জাতীয় সংসদে নারী আসন সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, বিদ্যমান ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন রাখার পক্ষে রয়েছে বিএনপি। যেহেতু আসন্ন নির্বাচনের আগে সংবিধান সংশোধন সম্ভব নয় এবং নির্বাচন হবে বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই, তাই এই নির্বাচনে ৩০০ আসনের ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে রাজনৈতিক দলগুলো যেন নারীদের সরাসরি মনোনয়ন দেয়, সে বিষয়ে মৌখিকভাবে একটি বিধান রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে যখন সংবিধান সংশোধিত হবে, তখন ৩০০ আসনের ভিত্তিতে ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনের মনোনয়ন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকুক- আমরা সেই প্রস্তাবও রেখেছি, যাতে প্রতিটি দল এই নীতিকে গ্রহণ করে।
রোববার (২৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি থাকলে সরাসরি নারী আসন ৩০টাসহ ৮০ টিতে উন্নীত হবে। এইভাবে যদি সমাজের অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়, নারী সমাজের অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায় এবং জাতীয় ভিত্তিতে যদি জনমত আসে তখনকার বিবেচনায় তার পরবর্তী পার্লামেন্ট হয়তো এই ডাইরেক্ট নির্বাচন বিধানটা আরও সম্প্রসারিত করতে পারে। এই প্রস্তাব রেখেছি আমরা।
তিনি বলেন, পুলিশ সংস্কার কমিশনের বিষয়ে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। যাতে রাষ্ট্রে পুলিশ বিভাগের কর্মকাণ্ড একটা জবাবদিহিতার আওতায় আসে এবং জনগণের সেবা যাতে নিশ্চিত করা হয় এবং পুলিশ যাতে জনবান্ধব হয়, প্রকৃত অর্থে পুলিশ যেন মানে জনগণের বন্ধু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেটার প্রয়োজন আছে।
রাষ্ট্রীয় মূলনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির ক্ষেত্রে কমিশনের যে প্রস্তাবে আমরা একমত হয়েছি। রাষ্ট্র পরিচালনা মূলনীতির ক্ষেত্রে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত বিষয়গুলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক, ন্যায়বিচার তার সাথে গণতন্ত্র ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি এই বিষয়গুলো যুক্ত করার কথা বলেছি। আমরা পঞ্চম সংশোধনীতে গৃহীত সমস্ত মূলনীতি সেটার সাথে একমত। সেখানে মহান আল্লাহর উপর আস্থা এবং বিশ্বাস আছে। সেখানে গণতন্ত্র আছে, জাতীয়তাবাদ আছে। মহান আল্লাহর উপর আস্থা এবং বিশ্বাস এই কথাগুলো পঞ্চম সংশোধনের পরবর্তীতে গৃহীত হয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, রাষ্ট্রে সাংবিধানিকভাবে সংসদীয়ভাবে বা যেকোনোভাবে স্বৈরতন্ত্রের উদ্ভব যাতে না হয়, ফ্যাসিবাদের উৎপাদন যাতে না হয়, সেটা বন্ধ করার জন্য এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ ১০ বছরের বেশি বহাল থাকবেন না বা ওই পদ আরোহণ করতে পারবেন না। এটি বিবেচিত হিসেবে একমত হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের গঠনকে সাংবিধানিকভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল হয়, একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় এবং প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করা হয়- তাহলে আমরা মনে করি না যে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রে আর স্বৈরতন্ত্র, ব্যক্তিতন্ত্র কিংবা ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে।
মন্তব্য করুন