ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মধ্যে দ্বিতীয় দিনের মতো সংঘাত চলছে। এতে উভয় পক্ষের প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ সংঘাত নতুন কিছু নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, অঞ্চলটিতে শান্তি কতদূর! এ বিষয়ে কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত থেকে বাছাইকৃত মতামত প্রকাশ করা হলো।
বিএম হানিফ হোসাইন : ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত দীর্ঘদিনের। ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর ইসরায়েলর নির্যাতন কম-বেশি সবসময় চলেই আসছে। নিরীহ অসহায় মানুষের ওপর এই নির্যাতন খুব শিগগির থামবে বলে মনে হয় না। ইসরায়েলের প্রধান শক্তি হলো আমেরিকা। আমেরিকার কারণেই ইসরায়েল বছরের পর বছর নির্যাতন করতে পারছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনে যদি শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাহলে আগে আমেরিকাকে হটাতে হবে। মুসলিম বিশ্বকে এক হয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করা ছাড়া এর সমাধান বর্তমান সময়ে সম্ভব নয়।
সায়েমুর রহমান মারুফ : ইসরায়েল চায় পুরো বিশ্বকে তাদের আয়ত্তে নিতে। তারা ফিলিস্তিনের জমি দখল করে রেখেছে। দিন দিন দখলের পরিধি বাড়াচ্ছে। দখল কায়েম করতেই ফিলিস্তিনিদের ওপর কঠোর নির্যাতন করছে। ইহুদি বাহিনীর বিরুদ্ধে যারা রুখে দাঁড়াবে ক্রমাগত তাদের ওপরও নির্যাতন চালাবে। বিশ্ব রাজনীতিতে তারা এমনভাবে ছড়িয়ে আছে যে, তাদের বিরুদ্ধে চাইলেও কিছু করা কঠিন। তবে তাদের থেকে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করতে হলে পুরো মুসলিম বিশ্বকে এক হয়ে অতিদ্রুত কার্যকরি সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
মো. স্বাধীন মালিক : সংঘাত বন্ধ করে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হলে আগে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। দুটি দেশের মধ্যে তৃতীয় পক্ষ এসে আলোচনা করে সংঘাত বন্ধ করে ফিলিস্তিনের ভূখন্ড ফিরিয়ে দিয়ে স্বাধীনতা দিতে হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই শান্তি আসতে পারে।
মো. আবদুল হামিদ : এই হামলায় মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আরও একবার উলটপালট হয়ে গেল। ইসরায়েল চাচ্ছে ফিলিস্তিন তাদের পতাকা ব্যবহার করুক। তাদের আইন-সংবিধান মানুক, আল আকসা মসজিদটি ইহুদিদের জন্য দেওয়া হোক। ইসরায়েল যেকোনো মূল্যে আল আকসা মসজিদকে দখলে রাখতে চায়। এতে কোনোভাবেই শান্তি আসবে না। এখন মনে হচ্ছে, চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রচ্যের রাজনীতি আরও একবার তছনছ হবে। আলোচনা ছাড়া, দুই পক্ষের ছাড় দেওয়া ছাড়া কোনোভাবেই শান্তি সম্ভব নয়। শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বকে এগিয়ে আসা উচিত।
খালিদ বিন ওয়ালিদ : ইসরায়েলের সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা উচিত। তাদের অবৈধ দখলদারত্ব, খুন, নির্যাতন যত দিন বন্ধ না করবে ততদিন শান্তি আসবে না। আর ইসরাইলের মনে রাখতে হবে এটা তাদের পৈতৃক সম্পত্তি নয়। সালাউদ্দিনের জন্ম আবার হবে, এই ফিলিস্তিন আবার স্বাধীন হবে, আল আকসাকে আবার তিনি মুক্ত করবেন বলে মুসলিমরা বিশ্বাস করে।
মো. আকতারুজ্জামান : দখলদার কখনও মালিক হতে পারে না। ইসরায়েল বছরের পর বছর ধরে দখল করে বসতি তৈরি করে চলেছে। এবার ফিলিস্তিনিরা প্রমাণ করেছে, দখলদাররা কখনই প্রভু হতে পারে না। এই আক্রমণ ইতিহাসে লেখা থাকবে। ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমি ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে সংগ্রাম করেছে, প্রতিরোধ করেছে এবং হারানো ভূখণ্ড ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ছেড়ে দেয়নি।
মোনায়েম হোসাইন রবিন : সংঘাত বাড়বেই। আমেরিকা এ ক্ষেত্রে শান্তির বার্তা দিলেও তারা চায় না বিশ্ব সংঘাত মুক্ত থাকুক। যুদ্ধ না হলে তারা তাদের মোড়লপনা দেখাতে পারবে না। আমেরিকার সুরে জাতিসংঘ একই কথা বলে। ইসরায়েলকে নিয়ে শান্তি আলোচনা না করাই উত্তম। হিটলারের দেখানো পথে হাঁটা প্রয়োজন। মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো ফিলিস্তিনের পাশে থাকলে ইসরায়েলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া সম্ভব। অন্য মুসলিম দেশের কথা বলতে পারবো না তবে ইরান, তুরস্ক এখানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমার মনে হয়।
মো. আকতারুজ্জামান : ইসরায়েল অবৈধভাবে ফিলিস্তিনের ওপর দখলদারি করছে। আজকের এই অবস্থার জন্য ইসরায়েল দায়ী। অবিলম্বে ফিলিস্তিনিদের ওপর থেকে তাদের দখলদারি হটিয়ে আল আকসা মুক্ত করতে হবে।
নুর আহমেদ সিদ্দিকী : ইসরায়েল একটি অবৈধ রাষ্ট্র। জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলকে শক্তি যোগাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির মূলে এই অবৈধ রাষ্ট্র। হিটলার কেন এদের সমূলে ধ্বংস করেনি তা এখন বুঝতে পারছি। এখানে জাতিসংঘ ইসরায়েলের পক্ষাবলম্বন করে মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি জিইয়ে রেখেছে। সংকট সমাধানে পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিন থেকে ইসরায়েলিদের চলে যেতে হবে। না গেলে মুসলিম বিশ্ব ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম করে অবৈধ রাষ্ট্রকে সমুচিত জবাব দেওয়া উচিত।
আরিফ চৌধুরী : যুদ্ধে আঘাত প্রতিঘাত থাকবেই। ফিলিস্তিনিরা অন্যায় অত্যাচার সহ্য করতে করতে অভ্যস্ত। এটা ফিলিস্তিনিদের জন্য নতুন কিছু নয়। দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে যায় তখন আর কিছুই করার থাকে না। এটা নিজ দেশের সার্বভৌমত্ব দখলের প্রতিবাদ।
স্বপন খান শাহিন : হামাস তার জনগণের নিরাপত্তা প্রদান না করেই শুধু ইরানের কথায় রকেট হামলা করতে গিয়ে আজকের এই পরিণতি। আগে ইসরাইলের মতো সেই শক্তি অর্জন করতে হবে। তারপর যুদ্ধ ঘোষণা করা দরকার।
গ্রন্থনা : আব্দুল্লাহ আল মাছুম
মন্তব্য করুন