চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৩, ০৪:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ফখরুলরা উন্নয়ন-অগ্রগতির বিরোধী : তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রামের বাসভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: কালবেলা
চট্টগ্রামের বাসভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: কালবেলা

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে যোগদানের বিরোধিতা করে এটিকে সুবিধাবাদী পদক্ষেপ বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

আজ শনিবার (১ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর লেনস্থ বাসভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, গতকাল একটি জনপ্রিয় টেলিভিশনে মির্জা ফখরুল সাহেবের একটি সাক্ষাৎকার আমি শুনছিলাম। তিনি সেখানে বলেছেন- তারা ভিন্ন মাত্রার আন্দোলন শুরু করেছেন এবং গত এক বছর ধরে তারা কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত নন। এটি ওনার মুখের কথা এবং রেকর্ডেড। তার মানে হচ্ছে, আগে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন- এটি তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন তার বক্তব্যের মাধ্যমেই।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ব্রিকস হচ্ছে পৃথিবীর উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর একটি জোট। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, সাউথ আফ্রিকা আছে এই জোটে। উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো পৃথিবীর উদীয়মান অর্থনীতির শক্তি। সেই শক্তিকে সবাই সমীহ করে। বাংলাদেশ যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে তা নয়, বাংলাদেশ যেহেতু উদীয়মান অর্থনীতির দেশ, এজন্য তারা বাংলাদেশকে ব্রিকসে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য মর্যাদার ও সম্মানের। এটির মাধ্যমে ব্রিকসও স্বীকার করে নিয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। সেখানে যোগ দিলে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সুবিধা হবে।

তিনি বলেন, এক বছর ধরে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত নয় বলে মির্জা ফখরুল যে কথা বলেছেন সেটিও সঠিক নয়। আপনারা দেখেছেন গত কয়েক মাসের মধ্যে তারা বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, গাড়ি ভাঙচুর করেছে, ঢাকায় দোতলা বাসে আগুন দিয়েছে, চট্টগ্রামের জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণে আমাদের মুক্তি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের ছবি ভাঙচুর করেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যতই বলুক না কেন, ওনারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যেই আছেন। তবে উনি এই বক্তব্যের মাধ্যমে স্বীকার করে নিয়েছেন ওনারা আগে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যেই ছিলেন।

আগামী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে এবং নির্বাচন নিয়ে চীন, ভারত ও আমেরিকার সক্রিয়তা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হয় না। বিএনপি যখন সরকারে ছিল তারা ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন সরকারের অধীনেই করেছিল। এখানেই বিএনপি গুলিয়ে ফেলেছে। সরকার যেটি দায়িত্বে থাকবে তারা শুধু নির্বাচন কমিশনকে ফ্যাসিলেট করবে। বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা যতই দাবি দিক না কেন, সংবিধানের এক চুলও ব্যত্যয় হবে না। এই দাবি তারা ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে দিয়ে আসছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তারা একই দাবি করেছিল।

তিনি বলেন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জাপানসহ পৃথিবীর অন্যান্য সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় ঠিক সেভাবেই আমাদের দেশে নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সেখানে যেভাবে চলতি সরকার দায়িত্ব পালন করে ঠিক একইভাবে আমাদের দেশেও বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে এবং তখন সরকারের শুধু রুটিন কাজ থাকে। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর-অধিদপ্তর ও সংস্থাগুলোর বদলি থেকে শুরু করে সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত থাকে।

এবার অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে, ঈদযাত্রাও নির্ঝঞ্জাট ছিল উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গতবারের চেয়ে এবার প্রায় ১ লাখ বেশি গবাদিপশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। এ বছর মোট ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। গবাদিপশুর সংখ্যা গত বছর ছিল ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩। আর এ বছর কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার। সবমিলিয়ে এ বছর অত্যন্ত ভালো ঈদ উদযাপিত হয়েছে, বিশেষ করে শেষের দিকে গবাদিপশুর দামও কম ছিল।

তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে আমাদের সরকার নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরিপ্রেক্ষিতে এভাবে মানুষের পক্ষে ঈদ উদযাপন করা সম্ভবপর হয়েছে। আজকে দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটির বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে মানুষের কোরবানি করার সামর্থ্য বেড়েছে। সেই কারণে গত বছরের তুলনায় বেশি কোরবানি হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা গত তিন দিন ধরে গলা ফাটিয়ে ফেলছে দেশের মানুষ এবার কষ্টে আছে। দেশের মানুষ যদি কষ্টে থাকে তাহলে গতবারের চেয়ে ১ লাখ বেশি গবাদিপশু কোরবানি হলো কীভাবে- প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে একটি পক্ষ আছে রাত ১২টার পরে টেলিভিশনের পর্দা গরম করে। অবশ্য, তাদের মধ্যে সবাই নয়, বিএনপি এবং তার মিত্ররা দেশে কোনো উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দোতারাও নয়, একতারার সুরে সবসময় বলে বেড়াচ্ছে দেশের মানুষ ভালো নেই। আসলে উনারা ভালো নেই, কিন্তু দেশের মানুষ ভালো আছে।

চীন, ইউএস ও ভারতের যে সক্রিয়তা আমরা দেখছি এ বিষয়টি আপনারা কীভাবে দেখছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেখুন যেসব দেশ ভূ-রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তারা কী করছে সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়, সেটি আমাদের জিজ্ঞাসাও নয়। নির্বাচন আমাদের দেশে হবে, আমাদের ভোটাররা নির্বাচনের সময় কাকে ভোট দিবে সেটি তারাই ঠিক করবে। সুতরাং তারা কী করছে সেটা নিয়ে আমাদের চিন্তাও নেই, মাথা-ব্যথাও নেই।

এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ এমপি, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হোটেলে নিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ, সাবেক সমন্বয়কের বিরুদ্ধে মামলা

অজিদের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের রেকর্ড সিরিজ জয়

তিস্তা সেচ ক্যানেলে নেমে ২ শিশুর মৃত্যু 

ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হচ্ছে সৌরজগতের সবচেয়ে দ্রুতগতির গ্রহ

পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হলে নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হবে : ডা. তাহের

ডাকসুর নারী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, মুখ খুললেন সাদিক কায়েম

নিখোঁজের পর নদীতে মিলল সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ

আরও উন্নত ব্যাকআপ সুবিধা নিয়ে গুগল

গেণ্ডারিয়ায় ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে দগ্ধ একজনের মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রে ৫ কোটি ৫০ লাখ ভিসাধারীকে যাচাই শুরু, প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা

১০

পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচন পেছাতে ষড়যন্ত্র চলছে : মীর সরফত 

১১

খানকাহ রহমানি মসজিদ : রাজীব থেকে রাহুল গান্ধী

১২

সৌদির নারীদের সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য

১৩

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ১৭৩ জন

১৪

মোবাইলের ডায়াল প্যাড আগের মতো করবেন যেভাবে

১৫

কোন জিনিস কতদিন ব্যবহার করা নিরাপদ

১৬

শাপলা চত্বর গণহত্যার বিচারে আলাদা কমিশন গঠনের দাবি

১৭

‘১৭ বছরে ব্যবসা ছেড়ে ভারতে গেছেন অনেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী’ 

১৮

ইতিহাস-ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ গোপালগঞ্জ : নুরুল হক 

১৯

ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিয়েছে ২৩ দল

২০
X