জুলাই ঘোষণাপত্র, গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারের পুনর্বাসন, প্রশাসন, গণমাধ্যম, সাংস্কৃতিক অঙ্গন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংস্কারের দাবিতে ও গোপালগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে প্রতিকী কফিন ও মশাল মিছিল করেছে জুলাই ঐক্য।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব সিটি কলেজের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত এ মিছিল করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। জুলাই ঐক্য ফ্যাসিবাদবিরোধী ১১০টি সংগঠনকে নিয়ে গঠিত একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম।
জাতীয় পতাকা মোড়ানো কফিন নিয়ে মিছিল নিয়ে রাত সাড়ে আটটার সময় মিছিল শুরু হয়। মিছিলে ‘মুজিবাদ, মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘গোপালগঞ্জে হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’, ‘গোপালগঞ্জের গোপালীরা, হুশিয়ার সাবধান’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর’, ‘জুলাই ঐক্যের দরকার, বিচার সংস্কার’ সহ নানান স্লোগান দেয়।
মিছিল শেষে বক্তব্যে জুলাই ঐক্যের সংগঠক এবি জুবায়ের বলেন, এই কফিন আমাদের প্রতিবাদের প্রতীক, গত বছরের এই দিনে স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাদের শহীদ আবু সাঈদরা জীবন দিয়েছিল। আজকের এই মিছিলের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের বীরদের স্মরণ করছি। একই সঙ্গে আমাদের বীরেরা যেই কারণে জীবন দিয়েছে, একটি ইনসাফ পূর্ণ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে, আমরা এটিকে আবারো স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও শহীদদের যে চাওয়া পাওয়া ছিল বাংলাদেশকে নিয়ে সেটি এখনো পূরণ হয়নি। অবলিম্বে সে সব বাস্তবায়নের জন্য দাবি জানাই।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে জুবায়ের বলেন, আজকে গোপালগঞ্জে খুনি আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সেখানে পুলিশ ছিল নিরব দর্শকের ভূমিকায়। এক বছর আগে যখন আমাদের ভাইয়েরা অধিকারের জন্য রাস্তায় নেমেছিল তখন তারা মারণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল। অথচ একই পুলিশ আজকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে ছিল।
তিনি বলেন, হাসিনা চলে গেলেও হাসিনার পুলিশদের জায়গায় জায়গায় বসিয়ে রেখেছে। অধিকাংশ পুলিশ গোপালগঞ্জের, অধিকাংশ পুলিশ সেই হাসিনার। এসব আওয়ামী পুলিশ দিয়ে আপানারা দেশ চালাতে পারবেন না। অবলিম্বে জুলাই অভ্যুত্থানে চাওয়া-পাওয়া পূরণ করুন।
জুলাই ঐক্যের এই সংগঠক বলেন, গোপালগঞ্জকে দিল্লির কাছে ইজারা দেয়নি, এটি স্বাধীন বাংলাদেশের অংশ। সারা বাংলাদেশর মাটি যেমন আওয়ামী লীগের জন্য হারাম, তেমনি গোপালগঞ্জের মাটিও আওয়ামী লীগের জন্য হারাম।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, সুশীল হতে যাবেন না। আজকে রাতের মধ্যে সাঁড়াশি অভিযান চালাতে হবে। যারা জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা করেছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
মিছিল শুরুর আগে জুলাই ঐক্যের সংগঠক প্লাবন তারিক বলেন, আমরা দেখছি গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর হয়ে গেছে। অথচ এখন পর্যন্ত কোনো সংস্কার দেখছি না। প্রশাসন গণমাধ্যম থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনও ফ্যাসিবাদের দোসররা বসে আছে। সরকারের কোনো কাঠামো ঠিক ভাবে কাজ করছে না। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছি দ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র দিন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করুন।
মন্তব্য করুন