

বাংলাদেশের জার্সিতে সাকিব আল হাসানের ক্রিকেট ক্যারিয়ার কি শেষ—এমন প্রশ্নের মধ্যেই মিলল উত্তর। সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, এখনো ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ দেখছেন না তিনি। এমনকি ক্রিকেটের পর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন তিনি।
২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকেই জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না সাকিব। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ খেলে লাল বলকে বিদায়ও জানাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে দেশে ফেরা হয়নি তার। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা হওয়ায় পুরোপুরিভাবেই দেশের বাইরে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে ক্রিকেট ক্যারিয়ার ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছেন সাকিব। গত কয়েক মাসে অন্তত ডজনখানে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্টে খেলতে দেখা গেছে সাকিবকে। এর পেছনে কারণটা সম্প্রতি জানালেন তিনি। রোববার প্রকাশিত ‘রিয়ার্ড বিফোর উইকেট’ পডকাস্টে সাকিব তার ক্রিকেট ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। কোনো সংস্করণেই বিদায় নেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি সিরিজেই সব সংস্করণ থেকে অবসর নেওয়া সম্ভব। সেটি টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডে, টেস্ট—এই ক্রমেও শুরু হতে পারে। আবার টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি, এভাবেও হতে পারে। যে কোনোভাবেই আমার সমস্যা নেই। আমি শুধু পুরো সিরিজ খেলতে চাই এবং তারপর অবসর নিতে চাই। এটাই আমার ইচ্ছা।’
সে ইচ্ছাকে ধারণ করেই নাকি বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলছেন সাকিব। তবে বাংলাদেশের বাস্তবতায় সাকিবের দেশে ফেরা এখন অনেক কঠিন। ভবিষ্যতে সেটা কি সম্ভব হবে! সাকিব আশাবাদী, ‘আমি আশাবাদী। সে কারণেই তো খেলছি (টি-টোয়েন্টি লিগগুলো)। আমার মনে হয়, এটি সম্ভব হবে। আমার মনে হয় একজন খেলোয়াড় যখন কিছু বলে, তারা সাধারণত কথায় অটল থাকার চেষ্টা করে। হুট করে বদলে ফেলে না। আমি ভালো খেলি কি না সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। চাইলে এর পর খারাপ সিরিজও খেলতে পারি। কিন্তু সেটা আমার দরকার নেই।’ দেশের জার্সিতে ১৭ বছর ক্রিকেট খেলেছিলেন সাকিব। অনেক অর্জনও আছে তার। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের তকমা নিয়ে দাপট দেখিয়েছেন অনেক বছর। ভক্ত-সমর্থকদের ভালোবাসায়ও নন্দিত তিনি। তাইতো তাদের সাক্ষী রেখেই বিদায় জানাতে চান সাকিব, ‘আমার মনে হয় এটুকুই যথেষ্ট। এটি ভক্তদের বিদায় জানানোর একটু সুন্দর উপায়— যারা আমাকে সবসময় সমর্থন করেছেন। একটি হোম সিরিজ খেলে তাদের কিছু ফেরত দেওয়া।’
ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষে কী করবেন—এমন প্রশ্নও করা হয়েছিল সাকিবকে। কেননা, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনো দলটির হয়ে নানা কার্যক্রমে সরব তিনি। সাকিব বলেন, ‘রাজনীতির অংশ এখনো বাকি আছে। এটা এমন কিছু যা আমি বাংলাদেশের মানুষ ও মাগুরাবাসীর জন্য করতে চাই। এটা আমার ইচ্ছা ছিল এবং এখনো আছে। দেখা যাক, আল্লাহ আমাকে কোথায় নিয়ে যান।’ একই সঙ্গে ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে সাকিবের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ হওয়ার পেছনে নিজের ইচ্ছাকৃত ভুলের কথা স্বীকার করেছেন বাঁহাতি এ স্পিনার, ‘আমার মনে হয় আমি কিছুটা ইচ্ছা করেই অমন অবৈধ অ্যাকশন করেছিলাম। কারণ এক ম্যাচে আমি ৭০ ওভারের বেশি বল করেছিলাম। আমার ক্যারিয়ারে কোনো টেস্ট ম্যাচে আমি এত বল করিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাক-টু-ব্যাক টেস্ট খেলে গিয়েছিলাম কাউন্টি খেলাতে আমি প্রচণ্ড ক্লান্ত ছিলাম। আমি ভেবেছিলাম আম্পায়ার অন্তত আমাকে প্রথমে সতর্ক করবেন। কিন্তু নিয়মে রিপোর্ট করার এখতিয়ার তাদের আছে। তাই আমি অভিযোগ করিনি।’ অবশ্য পরে পরীক্ষার মাধ্যমে শুধরেও নিয়েছেন তিনি।
মন্তব্য করুন