কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার সেই চিকিৎসকের মৃত্যু
চট্টগ্রামে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত চিকিৎসক কোরবান আলী মারা গেছেন। বুধবার (১০ এপ্রিল) ভোরে চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তার ছেলে আলী রেজা। তিনি বলেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আইসিইউতে বাবার মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ৫ এপ্রিল নগরীর আকবর শাহ থানার ফিরোজশাহ কলোনি ঈদগাঁও মাঠ এলাকায় চিকিৎসক কোরবান আলীর ছেলে আলী রেজার ওপর হামলা চালায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। ছেলেকে মারধর করতে দেখে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও হামলার শিকার হন কোরবান আলী। তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন আলী রেজা। তখন থেকেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়া কোরবান আলীকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে নগরীর ওআর নিজাম রোডে বেসরকারি মেডিকেল সেন্টার ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে যাওয়া আলী রেজার বন্ধু রাশেদুল আলম বলেন, ভোর ৬টা ৭ মিনিটে চিকিৎসক ওনাকে মৃত ঘোষণা করেছেন। পুলিশ হাসপাতালে এসেছে। এখান থেকে লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হবে। জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে কয়েকজন স্কুলছাত্রকে মারধর করতে দেখে ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশ ডেকে আনার ঘটনায় কোরবান আলীর ছেলে আলী রেজার সঙ্গে বিরোধ হয় এলাকার উঠতি বয়সী কিছু তরুণের। মূলত সেই বিরোধের জের ধরেই গত ৫ এপ্রিল আলী রেজাকে মারধর করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।  এ ঘটনায় আলী রেজা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আলী রেজার অভিযোগ, হামলাকারীরা সবাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।
১০ এপ্রিল, ২০২৪

টিসিবির পণ্যের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার সাংবাদিক
ভুয়া নাম ব্যবহার করে টিসিবির কার্ড তৈরি করে টিসিবির পণ্য আত্মসাৎ করছে এমন অভিযোগ পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন তিন সাংবাদিক। এসময় ক্যমেরা ও মোবাইল ভাংচুর করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তাদের ওপর ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ ও তার ভাই তরিকুল ইসলাম তরির নেতৃত্বে হামলা করা হয়। হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন- চুয়াডাঙার মাই টিভি ও সময়ের সমীকরণের প্রতিনিধি মো. মিঠুন (৩১), দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিনিধি মো. আজিজুর রহমান ডাবলু (৩৫) ও দৈনিক গ্রামের কাগজের প্রতিনিধি মো. তুহিনুজ্জামান তুহিন (২২)। এ ঘটনায় সাংবাদিক মিঠুন মাহমুদ জীবননগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। মাই টিভি ও সময়ের সমীকরণ প্রতিনিধি মো. মিঠুন মাহমুদ বলেন, একটি গোপন সূত্রে জানতে পারি, মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও মৃত ফকির চাঁদের ছেলে আব্দুর রশিদ দীর্ঘদিন যাবৎ কৌশল অবলম্বন করে অন্য মানুষের নাম ব্যবহার করে টিসিবির কার্ড তৈরি করে টিসিবির পণ্য আত্মসাৎ করছেন। সম্প্রতি তিনি বেশ কয়েকজনের টিসিবির পণ্য তুলে বাড়ি নিয়ে গেছেন। এমন সাংসদ পেয়ে আমি, সাংবাদিক এআর ডাবলু ও তুহিন তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে গিয়েছিলাম। জিজ্ঞাসার একপর্যায়ে আব্দুর রশিদের স্ত্রী বলেন, তার স্বামী টিসিবির পণ্য রান্না ঘরে এনে রেখেছেন। আমরা সেখানে টিসিবির দুই বস্তা চাল আর কিছু টিসিবির তেল দেখতে পাই। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ইউপি সদস্য আব্দুর ক্ষিপ্ত হয়ে গালাগালি করতে থাকেন। একপর্যায়ে আব্দুর রশিদ ও তার ভাই তরিকুল ইসলাম তরির নেতৃত্বে আব্দুর রশিদের ছেলে আমির হামজা অঙ্কন, মৃত মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে মো. হাসিবুর রহমান সুমনসহ আরও ৪/৫ জন আমাদের ওপর হামলা করে। এ সময় আমাদের কাছ থেকে ক্যামেরা ভাঙচুর করে। তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, টিসিবির ডিলারদের কাছ থেকে অনেকজন তেল, ডাল নিলেও চাল নেননি। আমি সেখান থেকে দুই বস্তা চাল কিনে এনেছিলাম এলাকার গরিব মানুষের দেওয়ার জন্য। আমি বাইরে কাজে থাকায় চাল বিতরণ করতে দেরি হয়েছে। আমার বাড়ি কোনো তেল ছিল না। মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, বিষয়টি তিনি এখনো শোনেনি। তিনি খোঁজ নিচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাবীদ হাসান ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ বলেন, আমি বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এদিকে, সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এই হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (৩০ মার্চ) বেলা ১০টায় জরুরি সভার ডাক দিয়েছে জীবননগর সাংবাদিক সমিতি।
২৯ মার্চ, ২০২৪

ভেজাল মুড়ি উৎপাদনের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার সাংবাদিকরা
ফরিদপুরের মধুখালীতে ইউরিয়া সার মিশ্রিত মুড়ি উৎপাদন এবং বাজারজাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার খবর পান সাংবাদিকরা। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে যান। তারা নওপাড়া বাজারের ওই মুড়ির মিলে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মালিকপক্ষ। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেন তারা। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত মো. ঈশারত মোল্যা ‘মায়ের দোয়া মুড়ি ও চিড়া অটো মিল’ নামে কারখানাটি পরিচালনা করছেন। ভুক্তভোগীরা হলেন- দৈনিক কালবেলার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি তন্ময় উদ্দৌলা, নাগরিক বার্তার স্টাফ রিপোর্টার এনামুল খন্দকার ও মুক্ত খবরের স্টাফ রিপোর্টার আরিফুজ্জামান চাকলাদার। ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা জানান, বছরের যে কোনো সময়ের তুলনায় রমজান মাসে বাজারে মুড়ির চাহিদা বেশি থাকে। সেই চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী নানা ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করে মুড়ি উৎপাদন করেন। এতে মুড়ি দেখতে সাদা-সুন্দর হয় এবং দ্রুত উৎপাদন করা যায়।  ওই কারখানাটিতেও ইউরিয়া সার মিশ্রিত মুড়ি উৎপাদনের অভিযোগ ছিল। সাংবাদিকরা সেখানে গিয়ে সেই দৃশ্য ধারণকালে প্রতিষ্ঠানের মালিক তাদের ওপর চড়াও হন। মিলে কর্মরত কর্মচারীদের নিয়ে সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন, ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করেন অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে মিল মালিক সাংবাদিকদের মিল থেকে বের করে পাশের অফিসে নিয়ে যান। সেখানে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।  সংবাদকর্মীরা বিষয়টি মোবাইল ফোনে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং থানা পুলিশকে জানান। এতে ভীত হয়ে সাংবাদিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ভুক্তভোগীরা মধুখালী থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।  সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে দৈনিক ভোরের কাগজের মধুখালী প্রতিবেদক অঞ্জন সাহা রানা বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিন সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ভেজাল মুড়ি উৎপাদকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবিও জানাচ্ছি।’ এ বিষয়ে মো. ঈশারত মোল্যার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মধুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন। মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, ‘বিকেলে নাগরিক বার্তার একজন সাংবাদিক আমাকে ফোন করে জানান, তারা সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে খারাপ আচরণের শিকার হয়েছেন। তার কিছু সময় পরে কালবেলার নিজস্ব অফিস থেকে কল আসে। জানানো হয়, তাদের জেলা প্রতিনিধি অবরুদ্ধ। তখনই আমি ওসিকে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠাতে বলি। এ বিষয়ে ভিডিও ফুটেজ পেলে আমি অবশ্যই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
১৩ মার্চ, ২০২৪

দুবাই প্রবাসীর প্রতারণা ও হামলার শিকার খুবি শিক্ষার্থী
দুবাই প্রবাসী এক ব্যবসায়ীর প্রতারণা ও হামলার শিকার হয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা বিভাগের ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী আল নোমান। তার ‘এ্যাংকর সম্রাট’ এবং ‘এ্যাকশান সুজের’ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার শিকার হন নোমান। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রয়ারি) বিকেলে ডাকবাংলা মোড় (খুলনা) সংলগ্ন দোকানে দুর্বৃত্তরা দলবল নিয়ে হামলা করে। বিষয়টি জানাজানি হয় শুক্রবার (১ মার্চ)। ভুক্তভোগী আল নোমানের দাবি, বিগত সাত বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছেন তিনি। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলনা নগরীর ডাকবাংলা মোড়ে এ্যাংকর সম্রাট এবং এ্যাকশান সুজ। পরে দুবাই প্রবাসী আল আমিনের সঙ্গে অংশীদারি ব্যবসায় চুক্তিবদ্ধ হন নোমান। চুক্তি অনুসারে তিনি ৫০ লাখ টাকা ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেন। মাসিক লভ্যাংশ প্রথম ছয়মাস ঠিকভাবে দিলেও পরবর্তী মাস থেকে টাকা দিতে গড়িমসি করতে থাকেন আল আমিন। পরে সন্দেহ হলে, নতুন চুক্তি করে ২০ লাখ টাকা ফিরিয়ে নেন নোমান। বাকি ৩০ লাখ টাকা এবং প্রতিমাসে লভ্যাংশ দেওয়ার চুক্তি হয় গতবছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত। কিন্তু চুক্তি শেষ হওয়ার পরও পাওনার ৩০ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে নানা টালবাহানা করতে থাকেন আল-আমিন। পরে গত মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রয়ারি) টাকা দেওয়ার তারিখ থাকলেও সে টাকা না দিয়ে উল্টো লোকজন নিয়ে এসে ডাকবাংলায় দোকানে ভাঙচুর ও হামলা চালায়। ভুক্তভোগীর পরিবার জানান, দুবাই প্রবাসী আল-আমিন গত তিনমাস আগে দেশে আসলে ফোনে এবং সরাসরি বহুবার তার সঙ্গে কথা হয়েছে। সে প্রতিবার নানা তারিখে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে থাকে। আমাদের ব্যবসায়িক ভাবনা ও তার সঙ্গে সম্পর্কের কারণে আমরা কখনো তাকে অবিশ্বাস করিনি। কিন্তু গত মঙ্গলবার টাকা দেওয়ার তারিখ থাকলেও সে টাকা না দিয়ে উল্টো লোকজন নিয়ে আমাদের ডাকবাংলা দোকানে ভাঙচুর ও হামলা চালায়। বাকি ৩০ লাখ টাকা ফেরত পাওয়ার আশা করলে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকিও দিয়ে যায়। আল- নোমান বলেন, আমি খুলনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। হামলায় আমিসহ আমাদের দোকানের কয়েকজন কর্মচারী আহত হয়েছে। দোকান ভাঙচুরে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাণনাশের হুমকিতে মানসিকভাবে খুব বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি। একইসঙ্গে ব্যবসার মূলধনের ৩০ লাখ টাকা পাব কিনা জানি না। প্রতারক আল- আমিনের মূল উদ্দেশ্য ছিল আমার কাছে যে মূল নথিপত্র সেগুলো নিয়ে নেওয়া। যখন তারা তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারেনি তখন আমার দোকান ভাঙচুর এবং আমাদের ওপর হামলা করে চলে যায়। আমি আমার ৩০ লাখ টাকা ফেরত চাই। এ প্রতারক যেন কারও সঙ্গে এমন প্রতারণা না করতে পারে তার জন্য সঠিক তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আল-আমিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।  খুলনা থানা সহকারী অফিসার নান্নু মন্ডল জানান, আমরা গত মঙ্গলবার একটি লিখিত অভিযোগপত্র পেয়েছি। যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছি। খুব দ্রুত এ অভিযোগপত্রের সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০২ মার্চ, ২০২৪

ছিনতাইকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার ঢাবি শিক্ষার্থীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণিত বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের কয়েক শিক্ষার্থী নিজেদের মোবাইল ছিনতাই করে নেওয়া ব্যক্তিকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ছয় শিক্ষার্থী আহত হন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডে ভৈরব বাস কাউন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।  হামলায় আহতরা হলেন- সৈকত, মইনুল, সাইমন, ইমন, রিফাত ও জাহিদ। জানা যায়, গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সফর ছিল নারায়ণগঞ্জের সুবর্ণ রিসোর্টে। সেখান থেকে ফেরার পথে কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডে আসলে মিম জামান নামে এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন বাস থেকে ছিনতাই করে নিয়ে যায় একজন। বাস থেকে নেমে কয়েক শিক্ষার্থী ওই ছিনতাইকারীকে ধরতে গেলে তারা সংগঠিত হয়ে লাঠি ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।  ঘটনার বর্ণনায় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জাহিদ হাসান ফেসবুকে লেখেন, নারায়ণগঞ্জের সুবর্ণগ্রাম রিসোর্টে গণিত বিভাগের পিকনিক থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছানোর পরপরই আমাদের বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মীম জামান এর হাত থেকে কেউ একজন বাইরে থেকে ফোন নিয়ে যায়। যথারীতি আমরা যারা ছিলাম তারা বাস থামিয়ে চোরকে ধরার চেষ্টা করি। এরপর রাস্তার আশপাশে থাকা লোকজন বলছে মোবাইল ছিনতাই করে একজন রাস্তার অপর পাশে গিয়েছে। যথারীতি আমাদের কয়েকজন বন্ধু ওকে ধরার উদ্দেশ্যে ওইদিকে যায়। এরপর ওই পাশে যাওয়ার পর ভৈরব বাস কাউন্টারে কেউ একজন ফোন নিয়ে ঢুকেছে বলে আশপাশের লোকজন বলে। আমার এক বন্ধু মাইনুল ওখানে গিয়ে এসব ব্যাপারে কথার একপর্যায়ে একা থাকায় বাস কাউন্টারে বসে থাকা দুইজন লোক ওকে মারার উদ্দেশ্যে নানা কথা বলতে থাকে এবং ভেতরের দিকে নিয়ে যায়। এর মাঝে আমাদের কয়েকজনকে যেতে দেখে ওখানে থাকা একজন দৌড়ে সরে যায়। আমরা ওখানে গিয়ে যে একজনকে পাই, তাকে জেরা করি যে, একটু আগে যে ছেলেটা ছিল তার ব্যাপারে, সেই হয়তো চোর। ওইসময় আমরা বলি যে, যেভাবে হোক তাকে এখানে আনতে হবে। আশপাশের সবাই বলতেছিল ওকে ভালো করে ধরেন তাইলে পাবেন। এরপর আমরা অনেকবার ওকে বলি ফোন দেওয়ার জন্য বা যেভাবেই হোক ওকে আনার জন্য।  জাহিদ জানান, ইতিমধ্যেই দুজন পুলিশ আরও দুজনকে ধরে নিয়ে যায় আমাদের সামনে। এতে করে আমরা ভাবি যে, চোরকে বোধহয় ধরে ফেলেছে। তখন জসিম স্যার, সাফি ও জয় পুলিশের সাথে চলে যায়। আমিও যাচ্ছিলাম, কিন্তু পুলিশ আমাকে বলেছিল যে, এটা অন্য কেস। এ জন্য আমি আবার ওই কাউন্টারে চলে আসি। ওইখানে আমরা চারজন ছিলাম। এরপর দেখলাম ওই আগের যে ছেলেটা ছিল ও সাথে কয়েকজন লোক নিয়ে চলে আসছে। ওকে দেখার পর আমরা যখন ওকে জেরা করতে যাই তখনই বিপত্তিটা ঘটে। পরে ওখানে আসা অনেকের কাছেই লাঠিসহ নানা দেশীয় অস্ত্র ছিল যদি আমরা কিছুই দেখতে পারছিলাম না কেননা ভেতরে আমরা পাঁচজন ছিলাম। আর ওরা ১৫ জনের মতো, ভেতরে তিনজন আর সবাই বাইরে। হামলার ঘটনা বর্ণনায় তিনি জানান, আমি ছিলাম সবচেয়ে ভেতরের পাশে। মাঝে সৈকত, মইনুল, সাইমন, সাম্য, ইমন। ওদের লোকজন আমাদের ওপর আঘাত শুরু করে। সৈকত, সাইমন কাউন্টারের রুমের মাঝে পড়ে যায়। লাথি, ঘুষি, লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করতে থাকে। আমাকে মাথায় মারতে মারতে পেছন দিক দিয়ে ফেলে দেয়। তারপর আমি কোন দিক থেকে কোথায় চলে গেছি বুঝতে পারিনি। এরপর আমি যখন আবার ঘুরে রোডের দিকে আসতে ছিলাম তখন দেখি সৈকত। ওকে দেখে চোখের পানি কোনোভাবেই আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। এরপর দেখি মইনুল ওকে দেখে কিছু বলার মতো ভাষা ছিল না। এরপর সাইমন ওর পরিস্থিতি দেখে যে কেউ শিউরে উঠত। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ওকে দেখে মনে হয়েছে। এরপর সৈকতের চেহারা দেখে ওকে চেনাই যাচ্ছিল না, এখনো চেনা যাচ্ছে না। মুখের প্রতিটা অংশে স্পট। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে জানতে পারি নাকের হাড় ভেঙে গেছে। আর এদিকে ইমন সাইমন আর সৈকতকে সবার মাঝে মার খেতে দেখে ওদের বাঁচানোর জন্য এগিয়ে গেলে পেছন থেকে কেউ একজন ওর মাথায় লাঠি দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে ফেলে। আর মইনুলকে তো রাস্তার মাঝে ফেলে লাঠি, লাথি-ঘুষি যে যেভাবে পেরেছে মেরেছে। সাম্য কোনোরকম বের হয়েছে। রিফাতও কোনো রকমে বেঁচে ফিরেছে।  জাহিদ কালবেলাকে বলেন, আহতরা সকলেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও অন্যান্য জায়গা থেকে চিকিৎসা নিয়েছে। এখন সবাই যার যার বাসায় আছে। তবে সৈকতের নাকে অপারেশন প্রয়োজন বলে ডাক্তার জানিয়েছেন।  তিনি আরও বলেন, সৈকতের নাকের হাড় ভেঙে গেছে, মুখে প্রচুর পরিমাণে আঘাতের চিহ্ন আছে, পুরো শরীরেও আঘাত করেছে তারা। সাইমনের ঠোঁট ফেটে গেছে, নাক দিয়ে রক্ত বের হয়েছে, সারা শরীরে মারার চিহ্ন আছে এবং ওর প্রচুর পরিমাণে বমি করেছে। ওখানকার এক হাসপাতালে নিয়ে নিয়ে গেলে হাসপাতালেও কয়েকবার বমি করে এবং তাকে ওখানকার ইমারজেন্সি বিভাগ থেকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মাইনুলকে রাস্তার মাঝে ফেলে দশ-বারো জন লাঠি দিয়ে ও কিল-ঘুষি দিয়ে যে যেভাবে পারে মেরেছে। ওর শরীরে ওরকম স্পট পড়েনি, কিন্তু সারা শরীরে আঘাত লেগেছে। এ সময়ে সাইমন আর সৈকতকে মারার সময় ইমন নামে এক বন্ধু ওদেরকে ধরতে গেলে ওর মাথায় আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে ফেলে। এদিকে আমি টিকিট কাউন্টারের ভেতরে ছিলাম। তারা আমাকে মারতে মারতে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে এবং তখন আমি দৌড়ে ওখান থেকে সরে যাই।  এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি প্রক্টর মহোদয়কে কল দিয়েছিলাম। উনাকে তখন কলে পাইনি, কিন্তু সহকারী প্রক্টর লিটন কুমার সাহাকে পেয়েছিলাম। তার সঙ্গে যোগাযোগ হওয়ার পর তিনি সেখানে প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিমকে পাঠান। এরপর প্রক্টর মহোদয় আমাকে কল দিয়ে ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নেন। এ বিষয়টা নারায়ণগঞ্জের পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।  ঘটনা সম্পর্কে বক্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমানকে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

শহীদ মিনারে হামলার শিকার সাংবাদিক
রাজবাড়ীর শহীদ মিনারে সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে রাজবাড়ী শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানের শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী আব্দুল হালিম শেখ দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সারা দেশের মতো রাজবাড়ীতেও শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছিলেন সর্ব স্তরের মানুষ। বেলা সাড়ে ১১টার পর কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক শহীদ মিনারের বেদীতে থাকা শত শত ফুলের ডালা নিয়ে যেতে থাকেন। এ সময় দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি আব্দুল হালিম ছবি তুলতে গেলে তার ওপর আক্রমণ হয়। অভিযুক্তরা তার চোখেও আঘাত করে। হট্টগোল শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হালিমকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক আব্দুল হালিম শেখ মামলা করেছেন। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘আমি শহীদ মিনারে এসেছিলাম ছবি ও ভিডিও ফুটেজ নেওয়ার জন্য। এসে দেখি শহীদ মিনারে যে ফুলের ডালাগুলো ছিল সেগুলো গোছানো হচ্ছে। অনেক যুবক একযোগে সেগুলো গোছাচ্ছে। ফুলের ডালা তারা নিয়ে যাচ্ছিল। সম্ভবত এরা ফুলের দোকানদার বা ফুল বিক্রি করে থাকে। এসব ভিডিও আমি ধারণ করছিলাম। এক পর্যায়ে আমি তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। এতে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর হামলা করে। পরবর্তীতে এখানে পুলিশ আসে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি। যারা আমাকে আঘাত করেছে তাদের কাউকে চিনি না।’ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাজবাড়ী সদর থানার ওসি ইফতেখারুল আলম প্রধান কালবেলাকে জানান, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশের তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

আগুন নেভাতে গিয়ে হামলার শিকার ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা
আগুন নেভাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টায় বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ঘটনাটি ঘটেছে। জানা যায়, মোল্লাহাটের চুনখোলা বাজারে গতকাল সন্ধ্যায় দুটি গুদামে আগুন ধরে যায়। এলাকার লোকজন চেষ্টা করে আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয়ে মোল্লাহাট ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। ফায়ার সার্ভিসের আসতে দেরি হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে দুজন কর্মীকে লাথি, কিল-ঘুষি দেয় এলাকাবাসী।  এ সময় কিছু উচ্ছৃঙ্খল জনতা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির ওপর হামলা করে। এতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। ফায়ার সার্ভিস জানায়, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত পৌঁছেছিলাম। সরু রাস্তার কারণে আমাদের আসতে পাঁচ মিনিট দেরি হয়। এতে এখানকার উচ্ছৃঙ্খল জনতা আমাদের কর্মী ও গাড়ির ওপর হামলা চালিয়েছে। 
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

শাহবাগে ফুলের দোকানে হামলার শিকার তিন সংবাদকর্মী
রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠা দোকানগুলোতে সংবাদ সংগ্রহের কাজে গিয়ে কর্মচারী কর্তৃক অতর্কিত হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তিনজন সংবাদকর্মী। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে শাহবাগের পাইকারি ফুলের দোকান মালিক সমিতির নেতা শেখ মো. মেরিনের মালিকানাধীন ফুলতলা ফ্লাওয়ার সপে এই ঘটনাটি ঘটে।  মারধরের শিকার তিন সাংবাদিক হলেন- নিউজ বাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম, রেডিও টুডের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. ইমদাদুল আজাদ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাসেল সরকার। এর মধ্যে, ইমদাদুল আজাদের ডান চোখের দুই পাশে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কেটে গেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। ঘটনার ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করেছেন। এতে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৬-৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।   অভিযুক্তরা হলেন- পায়েল (৩৫), সাল্লু (২৭), আব্দুর রাজ্জাক (৩৫), বুলু (৩২), দিদার (৩১), বাবু (৩০), জাহাঙ্গীর (৩২)। তারা সবাই শাহবাগ ফুল মার্কেটের কর্মচারী। ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেলে নিউজ বাংলার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক মনিরুল ইসলাম এবং বিডিনিউজ২৪ বাংলার রাসেল সরকার আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য পয়লা ফাল্গুন উপলক্ষে ফুলের ক্রয়-বিক্রয়ের অবস্থার সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। এ সময় মার্কেটে ফুলের দাম বাড়ার কারণ সংক্রান্ত তথ্য জানতে ফুলতলা ফ্লাওয়ার সপে কর্মরত পায়েল নামে একজনের সাথে কথা বলতে চাইলে খারাপ আচরণ শুরু করেন। একপর্যায়ে, সে 'ভুয়া সাংবাদিক' বলে আখ্যায়িত করে। তখন এর প্রতিবাদ করলে সে উত্তেজিত হয়ে মনিরুল ইসলামকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে। এ সময় আশপাশের কর্মচারীরাও তাদের সাথে যুক্ত হয়। এর পাশেই পুলিশ অবস্থান করার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান কিছু প্রত্যক্ষদর্শী।  ঘটনার খবর শুনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়ে হামলাকারীদের হামলার কারণ জিজ্ঞেস করতে গেলে ওখানে অবস্থানরত কিছু পুলিশ তাদের সঙ্গে অসহযোগিতা এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এক পর্যায়ে, ওখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এবং সে দোকানিদের হামলা ও ফুটপাত দখল করাকে বৈধতা দিতে থাকে। এরপর শাহবাগ থানার ওসি এসে হামলায় অভিযুক্তকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। সবশেষে, ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম একটি অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানা যায়। মামলার এজাহারে মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি পেশাগত কাজে আমার কলিগ বিডি নিউজ বাংলা-২৪ এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. রাসেল সরকারকে সাথে নিয়ে শাহবাগ মোড়ের ফুল মার্কেট এর ফুলতলা ফ্লাওয়ার সপে ফুলের দাম বাড়ার কারণ সংক্রান্ত সংবাদ সংগ্রহে যাই। ওই দোকানে কর্মরত পায়েল নামে একজনের সাথে কথা বলতে চাইলে সে আমাদের সাথে খারাপ আচরণ শুরু করে দেন। এরপর আমাদেরকে 'ভুয়া সাংবাদিক' বলে আখ্যায়িত করে। আমরা মৌখিকভাবে এর প্রতিবাদ করলে সে উত্তেজিত হয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে। আমার কলিগ (রাসেল) তার প্রতিবাদ করতে গেলে পায়েল, সাল্লু, আ. রাজ্জাক, বুলু, দিদার, বাবু এবং জাহাঙ্গীরসহ আশপাশের দোকানের কর্মচারীরা এসে আমাদের দু-জনকে মারধর করে।  তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমার অন্য কলিগ মো. ইমদাদুল আজাদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক পরিচয়ে ঘটনার বিবরণ জানতে চাইলে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও মারধর করে এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় বিবাদীরা পেছন দিক থেকে আমাদের ওপর আবার অতর্কিত হামলা করে। এ সময় ইমদাদকে রাস্তায় ফেলে এলোপাতাড়ি মারধর করে, তার ডান চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী আমাদের চিনতে পেরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে এবং আহত ইমদাদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। ইমদাদুল আজাদের চোখে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মনিরুল ইসলাম। ঘটনা প্রসঙ্গে মারধরের শিকার হওয়া ইমদাদুল আজাদ বলেন, আমি যখন শুনলাম যে, নিউজ বাংলার ঢাবি প্রতিনিধি আমাদের মনিরুল ইসলাম ভাইকে মারধর করা হয়েছে, আমি তৎক্ষণাৎ সেখানে ছুটে যাই। কিছুক্ষণ পরে সেখানে সারা বাংলার প্রতিনিধি রাহাতুল ইসলাম রাফি ভাই উপস্থিত হন এবং আগে থেকেই বিডি নিউজ বাংলা-২৪ এর রাসেল ভাই সেখানে ছিলেন। তখন কিছুক্ষণ আমরা ঘটনা প্রসঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছিলাম এবং কী হয়েছে এটা মনির ভাইয়ের কাছ থেকে শুনছিলাম। এমন মুহূর্তে দেখলাম যে, মনির ভাইকে যে ছেলেটা মারধর করেছে, সেই ছেলেটা অন্যদিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ওই সময় আমি, রাফি ভাই এবং রাসেল ভাই তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে এগিয়ে যাই। এরপর সে পালাচ্ছে না এরকম বুঝতে পেরে ফিরে আসার সময় ওই ছেলে, খাবারের দোকানের কয়েকজন কর্মচারী এবং ওই ফুলের দোকানের আরও কয়েকজন পেছন থেকে এসে আমাদের ওপর হামলা করে আমাদের মারধর করে। আমাকে তারা এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি এবং লাথি মারা শুরু করে। তাদের একটি ঘুষি আমার চশমায় লেগে তা ভেঙে যায়। একপর্যায়ে, আমার চোখের দুই পাশে কেটে গেলে আমার সহকর্মীরা আমাকে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করে। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে রাহাতুল ইসলাম রাফি বলেন, মনিরুল ইসলামকে মারধর করার পর মূল অভিযুক্ত পায়েল পার্শ্ববর্তী খাবারের দোকানের ভেতর দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমি, রাসেল সরকার, ইমদাদুল আজাদ এবং মনিরুল ইসলাম তার গতিবিধি দেখে ফেরত আসার সময় ওই দোকানের ভেতরে ওই পায়েলের নেতৃত্বেই ৭-৮ জন মিলে আমাদের মারধর করে। এদের মধ্যে ফুলতলা ফ্লাওয়ার সপের এবং ওই খাবারের দোকানের কর্মচারীদের আঘাতে ইমদাদুল আজাদের চোখের দুই পাশে ফেটে যায়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ ফুলতলা ফ্লাওয়ার সপের মালিক মো. মেরিন শেখ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। ঢাকা বাইরে আছি। শুনেছি দোকানে ঝামেলা হয়েছে। আমাদের দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শাহবাগ থানার ওসি মো. মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের শাহবাগ মোড়ের ফুল মার্কেটে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই মামলা হবে, প্রক্রিয়াধীন।
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ভালুকায় পার্কের কর্মীদের হামলার শিকার দর্শনার্থী পরিবার
ময়মনসিংহের ভালুকায় গ্রিন অরণ্য পার্ক নামের একটি বিনোদন কেন্দ্রে হামলার শিকার হয়েছে এক দর্শনার্থী পরিবার। পার্কের কর্মীরা ওই পরিবারের ছোট শিশুসহ নারী সদস্যদের লাঞ্ছিত, শ্লীলতাহানি ও বেধড়ক পেটায়। এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানা পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে এই ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় মামলা করেন। আটককৃতরা হলো মো. হাসান চৌধুরী, মো. আতিয়ার রহমান ও মো. আবু নাঈম। এর আগেও ভালুকার বন বিভাগের জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা ওই পার্কে দর্শনার্থীদের ওপর নির্যাতন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার গাজীপুরের শ্রীপুরের টেলি কমিউনিকেশন ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়া তার স্ত্রী ও চার বছর বয়সের শিশুকন্যা, দুই সহোদর বোন ও ভাগ্নিকে নিয়ে ভালুকা উপজেলার গ্রিন অরণ্য পার্কে ঘুরতে যান। সেখানে গিয়ে তারা টিকিট কেটে পার্কের সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকেন। পরে সুইং রাইডে ওঠার জন্য পাঁচটি টিকিট সংগ্রহ করে উঠতে না পারায় তারা প্রতিবাদ করেন। এরপর সেখানে রাইডের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি দর্শনার্থী শাহজাহান মিয়াকে থাপ্পড় মারে। পরে পরিবার নিয়ে সেখান থেকে বের হওয়ার পথে পার্ক কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাদের গাড়ির ওপর হামলা হয়। গাড়ি থেকে নামিয়ে তাদের বেধড়ক মারধর ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়। তারা চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এসে তাদের রক্ষা করেন। এদিকে মারধর করার পর ছিনতাইয়ের মামলা দিয়ে হয়রানির চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ওই ব্যবসায়ী পরিবার। গত মঙ্গলবার শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী শাহজাহান জানান, চার বছরের শিশুকন্যা আফরা অপরিচিত কাউকে দেখলেই ভয়ে আঁতকে ওঠে। স্ত্রী ফাতেমা আক্তার নিশি, বোন হাফিজা, জহুরা, তাছনিম, ভাগ্নি সুমাইয়া ও আজমিনা এখনো নীরবে কাঁদে আর চোখের পানি মোছে। তিনি বলেন, পার্কের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ করলে সুইং রাইড অপারেটর আমার গালে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। তখন আমার স্ত্রী, বোন, ভাগ্নিরা প্রতিবাদ করলে মুহূর্তেই গ্রিন অরণ্য পার্কের কর্তব্যরত কর্মী ও ভাড়াটে লোকরা আমাদের ওপর ভয়ংকরভাবে চড়াও হয়। সেদিন ওই পার্কের ভাড়াটে লোকজন, কর্মকর্তা ও কর্মীদের বর্বরোচিত হামলা, মারধর, লাঞ্ছনা আর এত অপমান অপদস্থ আমি জীবনেও হইনি। তিনি আরও জানান, যখন আমার ওপর হামলা ও মারধর হচ্ছিল, তখন তাদের হাত থেকে বাঁচতে সবাই দৌড়ে গাড়িতে উঠে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা ধর ধর বলে আমার গাড়িতে হামলা চালায়। অটোরিকশা ও তাদের ভাড়াটে লোক দিয়ে ব্যারিকেড দেয়। আমাকে গাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করতে গাড়িতে উপর্যুপরি লাঠির আঘাত ও লাথি মারতে থাকে। তারা আমার কাছ থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা ও আমার মেয়র গলা থেকে ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। গাড়ি ভাঙচুর করে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় আমরা গ্রিন অরণ্য পার্ক নামক নরক থেকে বের হতে সক্ষম হই। এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ কামাল আকন্দ গণমাধ্যমে জানান, আলোচিত এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম হামলার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান। ঘটনায় জড়িত বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

হুতিদের হামলার শিকার ব্রিটিশ জাহাজে ছিলেন বাংলাদেশি নাবিক
এডেন উপসাগরে একটি ব্রিটিশ তেলের ট্যাঙ্কারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হুতিরা। জাহাজটিতে ২২ ভারতীয়র সঙ্গে একজন বাংলাদেশি নাবিকও ছিলেন বলে জানিয়েছেন ভারতের নৌবাহিনীর মুখপাত্র। হুতিদের হামলায় জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। ইরাক-সমর্থিত হুতিরা বলেছে, তারা ইয়েমেনে আমেরিকান-ব্রিটিশ আগ্রাসনের জবাব দিতে শুক্রবার মার্লিন লুয়ান্ডা নামের এই জাহাজটিকে হামলার নিশানা করেছে। লোহিত সাগর অঞ্চলে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হুতি হামলা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য একযোগে ইয়েমেনে হুতিদের বিভিন্ন আস্তানায় হামলা চালানো শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফ্রান্স ও ভারতের নৌবাহিনীর জাহাজও সাগরপথে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর সুরক্ষায় কাজ করছে। ভারতের নৌবাহিনীর বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, মার্লিন লুয়ান্ডার কাছ থেকে সাহায্যের আবেদন পাওয়ার পর দ্রুত সাড়া দিয়েছে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিশাখাপত্তম। এক বিবৃতিতে ভারতীয় নৌবাহিনী বলেছে, সমুদ্রে জাহাজ চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে তাদের সেনারা সচেষ্ট রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জাহাজ এবং অন্যান্য জাহাজও মার্লিন লুয়ান্ডাকে সহায়তা করছে। লন্ডনের বহুজাতিক ট্রাফিগুরা বাণিজ্যিক ফার্মের মালিকানাধীন মার্লিন লুয়ান্ডা জাহাজ পরিচালনা করে যুক্তরাজ্যের ওশেনিক্স সার্ভিস কোম্পানি। গত শুক্রবার ট্রাফিগুরা জানিয়েছিল, মার্লিন লুয়ান্ডা লোহিত সাগর পাড়ি দেওয়ার সময় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়েছে। এডেন উপসাগরের ৬০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণপূর্বে থাকার সময় জাহাজটিতে হামলা হয় বলে জানায় ইউকে মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন্স (ইউকেএমটিও)। গতকাল শনিবার ট্রাফিগুরা হালনাগাদ তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, জাহাজের সব ক্রু নিরাপদে আছেন। আগুনও নিভিয়ে ফেলা হয়েছে। জাহাজটি এখন গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে।
২৮ জানুয়ারি, ২০২৪
X