অংকে ফেল করায় গলায় ফাঁস নিল কিশোরী
এসএসসি পরীক্ষায় অংকে ফেল করায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে নোয়াখালীর এক কিশোরী। রোববার (১২ মে) দুপুর সোয়া ১টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সল্যা ঘটাইয়া গ্রামের কালিতারা বাজার সংলগ্ন আলী আজম বেপারির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। একই দিন রাত সোয়া ৯টার দিকে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।   মৃত তানজিনা আক্তার ঝুমি (১৬) নোয়াখালী পৌরসভার সল্যা ঘটাইয়া গ্রামের মো. আব্দুল করিমের মেয়ে। সে স্থানীয় কালিতারা মুসলিম গার্লস একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফখরুদ্দিন মাহমুদ বলেন, রোববার বেলা ১১টার দিকে তানজিনার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। সে গণিত বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় দুপুর সোয়া ১টার দিকে পরিবারের সদস্যদের অজান্তে বসতঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। ওই সময় তার মা রান্নাঘরে কাজে ব্যস্ত ছিল। পরে তিনি ঘরে এসে মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন।  সুধারাম থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কোনো অভিযোগ না থাকায় গণস্বাক্ষর নিয়ে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
১২ মে, ২০২৪

নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টার
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হবে ২০২৫ সালে। পরীক্ষায় মোট ১০টি বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। এই মূল্যায়ন হবে দুইভাবে—একটি কার্যক্রমভিত্তিক এবং অন্যটি লিখিত পরীক্ষা। কার্যক্রম বলতে বোঝানো হয়েছে—অ্যাসাইনমেন্ট করা, উপস্থাপন, অনুসন্ধান, প্রদর্শন, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি। লিখিত অংশের প্রশ্নপত্র হবে কার্যক্রমের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল রেখে। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে আলাদা পরীক্ষা কেন্দ্রে। প্রতিটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে বিরতিসহ ৫ ঘণ্টা। তবে, লিখিত অংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক অংশের জন্য সময় কত হবে, তা বিষয়ের চাহিদা অনুযায়ী ঠিক করা হবে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনেই হবে এসএসসি পরীক্ষা। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তৈরি করা ‘২০২৫ এর দশম শ্রেণি শেষে পাবলিক মূল্যায়ন/ পরীক্ষা’ সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। কমিটি এই সুপারিশ শিক্ষামন্ত্রীর কাছে দেবে। তারপর জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় তা অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান কালবেলাকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পাবলিক পরীক্ষা কীভাবে হবে, সে সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি করে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে ৫ ঘণ্টার পরীক্ষার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটি কিছু পরিবর্তন করতে চাইলে তাও যোগ হবে। লিখিত মূল্যায়নের গড় ভারিত্ব ৫০ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের গড় ভারিত্ব ৫০ শতাংশ রাখার কথা বলা হয়েছে। নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে কোনো নম্বর থাকবে না। মূল্যায়নে আলাদাভাবে সাতটি স্কেলে ফল প্রকাশিত হবে। সেগুলো কার্ডে নির্ধারিত ছকে উল্লেখ করা হবে। এ বিষয়ে কমিটির প্রধান ও শিক্ষা মন্ত্রণায়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে প্রস্তাবকৃত সুপারিশগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচাই-বাছাই চলছে। এরপর বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে শিগগিরই তা আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেওয়া হবে। বর্তমানে প্রাথমিকে প্রথম থেকে তৃতীয় এবং ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে অধ্যয়ন করছে। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে এই শিক্ষাক্রম চালু হবে। বর্তমানে যারা নবম শ্রেণিতে পড়ছে তারা নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রথমবারের মতো এসএসসি পরীক্ষা দেবে। এসএসসি পরীক্ষার জন্য সার্বিক আয়োজনের অংশ হিসেবে বিষয়ভিত্তিক ৬০০ শিক্ষকের সমন্বয়ে রিসোর্সপুল (বিশেষজ্ঞ দল) গঠন করা হবে। তাদের বোর্ডের আয়োজনে এনসিটিবির বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে সাত দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আর ১১টি শিক্ষা বোর্ডের প্রতিটির জন্য প্রতি বিষয়ে চারজন করে মোট ৪৪ জন শিক্ষককে চূড়ান্ত করা হবে। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণয়ন করা বইগুলো লিখিত পরীক্ষার উপযোগী কি না, সেটি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। নতুন এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় শিক্ষকরা প্রস্তুত কি না, তা ভেবে দেখে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টার
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসি ও সমমানের প্রথম পরীক্ষা হবে ২০২৫ সালে। নতুন শিক্ষাক্রমের পাবরিক পরীক্ষা কীভাবে হবে তা নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা। এজন্য এসএসসির মূল্যায়ন পদ্ধতি ঠিক করতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই কমিটি এসএসসিতে ৫০ শতাংশ লিখিত পরীক্ষা রাখাসহ পাঁচ দফা সুপারিশ প্রস্তুত করেছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- লিখিত মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ আর কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়ন হবে ৫০ শতাংশ। এই পাবলিক পরীক্ষায় মোট ১০টি বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। পরীক্ষা হবে মোট পাঁচ ঘণ্টার। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তৈরি করা ‘২০২৫ এর দশম শ্রেণি শেষে পাবলিক মূল্যায়ন বা পরীক্ষা’-সংক্রান্ত প্রতিবেদন এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার (২২ এপ্রিল) মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে এনসিটিবিতে একটি বৈঠক করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই কমিটি। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান কালবেলাকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পাবলিক পরীক্ষা কীভাবে হবে, এর জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে পাঁচ ঘণ্টার পরীক্ষার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটি সেই সুপারিশ রাখলে পাঁচ ঘণ্টার পরীক্ষাই থাকবে। আর কিছু পরিবর্তন করতে চাইলে সেটি যোগ হবে। জানা গেছে, আগামী বছর দশম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা মোট ১০টি বিষয় পড়বে। বিষয়গুলো হলো—বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, ধর্মশিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি। এই পাঠ্যসূচির ওপর অনুষ্ঠিত হবে পাবলিক পরীক্ষা। পরীক্ষায় কীভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে, তা নিয়ে প্রতিবেদনে একটি রূপরেখা দেওয়া আছে। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বিষয়ের চাহিদা ও যোগ্যতা অনুযায়ী প্রকল্পভিত্তিক কাজ, সমস্যা সমাধান, অ্যাসাইনমেন্ট ইত্যাদির পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। মূল্যায়নে অনুসন্ধান, প্রদর্শন, মডেল তৈরি, উপস্থাপন, পরীক্ষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয় থাকবে। এসএসসির লিখিত পরীক্ষার বিষয়ে কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যোগ্যতা ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের পাশাপাশি লিখিত (পরীক্ষা) মূল্যায়ন রাখা যেতে পারে। এছাড়া, আন্তঃসম্পর্ক বজায় রেখে লিখিত মূল্যায়নের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ রাখার কথা বলা হয়েছে। পরীক্ষার মান ও মূল্যায়নে নিরপেক্ষতা যাতে বজায় রাখা যায়, সে জন্য লিখিত মূল্যায়নে বর্তমান পাবলিক পরীক্ষার মতো খাতা ব্যবহার করা হবে। আর পরীক্ষা শেষে একযোগে ফল প্রকাশ করবে শিক্ষা বোর্ডগুলো। একইসঙ্গে স্কুলভিত্তিক ষান্মাসিক (ছয় মাস) ও বার্ষিক মূল্যায়ন এবং পাবলিক মূল্যায়ন একই পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য ‘নৈপুণ্য’ অ্যাপস হালনাগাদ করা, চূড়ান্ত মূল্যায়নে সনদ/ট্রান্সক্রিপ্টের সাত পর্যায়ের স্কেলে যোগ্যতা এবং পারদর্শিতার সূচক অভিভাবক ও অংশজনদের অবহিত করারও সুপারিশ করেছে কমিটি। এসএসসি পরীক্ষা নেওযার সার্বিক আয়োজনের জন্য বিষয়ভিত্তিক ৬০০ শিক্ষকের সমন্বয়ে রিসোর্সপুল (বিশেষজ্ঞ দল) গঠন করা হবে। প্রথমে তাদের বোর্ডের আয়োজনে এনসিটিবির বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে সাত দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আর ১১টি শিক্ষা বোর্ডের প্রতিটির জন্য প্রতি বিষয়ে চারজন করে মোট ৪৪ জন শিক্ষককে চূড়ান্ত করা হবে। এ বিষয়ে কমিটি প্রধান ও শিক্ষা মন্ত্রণায়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে বেশি কিছু সুপারিশ রয়েছে। এগুলো এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচাইবাছাই চলছে। এরপর বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে শিগগিরই প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেওয়া হবে। নতুন শিক্ষাক্রম গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে বাস্তবায়ন করা হয়। আর চলতি বছর বাস্তবায়ন করা হয় দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। এরপর ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে এই শিক্ষাক্রম চালু হবে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের দুই পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হয়। এর একটি বছরজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিখনকালীন মূল্যায়ন, অন্যটি বছর শেষে সামষ্টিক মূল্যায়ন। শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা নেই। এ তিন শ্রেণিতে হবে শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন। আর চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৫টি বিষয়ে কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে। গত ৫ মার্চ গঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোহাম্মদ খালেদ রহীমকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চপর্যায়ের কমিটির প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।   
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

ঝালকাঠিতে এসএসসি পরীক্ষা শেষে কেন্দ্রে ব্যাপক ভাঙচুর করল পরীক্ষার্থীরা
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার শেষ দিনে কেন্দ্রে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে উল্লাস করেছে একদল  ছাত্র। তারা সবাই ওই কেন্দ্রেরই পরীক্ষার্থী। রোববারের (১০ মার্চ) বিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা শেষে দুপুর একটার পর এ তাণ্ডব চালায় তারা। ঘটনাটি ঘটেছে ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে। হামলাকারীরা মেয়েদের স্কুলটির ফ্যান, শৌচাগারের দরজা, কমোড ও বৈদ্যুতিক লাইটসহ অন্যান্য শ্রেণি-সরঞ্জাম ভাঙচুর করে। এতে স্কুলের লক্ষাধিক টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে। এ সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পাওয়া যাচ্ছে।  সরেজমিন দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দোতলায় ২০৩ নম্বর কক্ষে ঝালকাঠি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ১৫ জন এবং উদ্বোধন বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ওই কক্ষের চারটি বৈদ্যুতিক পাখা, তিনটি টিউবলাইট এবং কক্ষ সংলগ্ন প্রসাধন রুমে ছয়টি শৌচাগারের দরজা, ফ্লাশ প্যান, কমোড ভাঙচুর করা হয়েছে। অপরদিকে ২০৫ নম্বর কক্ষে ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৬ জন এবং পৌর আদর্শ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ওই কক্ষের দুটি বৈদ্যুতিক পাখা এবং দুটি টিউবলাইট ভাঙচুর করে তারা। কেন্দ্র সচিব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা এএসএম মাসুম বিল্লাহ। তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই বলব না। যা বলার প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিব বলবেন।’ কেন্দ্র সচিব এবং ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ছুটিতে আসছি। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছেন মাসুম বিল্লাহ। ভাঙচুরের ঘটনা শুনেছি।’ বিদ্যালয়ের কর্মচারী (আয়া) মাকসুদা বেগম বলেন, পরীক্ষা শেষ হলে পরীক্ষার্থীরা হৈ হুল্লোড় করে নেমে যায়। পরে রুম পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখি সব ভাঙাচোরা। তখন স্যাররাও দায়িত্ব পালন শেষ করে চলে গেছেন। ঝালকাঠির সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে ওই স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান আহম্মেদ বলেন, হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রটিতে সাড়ে ৫০০ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। সবাই আমার স্কুলের ছাত্র নয়। কিছু মেয়ে পরীক্ষার্থীও পরীক্ষা দিয়েছিল। আর এই বিষয়টি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয় বা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আমাকে জানায়নি। তারপরও ঘটনার তদন্তে যদি আমার স্কুলের ছাত্ররা দোষী প্রমাণিত হয় তবে আমি অভিভাবক ও কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ঝালকাঠি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয় ও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি, গুরুত্বসহকারে দেখছি।’
১১ মার্চ, ২০২৪

মেম্বার হয়েও দিচ্ছেন এসএসসি পরীক্ষা
এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শিক্ষার কোনো বয়স নেই- এ কথাটিই আবারও প্রমাণ করলেন ৩ নারী জনপ্রতিনিধি। অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় এবং পারিবারিক অসচ্ছলতায় পড়াশোনা থমকে যায় তাদের। তীব্র ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি তাদের। তবে, জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর নানাভাবে উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন তারা। তাই, দীর্ঘদিন পর স্বামী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের অনুপ্রেরণায় আবারও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বয়সকে তুচ্ছ করে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয় বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণিতে। আর এ বছর কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তারা ৩ জনই। এই বয়সে এসে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৩ নারী জনপ্রতিনিধি পরীক্ষার্থীদের বাড়ি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায়। তারা বাগাতিপাড়া পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মুর্শিদা বেগম, পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য শিলা খাতুন এবং একই ওয়ার্ডের সাবেক সংরক্ষিত নারী সদস্য শাহানাজ পারভীন। তারা সবাই বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের কারিগরি শাখার শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শিলা খাতুন কারিগরি শাখার ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন ট্রেডে এবং অপর দুইজন ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডের পরীক্ষার্থী। এই ৩ নারী জনপ্রতিনিধি জানান, পারিবারিক অসচ্ছলতায় অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায় তাদের। পরে সংসার জীবন শুরু। তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও লেখাপড়া করা হয়ে উঠেনি। তবে অনেক পরে হলেও পরিবারের সমর্থনে পড়াশোনা চালিয়ে নিতে পাড়ায় খুশি তারা। এছাড়াও তারা মনে করেন জনপ্রতিনিধিদের শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ৩ নারী ইউপি সদস্যের লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। বয়স যে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা হতে পারে না এই তিন জনপ্রতিনিধিকে তার দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা। স্থানীয় শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষা প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। অদম্য এ ধরনের উদাহরণ সমাজের জন্য খুবই ইতিবাচক। এই ৩ জনপ্রতিনিধির এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া দেখে সাধারণ মানুষ লেখাপড়ায় আরও অনুপ্রাণিত হবে বলেও মনে করেন তারা।
০৩ মার্চ, ২০২৪

২৬ সালের এসএসসি নিয়ে ধোঁয়াশায় শিক্ষাবোর্ড
নতুন শিক্ষাক্রমে নতুন আঙ্গিকে ২০২৬ সালে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষা পদ্ধতি কেমন হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ওই বছর শুধু দশম শ্রেণির সিলেবাসের ওপরই পরীক্ষা হবে বলে জানিয়ে আসছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।  বিষয়টি নিয়ে শুধু শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক নয় ধোঁয়াশায় রয়েছেন খোদ শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তারাও।  শিক্ষা বোর্ড বলছে, পরীক্ষা পদ্ধতি, সিলেবাস কেমন হবে— তা ঠিক করে দেবে এনসিটিবি। সেগুলো চূড়ান্ত কাঠামো পেলে প্রশ্নপত্র প্রণেতা ও পরীক্ষকসহ পরীক্ষা গ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘এনসিটিবি কাঠামো চূড়ান্ত করে দিলে আমরা প্রস্তুতি শুরু করবো। নতুন পদ্ধতিতে অভ্যস্ত করতে পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ১১টি শিক্ষা বোর্ড নিজ নিজ উদ্যোগে এটা করবে।’ এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নতুন পদ্ধতির এসএসসি পরীক্ষার খসড়া মডেল আমরা প্রস্তুত করেছি। সেটা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। মন্ত্রী শিক্ষা বোর্ডগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার নির্দেশনা দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘মার্চ মাস থেকে বোর্ডগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আমরা বসব। খসড়া মডেলটি উপস্থাপন করে তাদের মতামত চাওয়া হবে। সব ঠিক থাকলে তা চূড়ান্ত করা হবে।’ জানা গেছে, চলতি বছর নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে। ২০২৫ সালে তারা দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়বে। এরপর ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় শুধু দশম শ্রেণির ১০টি বিষয়ের ওপর মূল্যায়ন বা পরীক্ষায় অংশ নেবে। ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১’-এর রূপরেখা অনুযায়ী- নতুন শিক্ষাক্রমে প্রতিটি বিষয়ের ৫০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন ও ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন বা পরীক্ষার মাধ্যমে হবে।  
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন মোটরসাইকেল শোডাউন
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রের সামনে দিয়ে মোটরসাইকেল শোডাউন করেছে ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সরদার। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষারত অভিভাবকরা। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা চলাকালীন সময় ক্ষেতলাল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রের সামনে এ ঘটনা ঘটে। শোডাউনে প্রায় দেড় হাজার মোটরসাইকেল এবং দুই শতাধিক অটোরিকশা ছিল বলে জানা গেছে। এ সময় শত শত মোটরসাইকেল থেকে তীব্র সাইরেন, হর্ন ও মাইক বাজানো হয়। যার ফলে ওই কেন্দ্রের পরীক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। এ সময় কেন্দ্রের সামনের পুরো রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরীক্ষা চলাকালীন সময় এমন অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থী, কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও বাইরে অবস্থানরত অভিভাবকরা।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পরীক্ষার্থী বলেন, আমরা পরীক্ষা দেওয়ার সময় বাইরে প্রচণ্ড সাইরেন ও হর্নের শব্দ হচ্ছিল। যার ফলে আমরা মনোযোগ হারিয়ে ফেলি। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। কেন্দ্রের বাইরে অবস্থানরত কয়েকজন অভিভাবক বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন আমরা কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করছিলাম। এমন সময় রাস্তায় দেখি এক চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজার হাজার মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা নিয়ে তীব্র সাইরেন, মাইক ও হর্ন বাজিয়ে আসছেন। পরীক্ষা চলাকালীন সময় এমন কাণ্ড যারা করে তারা চেয়ারম্যান হয়ে কী উপকার করবে? আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।  এ বিষয়ে ক্ষেতলাল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রের হল সুপার (ভোকেশনাল) ও জিএম কিবরিয়া বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন বাইরে তীব্র সাইরেন ও মাইকের শব্দ শুনেছি। শুনলাম কোনো এক নেতা শোডাউন দিচ্ছে। এতে পরীক্ষার্থীরা মনোযোগ হারিয়ে ফেলে। আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা চাইলে পরীক্ষার পর শোডাউনটি দিতে পারত। এটা যারা করেছে তারা অন্যায় করেছে। চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল মিয়া সরদার মুঠোফোনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কেন্দ্রের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সব সাইরেন বন্ধ করা হয়েছিল। কোনো শব্দ হয়নি। এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, শোডাউনের বিষয়ে আমাদের থেকে তিনি কোনো অনুমতি নেননি। এজন্য পূর্ব থেকে এ বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফতাবুজ্জামান আল ইমরান বলেন, আমি বিষয়টি জানি না, আপনার থেকেই শুনলাম।
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

জন্মের পরেই প্রতিবন্ধী / হুইলচেয়ারে বসে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন হালিমা
এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জন্মের পর থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধীতে পরিণত হওয়া হালিমা খাতুন। মফিজ উদ্দিন তালুকদার স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হালিমা জামতৈল ধোপাকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বিশেষ কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছেন। তিনি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার আলোকদিয়ার পূর্বপাড়ার প্রান্তিক কৃষক হামিদুল ইসলামের মেয়ে। হালিমার মা শহিদা খাতুন বলেন, জন্মের ছয় মাস পর থেকে তার শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়। দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সবার বড় হালিমা। নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে চিকিৎসা করানোর পরও তার শরীরের খুব একটা উন্নতি দেখা যায়নি। একপর্যায়ে সে ক্রমাগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধীতে পরিণত হয় । নিয়মিত প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ না করার ফলে এখনও প্রায় সময়ই হালিমাকে রক্ত দিতে হয়। আর শ্বাসকষ্ট তো আছেই। পরিবারের সদস্যসহ প্রতিবেশীরা হালিমাকে লেখাপড়া করাতে নিষেধ করলেও আমি ছোট থেকেই তাকে পড়াশোনা করিয়ে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। হালিমা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ভালো ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়েছিল। মহান আল্লাহ চাইলে এসএসসিতেও সে ভালো ফলাফল করে উত্তীর্ণ হবে। অদম্য হালিমা খাতুন বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার লেখাপড়ার খুব ইচ্ছা। আমার মা আমাকে হুইলচেয়ারে করে স্কুলে নিয়ে যান আবার নিয়ে আসেন। মায়ের কারণেই আমি এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। পাশাপাশি আমার স্কুলের শিক্ষকরাও আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। আমার ইচ্ছা আমি লেখাপড়া করে সুশিক্ষিত হয়ে দেশের অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখতে চাই। মফিজ উদ্দিন তালুকদার স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) নুরুল আলম বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে হালিমা আমাদের স্কুলে পড়ছে। শারীরিক সমস্যার কারণে সে নিয়মিত স্কুলে আসতে না পারলেও লেখাপড়ায় সে অনেক ভালো শিক্ষার্থী। মানবিক বিভাগ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে হালিমা। আমি তার সফলতা কামনা করছি। পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব আব্দুল মান্নান বলেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পরীক্ষার্থী হালিমাকে বিশেষ একটি কক্ষে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক তার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ পরীক্ষার্থীদের চেয়ে তাকে ২০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে। হালিমার এই অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হবে।
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বাবার লাশ বাড়ি রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল ছেলে
দিনাজপুরের বীরগঞ্জের এসএসসি শিক্ষার্থী রুবাইয়াত আলম। মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মাহানপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে অংশগ্রহণ করছে সে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নের রহিম বখস উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা। কিন্তু বুধবার রাতে হঠাৎ করে তার বাবা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সফিউল আলম সুরুজ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই মারা যান। পরদিন দুপুরে দাফনের সিদ্ধান্ত হলে মৃত্যু শোকে কাতর রুবাইয়াতকে বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। মাহানপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, রুবাইয়াত মেধাবী ছাত্র। পরীক্ষার এক দিন আগে বাবার মৃত্যুতে পুরো পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তার এ কঠিন সময়ে আমরা সান্ত্বনা দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে সাহস জুগিয়েছি। নিজেকে সামলে নিয়ে পরীক্ষার প্রথম দিনে বাংলা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। পরীক্ষায় সে ভালো করবে আশা করছি। মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোপাল দেবশর্ম্মা বলেন, শফিউল আলম সুরুজ ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবেও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। হঠাৎ মৃত্যুতে তার জানাজা বিকেলে ৩টায় হয়। বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই সকালে ছেলে রুবাইয়াতকে এসএসসি পরীক্ষায় বসতে হয়েছে। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টায়ও হদিস ছিল না প্রশ্নপত্রের
সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও শুরু হয়েছে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা। প্রথম দিনেই অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের একটি কক্ষে আধা ঘণ্টা দেরিতে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে উত্তরপত্র নিয়ে নেওয়া হয় ঠিক সময়েই। এর ফলে ওই শিক্ষার্থীরা সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। পরে এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানালে তিনি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের আধা ঘণ্টা সময় বাড়িয়ে দিয়ে পুনরায় পরীক্ষা নেন। এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে ওই কক্ষে দায়িত্ব পালন করা দুই পর্যবেক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রামের কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে।  জানতে চাইলে কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে ১ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৩০৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এত পরীক্ষার্থীর মধ্যেও অন্য কোনো কক্ষে সমস্যা হয়নি। শুধু একটি কক্ষে দুই পর্যবেক্ষকের ভুলে ৪০ জন পরীক্ষার্থীকে দেরিতে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। আমি বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যাতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সেই উদ্যোগ নিই। তাদের আধাঘণ্টা সময় বাড়িয়ে দিই। তারা ঠিকঠাকভাবে পরীক্ষা শেষ করেছে।’ দুই পর্যবেক্ষকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঠিক সময়ে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেছি, ঠিক সময়ে বেলও বাজানো হয়েছে। একই বেলে যদি পুরো কেন্দ্র চলে তাহলে একটি কক্ষে কেন সমস্যা হবে? ওই দুই শিক্ষককে তাৎক্ষণিকভাবে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব দেওয়ার পরপরই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X