সাতক্ষীরা সীমান্তে গলদা রেণুর সঙ্গে অভিনব কায়দায় মাদক পাচার
প্রশাসনের নজর এড়াতে মাদক পাচারকারীরা এখন নতুন কৌশল হিসেবে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে গলদা রেণুর সঙ্গে অভিনব কায়দায় ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিল ও বিদেশি ব্র্যান্ডের মদসহ বিভিন্ন অবৈধ মালামাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচারের অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের বসন্তপুর, উকশা, বাঁশঝাড়িয়া, খড়মি, দুরমুজ খালি এবং শ্যামনগর উপজেলার কৈখাল সীমান্ত দিয়ে পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে অভিনব কৌশলে তৈরি নৌকা, ট্রলার ও সাঁতরে এসব মাদক নিয়ে আসছে চোরাকারবারিরা।
আর এসব অবৈধ মালামাল পারাপারের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে কালিগঞ্জের বসন্তপুর গ্রামের মো. ফারাকত, চাকদা গ্রামের মো. আকবর আলী, হাড়বদা গ্রামের আব্দুর সবুর, মানপুরের মো. আরিফ ওরফে গুলি, মোস্তফাপুরের মো. হামিদ, উকশার মো. বাবু, বসন্তপুরের মো. সিরাজুল, কালিগঞ্জ থানা এলাকার মোটরসাইকেল ড্রাইভার মো. ফরিদ উদ্দিন, মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. রাজাক, বাঁশঝাড়িয়ার ধনঞ্জয়, বসন্তপুরের মো. জালাল, মো. খোকন, আবু তালেব, হাড়বদার মো. আলাউল, মুড়াগাছার উজ্জল কয়াল, খড়মি এলাকার সুব্রত, সাহাদাত হোসেন, কালিগঞ্জ থানা এলাকার রফিকুল ইসলাম ও শ্যামনগরের নুরনগরের আবুল কাশেম। এ ছাড়াও জেলার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি নীরবে গলদা রেণুর সঙ্গে মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন অবৈধ মালামাল পাচার করে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন।
স্থানীয়রা জানান, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার বসন্তপুর, উকশা, বাঁশঝাড়িয়া, খড়মি, দুরমুজ খালি, কৈখালী পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ৩টার দিকে গলদার রেণুর সঙ্গে মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন মালামাল এসে কালিগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর নামক স্থানে জমা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে সাতক্ষীরার দিক থেকে আসা ৮-১০টা প্রাইভেট, ৩-৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও প্লাস্টিকের ড্রাম ভর্তি পিকআপে ভাগ হয়ে বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়।
শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কালিগঞ্জে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিজিবির কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে মূলত গলদা রেণুর পাচারের অনুমতি নিয়েছে একটি চক্র। তবে তারা গলদা রেণুর সঙ্গে অভিনব কায়দায় ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিল, বিদেশি ব্র্যান্ডের মদসহ বিভিন্ন অবৈধ মালামাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার করছে।
এদিকে, গলদা রেণুর সঙ্গে মাদক পাচারের বিষয়টি এখনও সামনে না আসায় এই নিরাপদ কৌশলটি ব্যবহার করছে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে, গলদা রেণুর সঙ্গে আসা সর্বনাশা মাদকের নীল ছোবল থেকে সাতক্ষীরার যুবসমাজকে বাঁচাতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সচেতন মহল।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা-১৭ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সানবির হাসান মজুমদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কালিগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহিন বলেন, সীমান্ত এলাকার দায়িত্ব বিজিবির। সীমান্তে কী হচ্ছে পুলিশের জানা নেই। তবে আমরা মাদকের ব্যাপারে সোজাসাপটা আছি। কালিগঞ্জ থানা এলাকায় পুলিশের নজরদারি জোরদার করেছি। মাদক পাচারের খবর পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
০৯ মার্চ, ২০২৪