পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত
যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে সারা দেশে মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা পবিত্র রমজানে পুরো এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের আনন্দে শামিল হন। গত বৃহস্পতিবার সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। নামাজ শেষে কুশল ও শুভেচ্ছা বিনিময় করে আনন্দ ভাগাভাগি করেন সবাই। পরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা টিকিটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সব শিশুপার্কে প্রবেশের ব্যবস্থা ছিল। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে এ বছরও ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান জামাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন ইমাম এবং বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন কারি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান মোকাব্বির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে পাঁচটি করে মোট ২৭০টি ঈদ জামাত হয়। এ ছাড়া বরাবরের মতো এবারও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদ উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, সেইফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র, দুস্থ কল্যাণ ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনেও যথাযথভাবে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশে ও প্রবাসে বসবাসকারী সকল বাংলাদেশিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। আগামীকাল ১১ এপ্রিল পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ শুভেচ্ছা জানান। মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা ও সংযম পালনের পর অপার খুশি আর আনন্দের বার্তা নিয়ে আমাদের মাঝে সমাগত হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর।’ ঈদুল ফিতরের শিক্ষা সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ- এ প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, ঈদের এ আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে সবার মাঝে, গ্রামগঞ্জে, সারা বাংলায়, সারা বিশ্বে। এ দিন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এক কাতারে শামিল হন এবং ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নেন। ঈদ সবার মধ্যে গড়ে তোলে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি আর ঐক্যের বন্ধন। মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ইসলাম শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম। এখানে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, কূপমণ্ডূকতার কোনো স্থান নেই। মানবিক মূল্যবোধ, সাম্য ও পারস্পরিক সহাবস্থান এবং পরমতসহিষ্ণুতাসহ বিশ্বজনীন কল্যাণকে ইসলাম ধারণ করে। ইসলামের এই সুমহান বার্তা ও আদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী নানাবিধ সংকটের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও এ মন্দার প্রভাব দৃশ্যমান। ফলে সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠী স্বাভাবিক জীবনধারণে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এ অবস্থায়, আমি সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিবর্গের প্রতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই ঈদের আনন্দ সমানভাবে উপভোগ করতে পারে। বাণীতে রাষ্ট্রপতি মানবতার মুক্তির দিশারি হিসেবে ইসলামের মর্মার্থ ও শাশ্বত বাণী ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র, বিশ্ব ভরে উঠুক শান্তি আর সৌহার্দ্যে-পবিত্র ঈদুল ফিতরে এমন প্রত্যাশা করেন।
১০ এপ্রিল, ২০২৪

ইতালিতে প্রবাসীদের ঈদুল ফিতর উদযাপন
ইতালিতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে বাংলাদেশিসহ প্রায় ২৫ লাখ মুসলমান নাগরিক। স্থানীয় সময় বুধবার (১০ এপ্রিল) মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে ইতালিসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে একইদিনে ঈদ উদযাপন করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ইতালির বিভিন্ন শহরে অস্থায়ী ঈদগাহ মাঠ, খোলা মাঠ ও মসজিদগুলোতে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইতালিতে সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় দেশটির রাজধানী রোমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভেনিসের ভেসেন্সায় সাড়ে ৭টায় ঈদ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে ইতালির মিলান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ প্রায় ৩০টির বেশি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে মিলানে।  এ ছাড়াও অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিসহ মুসলিমরা বাসায় ঈদের নামাজ আদায় করেছে। নামাজ শেষে সারা বিশ্বের মানুষের শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়। ঈদ উপলক্ষে ইতালিতে বাংলা কমিউনিটিগুলোর উদ্যোগে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। প্রবাসীরা একে অন্যের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন। তারা সারা বিশ্বের সব মুসলিমের শান্তি কামনা করেন। 
১০ এপ্রিল, ২০২৪

কুয়েত বাংলাদেশিদের ঈদুল ফিতর উদযাপন
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর কুয়েতে উদযাপন হলো মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। বুধবার (১০ এপ্রিল) ভোর ৫টা ৪৩ মিনিটে কুয়েতের সব মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দানে একযোগে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। স্থানীয় নাগরিকদের পাশাপাশি প্রবাসীরাও খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সাজসজ্জা নিয়ে ঈদগাহে রওনা দেন। হাসাবিয়া, জাহারা, ফরওয়ানিয়া, কুয়েত সিটি, মাহবুল্লাহসহ এবার কুয়েতে ২০টি মসজিদে বাংলা খুতবা দেন বাংলাদেশি খতিবরা। বাংলাদেশ-অধ্যুষিত হাসাবিয়া বড় মসজিদে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি ঈদের নামাজে অংশ নেন। এ ছাড়া বাংলা খুতবায় সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত হয় কুয়েত সিটির সালেহ আল ফুদালা মসজিদে। নামাজ শেষে প্রবাসীরা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরিবার ছাড়া প্রবাসে ঈদ আনন্দ নেই বললেই চলে। নামাজ শেষে বাসায় এসে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ঘুম দেওয়া ছাড়া কিছুই থাকে না। তারপরও কেউ কিছুটা আনন্দ নিতে বিকালে অনেকই বেরিয়ে পড়ে সাগরপাড়ে ঘোরার জন্য। অনেকের ঈদ এর দিনে ডিউটি থাকায় সেটিও সম্ভব হয়ে ওঠে না। প্রবাসে রুমমেট সবচেয়ে আপনজন।
১০ এপ্রিল, ২০২৪

এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে : বিআরটিএ চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেছেন, এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে যানজট ও দুর্ঘটনা কম ছিল। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে।   বুধবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে গাবতলী বাস টার্মিনালের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান।  পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ঈদযাত্রার সপ্তম দিনে গাবতলীতে যাত্রী নেই বললেই চলে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রা অনেক স্বস্তিদায়ক হয়েছে। যানজট ও দুর্ঘটনা এবার কম ছিল। ফিরতি যাত্রা যেন এমন নির্বিঘ্ন হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।  তিনি বলেন, গার্মেন্টস ছুটি হওয়ার কারণে গত দুই দিন সড়কে যানজট ছিল। কোথাও বাস ধীরগতিতে চলেছে। অনেক পরিবহনের মধ্যে ২-৪টা পরিবহন অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার চেষ্টা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চার্টে যে ভাড়া রয়েছে তা বিআরটিএ বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম দুই দফায় ৩ টাকা কমেছে। সেটা বিবেচনায় নিয়ে ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ৩ পয়সা কমানো হয়েছে। ভাড়ার তালিকা আপডেট করে আমরা প্রতিটি কাউন্টারে দিয়েছি। 
১০ এপ্রিল, ২০২৪

গাজাবাসীদের জন্য প্রার্থনার মাধ্যমে ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছে পাকিস্তান
বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের ঈদের জামাতগুলো নিপীড়িত গাজাবাসীদের জন্য প্রার্থনার মাধ্যমে শেষ হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী ছয় মাস ধরে গাজার নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।  ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৩ হাজার ৩৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। অসংখ্য মানুষের মৃত্যু, তীব্র মানবিক সংকট, অনাহার আর দুর্ভিক্ষের ভেতরেই ঈদ এসেছে গাজায়।  ঈদ বার্তায় পাকিস্তান বলেছে, পাকিস্তানের শীর্ষ নেতৃত্ব যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে। গাজায় অবিলম্বে শান্তি নিশ্চিত করতে এবং ফিলিস্তিনিদের সহায়তার ব্যবস্থা করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানায় পাকিস্তান।  দীর্ঘ এক মাস মুসলিম সম্প্রদায়ের রোজা রাখার মাধ্যমে পবিত্র রমজান মাসের সমাপ্তি হয়েছে। রমজান মাস পূর্ণ হওয়াকে উদযাপনের জন্য পালন করা হয় তিন দিনের ঈদ উৎসব। ঈদের নামাজের মাধ্যমে দিনটি শুরু হয় পাকিস্তানে।  ঈদ উৎসব যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করতে সারাদেশে হাজার হাজার পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয় পাকিস্তানে। 
১০ এপ্রিল, ২০২৪

আরব আমিরাতে ঈদুল ফিতর আজ
সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যে বুধবার (১০ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। তাই আমিরাতের সাতটি প্রদেশ জুড়ে ঈদের জামাতের সময় ঘোষণা করা হয়েছে। ঈদের দিন সকাল ৬টা থেকে ৬টা ২৫মিনিটের মধ্যে আমিরাত জুড়ে মসজিদ ও ঈদগাহে জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ঈদের জামাতের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়। জামাতের সময়সূচি আবুধাবিতে ঈদের জামাত সকাল ৬টা ২২মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। আল আইনে সকাল ৬টা ১৫মিনিটে, দুবাইয়ে সকাল ৬টা ২০মিনিটে, শারজাহে সকাল ৬টা ১৭মিনিটে, আজমানে সকাল ৬টা ১৭মিনিটে ফুজাইরাহে সকাল ৬টা ১৪মিনিটে, উম্ম আল কুইনে সকাল ৬টা ১৩মিনিটে এবং রাস আল খাইমাহে সকাল ৬টা ১৫মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের জামাত সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে বড় বড় ঈদগাহ ও মসজিদগুলোতে স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আবুধাবি শেখ জায়েদ গ্রান্ড মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। এরপর আবুধাবির আল মুশরিফ প্যালেসে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশীদ আল মাখতুম দুবাইয়ের আল জাবিল মসজিদে নামাজ আদায় করে জাবিল প্যালেসে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
১০ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১০ দিন চলবে না মৈত্রী ট্রেন
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১০ দিন চলবে না দু’বাংলায় চলাচলকারী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস। রোববার (৭ এপ্রিল) থেকে বুধবার  (১৭ এপ্রিল) পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ঢাকা-কলকাতা চলাচলকারী যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দর্শনা আর্ন্তজাতিক রেল স্টেশনের ম্যানেজার মির্জা কামরুল হক। ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ) ঢাকা-কলকাতার মধ্যে যাত্রা শুরু করেছিল একমাত্র যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস। সে সময় দু’দেশের সীমান্তবর্তী দর্শনা ও গেঁদে রেলস্টেশনে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন-কাস্টমস করা হতো। এরপর যাত্রীদের যাত্রা সময় কমানোর জন্য দু’দেশের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে  ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সীমান্তবর্তী স্টেশন দর্শনা ও গেঁদের পরিবর্তে স্ট্যাটিং পয়েন্ট অর্থ্যাৎ ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট ও কলকাতার চিতপুর স্টেশন থেকে করা শুরু হয়। যাত্রীদের ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সম্পন্ন করে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ছাড়ে ট্রেনটি। এরপর সীমান্তবর্তী দেশের সর্বশেষ স্টেশন চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় পৌঁছায় দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটে। দর্শনা স্টেশনে ২০ মিনিট যাত্রা বিরতি করে কেবলমাত্র ইঞ্চিন, গার্ড, ক্রু পরিবর্তন ও যাত্রীদের বুফে খাবার সরবরাহের জন্য। এ ছাড়াও ঈশ^রদী স্টেশনে ১৫ মিনিট দাঁড়ায় ওয়াটারিংয়ের জন্য। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের নদীয়া জেলার গেঁদে স্টেশনে ১০ মিনিট দাঁড়ায়। এ সময় গেইট লক থাকে ট্রেনটি। কোথাও কেউ উঠতে-নামতে পারে না। বুফের খাবার ট্রেনের মধ্যেই সরবরাহ করা হয়। বৃহস্পতিবার বাদে সপ্তাহে ৬ দিন ঢাকা-কলকাতার মধ্যে চলাচল করে ট্রেনটি। অর্থ্যাৎ রবিবারে ঢাকা থেকে কলকাতায় যাবে, ফিরে সোমবার। মঙ্গল, বুধ, শুক্র ও শনিবার দুটি করে ট্রেন চলাচল করে। এ দিনগুলোতে ঢাকা থেকে একটি যায় এবং আরেকটি কলকাতা থেকে আসে। কেবল বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে মেত্রী ট্রেন।  মৈত্রীর বহরে রয়েছে ১০টি কোচ। সব কোচগুলোই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মৈত্রীর প্রতিটি যাত্রায় গড়ে ৪’শ যাত্রী আসা-যাওয়া করে থাকেন। যাত্রা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ যাত্রী আসা-যাওয়া করেছেন। বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যাত্রীরা এ ট্রেনে ভ্রমণ করেন। ঢাকা থেকে কলকাতা ৫৩৮ কিলোমিটারের রেলপথে এসি কেবিন ভাড়া ৪ হাজার ৯০০ টাকা, এসি চেয়ারের ভাড়া ৩ হাজার ৬০০ টাকা। তবে ১ থেকে ৫ বছরের শিশুদের জন্য ৫০শতাংশ ছাড় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অনুসারে বয়স নির্ধারিত হবে।  সিঙ্গেল কেবিনে ৩টি সিট ও ডাবল কেবিনে ৬টি সিটের টিকিট দেওয়া হয়। শুধুমাত্র কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে মৈত্রী ট্রেনের টিকিট কাটা যাবে। এ সময় ভিসাসহ পাসপোর্টের মূল কপি দেখাতে হবে। সপ্তাহে সাতদিন কাউন্টার খোলা থাকে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। অনলাইনে মৈত্রী ট্রেনের টিকিট দেওয়া হয় না। 
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদেরে কেনাকাটা / রাতেও চট্টগ্রামের টেরিবাজারে উপচে পড়া ভিড়
ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন মার্কেট। পিছিয়ে নেই নগরীর টেরিবাজারও। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ মার্কেটে কেনাকাটা করছেন অভিজাত গ্রাহকেরা। পাশাপাশি গজ কাপড়ের দোকানগুলোতে চলছে জমজমাট বেচাকেনা। দিনের চেয়ে রাতে ক্রেতাদের ভিড় যেন বেশি। এদের মধ্যে নারী ও তরুণীদেরই সর্বাধিক উপস্থিতি। শনিবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার পর থেকে এমন চিত্র দেখা গেছে নগরের টেরিবাজারে। শাড়ি, লেহেঙ্গা, শার্ট, পাঞ্জাবি, ছোটদের পোশাকসহ পরিবারের সবার পরিধানসামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে এ বাজারে। এক সময় পাইকারি বাজারের জন্য বেশ পরিচিতি পেলেও এখন টেরিবাজার নগরের অভিজাত ক্রেতাদের ঠিকানা হয়ে উঠছে। দেশি-বিদেশি নিত্যনতুন ডিজাইনের দামি পোশাক পরিচ্ছেদ মিলছে এখানে। টেরিবাজারের ভেতরে মেগামার্ট, বিনয় ফ্যাশন, মনে রেখ, আজমির শপিং সেন্টার, রাজপরি, রাজমুকুট, মায়াবী শপিংমল, সানা ফ্যাশন মল, মাসুম ক্লথ স্টোর, নিউ রাজপরি, সেলিম পাঞ্জাবি, রাজকুমারী শপিংমল, রাজস্থান, আরএক্স সুজ, পরশমণি, গুলশান শাড়ি মিউজিয়াম, আলমগীর ব্রাদার্সসহ প্রায় প্রতিটি বড় শোরুমে দেখা গেছে ক্রেতার ভিড়। এর বাইরে মূল সড়কের মল টোয়েন্টিফোর, খাজানা, শৈল্পিক, ব্লু মুন, অলটেক্স মলসহ বেশ কিছু বড় শোরুমে দেখা গেছে স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদের কেনাকাটা করছেন নানা বয়সী মানুষ। ত্রিপিসের দোকানে কথা হয় বিক্রয়কর্মী সাজ্জাদ হোসের সঙ্গে। তিনি বলেন, ক্যাটালগ অনুযায়ী সব ত্রিপিস আছে টেরিবাজারে। শুরুর দিকে পাইকারি বিক্রি করলেও ১৫ রমজানের পর থেকে খুচরা বিক্রি করছি আমরা। টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল হক কালবেলাকে বলেন, টেরিবাজারে শতাধিক বিপণিকেন্দ্রে দেড় হাজারের মতো দোকান ও শোরুম রয়েছে। থানকাপড়ের পাশাপাশি এখন বেশ কিছু অভিজাত শোরুম গড়ে উঠেছে। ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে সব ধরনের পণ্যসামগ্রী তোলা হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানে।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

যেভাবে ঈদ করতেন রাসুল (সা.) ও সাহাবিরা
মুসলমানদের জন্য রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস পবিত্র রমজান। এ মাসে শত কষ্ট সহ্য করেও মুসলমানরা রোজা পালন করেন। মহান আল্লাহ তার বান্দার এ ত্যাগের প্রতিদান ঈদুল ফিতরের দিন দেন বলে বর্ণিত হয়েছে। তাই রমজান মাসের প্রতিটি দিনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ শাওয়াল মাসের প্রথম দিন তথা ঈদুল ফিতরের দিন। এ দিনটি হযরত মুহাম্মদের (সা.) কাছেও বিশেষ গুরুত্ববহ ছিল। তিনি এ দিনে বিশেষ কিছু কাজের মাধ্যমে অতিবাহিত করতেন। এসব কাজ তার উম্মতদেরও করার উপদেশ বা কোনো ক্ষেত্রে নির্দেশ দিয়েছেন প্রিয় নবী। যেভাবে ঈদ উদ্যাপন করতেন আল্লাহর রাসুল (সা.) পৃথিবীতে মুসলমানদের জন্য জান্নাতি সুখের নমুনা হিসেবে ঈদকে গণ্য করা হয়। এ দিন আল্লাহর রহমতের স্মরণ করে তাকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কীভাবে ঈদের দিন উদ্যাপন করতেন তা বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এ সংক্রান্ত বর্ণনা সহীহ বুখারি, সুনান বায়হাকী, সুনান আবু দাউদ, সহিহ মুসলিমসহ সব প্রখ্যাত হাদিস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে। ঈদের দিনে রাসুল (সা.)-এর কর্মযজ্ঞ সম্পর্কে সুনান বায়হাকীতে ইবনে উমর (র.) থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, নবীজী ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদগাহে যাওয়ার আগে গোসল করতেন। (হাদিস ৫৯২০) হযরত আলী (র.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, সুন্নাত হলো ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া। উভয় পথের লোকদের সালাম দেওয়া এবং ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য যে পথে যাবে সে পথে না ফিরে অন্য পথে ফিরে আসা। (সুনান আত-তিরমিযী : ৫৩৩) নবীজী যে এ কাজ করতেন তা অনেক স্থানে বলা হয়েছে। যেমন বর্ণিত হচ্ছে, মহানবী (সা.) ঈদের দিনে পথ বিপরীত করতেন। (সহিহ বুখারি : ৯৮৬) অর্থাৎ, তিনি যে পথ ধরে ঈদগাহে যেতেন সে পথে না ফিরে অন্য পথে ফিরে আসতেন। ঈদের দিন বিশ্বনবী (সা.) যেসব কাজ করতেন ঈদের দিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ঈদের নামাজ আদায় করা। মহানবীর কাছ থেকেই এ শিক্ষা মুসলিম উম্মাহ পেয়েছে।  সহীহ বুখারিতে ইরশাদ হয়েছে, হযরত মুহাম্মদ (সা.) দিনে বের হয়ে দুই রাকাত ঈদের সালাত আদায় করেছেন। (সহীহ বুখারি : ৯৮৯) এর আগে ঈদের নামাজের জন্য বের হওয়ার আগে তিনি খাবার গ্রহণ করতেন। বুরাইদা (র.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, প্রিয় নবী (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না। এ খাবারের তালিকায় মিষ্টিজাতীয় খাদ্যদ্রব্য থাকত। বিভিন্ন হাদিসে এ বর্ণনাও পাওয়া গেছে। ইবনুল কায়্যিম (রা.) বলেছেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই ঈদেই ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সর্বোত্তম পোশাক পরিধান করতেন। (যাদুল মায়াদ) এ ছাড়া রাসুল (সা.) ঈদের দিন মিসওয়াক করতেন, সুগন্ধি ব্যবহার করতেন, সকাল সকাল ঈদগাহে যেতেন, ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার আগে সদকায়ে ফিতর আদায় করতেন, পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যেতেন এবং এ সময় তিনি নিচু স্বরে তাকবির পড়তেন। সাহাবীরা ঈদের দিন যা করতেন হযরত মুহাম্মদের (সা.) এর প্রকৃত অনুসারী ছিলেন সাহাবীরা। তারা হযরত মুহাম্মদ (সা.) যা করতেন তাই অনুকরণের চেষ্টা করতেন। ঈদের দিনও তারা নবীজীকে অনুসরণ করতেন। নবীজীর দেখানো তরিকায় ঈদ উদযাপন করতেন সাহাবীরা। সাহাবীরা যে রাসুলের (সা.) সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতেন তার একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। আবদল্লাহ বিন সায়েব (র.) থেকে বর্ণিত, ‘আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করলাম। যখন তিনি ঈদের সালাত শেষ করলেন, বললেন, আমরা এখন খুতবা দেব। যার ভালো লাগে সে যেন বসে, আর যে চলে যেতে চায় সে যেতে পারে।’ (সুনান আবু দাউদ : ১১৫৭) এ ছাড়া ঈদের সময় বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেওয়া ও তাদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার বিশেষ সুযোগ তৈরি হয়। এটিও কাজে লাগাতেন সাহাবীরা। এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহু (স.) বলেছেন, ‘যে আখেরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে।’ (সহিহ বুখারি : ৬১৩৮) এক বর্ণনায় পাওয়া যায়, সাহাবীরা ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’ অর্থাৎ মহান আল্লাহ আমাদের ও আপনার ভালো কাজগুলো কবুল করুন- এ বাক্যের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন। আগেই বলা হয়েছে পবিত্র রমজান মাস গুনাহ মাফের উত্তম সময়। এরই প্রতিদান মেলে ঈদের দিন। সাহাবীরা এ দিনটিতে আনন্দের পাশাপাশি ভীত থাকতেন।  তারা ভাবতেন, তাদের গুনাহ মাফ হলো কি না; আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট হলেন কি না। এ কারণেই হজরত ওমর ফারুক (রা.) ঈদুল ফিতরের নামাজে ইমামতি করতে অস্বীকৃতি জানাতেন। তিনি তার গুনাহ মাফ হলো কি না সে চিন্তায় আতঙ্কগ্রস্ত থাকতেন।  বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী, সাহাবীরা সাধ্যমতো নতুন জামা পরতেন। তবে এ নিয়ে খুব বেশি হৈ-হুল্লোড় ছিল না।  তারা মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্যে থাকতে পারাটাই আনন্দের মনে করতেন। বোঝাই যাচ্ছে, রমজান মাস শেষ হয়েছে মনে করে আবার উচ্ছৃংখল জীবনে ফিরে যাওয়া কাম্য নয়। কারণ, রমজান মাসে যা অর্জন করা গেল তা হাতে পাওয়ার মাস শাওয়াল। ঈদের চাঁদ আকাশে উদীত হওয়ার পর থেকেই আল্লাহর পক্ষ থেকে এ পুরস্কার প্রদান শুরু হয়।
০১ জানুয়ারি, ১৯৭০
X