বৈধ পাস নিয়ে তিনি ঢোকেন চট্টগ্রাম বন্দরে। পরে নিজেকে লুকাতে জাহাজে রাখা খালি কনটেইনারে ঢুকে পড়েন। উদ্দেশ্য— অবৈধভাবে সিঙ্গাপুর যাওয়া। জাহাজ বন্দর ছেড়েও যায়। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। জাহাজ সিঙ্গাপুর পৌঁছানোর আগেই মাঝ সাগরে জাহাজের ক্রুদের হাতে ধরা পড়েন লিটন মোল্লা (২৩) নামে ওই যুবক।
এর আগেও কয়েকবার কনটেইনারে লুকিয়ে বিদেশে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হয়েছে মৃত্যুও।
পুলিশ জানিয়েছে, পানির পিপাসা পেলে লিটন কনটেইটনার থেকে বের হয়ে এলে বিষয়টি ক্রুদের নজরে পড়েন। পরে তাকে ওই জাহাজে করে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। ফিরতি ট্রিপে চট্টগ্রাম বন্দরে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাসপোর্ট বা বৈধ কোনো ভ্রমণ দলিল ছাড়া কনটেইনারে লুকিয়ে সিঙ্গাপুর যাওয়ার অপরাধে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বন্দর থানার ওসি সঞ্জয় কুমার সিনহা। তিনি বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের পরিদর্শক নাছির উদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে থানায় সোপর্দ করেছেন।
লিটন মোল্লা মাগুরা জেলার ইছাপুর গ্রামের ফারুক মোল্লার সন্তান। তার কাছ থেকে বন্দরের প্রবেশ কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত লিটন পেশায় ড্রাইভার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এভাবে বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। সেই অনুযায়ী গত ২৪ সেপ্টেম্বর লিটন তার জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি জমা দিয়ে বন্দরের গেট পাস পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ তাকে বন্দর প্রবেশ কার্ড ইস্যু করে। পরে লিটন ওই পাস দিয়ে বন্দরের সিসিটি-২ গেট দিয়ে ৫টা ২৩ মিনিটে প্রবেশ করেন। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে ‘এমভি হাইয়ান ভিউ’ নামক জাহাজের পেছন দিয়ে রেলিং বেয়ে জাহাজে উঠেন। এরপর অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য জাহাজের খালি কনটেইনারের ভেতর লুকিয়ে থাকেন। পিপাসা লাগায় এক পর্যায়ে বাইরে আসেন লিটন। এরপর জাহাজের ক্রুদের নজরে এলে তাকে আটক করে জাহাজের ক্যাপ্টেনের হেফাজতে রাখা হয়। পরে জাহাজটি সিঙ্গাপুর থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরে ফিরলে তাকে বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, লিটন পরিকল্পিতভাবে চট্টগ্রাম বন্দরের মতো স্পর্শকাতর ও সংরক্ষিত এলাকায় ট্রাক ড্রাইভার হিসেবে বৈধভাবে পাস নিয়ে প্রবেশ করেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে বন্দরের বার্থে থাকা জাহাজে খালি কনটেইনারের ভেতরে লুকিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করে বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে সিঙ্গাপুর চলে যাওয়ায় বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেন। তাই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।