কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৩, ১১:৪৫ এএম
আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২৩, ১১:৫৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

’৭৫-এর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কুশীলবদের চিহ্নিত করতে হবে : শেখ পরশ

১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টে শহীদদের স্মরণে যুবলীগের আলোচনা সভা। ছবি : সৌজন্য
১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টে শহীদদের স্মরণে যুবলীগের আলোচনা সভা। ছবি : সৌজন্য

ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের উদ্যোগে ‘১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টে শহীদদের স্মরণে’ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৬ আগস্ট (শনিবার), বিকাল ৩:৩০টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ওই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা ও সঞ্চালনা করেন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, এই আগস্ট মাসে বাংলার ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং জঘণ্যতম হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলার অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর; চালানো হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ড ছিল সুদূরপ্রসারী এক পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতার সূর্য সম্পূর্ণরূপে উদিত হওয়ার পূর্বেই আকস্মিকভাবে অস্তমিত করা হয়েছিল। নস্যাৎ করা হয়েছিল বাঙালির দুই শতাধিক বছরের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শত্রুরা প্রতিশোধ নিয়েছিল বাঙালি জাতির ওপর। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যা কোনো সাধারণ হত্যাকাণ্ড না। এই মহান নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল একাধিক অশুভ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য।

প্রথমত, অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে তাদের পরাজয় মেনে নিতে পারেনি।

দ্বিতীয়ত, তারা বাংলাদেশকে স্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করা মেনে নিতে পারেনি। তারা পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক সংবিধান প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশের জন্য একটি ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান প্রণয়ন মেনে নিতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের কয়েকজনের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু অভিযুক্তদের কেউ কেউ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকায় বিচারের রায় আংশিক কার্যকর হয়। তাই আজকে যুবসমাজের দাবি বঙ্গবন্ধু হত্যার পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

যুবলীগ আরও দাবি করছে, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের লক্ষ্যে একটা জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে ওই ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ও ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। এই জাতীয় কমিশনই হবে জিয়ার মরণোত্তর বিচারের সর্বপ্রথম ধাপ এবং প্রারম্ভিক পদক্ষেপ। তাই এই কমিশন গঠন করা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই প্রজন্মের সময়ের দাবি। যতদিন তদন্ত কমিশনের ফলাফল না বেড় হবে, খুনিরা পদ্মার অন্তরালে থেকে যাবে এবং এই বাংলাদেশে হত্যার রাজনীতির ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, ২১ আগস্ট এদেশের রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও সংস্কৃতি ধ্বংসের পেছনে এককভাবে দায়ী। কী বর্বর এবং অসহিষ্ণু ওদের রাজনৈতিক মনোবৃত্তি যে বিরোধী মতামত তো দূরের কথা, পুরো দলটাকেই ওরা সাংগঠনিকভাবে নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, আজকেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি, তারেক জিয়া বিদেশ থেকে হুকুম দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। তারেক জিয়ার মতো একজন কাপুরুষের নেতৃত্বের কারণে বিএনপি আজ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ইতিহাসের আস্তাকুরে নিক্ষেপ হতে চলেছে। তিনি আরও বলেন, উন্নয়নশীল বাংলার যুবসমাজের দাবি, দুর্নীতি ও ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, খুনি জিয়াউর রহমানের কু-পুত্র তারেক রহমানকে অনতিবিলম্বে, কান ধরে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে হবে এই বাংলার মাটিতে। তাহলেই এই সকল হত্যার রাজনীতি থেকে এই দেশ চিরতরে মুক্তি পাবে।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জিয়ার খুনি পুত্র তারেক জিয়ার নির্দেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালায় বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা। সেই হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারায়। সন্ত্রাসী তারেকের নেতৃত্বে এদেশে অস্ত্রের ঝনঝনানী শুরু হয়েছিল। তারই প্রত্যক্ষ মদদে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে এদেশের সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। মানুষকে হত্যা করেছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে, সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারও তাদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। তারেকের নির্দেশে রমনার বটমূলে, নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে বোমা হামলা চালিয়েছিল। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে, যুবসমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছিল তারেক জিয়া। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে র্বথ রাষ্ট্রে পরিণত করা। সেই বিএনপি-জামায়াত আবারও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, দেশের উন্নয়নকে ব্যহত করতে আগুনসন্ত্রাস শুরু করেছে। এই জামায়াতকে প্রতিহত করতে যুবলীগই যথেষ্ট। যদি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামে তাহলে বিএনপি-জামায়াত পালানোর পথ খুঁজে পাবে না।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর আলম শাহীন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মো. রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত চৌধুরী, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মুক্তা আক্তার, উপদপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপতথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, সহসম্পাদক আহতাসামুল হাসান ভূইয়া রুমি, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সহসভাপতি সোহরাব হোসেন স্বপন, আনোয়ার ইকবাল সান্টু, নাজমুল হোসেন টুটুল, আবু সাঈদ মোল্যা, দীল মোহাম্মদ খোকা, সৈয়দ আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বকুল, গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু, মো. মাকসুদুর রহমান, কাজী ইব্রাহিম খলিল মারুফ, প্রচার সম্পাদক আরমান হক বাবু, দপ্তর সম্পাদক মো. এমদাদুল হক এমদাদ, অর্থ সম্পাদক ফিরোজ উদ্দিন আহমেদ সাইমন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মো. গোফরান গাজী, উপদপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফ-উজ-জামান আরিফ, উপশিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক আলতাফ হোসেনসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‎সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নীতিমালা অনুমোদনের দাবিতে জবিতে অবস্থান কর্মসূচি

পুকুরপাড়ে গিয়ে মা দেখেন, ২ সন্তান পুকুরে ভাসছে

বিএনপি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে নয় : মির্জা ফখরুল

কারিগরি ত্রুটিতে অনলাইন জিডি বন্ধ

মুক্তিপণ না পেয়ে শিশু তামিমকে হত্যার অভিযোগ, আটক ২

৫ ধরনের ব্যক্তির জন্য পেঁপে খাওয়া বিপজ্জনক

থেমে আছে পাতাল মেট্রোরেলের কাজ 

আল আকসা মসজিদ নিয়ে ভয়ংকর পরিকল্পনা

‘নির্বাচনে জনগণের কাছে যেতে হবে’

ইভ্যালির গ্রাহকদের প্রায় ১৩ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে নগদ

১০

গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় ফেরিওয়ালাকে নির্যাতন 

১১

দেবের সঙ্গে সানি লিওনের ভিডিও ফের ভাইরাল

১২

ভারত ভ্রমণে দ্বিতীয় শীর্ষে বাংলাদেশ, প্রথম কোন দেশ

১৩

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আটক

১৪

সব ধরনের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

১৫

নতুন চুক্তিতে কেমন বেতন পাবেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা?

১৬

বড় ভাইয়ের কাঁধে চড়ে নদী পার হচ্ছিল নাজিম, অতঃপর...

১৭

ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিসিবির ৩ ঘণ্টার বৈঠকে কী আলোচনা হল?

১৮

যুক্তরাজ্য থেকে আসবে ৩ কার্গো এলএনজি

১৯

২৫ মিলিয়ন ডলারের চুরি করা গোলাপি হীরা উদ্ধার দুবাই পুলিশের

২০
X