পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি শনিবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার শংকায় চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত করা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র, শুকনো খাবার মজুদ করাসহ স্বেচ্ছাসেবকদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সমুদ্রের কাছাকাছি এলাকা পতেঙ্গা, বন্দর, হালিশহর থেকে শুরু করে নগরের মাতিঝর্ণা ও বাটালি হিল পাহাড়ি এলাকায় একযোগে মাইকিং চলছে।
শনিবার (২৫ মে) সকাল থেকে চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মাইকিং শুরু করে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি প্রাণহানিসহ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত থেকে জানমাল রক্ষায় চট্টগ্রামের উপকূলীয় ছয় উপজেলাসহ জেলার ১৫ উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
কালবেলাকে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত ও জানমাল রক্ষায় চট্টগ্রামের উপকূলীয় ছয় উপজেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে খোলা হয়েছে ৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র, প্রস্তুত করা হয়েছে আরও ৭৮৫টি। ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে করা হচ্ছে মাইকিং। কাজ করছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকরা। দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাথমিক চাহিদা মেটানোর জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২১ টন চাল।
এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রস্তুত রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তারা জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতিমূলক সভা করছেন।
এ ছাড়া সমুদ্রের তীরবর্তী এলাকা বাঁশখালী উপজেলায় ১১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলার উপকলীয় এলাকা ছনুয়া, খানখানাবাদ, গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, কাথরিয়া, সাধনপুর, পুকুরিয়া, পুইছড়ি, শেখেরখীল ও শীলকুপ এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার এবং মুজিব কিল্লাসহ ১১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাগরে যেসব জেলে রয়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে কাট্টলী সার্কেল ভূমি অফিসের উদ্যোগে মেরিন ড্রাইভ, রাসমনি ঘাট, ১নং ঝিল, বিজয়নগর, উত্তর পাহাড়তলীসহ পাহাড়ি এলাকায় জনসাধারণকে সতর্ক করে এ মাইকিং চলমান রয়েছে। এ ছাড়া রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে তাদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পর্যায়ক্রমে প্রস্তুত করা হচ্ছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় জনগণের জানমাল রক্ষায় জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম এর তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
মন্তব্য করুন