ফরিদপুরের মধুখালীতে ইউরিয়া সার মিশ্রিত মুড়ি উৎপাদন এবং বাজারজাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার খবর পান সাংবাদিকরা। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে যান। তারা নওপাড়া বাজারের ওই মুড়ির মিলে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মালিকপক্ষ। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেন তারা। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত মো. ঈশারত মোল্যা ‘মায়ের দোয়া মুড়ি ও চিড়া অটো মিল’ নামে কারখানাটি পরিচালনা করছেন। ভুক্তভোগীরা হলেন- দৈনিক কালবেলার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি তন্ময় উদ্দৌলা, নাগরিক বার্তার স্টাফ রিপোর্টার এনামুল খন্দকার ও মুক্ত খবরের স্টাফ রিপোর্টার আরিফুজ্জামান চাকলাদার।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা জানান, বছরের যে কোনো সময়ের তুলনায় রমজান মাসে বাজারে মুড়ির চাহিদা বেশি থাকে। সেই চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী নানা ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করে মুড়ি উৎপাদন করেন। এতে মুড়ি দেখতে সাদা-সুন্দর হয় এবং দ্রুত উৎপাদন করা যায়।
ওই কারখানাটিতেও ইউরিয়া সার মিশ্রিত মুড়ি উৎপাদনের অভিযোগ ছিল। সাংবাদিকরা সেখানে গিয়ে সেই দৃশ্য ধারণকালে প্রতিষ্ঠানের মালিক তাদের ওপর চড়াও হন। মিলে কর্মরত কর্মচারীদের নিয়ে সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন, ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করেন অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে মিল মালিক সাংবাদিকদের মিল থেকে বের করে পাশের অফিসে নিয়ে যান। সেখানে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
সংবাদকর্মীরা বিষয়টি মোবাইল ফোনে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং থানা পুলিশকে জানান। এতে ভীত হয়ে সাংবাদিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ভুক্তভোগীরা মধুখালী থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে দৈনিক ভোরের কাগজের মধুখালী প্রতিবেদক অঞ্জন সাহা রানা বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিন সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ভেজাল মুড়ি উৎপাদকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবিও জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে মো. ঈশারত মোল্যার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মধুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন।
মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, ‘বিকেলে নাগরিক বার্তার একজন সাংবাদিক আমাকে ফোন করে জানান, তারা সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে খারাপ আচরণের শিকার হয়েছেন। তার কিছু সময় পরে কালবেলার নিজস্ব অফিস থেকে কল আসে। জানানো হয়, তাদের জেলা প্রতিনিধি অবরুদ্ধ। তখনই আমি ওসিকে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠাতে বলি। এ বিষয়ে ভিডিও ফুটেজ পেলে আমি অবশ্যই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
মন্তব্য করুন