কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
জন্মের পরেই প্রতিবন্ধী

হুইলচেয়ারে বসে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন হালিমা

পরীক্ষাকেন্দ্রের বিশেষ কক্ষে মাকে পাশে নিয়ে হুইলচেয়ারে পরীক্ষা দিচ্ছেন হালিমা। ছবি : কালবেলা
পরীক্ষাকেন্দ্রের বিশেষ কক্ষে মাকে পাশে নিয়ে হুইলচেয়ারে পরীক্ষা দিচ্ছেন হালিমা। ছবি : কালবেলা

এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জন্মের পর থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধীতে পরিণত হওয়া হালিমা খাতুন। মফিজ উদ্দিন তালুকদার স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হালিমা জামতৈল ধোপাকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বিশেষ কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছেন।

তিনি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার আলোকদিয়ার পূর্বপাড়ার প্রান্তিক কৃষক হামিদুল ইসলামের মেয়ে।

হালিমার মা শহিদা খাতুন বলেন, জন্মের ছয় মাস পর থেকে তার শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়। দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সবার বড় হালিমা। নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে চিকিৎসা করানোর পরও তার শরীরের খুব একটা উন্নতি দেখা যায়নি। একপর্যায়ে সে ক্রমাগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধীতে পরিণত হয় । নিয়মিত প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ না করার ফলে এখনও প্রায় সময়ই হালিমাকে রক্ত দিতে হয়। আর শ্বাসকষ্ট তো আছেই। পরিবারের সদস্যসহ প্রতিবেশীরা হালিমাকে লেখাপড়া করাতে নিষেধ করলেও আমি ছোট থেকেই তাকে পড়াশোনা করিয়ে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। হালিমা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ভালো ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়েছিল। মহান আল্লাহ চাইলে এসএসসিতেও সে ভালো ফলাফল করে উত্তীর্ণ হবে।

অদম্য হালিমা খাতুন বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার লেখাপড়ার খুব ইচ্ছা। আমার মা আমাকে হুইলচেয়ারে করে স্কুলে নিয়ে যান আবার নিয়ে আসেন। মায়ের কারণেই আমি এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। পাশাপাশি আমার স্কুলের শিক্ষকরাও আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। আমার ইচ্ছা আমি লেখাপড়া করে সুশিক্ষিত হয়ে দেশের অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখতে চাই।

মফিজ উদ্দিন তালুকদার স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) নুরুল আলম বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে হালিমা আমাদের স্কুলে পড়ছে। শারীরিক সমস্যার কারণে সে নিয়মিত স্কুলে আসতে না পারলেও লেখাপড়ায় সে অনেক ভালো শিক্ষার্থী। মানবিক বিভাগ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে হালিমা। আমি তার সফলতা কামনা করছি।

পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব আব্দুল মান্নান বলেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পরীক্ষার্থী হালিমাকে বিশেষ একটি কক্ষে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক তার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ পরীক্ষার্থীদের চেয়ে তাকে ২০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে। হালিমার এই অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বৈঠকের পর মামদানির প্রশংসায় ট্রাম্প

শ্রমিকদের স্বার্থে পাঁচ দফা বাস্তবায়নের আহ্বান শেখ বাবলুর

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মীদের নিয়োগবিধি বাস্তবায়নের দাবি

তারাগঞ্জের কালেক্টরেট বামনদিঘি ইকোপার্ক

ইরাকের সরকার গঠনে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক করল যুক্তরাষ্ট্র

লেবাননে ইসরায়েলি ড্রোন হামলা

আগামী সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনকে শান্তি পরিকল্পনা মানতে হবে: ট্রাম্প

ভেড়ামারায় দুর্বৃত্তের গুলিতে গরু ব্যবসায়ী নিহত

রুয়েট প্রাক্তন ছাত্রদল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি তুষার, সম্পাদক হাবীব

ভূমিকম্পে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ৪১ জন আহত

১০

ক্যারিয়ার শেষে কত উইকেট চান জানালেন তাইজুল

১১

 ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করতে রাজউকের তাৎক্ষণিক পরিদর্শন

১২

মেসিকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যা বললেন ফ্লিক

১৩

গৌহাটি টেস্টের আগে ভারত শিবিরে দুঃসংবাদ

১৪

শনিবার বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

১৫

এই প্রজন্মে অন্ধ আনুগত্য, ভাই পলিটিক্স চলবে না : শিবির সভাপতি

১৬

নাটকীয় জয়ের পরও নিজের ভুলে হতবাক আকবর

১৭

স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান : প্রধান উপদেষ্টা

১৮

নিউমার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ 

১৯

ভূমিকম্পে ছেলের পর এবার চিকিৎসাধীন বাবার মৃত্যু

২০
X