বালুতে পুঁতে শিশুকে হত্যা
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে যাদুকাটা নদীর তীরে বালুতে পুঁতে সাকিবুল ইসলাম নামে এক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২৩ দিন পর পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১১ মে) দুপুরে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের মোদেরগাঁও থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- মোদেরগাঁও গ্রামের আব্দুল লতিফ, তার স্ত্রী ফিরোজা খাতুন ও তার ছেলে মোশাররফ হোসেন খোকা, একই গ্রামের হাবিবুর রহমানের স্ত্রী রাবেয়া বেগম ও আব্দুল লতিফের ছেলে মোশাহিদ আহমেদ। শিশু সাকিবুল ইসলাম একই গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল। তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, বুধবার (১৭ এপ্রিল) শিশু সাকিবুল তার মাকে স্কুলে যাবে না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। রাত পর্যন্ত সে বাড়ি ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজির করে। পরের দিন বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে জানতে পারেন যাদুকাটা নদীর তীরে মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছে সাকিবুলকে। খবর পেয়ে শিশুর পরিবার ও পুলিশ গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মরদেহ উদ্ধার করে। পরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়। ওসি মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিন বলেন, গত ১৮ এপ্রিল শিশুটির গ্রামের পাশের জাদুকাটা নদীর তীরে বালুচাপা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। এর দুদিন পর হারুন মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। শিশু সাকিবুলের হত্যায় জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১২ মে, ২০২৪

গাজায় ১০ হাজারের বেশি শিশুকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
গাজায় প্রায় ১০০ দিনের সংঘাতে ১০ হাজারের বেশি শিশুকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপত্যকার মোট শিশুর ১ শতাংশই সংঘাতের বলি হয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের নতুন এক রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর আলজাজিরার। সেভ দ্য চিলড্রেনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ থেকে বেঁচে যাওয়া শিশুরা শারীরিক আঘাত, অগ্নিদগ্ধ, বিভিন্ন রোগ, অপর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা এবং তাদের বাবা-মা, অন্যান্য প্রিয়জনকে হারানোসহ নির্মম ভয়াবহতা সহ্য করছে। হাজার হাজার আহত শিশুর মধ্যে কমপক্ষে এক হাজার শিশু একটি বা দুই পা-ই হারিয়েছে। সংস্থাটির কর্মকর্তা জেসন লি আলজাজিরাকে বলেন, এগুলো শুধু সংখ্যা নয়, এই প্রতিটি সংখ্যাই এক একজন শিশু। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর পরই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। তিন মাসের বেশি সময় ধরে গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার বাহিনী। গাজার কোনো স্থানই এখন আর নিরাপদ নয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এখানে-সেখানে ভবনের ধ্বংসস্তূপ পড়ে থাকা গাজা যেন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। হামাসকে নির্মূলের অজুহাতে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৩ হাজার ৪৬৯ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু। আহত হয়েছে আরও ৫৯ হাজার ৬০৪ জন।
১৩ জানুয়ারি, ২০২৪

মুক্তিপণ না পেয়ে ৭ বছরের শিশুকে হত্যা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে মুক্তিপণ না পেয়ে ফাতেহা নামের ৭ বছরের শিশুকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার (২ অক্টোবর) রাতে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তাদের তথ্যে ডোবা থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আলম কালবেলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ফাতেহা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের শুটকীকান্দি গ্রামের বাছেদ মিয়ার মেয়ে। সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ত। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন একই উপজেলার দরিয়াদৌলত গ্রামের নাজিম ও শুঁটকিকান্দি গ্রামের আলাউদ্দিন। সম্পর্কে তারা ফাতেহার ফুফাতো ও চাচাতো ভাই। নিহতের মা রুমি আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়েকে অপহরণ করে কবিরাজ সেজে আমাকে ফোন দেওয়া হয়। মেয়েকে ফিরে পেতে হলে চার লাখ টাকা দিতে হবে বলা হয়। তা ছাড়া যারা আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে, তারাই এলাকায় মাইকিং করে আমার মেয়ের খোঁজ চায়। আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’ পরিবারের বরাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম জানান, ৩০ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় ফাতেহা। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করেও তার সন্ধান পাচ্ছিল না পরিবার। এক দিন পর রোববার (১ অক্টোবর) অপহরণকারীরা ফাতেহার বাবা বাছেদ মিয়াকে ফোন করে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানায়। পরে মুক্তিপণ বাবদ চার লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। এ অবস্থায় বাছেদ মিয়া বিষয়টি বাছারামপুরের ওসি নূরে আলমকে জানান। পরে পুলিশ অপহরণকারীর ফোন নম্বরের সূত্র ধরে বিষয়টির তদন্ত শুরু করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার শাখওয়াত হোসেন বলেন, ‘ফোন কলের রেশ ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের ফোনে শিশুটিকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি সংক্রান্ত চ্যাটিং (বার্তা আদান-প্রদান) পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পরে অপহরণকারীদের তথ্যের আলোকে পাশের ডোবার পানিতে থাকা কচুরি পানার নিচ থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে নিহত শিশুর মা রুমা আক্তার বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
০৩ অক্টোবর, ২০২৩

সিলেটে দেড় মাসের শিশুকে হত্যা চাচির যাবজ্জীবন
সিলেটের কানাইঘাটে দেড় মাসের শিশু নাদিম আহম্মেদকে বিষপান করিয়ে হত্যার দায়ে চাচি সুরমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ (৫ম) আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল (৬)-এর বিজ্ঞ বিচারক মো. আক্তার হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।  দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল গ্রামের তাজউদ্দিনের স্ত্রী সুমানা আক্তার সুরমা (৩৫)। আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুর আহমেদ এসব বিষয় নিশ্চিত করেন। জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী নজরুল ইসলামের দেড় মাসের শিশু নাদিম আহম্মেদকে কীটনাশক খাইয়ে হত্যা করেন সুরমা। নাদিমের চাচি সুরমা দেবরের স্ত্রীর প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। ঘটনার পর নজরুল ইসলামের স্ত্রী বাদী হয়ে সুরমাকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে, ঘটনার পর পালিয়ে যান আসামি সুরমা। পরে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি সিলেট দক্ষিণ সুরমার কদমতলী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৯। মামলা চলাকালীন বাদী, তদন্ত কর্মকর্তা, ডাক্তারের জবানবন্দি ও ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার আসামি সুরমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন তিনি। মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুর আহমেদ ও বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি অ্যাডভোকেট মোস্তফা দেলোয়ার আল আজহার। দেড় মাসের শিশু নাদিমের মা সুমি আক্তার কালবেলাকে বলেন, আমার ছেলেকে সুরমা তার রুমে নিয়ে গিয়ে বিষ খাবাইয়া খুন করেছে। আমি থানায় অনেকবার গিয়েছি থানায় মামলা নেয়নি পরে আমি আদালতে গিয়ে মামলা করেছি। কানাইঘাট থানা পুলিশ আসামি সুমনা আক্তার সুরমাকে পুলিশ রিমান্ডে আনে নাই। জেলা ডিবি পুলিশ রিমান্ডে আনলে তারা সঠিকভাবে রিমান্ড করে নাই। প্রকাশ্যে মায়ের কুল থেকে বাচ্ছাকে বিষপান করিয়ে হত্যা করেছে। যারা মামলাটি তদন্ত করেছে তারা যদি সঠিকভাবে ডকুমেন্টস দিত তাহলে তার ফাঁসি হতো। আদালতের কাছে আমার দাবি এ খুনি মহিলার ফাঁসির চাই।  
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

একে একে ৭ শিশুকে হত্যা করেছেন এই নার্স! 
একে একে সদ্য জন্মগ্রহণ করা ৭ শিশুকে হত্যা ও ৬ জনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যুক্তরাজ্যের কাউন্টেস অব চেস্টার হাসপাতালের নার্স। ওই নারীর নাম লুসি লেটবাই (৩৩)। টানা ১০ মাস বিচার কার্যক্রম শেষে শুক্রবার (১৮ আগস্ট) ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্ট তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। বলা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ শিশু সিরিয়াল কিলার লুসি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের কাউন্টেস অব চেস্টার হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটে কর্মরত ছিলেন লুসি লেটবি। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে সেখানে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সিএনএন বলছে, নবজাতকদের কোনো কারণ ছাড়াই ইনজেকশন দিতেন লুসি। সেই ইনজেকশনে থাকতো বাতাস। সেসব বাতাস শিশুদের দেহে প্রবেশ করে মারাত্মক ক্ষতি করতো। এমনকি পেটেও এমন ইনজেকশন দিতেন তিনি। অনেক সময় শিশুদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি দুধ খাওয়াতেন লুসি। না খেতে চাইলে একরকম জোর করে খাওয়ানো হতো এসব দুধ। তা না করলে নবজাতকের শরীরে আঘাত করতেন। এ ছাড়া দুই নবজাতকের শরীরে ইনসুলিনের মাধ্যমে বিষ প্রয়োগ করেছিলেন। শুনানিতে এসব তথ্য সামনে আনা হয়। নবজাতককে মেরে ফেলাই লুসির টার্গেট ছিল। পরে এক সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলে, এক সময় ব্যাপারটি সামনে আসে। এরপরই শুরু হয় তদন্ত। লুসিকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর বাড়ি থেকে কিছু হাতে লেখা নোট উদ্ধার করেছিল পুলিশ। উদ্ধাকৃত নোটগুলোর কোনোটিতে লেখা ছিল, ‘আমি তাদের যত্ন নেওয়ার জন্য যথেষ্ট ভালো নই, তাই হত্যা করেছি।’ কেনোটিতে লেখা ছিল, ‘আমি ভয়ঙ্কর খারাপ মানুষ, খারাপ বলেই এটা করেছি।’ বিচারে সর্বশেষ রায়ের দিন আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে অস্বীকার করেন লুসি। লুসির আলোচিত এই মামলা নিয়ে প্রায় ৭৬ ঘণ্টার দীর্ঘ আলোচনার পর গত ৮ আগস্ট বিচারক প্যানেল প্রথম অভিযোগের রায় পড়েছিলেন। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন লুসি। গত ১১ আগস্ট দোষী সাব্যস্ত করে দ্বিতীয় রায় পড়ার সময়ও মাথা নিচু করে কান্না করতে দেখো যায় তাকে। আলোচিত শিশু হত্যার এই বিচারকে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দীর্ঘতম হত্যা-সংক্রান্ত বিচার বলা হচ্ছে। ১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই বিচারকার্যের পর আগামী সোমবার লুসি লেটবির দণ্ড ঘোষণা করা হবে। 
১৯ আগস্ট, ২০২৩
X