সিলেটের কানাইঘাটে দেড় মাসের শিশু নাদিম আহম্মেদকে বিষপান করিয়ে হত্যার দায়ে চাচি সুরমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ (৫ম) আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল (৬)-এর বিজ্ঞ বিচারক মো. আক্তার হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল গ্রামের তাজউদ্দিনের স্ত্রী সুমানা আক্তার সুরমা (৩৫)।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুর আহমেদ এসব বিষয় নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী নজরুল ইসলামের দেড় মাসের শিশু নাদিম আহম্মেদকে কীটনাশক খাইয়ে হত্যা করেন সুরমা। নাদিমের চাচি সুরমা দেবরের স্ত্রীর প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। ঘটনার পর নজরুল ইসলামের স্ত্রী বাদী হয়ে সুরমাকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, ঘটনার পর পালিয়ে যান আসামি সুরমা। পরে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি সিলেট দক্ষিণ সুরমার কদমতলী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯।
মামলা চলাকালীন বাদী, তদন্ত কর্মকর্তা, ডাক্তারের জবানবন্দি ও ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার আসামি সুরমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুর আহমেদ ও বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি অ্যাডভোকেট মোস্তফা দেলোয়ার আল আজহার।
দেড় মাসের শিশু নাদিমের মা সুমি আক্তার কালবেলাকে বলেন, আমার ছেলেকে সুরমা তার রুমে নিয়ে গিয়ে বিষ খাবাইয়া খুন করেছে। আমি থানায় অনেকবার গিয়েছি থানায় মামলা নেয়নি পরে আমি আদালতে গিয়ে মামলা করেছি। কানাইঘাট থানা পুলিশ আসামি সুমনা আক্তার সুরমাকে পুলিশ রিমান্ডে আনে নাই। জেলা ডিবি পুলিশ রিমান্ডে আনলে তারা সঠিকভাবে রিমান্ড করে নাই। প্রকাশ্যে মায়ের কুল থেকে বাচ্ছাকে বিষপান করিয়ে হত্যা করেছে। যারা মামলাটি তদন্ত করেছে তারা যদি সঠিকভাবে ডকুমেন্টস দিত তাহলে তার ফাঁসি হতো। আদালতের কাছে আমার দাবি এ খুনি মহিলার ফাঁসির চাই।
মন্তব্য করুন