উপকূলে এখনো থামেনি ঘূর্ণিঝড় রিমালের দাপট
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এখনো দাপট দেখিয়ে চলেছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যা থেকে যে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয় তার রেশ এখনো বিরাজমান। এখনো আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। গতকাল সোমবার (২৭ মে) বিদ্যুৎবিহীন এলাকায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে রাত কাটিয়েছে উপকূলীয় জনপদ। প্রচণ্ড বাতাস আর বৃষ্টি এক নাগাড়ে দাপট দেখিয়ে চলেছে মঙ্গলবার সকালেও। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বড় বড় গাছ রাস্তায় পড়ে আছে। মাছের ঘের ভেসে গেছে। কারও বাড়ির টিন চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। নদ-নদীর পানি বেড়িবাঁধ ছুঁই ছুঁই। গতকাল এ অঞ্চলের বিভিন্ন বেড়িবাঁধ থেকে পানি গড়িয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়লে এ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।  এদিকে জোয়ারের পানিতে কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়নের দেবপুরের বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গৈয়াতলা ও নিচকাটার স্লুইচগেট দিয়ে পানি প্রবেশ করায় গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ করেছে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারের দায়িত্বশীলরা। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতপুরের বাসিন্দা মাওলানা হাবীবুল্লাহ বলেন, বাড়ির গাছপালা ভেঙে ঘরের ওপর পড়ে আছে। চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এখনো আতঙ্ক কাটেনি। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বর আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা এখানকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়াসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিয়া বাবুল বলেন, আমার এলাকার কয়েকটি স্লুইসগেট নড়বড়ে। রাতে অনেক জায়গা থেকেই পানি লোকালয়ে ঢুকছে। আমরা সবাইকে নিরাপদে রাখার চেষ্টা করছি। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। কন্ট্রোল রুম ও মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হলে দ্রুত গাছ অপসারণের জন্য আলাদাভাবে ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরের পার্শ্ববর্তী পর্যটন নগরী কুয়াকাটার সব আবাসিক হোটেলগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। 
২৮ মে, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রিমাল / আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা
ঘূর্ণিঝড় রিমাল থেকে উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ইতোমধ্যে ১৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র ২০টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি কুয়াকাটার সব আবাসিক হোটেলগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২৬ মে) সকালে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারির পর পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় অবস্থানরত সকল পর্যটক ও স্থানীয়দের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এখানকার আবাসিক হোটেলগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেওয়া হয়েছে। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল এমএ মোতালেব শরীফ বলেন, উপকূলবর্তী এলাকা হওয়ায় প্রতি বছরই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। তাই উপকূলের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে কুয়াকাটার বহুতল আবাসিক হোটেলগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেওয়া হয়। প্রতিবারের মতো এ বারেও সকল আবাসিক হোটেলগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ বিষয় কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ পুলিশ রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই মুহূর্তে কুয়াকাটা অবস্থানরত সকল পর্যটকদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করেছি আমরা। পাশাপাশি কুয়াকাটার সকল আবাসিক হোটেলগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করার পর থেকে, সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য আমরা মাইকিং করছি। সার্বিক পরিস্থিতির মোকাবেলায় টুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। কন্ট্রোল রুম ও মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হলে দ্রুত গাছ অপসারণের জন্য আলাদাভাবে ফায়ার সার্ভিস এবং স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হবে। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগর পার্শ্ববর্তী পর্যটন নাগরিক কুয়াকাটার সকল আবাসিক হোটেলগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে।   
২৬ মে, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রিমাল / নিরাপদে অবস্থান করছেন কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা
‘দিন থাকতেই কুয়াকাটা ছেড়ে যাওয়া উচিত ছিল। সমুদ্রের ভয়ংকর রূপ কাছ এতটা থেকে কখনো দেখা হয়নি। সারাক্ষণ আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তায় রাত পার করছি। বাবা-মা ভয়ে ছিলেন। সমুদ্রের বড় বড় ঢেউ দেখে ভয় পেয়েছিলাম। সারারাত না ঘুমিয়ে হোটেলে কাটিয়ে দিয়েছি। এ সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ার মত। আমাদের নিরাপত্তার জন্য তারা সবসময় ব্যস্ত ছিলেন।’ রোববার (২৬ মে) সকালে কালবেলাকে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকা থেকে আগত পর্যটক বেলায়েত মুন্না। তিনি বলেন, আমি দুদিন ধরে কুয়াকাটায় অবস্থান করছি। আমরা বন্ধুবান্ধব মিলে বেড়াতে এসেছি। আবহাওয়া খারাপ হলে নাকি সমুদ্রের ভয়ংকর রূপ হয়, তাই থেকে গেলাম কুয়াকাটায়।  ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে শনিবার (২৫ মে) বিকেল নাগাদ ছিল বৃষ্টি আর বাতাসের তীব্রতা। যা সন্ধ্যার পরে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। পুরো রাত উৎকণ্ঠায় ছিলেন পর্যটকরা।  কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর ছিল কুয়াকাটার ট্যুরিস্ট পুলিশ ও নৌ পুলিশের সদস্যরা। তারা পর্যটকদের নিরাপদে রাখতে মাইকিংসহ নিরাপত্তার সংবাদ প্রচার প্রচারণা করেছে। সকল পর্যটকদের হোটেলে অবস্থান নিশ্চিত করাসহ তাদের যাবতীয় খোঁজখবর রাখছে অদ্যাবধি। এমনটা নিশ্চিত করা হয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃষ্টির পাশাপাশি বাতাসের তীব্রতা রয়েছে।   আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দেশের সকল বিভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী ৪৪-৮৮ মিলিমিটার থেকে অতি ভারী ২৮৯ মিলিমিটার বর্ষণ হতে পারে। এবং উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনি, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চাইতে ৩ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
২৬ মে, ২০২৪

কাম্পাস সংবাদ / জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতা বিভাগ সমুদ্র দেখা, সঙ্গে ফিল্ডওয়ার্কও
পরিবেশ সুরক্ষা ও যোগাযোগ বিষয়ে ফিল্ডওয়ার্ক করার অংশ হিসেবে কক্সবাজারে ট্যুর আয়োজন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ। এ যেন রথ দেখা আর কলা বেচা, সেইসঙ্গে নাগরদোলায় চড়া। ১৪-১৮ মে কক্সবাজারে বেশ সময় কেটেছে বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের। ট্যুরে শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আশরাফুল আলম, সহযোগী অধ্যাপক মো. রাইসুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক মো. রুমান শিকদার ও শেখ আবু রাইহান সিদ্দিকী এবং প্রভাষক কামনা আক্তার। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক এই কোর্সে বাস্তব পাঠদানের লক্ষ্যেই ট্যুরের আয়োজন। জবি ও কক্সবাজারের স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় পুরো ফিল্ড ট্যুরটি সম্পন্ন হয়েছে ঠিকঠাক। কক্সবাজারের ইনানী, পাটুয়ার টেক, কলাতলী, লাবণী, খুরুশকুল বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আশ্রয়ণ প্রকল্প, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং স্থানীয় প্রেস ক্লাবসহ আরও কয়েকটি স্থানে শিক্ষার্থীরা যান এবং দরকারি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল ও সৈকতের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, আশ্রয়ণ প্রকল্পে বাসিন্দাদের আর্থসামাজিক অবস্থাসহ কয়েকটি টপিকে উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে সেই উপাত্ত ঘেঁটে তৈরি হবে প্রতিবেদন। ফিল্ডওয়ার্ক শেষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভাও হয় হোটেলের লবিতে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী নিয়ামতউল্লাহ খান বলেন, ফিল্ডওয়ার্কের কাজ ফিল্ডে গিয়ে করতে হয়। নতুন জায়গায় নতুন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের অভিজ্ঞতা হয়। বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বলেন, ‘ফিল্ডওয়ার্কের পাশাপাশি সৈকতে গোসল ও পাড় থেকে সূর্যাস্ত দেখা বেশ উপভোগ করেছি। প্রতিদিন সন্ধ্যায় বন্ধুরা মিলে ঢেউয়ের মধ্যেই হেঁটেছি। ভেজা বালু ছোড়াছুড়িও খেলেছি। ক্যাম্পাস লাইফে এ এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুপুর ও রাতের খাবার একসঙ্গে খেয়েছি, যা আগে কোনোদিন হয়নি। ভাগ করে সাগরপাড়ের মাছ-মাংস খাওয়ার ব্যাপারটাই আলাদা। চাঁদের গাড়িতে চড়ে ঘুরেছি বিভিন্ন জায়গায়। উত্তপ্ত বালুর ওপর দৌড়ানোর স্মৃতি রেখেছি ভিডিও ধারণ করে। মনে হলো কল্পনার ডানায় কেটেছে কয়েকটি দিন।’ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের ফিল্ড প্রজেক্টের জায়গা হিসেবে কক্সবাজার বেছে নিয়েছিলাম। এখানকার পরিবেশ সুরক্ষায় কীভাবে সবাই কাজ করছেন, যোগাযোগ করছেন এবং এটা কতটুকু ভূমিকা রাখছে, সে বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কাজ করেছেন। সুন্দরভাবেই ফিল্ড প্রজেক্ট সম্পন্ন হয়েছে।’
২৬ মে, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রিমাল / সমুদ্র পাড় থেকে পাহাড়ে একযোগে মাইকিং চট্টগ্রামে
পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি শনিবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার শংকায় চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত করা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র, শুকনো খাবার মজুদ করাসহ স্বেচ্ছাসেবকদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সমুদ্রের কাছাকাছি এলাকা পতেঙ্গা, বন্দর, হালিশহর থেকে শুরু করে নগরের মাতিঝর্ণা ও বাটালি হিল পাহাড়ি এলাকায় একযোগে মাইকিং চলছে। শনিবার (২৫ মে) সকাল থেকে চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মাইকিং শুরু করে জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি প্রাণহানিসহ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত থেকে জানমাল রক্ষায় চট্টগ্রামের উপকূলীয় ছয় উপজেলাসহ জেলার ১৫ উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। কালবেলাকে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত ও জানমাল রক্ষায় চট্টগ্রামের উপকূলীয় ছয় উপজেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে খোলা হয়েছে ৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র, প্রস্তুত করা হয়েছে আরও ৭৮৫টি। ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে করা হচ্ছে মাইকিং। কাজ করছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকরা। দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাথমিক চাহিদা মেটানোর জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২১ টন চাল। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রস্তুত রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তারা জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতিমূলক সভা করছেন। এ ছাড়া সমুদ্রের তীরবর্তী এলাকা বাঁশখালী উপজেলায় ১১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলার উপকলীয় এলাকা ছনুয়া, খানখানাবাদ, গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, কাথরিয়া, সাধনপুর, পুকুরিয়া, পুইছড়ি, শেখেরখীল ও শীলকুপ এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার এবং মুজিব কিল্লাসহ ১১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাগরে যেসব জেলে রয়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে কাট্টলী সার্কেল ভূমি অফিসের উদ্যোগে মেরিন ড্রাইভ, রাসমনি ঘাট, ১নং ঝিল, বিজয়নগর, উত্তর পাহাড়তলীসহ পাহাড়ি এলাকায় জনসাধারণকে সতর্ক করে এ মাইকিং চলমান রয়েছে। এ ছাড়া রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে তাদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পর্যায়ক্রমে প্রস্তুত করা হচ্ছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় জনগণের জানমাল রক্ষায় জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম এর তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
২৫ মে, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে শুরু হয়েছে তীব্র বাতাস
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল হতে শুরু করেছে। বিভিন্ন স্থানে বাতাসের চাপ কিছুটা বেড়েছে এবং বৃষ্টি পড়ছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদ-নদীর পানির উচ্চতা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। পর্যটকরা নিরাপদে আশ্রয় নিতে শুরু করছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ ও নৌপুলিশ একত্রে কাজ করছে। সৈকতে নামতে সতর্ক করছে তারা। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটার মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে উপজেলা প্রশাসন শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কোন সংকেতের কী মানে? ঝড়ের সময় আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ১১টি সংকেত নির্ধারিত আছে। এই সংকেতগুলো সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ভিন্ন বার্তা বহন করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সংকেতগুলোর বিস্তারিত- ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত : জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে। ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত : গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে। ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত : বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে। ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত : বন্দর ঘূর্ণিঝড়কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় হয়নি। ৫ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৬ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৭ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৮ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। ৯ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে। ১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত : আবহাওয়ার বিপদসংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন। ঘূর্ণিঝড়ে নিরাপদ থাকতে কী করবেন? ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে কী করবেন, আর কী করবেন না- ১. বাড়ির কাছাকাছি থাকা মরা গাছের ডাল ছেঁটে ফেলুন। গাছের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। যাতে বাড়ির ওপর এসে না পড়ে। ২. টিনের পাতলা শিট, লোহার কৌটা যেখানে সেখানে পড়ে থাকলে এক জায়গায় জড়ো করুন। না হলে ঝড়ের সময় এর থেকে বিপদ হতে পারে। ৩. কাঠের তক্তা কাছে রাখুন যাতে কাচের জানালায় সাপোর্ট দেওয়া যায়। ৪. ফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য জরুরি বৈদ্যুতিক যন্ত্র আগে থেকেই চার্জ দিয়ে রাখুন। ৫. হালকা শুকনো খাবার রাখুন বড়সড় বিপদের জন্য। ৬. পর্যাপ্ত পানি মজুত রাখুন। ৭. যে ঘরটি সবচেয়ে নিরাপদ সেখানে আশ্রয় নিন। ৮. বাড়ির পোষ্য ও গবাদি পশুদেরও নিরাপদ স্থানে এনে রাখুন। ৯. বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক থাকলে টিভি খবরে নজর রাখুন। না হলে রেডিও চালিয়ে রাখতে পারেন। ১০. ঝড় থামতেই বাইরে বের হবেন না। অপেক্ষা করুন কারণ ঘূর্ণিঝড় চক্রাকারে ঘোরে।
২৫ মে, ২০২৪

সাগরে ডুবছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের গাড়ি!
চট্টগ্রামের আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকতের পানিতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের স্টিকারযুক্ত একটি জিপ গাড়ি ডুবতে দেখা গেছে। শনিবার (২৫ মে) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পারকি সমুদ্র সৈকতের চরে আটকে যায় এ গাড়িটি। দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার না করায় পানিতে ডুবতে থাকে সরকারি দপ্তরের এই গাড়িটি। গাড়ির সামনে জরুরি তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কাজে নিয়োজিত বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে স্টিকার রয়েছে। তবে গাড়িটির কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলছেন না। গাড়িটির চালক পরিচয় দিয়ে জসিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমরা চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে (ঢাকা মেট্রো ঘ ১১-১৩৩৩) ও (ঢাকা ল-৭৮) নম্বরের দুটি গাড়ি নিয়ে ভোর ৭টার দিকে ভ্রমণের উদ্দেশ্য পারকি সৈকতে আসি। দুই গাড়িতে আমরা ১২ জন ছিলাম। সামনের গাড়িটি (ঢাকা-ল ৭৮) সৈকতে নামার পর বালুতে আটকে যায়, পরে জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়। তিনি আরও বলেন, আমরা জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পটিয়া অফিসে কর্মরত। তবে গাড়ির কর্মকর্তারা সাংবাদিক পরিচয়ের পর তাদের চাকরির ক্ষতি হবে জানিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে যান। প্রত্যক্ষদর্শী ও সৈকতের ফটোগ্রাফার মো. মোজাম্মেল জানান, গাড়িটি হঠাৎ সাগরের পানিতে আটকে পড়ে। তাদের অবস্থা দেখে ধারণা করা হচ্ছে তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ মিজানুর রহমান বলেন, সকালে সরকারি স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি পারকি বিচে নামলে বালুতে আটকে পাড়ে, বিচে গাড়ি নামা নিষেধ। কিন্তু ওরা কেনো নামাল বুঝতে পারছি না। 
২৫ মে, ২০২৪

আসছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, প্রস্তুত মুজিবকিল্লা
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর ফুঁসে উঠছে। শনিবার (২৫ মে) সকাল থেকেই পানির তীব্রতা বেড়েছে। এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ উপজেলায় ১৫৫ আশ্রয়কেন্দ্র ও ২০ মুজিবকিল্লা প্রস্তুত করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে জরুরি সভা শেষ করেছে উপজেলা প্রশাসন। শনিবার (২৫ মে) সকাল ৯টায় মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে কোস্টগার্ডের সদস্যরা। এ সময় তারা খাপড়াভাঙ্গা নদীতে অবস্থানরত ট্রলারসমূহে থাকা জেলেদের ঘূর্ণিঝড়ের সময় করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন। কলাপাড়া উপজেলার আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় রেমালে রূপান্তরিত হয়ে উপকূলীয় অঞ্চল কলাপাড়ার ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।  এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে উপজেলা প্রশাসন শনিবার ১১টায় উপজেলা প্রশাসন সম্মেলনকক্ষে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, সিপিপির উপপরিচালক আছাদ উজ জামান, দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরসহ জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সভায় দুর্যোগকালে ১৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র, ২০টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুতের পাশাপাশি শিশু খাদ্য ও শুকনা খাবার মজুদ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ছাড়া কুয়াকাটার বহুতল ভবনগুলো দুর্যোগের সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। দুর্যোগে করণীয় সম্পর্কে প্রচার ও মানুষকে সচেতন করতে ৩১৬০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখার তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির। এদিকে কলাপাড়া উপকূলীয় এলাকার জনগণ, মৎস্যজীবী ও নৌযানসমূহকে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে নিজামপুর কোস্টগার্ড। ঘূর্ণিঝড়ের কোন সংকেতের কী মানে? ঝড়ের সময় আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ১১টি সংকেত নির্ধারিত আছে। এই সংকেতগুলো সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ভিন্ন বার্তা বহন করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সংকেতগুলোর বিস্তারিত- ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত : জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে। ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত : গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে। ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত : বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে। ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত : বন্দর ঘূর্ণিঝড়কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় হয়নি। ৫ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৬ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৭ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৮ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। ৯ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে। ১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত : আবহাওয়ার বিপদসংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন। ঘূর্ণিঝড়ে নিরাপদ থাকতে কী করবেন? ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে কী করবেন, আর কী করবেন না- ১. বাড়ির কাছাকাছি থাকা মরা গাছের ডাল ছেঁটে ফেলুন। গাছের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। যাতে বাড়ির ওপর এসে না পড়ে। ২. টিনের পাতলা শিট, লোহার কৌটা যেখানে সেখানে পড়ে থাকলে এক জায়গায় জড়ো করুন। না হলে ঝড়ের সময় এর থেকে বিপদ হতে পারে। ৩. কাঠের তক্তা কাছে রাখুন যাতে কাচের জানালায় সাপোর্ট দেওয়া যায়। ৪. ফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য জরুরি বৈদ্যুতিক যন্ত্র আগে থেকেই চার্জ দিয়ে রাখুন। ৫. হালকা শুকনো খাবার রাখুন বড়সড় বিপদের জন্য। ৬. পর্যাপ্ত পানি মজুত রাখুন। ৭. যে ঘরটি সবচেয়ে নিরাপদ সেখানে আশ্রয় নিন। ৮. বাড়ির পোষ্য ও গবাদিপশুদেরও নিরাপদ স্থানে এনে রাখুন। ৯. বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক থাকলে টিভি খবরে নজর রাখুন। না হলে রেডিও চালিয়ে রাখতে পারেন। ১০. ঝড় থামতেই বাইরে বের হবেন না। অপেক্ষা করুন কারণ ঘূর্ণিঝড় চক্রাকারে ঘোরে।
২৫ মে, ২০২৪

দেশের সব সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
বাংলাদেশের দিকে ক্রমেই আগাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এ অবস্থায় বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় রেমালের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় দেশের সব সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার (২৫ মে) পরিচালকের পক্ষে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তির ৭নং ক্রমিক অনুযায়ী এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮.২০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৮০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি শনিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কিমি দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিমি দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিমি যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিপ্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত নামিয়ে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে শনিবার (২৫ মে) আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, আজ সন্ধ্যা থেকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে পড়তে শুরু করবে। মধ্যরাত থেকে এর প্রভাব পুরোপুরি পড়তে পারে। সেজন্য সমুদ্রবন্দরসমূহে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নিম্নচাপটি এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আরও ঘনীভূত হয়ে শক্তিশালী হচ্ছে। অন্যদিকে শনিবার (২৫ মে) দুপুরে ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আবহাওয়াবিদ মো. আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল ‘সিভিয়ার সাইক্লোনে’ পরিণত হতে পারে। ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে এটি অতি প্রবল আকার ধারণ করে আঘাত হানতে পারে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে। তিনি বলেন, সাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও অগ্রসর ও ঘনীভূত হচ্ছে। আজ রাত ৯টায় আরও শক্তি সঞ্চয় করে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। পরের দিন রোববার সকাল নাগাদ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে শনিবার রাত থেকেই মহাবিপদ সংকেত দেখানো হতে পারে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান বলেছেন, এটা ১০ নম্বর মহাবিপদে চলে যেতে পারে। আবহাওয়াবিদদের মতে, সামুদ্রিক ঝড়ে সৃষ্ট বাতাসের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হয়, তখন তাকে ‘ঘূর্ণিঝড়’ বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলা হয়। আর গতিবেগ যদি ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার হয়, তখন সেটি হয় ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’। আর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৮ থেকে ২১৯ কিলোমিটার হলে তখন সেটিকে ‘অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়। গতিবেগ ২২০ কিলোমিটার বা এর বেশি হলে তা হয় ‘সুপার সাইক্লোন’। রেমাল যদি অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় সেক্ষেত্রে ৫-১০ ফুট জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। তবে এটি জোয়ার-ভাটার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শনিবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি শুর হবে। রোববার থেকে বৃষ্টি আরও বাড়বে, ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে উপকূলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। ঘূর্ণিঝড়ের কোন সংকেতের কী মানে? ঝড়ের সময় আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ১১টি সংকেত নির্ধারিত আছে। এই সংকেতগুলো সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ভিন্ন বার্তা বহন করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সংকেতগুলোর বিস্তারিত- ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত : জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে। ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত : গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে। ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত : বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে। ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত : বন্দর ঘূর্ণিঝড়কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় হয়নি। ৫ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৬ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৭ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৮ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। ৯ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে। ১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত : আবহাওয়ার বিপদসংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন। ঘূর্ণিঝড়ে নিরাপদ থাকতে কী করবেন?  ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে কী করবেন, আর কী করবেন না- ১. বাড়ির কাছাকাছি থাকা মরা গাছের ডাল ছেঁটে ফেলুন। গাছের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। যাতে বাড়ির ওপর এসে না পড়ে। ২. টিনের পাতলা শিট, লোহার কৌটা যেখানে সেখানে পড়ে থাকলে এক জায়গায় জড়ো করুন। না হলে ঝড়ের সময় এর থেকে বিপদ হতে পারে। ৩. কাঠের তক্তা কাছে রাখুন যাতে কাঁচের জানালায় সাপোর্ট দেওয়া যায়। ৪. ফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য জরুরি বৈদ্যুতিক যন্ত্র আগে থেকেই চার্জ দিয়ে রাখুন। ৫. হালকা শুকনো খাবার রাখুন বড়সড় বিপদের জন্য। ৬. পর্যাপ্ত পানি মজুত রাখুন। ৭. যে ঘরটি সবচেয়ে নিরাপদ সেখানে আশ্রয় নিন। ৮. বাড়ির পোষ্য ও গবাদি পশুদেরও নিরাপদ স্থানে এনে রাখুন। ৯. বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক থাকলে টিভি খবরে নজর রাখুন। না হলে রেডিও চালিয়ে রাখতে পারেন। ১০. ঝড় থামতেই বাইরে বের হবেন না। অপেক্ষা করুন কারণ ঘূর্ণিঝড় চক্রাকারে ঘোরে।
২৫ মে, ২০২৪

কুয়াকাটা সৈকতে আবারও ভেসে এল মৃত ডলফিন
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতে কিছুদিন পর পর ভেসে আসছে মৃত ডলফিন ও কচ্ছপের। ৩ মাস পরে আবারও দেখা মিলল ৭ ফুট লম্বা মৃত একটি ইরাবতী ডলফিনের। যার পুরো শরীরে চামড়া ওঠানো ছিল। মাথা পেঁচানো ছিল ইলিশের জালে। শনিবার (২৫ মে) সকালে কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের পূর্ব পাশে ডলফিনটি দেখতে পায় আব্দুল কাইয়ুম নামের এক ট্যুর অপারেটর। আ. কাইয়ুম বলেন, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের ফলে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। এর মধ্যে ঢেউয়ের সঙ্গে তীরে আসতে দেখি ডলফিনটিকে। অতিরিক্ত ঢেউ হওয়ার কারণে এটির কাছে যাওয়া যায়নি প্রথমে। ওর শরীরের সম্পূর্ণ উপরে চামড়া ওঠানো। পরে আমি ডলফিন রক্ষা কমিটিকে খবর দেই। সমুদ্রের সুনীল অর্থনীতি, উপকূলের পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশের ইকোফিশ-২ বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, এই এই ডলফিনটির মুখে যেহেতু জাল আটকানো, তার মানে ছেঁড়া জালে আটকে ওর মৃত্যু হয়েছে। আর শরীরের যে অবস্থা তাতে মনে হয় আরও দুই-তিন আগে ও মারা গেছে। আমরা এগুলো নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছি যে, কেনো প্রতি বছর এমন পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগ ও ব্লু-গার্ডের সহায়তায় আমাদের সদস্যরা নিরাপদ স্থানে ডলফিনটিকে মাটি চাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এই উপকূলীয় এলাকাজুড়ে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করছি ডলফিন নিয়ে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যাতে এই মৃত্যুর সঠিক কারণগুলো বের করা হয়। বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, আমি ডলফিন রক্ষা কমিটির মাধ্যমে শুনেছি। আমাদের সদস্যদের পাঠিয়ে দ্রুত মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি, যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায়।
২৫ মে, ২০২৪
X