রিষদের চেয়ারম‌্যান মো. শিহাব আমিন খান বলেন, এ ঘটনাটি হয়তো তার পারিবারিক কোনো কলহের কারণে ঘটেছে। তারা যেন সঠিক বিচার পায় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ করছি। এদিকে ছেলের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় হত্যা দায়ের করেছেন মা রোকেয়া আক্তার। ভালুকা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ্ কামাল আকন্দ জানান, ঘটনার পরপরই ছেলে রাব্বিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সে একটি জ্যামিতি বক্সের কম্পাস দিয়ে তার পিতাকে আঘাত করে। আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আসামি তার দোষ স্বীকার করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, পারিবারিক কলহ যে হত্যা পর্যন্ত পৌছাবে তা কেউই ভাবতে পারেননি। প্রতিদিনের মতো বিষয়টি ঝগড়াঝাটি পর্যন্তই থাকবে বলে মনে করেছিল প্রতিবেশিরা।
০৪ মে, ২০২৪

উপাচার্যের কাছে জবি শিক্ষক সেকেন্দারের বিচার চেয়েছে নীলদল
ফেসবুকে মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক আবু সালেহ সেকেন্দারের বিরুদ্ধে এবার বিচার চেয়েছে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীলদল। শুক্রবার (৩ মে) উপাচার্য বরাবর নীলদলের সভাপতি ড. মনিরুজ্জাম ও সাধারণ সম্পাদক ড. সিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আবেদনে শিক্ষক সেকান্দারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। এতে নীলদল উল্লেখ করে, সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আবুল হোসেন একজন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ ও গবেষক। তিনি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও নীলদলের সভাপতি ছিলেন। তাকে নিয়ে শিক্ষক আবু সালেহ সেকেন্দার ফেসবুকে একের পর এক মিথ্যা পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন। ড. আবুল হোসেন তিনি নাকি তথ্য গোপন করে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের পিএইচডি থিসিস মূল্যায়ন কমিটির সদস্য হয়েছেন। বিষয়টি একেবারেই মিথ্যা। গবেষণা সেমিনারটি ছিল উন্মুক্ত। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারেন। এতে কোনো বাধা নেই। অভিযোগে নীলদল আরও জানায়, সালেহ সেকেন্দার প্রতিনিয়তই অধ্যাপক আবুল হোসেনের পারিবারিক ও ব্যক্তিগত বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ও কুৎসা রটাচ্ছেন, যা সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিরত কেউ করতে পারেন না। এছাড়া তিনি একাধিক সিনিয়র শিক্ষককে নিয়ে মিথ্যা ও অশালীন পোস্ট দিচ্ছেন। এরূপ কর্ম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এতে ড. আবুল হোসেনসহ ইসলামের ইতিহাস বিভাগের একাডেমিক কমিটি, সংশ্লিষ্ট ফেকাল্টি কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটকে প্রশ্নবিদ্ধ ও সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে এর একটি সুরাহা হওয়া আশু প্রয়োজন। আবু সালেহ সেকেন্দারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি। আরও উল্লেখ করা হয়, মাস্টার্স পরীক্ষার থিসিস মূল্যায়নে জালিয়াতি, কোর্স শিক্ষক হিসেবে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অপচেষ্টা ইত্যাদির অভিযোগে ২০১৫ সালে একাডেমিক কমিটি তাকে থিসিস গাইড, ক্লাস-পরীক্ষা এবং যাবতীয় কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দিয়ে একাডেমিক কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট বিচার প্রার্থনা করে। একাডেমিক কমিটি মনে করে সেকান্দারের এরূপ আচরণ অশিক্ষকসুলভ, অনৈতিক ও অপরাধমূলক। একাডেমিক কমিটির সবাই তার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদানের প্রয়োজনীয়-ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করছে। এর আগে ফেসবুকে অশালীন পোস্ট দিয়ে সম্মানহানী করার জন্য গত ৩০ এপ্রিল আবু সালেহ সেকান্দারের বিরুদ্ধে উপাচার্যকে লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিচার চান ডিন ড. আবুল হোসেন। এরপর গত ২ মে সেকান্দারের বিচারের জন্য উপাচার্যকে লিখিতভাবে জানান ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সকল শিক্ষক।
০৩ মে, ২০২৪

জবি শিক্ষক সেকান্দারের বিচার চেয়ে উপাচার্যকে সহকর্মীদের চিঠি
ফেসবুক স্ট্যাটাসে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক আবু সালেহ সেকেন্দারের বিরুদ্ধে এবার বিচারের সুপারিশ করেছেন তার বিভাগেরই সব শিক্ষক। বিভাগটির ১১১তম একাডেমিক সভায় সব শিক্ষকই এ সিদ্ধান্ত নেন। বৃহস্পতিবার (২ মে) উপাচার্য বরাবর ইসলামের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত একাডেমিক কমিটির সব শিক্ষকের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জানানো হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষক আবু সালেহ সেকেন্দার তার ফেসবুকে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের পিএইচডি কমিটি ও ডিগ্রি প্রদান বিষয়ে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করেন এবং তিনি বারবার ফেসবুকে এটা পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন। অথচ অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন কখনই বিভাগের কোনো পিএইচডি কমিটির বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন না। তার এমন মিথ্যা, বিভ্রান্তিমূলক, অনৈতিক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে ড. আবুল হোসেনসহ বিভাগীয় চেয়ারম্যান, গবেষক ও শিক্ষকবৃন্দের সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। একইসঙ্গে ইসলামের ইতিহাস বিভাগ, নির্বাহী কমিটি, একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটসহ সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়েছে। আরও উল্লেখ করা হয়, মাস্টার্স পরীক্ষার থিসিস মূল্যায়নে জালিয়াতি, কোর্স শিক্ষক হিসেবে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অপচেষ্টা ইত্যাদির অভিযোগে ২০১৫ সালে একাডেমিক কমিটি তাকে থিসিস গাইড, ক্লাস-পরীক্ষা এবং যাবতীয় কর্মকাণ্ড হতে অব্যাহতি দিয়ে একাডেমিক কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট বিচার প্রার্থণা করে। একাডেমিক কমিটি মনে করে সেকান্দারের এরূপ আচরণ অশিক্ষকসুলভ, অনৈতিক ও অপরাধমূলক। একাডেমিক কমিটির সবাই তার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদানের প্রয়োজনীয়-ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করছে। এর আগে ফেসবুকে অশালীন পোস্ট দিয়ে সম্মানহানী করার জন্য গত ৩০ এপ্রিল আবু সালেহ সেকান্দারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিচার চান সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আবুল হোসেন। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের নিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রীর সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অপ্রীতিকর অবস্থায় প্রক্টরিয়াল বডির কাছে আটকের পর বিয়ে, ফেসবুকে ভিসি, ডিন, প্রক্টরসহ সিনিয়র শিক্ষকদের গালাগালের অভিযোগে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এসব অভিযোগে শিক্ষক সেকান্দারের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সর্বশেষ সিন্ডিকেটে তদন্ত কমিটিকে খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে।
০২ মে, ২০২৪

শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু রাখার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
শিখন ঘাটতি পূরণের অজুহাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত এবং শুক্রবারও প্রয়োজনে খোলা রাখার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির নেতারা।  বৃহস্পতিবার (২ মে) সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. নূরে আলম বিপ্লব এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি নিয়ে এক ধরনের তালবাহানা চলছে, যা হাস্যকর পরিস্থিতির উদ্রেক হয়েছে। এতে করে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। শিখন-শেখানো কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।  তারা বলেন, কোনো দুর্যোগ শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থী সৃষ্ট নয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ হতেই পারে। পূর্বেও এমন হয়েছে। সে কারণে নির্ধারিত ছুটি কমিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। মন্ত্রণালয়ের এহেন সিদ্ধান্তে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত বৈ কিছু নয়। কারণ নির্ধারিত ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটিতে শিক্ষার্থীরা পাঠসংশ্লিষ্ট ‘বাড়ির কাজ’ সম্পন্ন করতে পারেন। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকগণ চিকিৎসা নেওয়া, আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়ানো, আচার-অনুষ্ঠান ও বিশ্রামসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন। ছুটি নিয়ে আচমকা সিদ্ধান্ত নেওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে সামাজিক, শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হচ্ছে। নেতারা আরও বলেন, জাতীয় দিবসগুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থান নিতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের, অথচ সে দিন অন্যদের ছুটি। শুধু তাই নয়, শিখন ঘাটতি পূরণের অজুহাতে গত বছরের গ্রীষ্মকালীন ছুটি ও শীতকালীন ছুটি বাতিল করা হয়েছে। চলতি বছরে রমজানের ছুটিও কমানো হয়েছে যা মোটেই সুবিবেচনাপ্রসূত হয়নি। এসব সিদ্ধান্ত নির্লিপ্ততারই বহিঃপ্রকাশ। নেতারা অবিলম্বে শনিবারের ছুটি বহাল রাখা এবং বিগত দিনের কেড়ে নেয়া নির্ধারিত ছুটিগুলো সমন্বয় করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
০২ মে, ২০২৪

চাকরির সুযোগ দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। প্রতিষ্ঠানটি তাদের সংগীত বিভাগে ‘প্রভাষক’ পদে দুজন শিক্ষক নিয়োগ দেবে। আগ্রহী যোগ্য প্রার্থীরা আগামী ২৬ মে পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানের নাম : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদ ও বিভাগের নাম : প্রভাষক, সংগীত বিভাগ চাকরির ধরন : স্থায়ী প্রার্থীর ধরন : নারী-পুরুষ (উভয়) বয়স : নির্ধারিত নয় বেতন স্কেল : ২২,০০০-৫৩,০৬০/-টাকা (জাতীয় বেতন স্কেল- ২০১৫) যোগ্যতা : প্রার্থীদের অবশ্যই এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ/জিপিএ-এর ক্ষেত্রে স্কেল ৫.০০ এর মধ্যে ন্যূনতম ৪.২৫ সহসংগীত বিষয়ে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রি (উভয়) পরীক্ষায় ন্যূনতম প্রথম শ্রেণি অথবা সিজিপিএ-এর ক্ষেত্রে ৪.০০ এর মধ্যে ৩.৫০ প্রাপ্ত হতে হবে।  যেসব প্রার্থী অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি উভয় পরীক্ষায় প্রথম স্থান/সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করেছে তাদের ক্ষেত্রে এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার যে কোনো একটির অনুমোদিত শর্ত শিথিলযোগ্য। প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি এবং মানসম্পন্ন জার্নালে গবেষণা প্রকাশনা থাকলে অগ্রাধিকার প্রদান করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট নোট এবং শর্তাবলি প্রযোজ্য। বিস্তারিত জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট এখানে দেখুন। আবেদনের ঠিকানা : রেজিস্ট্রার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা- ১০০০ আবেদন ফি : রেজিস্ট্রার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে ৭৫০/- (সাতশত পঞ্চাশ) টাকা মূল্যের পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট, সার্টিফিকেট, প্রশংসাপত্র, মার্কশিট এবং অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্রের সত্যায়িত প্রতিলিপিসহ ০৮ (আট) কপি আবেদনপত্র রেজিস্ট্রার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর আগামী ২৬/০৫/২০২৪ তারিখের মধ্যে পৌঁছাতে হবে। চাকরিরত প্রার্থীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। টাকা পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। আবেদনের শেষ তারিখ : ২৬ মে, ২০২৪
০২ মে, ২০২৪

চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সম্পাদক ড. আবু নোমান
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ-২০২৪ নির্বাচন শেষ হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান এবং আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম আবু নোমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অডিটরিয়ামে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে মোট ভোট দিয়েছেন ৮৮২ জন শিক্ষক। ভোট গণনা শেষে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফল ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক এমদাদুল হক।  ৪৪৮টি ভোট পেয়ে সভাপতি পদে ড. মাহবুবুর রহমান রহমান নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. দানেশ মিয়া পেয়েছেন ২৮৯টি ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম আবু নোমান পেয়েছেন ৩৯১টি ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক পেয়েছেন ৩৪০ ভোট। সহসভাপতি পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের মুহাম্মদ আলাউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ পদে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক শাহনেওয়াজ মাহমুদ সোহেল, যুগ্ম সম্পাদক পদে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম। এ ছাড়া ৬ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের মঞ্জুরুল আলম, ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক মো. রাশেদ-উন-নদী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের এসএম সাদাত আল সাজীব, পদার্থবিদ্যা বিভাগের ড. একেএম রেজাউর রহমান, সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ড. এএসএম বোরহান উদ্দীন । এ বছর আওয়ামী ও বামপন্থি শিক্ষকদের হলুদ দলের ২২ জন প্রার্থী বিভক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। তবে বিএনপি ও জামায়াতপন্থি শিক্ষকের কোনো সদস্য এবারের নির্বাচনে অংশ নেননি। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির গত কার্যনির্বাহী পরিষদে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী সভাপতি ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের আবদুল হক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় / স্বাধীনতার পর ৪ শিক্ষক ও ৩৩ শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ড
দেশের অন্যতম একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভূমিকা দারুণ ছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময় এখানে ৩৭টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যেগুলার মধ্যে কয়েকটি ছাড়া কোনো ঘটনার বিচার হয়নি। এমনকি এসব ঘটনার দোষীরা বিভিন্নভাবে বেঁচে গেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতা ও স্বায়ত্তশাসন অ্যাসাল্ট করার অভাবে এসব ঘটনার বিচার হয়নি বলে জানান জ্যৈষ্ঠ অধ্যাপকরা। অধ্যাপকরা জানান, শিক্ষকদের মতো শিক্ষার্থীদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোনো প্রশাসনই সেভাবে আন্তরিকতা দেখায়নি। বরং কঠিন পরিস্থিতি বিভিন্ন আশ্বাস দিয়ে সামাল দিয়েছে। আর ক্যাম্পাসের মধ্যে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের বিচারহীনতার সংস্কৃতি দীর্ঘদিনের এটা বেশ খারাপ একটা দৃষ্টান্ত। তবে এই অবস্থার রূপান্তরের সম্ভাবনা খুবই কম। অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাধীনতার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি অজ্ঞাত খুন হলেও সেটির কোনো তথ্য-প্রমাণ সেভাবে নেই। তবে স্বাধীনতার পরে চারজন শিক্ষক ও ৩৩ জন শিক্ষার্থী খুন হয়েছে। যাদের মধ্যে ছাত্রশিবিরের ১৬ জন, ছাত্রলীগের সাতজন, ছাত্রদলের দুজন, প্রগতিশীল সংগঠনের চারজন। এ ছাড়া নিহতদের তালিকায় আছে নিরীহ পত্রিকার হকার, রিকশাচালক ও সাধারণ ছাত্র। শুধু শিক্ষক হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচারিক প্রক্রিয়া এগিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের ঘটনাগুলো বিচারের আশ্বাসেই অন্ধকারে রয়েছে। অনেক ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনও রয়ে গেছে অন্ধকারেই। কোনো কোনো ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও দলীয় বিবেচনায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে দোষীদের। এতে করে কোনো ঘটনার সুষ্ঠু বিচার পায়নি নিহতদের পরিবার। শিক্ষার্থীদের হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতাকে দায়ী করেছেন ছাত্রনেতা ও শিক্ষকরা। শিক্ষক হত্যাকাণ্ড : ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সকালে রাজশাহীর শালবাগান এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে। এ ঘটনায় তার ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ২০১৮ সালের ৮ মে এ মামলায় রাজশাহীর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরীন কবিতা আখতার হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড এবং তিনজনের যাবজ্জীবনের রায় দেন। তবে পরবর্তীতে এই রায় উচ্চ আদালতে আটকে আছে বলে জানা যায়। ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে খুন হন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম শফিউল ইসলাম লিলন। পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মুহাম্মদ এন্তাজুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মতিহার থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল লিলন হত্যা মামলায় তিন আসামির ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল চারজনের মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল ও দুজনকে যাবদজ্জীবন দেন। পরে গত বছর দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ২০০৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিনোদপুর এলাকায় প্রাতভ্রমণের সময় অর্থনীতি বিভাগের এই প্রবীণ শিক্ষক অধ্যাপক ইউনুসকে বাসার তিনশ গজ দূরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর দিন তার ছোট ভাই আবদুল হালিম বাদী হয়ে মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল দুজনের মৃত্যুদণ্ড দেন। শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ড : ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ড্রেন থেকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় লিপু নামে এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ দিন বিকেলেই লিপুর চাচা মো. বশীর বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের তৃতীয় ব্লকের ২৩০ নম্বর রুমে নিজ কক্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন হল শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী আকন্দ। এরপর ২০১২ সালের ১৫ জুলাই পদ্মা সেতুর টাকা ভাগাভাগির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সভাপতি আহমেদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আবু হুসাইন বিপু গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ছাত্রলীগকর্মী আব্দুল্লাহ আল হাসান সোহেল নিহত হন। ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে দুর্বত্তরা ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করে। ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে শিবির নেতা হাফিজুর রহমান শাহীন নিহত হন। ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ ছাত্রলীগ, শিবির ও বিনোদপুরের ব্যবসায়ীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান নোমানী নিহত হন। ২০০৩ সালের ১২ জানুয়ারি কাজলা গেটে আধিপত্য নিয়ে ছাত্রদল-শিবির সংঘর্ষে শিবিরকর্মী সাইফুদ্দীন নিহত হন। ২০০৭ সালের আগস্ট মাসে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়। এরপর ১৯৯৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা বিশ্বজিৎ, ইউনিয়ন নেতা তপন এবং শিবির নেতা মুস্তাফিজুর রহমান ও রবিউল ইসলাম নিহত হন। একই বছর শের ই বাংলা হলের সামনে সংঘর্ষ হয়। এতে ছাত্রমৈত্রীর নেতা জুবায়ের চৌধুরী রিমুকে হাত-পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে শিবিরকর্মীরা। ১৯৯৪ সালে উত্তেজনা হলেও কোনো ধরনের খুন হয়নি। ১৯৯২ সালে উপাচার্য ভবনের সামনে ছাত্রলীগের কর্মী মুহাম্মদ আলী মারা যায়। একই দিন সৈয়দ আমির আলী হল ও নবাব আব্দুল লতিফ হলের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা ইয়াসির আরাফাত পিটু নিহত হন। ১৯৯২ সালের ১৭ মার্চের সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার সময় ৭ মে নতুন বুধপাড়ায় শিবির ক্যাডার মোজাম্মেলের বাড়িতে বোমা তৈরির সময় দলীয় ক্যাডার আজিবরসহ অজ্ঞাতনামা ৪ শিবিরকর্মী নিহত হন। পরে স্থানীয় একটি ডোবা থেকে পুলিশ অনেক খণ্ডিত হাত-পা উদ্ধার করে। একই বছরের ১৯ জুন শিবিরের হামলায় বুধপাড়ার জাসদ নেতা মুকিম গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ জুন মুকিমের মৃত্যু হয়। ১৯৯৩ সালের ১৪ জানুয়ারি রাতে ছাত্রদল নিয়ন্ত্রিত সোহরাওয়ার্দী হল এবং শিবির নিয়ন্ত্রিত শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে শিবির কর্মী মুহাম্মদ ইয়াহিয়া নিহত হন। ১৯৯৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জাসাস) সেই সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমানকে দুর্বত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে। ১৯৯৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের সঙ্গে সংঘর্ষে শিবির নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী মারা যান। পর দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী চৌদ্দপাই এলাকায় ঢাকাগামী বাস থেকে নামিয়ে কুপিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেতলে ছাত্রমৈত্রীর নেতা দেবাশীষ ভট্টাচার্য রূপমকে হত্যা করে দুর্বত্তরা। স্বাধীনতা-পরবর্তী দশক ভালোই চলছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৮২ সালে এসে শুরু হয় ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। ১৯৮২ সালের ১১ মার্চ শিবিরের নবীনবরণ নিয়ে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের সংঘর্ষে সাব্বির আহমদ, আব্দুল হামিদ, আইয়ুব আলী ও আব্দুল জব্বার নামে চার শিবিরকর্মী এবং মীর মোশতাক এলাহী নামে এক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হন। ১৯৯০ সালে সেপ্টেম্বর মাসে খলিলুর রহমান নামে এক ছাত্রকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়। এটির মামলা ও স্বাক্ষ্যগ্রহণ হলেও পরবর্তী সরকার মামলাটি বাতিল করে দেয়। ১৯৮৮ সালের ২৮ নভেম্বর আজগর আলী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের হামলায় মারা যান। ১৯৮৯ সালের ১৮ এপ্রিল ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের হামলায় শিবির নেতা শফিকুল ইসলাম নিহত হন। জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করতে ক্যাম্পাসে এলে প্রতিবাদী ছাত্রদের সঙ্গে সেই সময়ের বিডিআর সদস্যদের সংঘর্ষে জাসদ ছাত্রলীগের নেতা শাজাহান সিরাজ ও এক পত্রিকার হকার নিহত হন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাবকে দায়ী করে বলেন, ছাত্রলীগের যেসব নেতাকর্মী এই ক্যাম্পাসে খুন হয়েছে সবারই বিচারের দাবি আমরা করেছি। বিচারিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রোগ্রাম করেছি। কিন্তু কোনোটাই আলোর মুখ দেখেনি। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেভাবে কোনো সহযোগিতা করেনি। তাদের দায় থাকা সত্ত্বেও তারা কোনো আন্তরিকতা দেখায়নি। আমরা চাই সব হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র অধ্যাপক বলেন, ‘আসলে শিক্ষার্থীদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোনো প্রশাসনই সেভাবে আন্তরিকতা দেখায়নি। বরং কঠিন পরিস্থিতিতে আশ্বাস দিয়ে সেটা শান্ত করেছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ঘটনাগুলো চাপা পড়ে গেছে এবং বিচারিক প্রক্রিয়া এগিয়ে যায়নি। এ ছাড়া অনেক সময় এসব ঘটনাকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলেও চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ. আল মামুন বলেন, ’৭১ সালে প্রথম ঢাকায় ছাত্র হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এরপর থেকে নিয়মিত বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্র হত্যা হয়েছে তবে কোনো ঘটনায় বিচার হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হত্যাকাণ্ডের বিচারহীনতার সংস্কৃতি দীর্ঘদিনের। এটা বেশ খারাপ একটা দৃষ্টান্ত। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বড় রকমের গাফিলতি রয়েছে, সেটা হলো বিশ্ববিদ্যালয় যদি নিজের স্বায়ত্তশাসন অ্যাসাল্ট করতো এমন যে এখানের শিক্ষার্থীদের সকল দায়ভার তার এবং কোনো বহিরাগত চাপ সহ্য করব না তাহলে সম্ভব ছিল বিচারের। কিন্তু দুঃখজনক হলো বিশ্ববিদ্যালগুলো সর্বদা বাইরের চাপের কাছে নতি শিকার করেছে। এটায় একটা প্রধান কারণ হলো বিচার না হওয়ার।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার ফোনে এসব বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই ক্যাম্পাসের সব হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক। তবে যেসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা খুন হয়েছে তারা ওসব ব্যাপারে আরেকটু খোঁজখবর ও তদারকি করলে বিচারিক প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে। তবে আগের প্রশাসনগুলো এসব বিষয়ে কেমন ভূমিকা পালন করেছে জানি না। তবে আমরা এসব বিষয়ে আন্তরিক আছি।’
৩০ এপ্রিল, ২০২৪
X