গোপালগঞ্জ জেলা সদরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বনির্ধারিত সভাকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাইয়ে সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার বিষয়সহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ঘটনা উদ্ঘাটনের নিমিত্তে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।
দ্য কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ এর সেকশন ৩-এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, উল্লিখিত ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত সদস্যদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়।
কমিটির সভাপতি সাবেক বিচারপতি ড. মো. আবু তারিক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও বীর মুক্তিযোদ্ধা, সদস্য খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ; মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ), আইন ও বিচার বিভাগ; ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহীদুর রহমান ওসমানী কমান্ডার, ২১ পদাতিক ব্রিগেড; সরদার নূরুল আমিন, পরিচালক (অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক), কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা এবং ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী, চেয়ারম্যান, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
উক্ত ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে এই তদন্ত কমিশন গঠিত হয়।
কমিশনের কার্যপরিধি (ক) উদ্ভূত ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ উদ্ঘাটন করা; (খ) জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর জনসভায় আক্রমণের জন্য দায়ী ব্যক্তি/সংগঠনকে চিহ্নিতকরণ; (গ) উল্লিখিত ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি/সংগঠনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ প্রদান; (ঘ) ওই ঘটনাকালীন জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার বিষয়সহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ঘটনা বিশ্লেষণপূর্বক মতামত প্রদান; (ঙ) ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ প্রদান।
তদন্ত কমিটি জানায়, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলা সদরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বনির্ধারিত সভায় নিষিদ্ধ ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকগণ পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় কারফিউ জারি করা হয় এবং ইন-এইড-টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা গ্রহণ করা হয়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার বিষয়সহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ঘটনা উদ্ঘাটন করা প্রয়োজন।
তদন্ত কমিশন, প্রয়োজনে, উপযুক্ত যে কোনো ব্যক্তিকে কমিশনের সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করবে ও কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করবে এবং কমিশনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যে কোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে।
কমিশন ওই বিষয়সমূহের উপর ০৩ (তিন) সপ্তাহের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামত ও সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবে।
মন্তব্য করুন