ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘একদলীয়, সংবিধান লঙ্ঘনকারী, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ও মামলাবাজ সরকার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেছেন, ‘এরা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়েছে। ভোটাধিকার হরণ করেছে। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাচ্ছে। এদের মুখোশ উন্মোচন করে দিতে হবে।’
সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসমাবেশে এসব কথা বলেন মঈন খান।
গত ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশপথের অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা এবং হামলা-মামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে এই জনসমাবেশ হয়।
ড. মঈন খান বলেন, এই সরকার একদলীয় সরকার। এখানে সরকারের বিরুদ্ধে কাউকে কথা বলতে দেওয়া হয় না। গণমাধ্যম সরকারের বিরুদ্ধে কিছু লিখতে পারে না। একদলীয় সরকার মানুষের টুঁটি চেপে ধরেছে। এটা ছাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার নতুন করে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে। গণতন্ত্রকে তারা বিসর্জন দিয়েছে। যে গণতন্ত্রের জন্য একাত্তর সালে লাখ লাখ মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বর্তমান সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের সরকার। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলেছে, এই সরকার মারাত্মকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এরা ক্ষমতায় থাকতে পারে না। এই সরকার সংবিধান লঙ্ঘনের সরকার। সংবিধান সরকারের সমালোচনা করার অধিকার দিয়েছে। কিন্তু মানুষ এই সরকারের কোনো সমালোচনা করতে পারে না।
মঈন খান বলেন, এই সরকার মামলাবাজ সরকার। সরকার ও সরকারি দলের লোকজনই বিরোধীদলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আক্রমণ-হামলা করে, আবার তারাই উল্টো হামলার শিকার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা দেওয়া হয়েছে। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি মামলাও দেয়নি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ৮৭টি মামলা রয়েছে। অথচ আমরা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে একটিও মামলা দেইনি।
ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে সাপ পেটানোর মতো পেটানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মঈন খান আরও বলেন, এই হলো বর্তমান সরকারের মানবাধিকারের নমুনা।
বিএনপি গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে জানিয়ে দলটির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আগামীতেও সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ ছাড়া সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ডা. রফিকুল ইসলাম, কামরুজ্জামান রতন, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, রকিবুল ইসলাম বকুল, মীর সরফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা প্রমুখ নেতারা।
মন্তব্য করুন