চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ
বেসরকারি হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি ও সেবা কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু করেন চিকিৎসকরা। বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফয়সাল ইকবাল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডা. রক্তিম দাশ ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রিয়াজ উদ্দিন শিবলুর ওপর হামলার ঘটনায় আসামিদের জামিন বাতিল ও অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা প্রাইভেট প্র্যাকটিস, ব্যক্তিগত চেম্বার, বেসরকারি হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নতুন রোগীর সেবা বন্ধ থাকবে। সরেজমিনে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে, দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা এসে ভিড় করছেন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে। রোগী দেখা ও পরীক্ষা বন্ধ এবং নতুন রোগীর ভর্তি বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। চিকিৎসা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের।  নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কথা হয় মিরসরাইয়ের বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহীনুর রহমান মুন্নার সঙ্গে। কালবেলাকে তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে মা অসুস্থ। ওনাকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত দুদিন ধরে ভালোই চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু আজ আমার মায়ের কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। শুনেছি চিকিৎসকরা নাকি কর্মবিরতি পালন করছেন। ল্যাবএইডে চিকিৎসা নিতে আসা চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা নজিবুল কবীর রাহগীর বলেন, কর্মসূচির কথা জানতাম না। ডাক্তার বলেছিলেন ১৫ দিন পর আসতে। আজ ১৬ দিনের মাথায় এসে দেখলাম ডাক্তার বসবে না। এই গরমে আবার বাসায় যেতে হবে। ম্যাক্স হাসাপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ৬০ বছর বয়সী শাহেদা বেগম বলেন, এত গরমে চিকিৎসা নিতে আসলাম। এখন দেখি হাসপাতাল বন্ধ। কখন খুলবে সেটাও বলছে না। আমাদের হয়রানির দায় কে নেবে। আমার চেয়ে যাদের অবস্থা খারাপ তারা কোথায় যাবে। ইমার্জেন্সি ট্রিটমেন্ট কোথায় করাবে। আমরা এর দ্রুত সমাধান চাই। সিএসসিআর হাসপাতালে কর্মরত এক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, স্যারেরা বলে দিয়েছেন আজকে সব চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকবে। আমরা রোগীদের সেটা জানিয়ে দিচ্ছি। এ ছাড়া বন্ধের নোটিশও এখানে দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১০ এপ্রিল পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও ১৪ এপ্রিল নগরীর মেডিকেল সেন্টারে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলা করে রোগীর স্বজনরা। এ ঘটনায় চিকিৎসকদের সংগঠন মানববন্ধন করে। সেই মানববন্ধন থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা চট্টগ্রামের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকদের সংগঠনগুলো।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪

ব্যয় বেড়েছে, দেশে বাড়েনি কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা
দেশে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় অগ্রগতি হলেও বিশেষায়িত সেবা সম্প্রসারণ সম্ভব হয়নি। এখনো ক্যান্সার, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের বিশেষায়িত চিকিৎসা রাজধানীকেন্দ্রিক। ফলে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বর্তমানে স্বাস্থ্য ব্যয়ের তিন-চতুর্থাংশ বহন করতে হচ্ছে ব্যক্তিকে। এটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রস্তাবিত হারের প্রায় তিন গুণ। আর্থিক যে চাপ বাড়ছে, সেটা সামলাতে হিমশিম খেয়ে অনেকে পূর্ণ চিকিৎসা গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করছেন। এতে রোগ আরও জেঁকে বসছে। স্বাস্থ্য হলো জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) একটি অপরিহার্য অংশ। এসডিজির ৩ দশমিক ৮ টার্গেটে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে—সব মানুষ প্রয়োজনের সময় মানসম্মত চিকিৎসাসেবা পাবে এবং নাগরিকরা আর্থিকভাবে অসচ্ছল হলেও চিকিৎসাসেবা পেতে গিয়ে আরও দরিদ্র হয়ে পড়বে না। ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে অঙ্গীকারবদ্ধ। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মাঝে সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব তুলে ধরার প্রয়াসে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে প্রতি বছর ৭ এপ্রিল পালন করা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। ১৯৪৮ সালের এই দিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য হলো—‘মাই হেলথ, মাই রাইট (স্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিতে: কাজ করি একসঙ্গে)’। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল শনিবার রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে কাজ করছে। এজন্য দেশের প্রান্তিক অঞ্চল পর্যন্ত চিকিৎসা পৌঁছে দিতে হবে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি ঠিকভাবে কাজ করে, তাহলেই তা সম্ভব। আমি এজন্য আপনাদের যত রকম সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন, তার ব্যবস্থা করব। আপনারা আমাকে সেবা দিন, আমি প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা করব। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার খুরশিদ আলম বলেন, দেশে ডাক্তারের সংখ্যা ১০ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার। দেশে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা শুরু করায় অফিসে উপস্থিতি বেড়েছে। আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে ৫০০টি। এর মধ্যে ৫০ শয্যার হাসপাতাল আছে ৩৭৬টি। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি বেড়েছে, শিশু মৃত্যুহার কমেছে। ইপিআই টিকাদান প্রায় ৯৪ শতাংশ সফল হয়েছে। রাতকানা রোগ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বর্তমানে পাঁচ বছরের কম বয়সী খর্বকায় শিশুর জন্মের সংখ্যা ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বলেন, স্বাস্থ্য খাতে প্রচুর স্থাপনা আর অবকাঠামো থাকলেও পর্যাপ্ত জনবল আর অর্থ নেই। ফলে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। এগিয়ে যেতে হলে আমাদের প্রচুর কাজ করতে হবে। আর কাজ করতে হলে দক্ষ জনবল লাগবে। এজন্য লাগবে অর্থ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনেও অপর্যাপ্ত জনবলের কথা বলা হয়েছে। শুধু চিকিৎসক-নার্স দিয়েই স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। যদিও দেশে বর্তমানে ৪০ শতাংশের মতো হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্টের পদ ফাঁকা রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ১৯৯৭-২০ সাল পর্যন্ত সরকারের অংশের ব্যয় ক্রমান্বয়ে কমছে এবং ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় বেড়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্যানুযায়ী, পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচারের (ওওপি) হার বেশ বেশি। সার্কভুক্ত আটটি দেশের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যক্তিগত ব্যয়ের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে আফগানিস্তান। এরপরের অবস্থানে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্যানুযায়ী, স্বাস্থ্য খাতে সরকারের ব্যয় কমে ২০২০ সালে ২৩ শতাংশে নেমেছে। এর আগে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে এ হার ছিল যথাক্রমে ২৮ ও ২৬ শতাংশ। আবার ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যয়ের অবদান ছিল যথাক্রমে ৬৪ ও ৬৬ শতাংশ। ২০১২ সালে বাংলাদেশিরা পকেট থেকে মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬২ শতাংশ ব্যয় করত। ওই বছর কর্তৃপক্ষ ‘হেলথ কেয়ার ফাইন্যান্সিং স্ট্র্যাটেজি ২০১২-৩২’ প্রণয়ন হয়, যার লক্ষ্য ছিল ২০৩২ সালের মধ্যে আউট অব পকেট স্বাস্থ্য এক্সপেন্ডিচার ৩২ শতাংশে নামিয়ে আনা। বরং ব্যয় নিচে আসার পরিবর্তে ২০১৫ সালে এ হার বেড়ে হয়েছে ৬৭ শতাংশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালের শেষ দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক প্রতিবেদনে বলেছিল, বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে ২৪ শতাংশ মানুষ বিপর্যয়মূলক ব্যয়ের মধ্যে পড়ছে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রতি বছর ৬২ লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে এবং প্রতি বছর প্রায় ১৬ শতাংশ রোগী প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ থেকে বিরত থাকছে। এদিকে দেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যু আশঙ্কাজনকহারে বাড়লেও তা মোকাবিলায় বাড়েনি বরাদ্দ। আগামী অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে গতকাল গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় বাজেট বরাদ্দ: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত শীর্ষক ওয়েবিনারে এ দাবি জানানো হয়। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) সহযোগিতায় আয়োজিত এ ওয়েবিনারে জানানো হয়, সাধারণভাবে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত সোডিয়াম বা লবণ গ্রহণ, তামাকের ব্যবহার, কায়িক শ্রমের অভাব, বায়ুদূষণ প্রভৃতি কারণে দেশে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, কিডনি রোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে, যা বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশ। এসব রোগ মোকাবিলায় বাজেট বরাদ্দ খুবই সামান্য মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৪ দশমিক ২ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জাতীয় বাজেটের অন্তত ১৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখার পরামর্শ দিলেও, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে এ খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫ শতাংশ। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বাজেট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে কম। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, শুধু উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমানোর মাধ্যমেই অসংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদানের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আসন্ন বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিতের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে লবণ গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ রক্তচাপের পরীক্ষা ও ওষুধের পেছনে ১ টাকা ব্যয় করলে সামগ্রিকভাবে ১৮ টাকার সুফল পাওয়া সম্ভব। কাজেই জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এ খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি / ভেঙে পড়েছে শহীদ জিয়া মেডিকেলের চিকিৎসাসেবা
বগুড়ায় শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ চার দফা দাবিতে ৬২ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেছেন। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) থেকে দুপুর ১২টার দিকে শজিমেক হাসপাতালে কর্মরতরা এ আন্দোলনে নামেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে তারা এক ঘণ্টার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি পালন করবেন। এর আগে শনিবার (২৩ মার্চ) রাত ৮টা থেকে সোমবার (২৫ মার্চ) রাত ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসকরা চার দাবিতে তাদের প্রথম দফার ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন। চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের মাসিক ভাতা ৫০ হাজার এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মাসিক ভাতা ৩০ হাজার টাকা করা। এফসিপিএস, রেসিডেন্ট, নন-রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের বকেয়া ভাতা পরিশোধ করা, বিএসএমএমইউয়ের অধীন ১২ প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের রেসিডেন্ট ও নন-রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের ভাতা পুনরায় চালু করা এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন সংসদে পাস ও বাস্তবায়ন করা। এদিকে শজিমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের টানা ৫ দিনের কর্মবিরতির প্রথম দিনেই চিকিৎসাসেবা অনেকটা ভেঙে পড়েছে। তারা দায়িত্ব পালন না করায় রোগীদের ভরসা এখন নার্স। চিকিৎসকরা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। রোগীদের অভিযোগ, শনিবার রাত থেকে তারা ভালো সেবা পাচ্ছেন না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গত ২৪ ঘণ্টায় শজিমেক হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিসিইউতে ৫ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই ওয়ার্ডে হৃদরোগে আক্রান্ত অন্তত অর্ধশত রোগী চিকিৎসাধীন থাকেন। সেখানে রোগীরদের সেবা দেওয়ার জন্য একজন রেজিস্ট্রার চিকিৎসকের পাশাপাশি ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাও দায়িত্ব পালন করেন। তবে কর্মবিরতি থাকায় মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়ে গুরুতর এই ওয়ার্ডের চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে শুধু সিসিইউতে নয় অন্যান্য ওয়ার্ডেও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা। তারা এখন নার্সদের ওপরই ভরসা করছেন। বিপুলসংখ্যক রোগী সামলাতে গিয়ে নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন। মোট ২৮টি ওয়ার্ডে ৫০০ শয্যার হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১ হাজার ২৫০টিতে উন্নীত করা হলেও জনবল না বাড়ানোয় ২২০ জন রেজিস্ট্রার চিকিৎসক নিয়ে চিকিৎসা দিতে দুরূহ হয়ে পড়েছে। হাসপাতালটিতে সার্বক্ষণিক দেড় হাজারের ওপরে রোগী ভর্তি থাকে এবং বহিঃবিভাগে কয়েক হাজার রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা নিয়ে থাকে। শজিমেক হাসাপাতালে ১৫০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করেন। সকাল-বিকেল ও রাতের তিন শিফটে তারা রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে দুপুর ২টার পর থেকে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ও রেজিস্ট্রার চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করে চলে যান। এরপর থেকে ইন্টার্ন চিকিসকেরাই হাসপাতালে আসা সেবা প্রার্থীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। শজিমেক হাসপাতালে প্রতি ওয়ার্ডে অন্তত দুই থেকে ৩ জন করে শিফটগুলোতে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জন ও সকালের শিফটে সব ইন্টার্নরাই চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ শজিমেক হাসপাতাল শাখার সভাপতি ডা. তৌফিক হাসান নিশাত বলেন, বাংলাদেশের সকল ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রাণের দাবি হলো তাদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করা হোক। সেই প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসক একত্রভাবে আন্দোলন করেছিল। তাদের সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন যে সবার বেতন ভাতা বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করা হলেও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করা হয়নি। এরপর বারবার আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল ও হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, হাসপাতালের বেডের চাইতেও তিনগুণ রোগী বেশি থাকে। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর নির্ভরশীল। রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের যে জনবল আছে তাই নিয়ে আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
২৬ মার্চ, ২০২৪

রাঙামাটিতে অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু, চিকিৎসাসেবা শুরু
রাঙামাটিতে অজ্ঞাত রোগে গত আড়াই মাসে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এবার একই উপসর্গ নিয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নে জ্বর, ব্যথা, বমি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে রক্তবমি নিয়ে আক্রান্ত ১২ জনকে চিকিৎসা প্রদান করেছে বিশেষ চিকিৎসক টিম।  বুধবার (২০ মার্চ) ৬ সদস্যের চিকিৎসক টিম চান্দবিঘাট পাড়ায় পৌঁছে তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে। তবে ঠিক কোন রোগে স্থানীয়রা আক্রান্ত হচ্ছে তা এখনো চিকিৎসকরা সুনিদিষ্টভাবে নির্ধারণ করতে পারেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে এটি খাবারের কারণে গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি রোগ হতে পারে। ৬ সদস্যের চিকিৎসক টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছে বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. ম্য ক্যাছিং সাগর। রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী জানিয়েছেন, চিকিৎসক টিক কাজ শুরু করেছে। পুরো গ্রামে ঘরে ঘরে গিয়ে সবাইকে স্ক্যানিং করা হচ্ছে। সবার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ পাঠানো হয়েছে। আমরা চাইছি যাতে আর কোনো প্রাণহানি না হয়। খাবার থেকে এমন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, এটাকে আমরা গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বলে থাকি। বিস্তারিত চিকিৎসক টিম ফিরলে বলা যাবে। উল্লেখ্য, জ্বর, বমি, ব্যথা, রক্ত বমি নিয়ে চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত ভূষণছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চান্দবিঘাট পাড়ায় ৫ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখ। ওই দিন পত্ত রঞ্জন চাকমা (২৫) এই রোগে মারা যান। পরে ৭ ফেব্রুয়ারি বিমলেশ্বর চাকমা (৫৫), ২৬ ফেব্রুয়ারি ডালিম কুমার চাকমা (৩৫), ১৫ মার্চ চিত্তি মোহন চাকমা (৬০) এবং সবশেষ ১৭ মার্চ সোনি চাকমা (৮) মারা যান। এদের সবাই একই উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
২২ মার্চ, ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে টুয়েলভ রিভারসের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও শিশু দিবস উপলক্ষে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে প্রাক্তন ক্যাডেটদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ‘টুয়েলভ রিভারস হসপিটাল অ্যান্ড হেলথ কেয়ার ট্রাস্ট’। রোববার উত্তরার দিয়াবাড়ীতে মাইলস্টোন কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসে সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে চিকিৎসা ক্যাম্পটি চলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। বিনামূল্যে পরিচালিত হেলথ ক্যাম্প পরিদর্শন করেন মাইলস্টোন কলেজের উপদেষ্টা কর্নেল নুরন্ নবী (অব.) ও অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম। এ সময় চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি দেওয়া হয় বিশেষ হেলথ কার্ড।
২০ মার্চ, ২০২৪

চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হবে না কোনো মানুষ
পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেছেন, এ দেশের কোনো মানুষ যাতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করছে পিএইচপি। লাখ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীন দেশে কোনো মানুষ না খেয়ে বা বিনা চিকিৎসায় মরতে পারে না। গতকাল চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে পিএইচপি ফ্যামিলির অর্থায়নে নির্মিত ‘পিএইচপি ফ্যামিলি ফ্লোর-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান নবনির্মিত ক্যান্সার হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম ও বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন। হাসপাতাল কমিটির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজাদের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক। সুফি মিজানুর রহমান বলেন, আমি ১০০ টাকার চাকরি নিয়ে জীবন শুরু করি। সেখান থেকে আজকে আমাদের এ বিশাল পিএইচপি পরিবার। জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল আপামর জনসাধারণের হাসপাতাল। এ হাসপাতালের সঙ্গে পিএইচপি পরিবারের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমানের সহধর্মিণী তাহমিনা রহমান, আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক, পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মহসিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন চৌধুরী, পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক চৌধুরী, মুহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, মুহাম্মদ আমির হোসেন সোহেল, জহিরুল ইসলাম, আকতার পারভেজ, সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমানের মেয়ে ফাতেমা-তুজ জোহরা। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি আবদুল মান্নান রানা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আজিজ নাজিমউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ সাগির, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর পারভেজ প্রমুখ।
০৭ মার্চ, ২০২৪

সিলেটে ফ্রি চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন ইউরোপের ৫০ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার
অসহায় দরিদ্র মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে ইউরোপ থেকে ৫০ জনের একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম সিলেটে এসেছেন। লন্ডন থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে তাদের বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশন।  গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সিলেটে পৌঁছান এই বিশেষজ্ঞ দলটি। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, হার্ট ফাউন্ডেশন বার্ড চক্ষু হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গাতে সাত দিনব্যাপী চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ফাউন্ডেশন থেকে চিকিৎসার মেডিসিনসহ বিভিন্ন সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে।  প্রতিদিন সকাল থেকে অপারেশন কার্যক্রম চলছে। সিলেটের বিভিন্ন গ্রাম থেকে স্বেচ্ছাসেবী দ্বারা রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে  চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের ডাক্তার এবং বিদেশি ডাক্তারদের সমন্বয়ে চলছে এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। ক্যাম্পে গাইনি, ফিজিক্যাল মেডিসিন, নাককান গলা, সার্জারিসহ ৭টি বিষয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শ্বাসতন্ত্র, ইউরো, রক্তনালী, ভাস্কোলার সার্জনসহ বিভিন্ন রোগের ডাক্তাররা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। চিকিৎসকদের দলে আছেন ফ্রান্সের স্বনামধন্য কার্ডিয়াক সার্জন অধ্যাপক ফিলিপ মেনাশে, ইংলান্ডের অধ্যাপক ম্যাথিয়াস ও অধ্যাপক কুমারান। এ ছাড়াও যুক্তরাজ্য থেকে এনেসথেসিয়া বিভাগের ৫ জন ডাক্তার, কার্ডিওলজি বিভাগের ৩ জন ডাক্তার, ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগের ৯ জন ডাক্তার, ইউএনটি বিভাগের ১ জন ডাক্তার, নিউরো ফিজিওথেরাপিস্ট ১ জন, আমেরিকা থেকে নিউরোলজিস্ট ১ জন, যুক্তরাজ্য থেকে ৩ জন এবং ফ্রান্স থেকে ১ জন, চক্ষুরোগবিশেষজ্ঞ ৬ জন, যুক্তরাজ্য থেকে অর্থোপেডিক্স ১ জন, ইতালি থেকে অর্থোপেডিক্স ১ জন, ফ্রান্স থেকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ১ জন এবং যুক্তরাজ্য থেকে ২ জন, ফার্মাসিস্ট ১ জন, পূর্ণবাসন বিষয়ে কনসাল্টটেন্ট এর জন্য ২ জনসহ ৫০ জন। বাংলাদেশে এই ৫০ জন বিশেষজ্ঞ মেডিকেল ডাক্তারদের আনা-নেওয়া বাবদ প্লেনের টিকিট ভাড়া অ্যামিরেটস এয়ারলাইন্স বিনা পয়সায় দিয়েছে। স্থানীয় হোটেল তাদের থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ ডিসকাউন্ট দিচ্ছে। এ ছাড়াও টমি মিয়া ইন্সটিটিউট এর পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।  তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশন-এর সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা শেলিনা বেগম কালবেলাকে বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি অভূতপূর্ব সুযোগ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকদের একত্রিত করার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের অগণিত অসহায় দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি।’ ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই মেডিকেল ক্যাম্পেনিং চলবে আগামী ৪ মার্চ পর্যন্ত । মেডিক্যাল ক্যাম্প শেষে ৬ মার্চ বাংলাদেশ ছাড়বেন ইউরোপের এই চিকিৎসক দলটি। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন মিলি বেগম। চিকিৎসকের পরামর্শ পেয়ে তিনি কালবেলাকে বলেন, 'মনো করছিলাম একজন ডাক্তর রোগী দেখবা। কিন্তু আইয়া দেখি, বাক্কা ডাক্তার আইচইন। ভালা  করি দেখচইন ওষুধ লেইক্কা দিচইন। কিছু ওষুধপাতি ফ্রিও দিসইন, আমি খুব খুশি অইছি আমার পোয়ারে ডাক্তার দেখাইতে পারিয়া, তারা হকলের লাগি মন থাকি দোয়া করি।’ চিকিৎসা নিতে আসা আরেক রোগীর অভিবাবক মোক্তার মিয়া বলেন, ‘যেখানে সরকারি হাসপাতালে আসলে আমরা ডাক্তারদের খোঁজ পাই না, সেখানে আমরা বিদেশি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দ্বারা আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসাসেবা নিতে পেরেছি। আশা করব ভবিষতেও এই রকম মহৎ কাজ অব্যাহত থাকবে।’ সুনামগঞ্জ থেকে আসা শ্বাসকষ্টের রোগী আঞ্জুমারা ডাক্তারদের সেবা পেয়ে কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ, এত নামিদামি ডাক্তারদের দ্বারা চিকিৎসাসেবা নিতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।’ তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশনের প্রজেক্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এই ট্রিটমেন্ট বাংলাদেশে কনটিনিউ করে যাব, আপনারা সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমাদের পরিকল্পনা, গ্রাম অঞ্চলের গরিব অসহায় মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাওয়া। সিলেটে ওসমানী মেডিকেল, হার্টফাউন্ডেশনসহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফ্রি ক্যাম্পেনিং এর মাধ্যমে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশে বিদেশি চিকিৎসকদের এত বড় মেগা মেডিক্যাল ক্যাম্প এর আগে আর হয়নি বলেও জানান তিনি। সংগঠক মোহি আহাদ কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠার পরপরই আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল, বিশ্বের সর্বত্র অসহায়দের চিকিৎসাসেবা দেওয়া। আমরা শুরু করেছি বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশে যাদের চিকিৎসার প্রয়োজন এবং যাদের চিকিৎসার খরচ চালানো সম্ভব না, মূলত তাদের জন্যই আমরা ৫০ এর বেশি ডাক্তার নিয়ে এসেছি এবং সিলেটে ক্যাম্প করেছি।  আমরা সিলেটে ওসমানী মেডিকেল, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এবং দুটো চক্ষুরোগ হসপিটালের সঙ্গে সমন্বয় করে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যে ২ হাজারের বেশি রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছি এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু সার্জারিও আমরা সম্পন্ন করেছি। আমরা যেহেতু সিলেটের বিভিন্ন মেডিকেলের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছি, সেজন্য কোনো রোগীর ফলোআপ চিকিৎসা সেই হসপিটালের তত্ত্বাবধানেই হবে। আমাদের সঙ্গে যারা স্পন্সরশিপে আছেন তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যারাই আমাদের এই স্বেচ্ছাসেবী কাজে সহায়তা করছেন সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’ সংগঠক মধু জানান, ‘আমরা যারা বিদেশে বাংলাদেশিরা বসবাস করি, আমরা বিদেশ থেকে ভালো ভালো ডাক্তারদের আনার চেষ্টা করি এবং এই দেশের অসহায় হতদরিদ্রদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করতেছি। সিলেট থেকে শুরু হয়েছে। ইনশাল্লাহ, আমরা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার আশা রাখি।’ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশন যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানটি গত এক মাস যাবত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা সিলেট অঞ্চলের অসহায় মানুষদের সেবা করতে চান। যার প্রেক্ষিতে তারা আমাদের এখানে গত ২৬ ফ্রেব্রুয়ারি আসেন এবং ২৭ তারিখ থেকে তারা তাদের চিকিৎসা সেবা শুরু করেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো গরীব দুস্থ অসহায়দের চিকিৎসা সহায়তা ও বিনামূল্যে ওষুধপত্র বিতরণ করে সাহায্য করা। তারা এককভাবে চিকিৎসা দিচ্ছেন না। আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা চিকিৎসা দিচ্ছেন। আমাদের ডাক্তাররা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, আমাদের চিকিৎসক এবং বিদে চিকিৎসকদের মধ্যে উৎসব উৎসব আবহ বিরাজ করছে, একই সঙ্গে এত বেশি রোগী দেখে কেউই অভ্যস্ত না। তারাও আমাদের ডাক্তার থেকে শিখতে পারছেন, আমাদের ডাক্তাররাও তাদের থেকে অনেক কিছু শিখতে পারছে। এরই মাধ্যমে উভয়পক্ষ্যের মধ্যে একটি সুন্দর যোগসূত্র সৃষ্টি হচ্ছে। আমরাও চাই উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করতে। তাদেরকে অবশ্যই বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। উল্লেখ্য, তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশন লন্ডনে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই বছর যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকরা জটিল রোগে আক্রান্ত তাফিদা রাকিব নামের ৪ বছর বয়সী একটি শিশুর বাঁচার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে লাইফ সাপোর্ট খুলে নিতে বললে চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে তাফিদার পরিবার। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তাফিদাকে ইতালির জেনোয়াতে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার অনুমতি পায় পরিবারটি। সুস্থ হয়ে ওঠে শিশুটি। এর পরই বিশ্বব্যাপী অসহায় শিশুদের চিকিৎসা সেবায় তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন শিশুটির মা সেলিনা বেগম। যা যুক্তরাজ্য ও ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রশংসিত হয়।
০২ মার্চ, ২০২৪

বিনামূল্যে শতাধিক শিশুর হার্টে প্রয়োজনীয় ডিভাইস স্থাপন
জন্মগতভাবে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত শিশুদের বিনামূল্যে ১০ দিনে শতাধিক রোগীকে সেবা দিয়েছে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা কাতার চ্যারিটি। রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শুরু হওয়া এই হেলথ ক্যাম্পের মাধ্যমে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১০০-এর বেশি শিশুর হার্টে প্রয়োজনীয় ডিভাইস স্থাপন করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান, ফিলিস্তিন ও কাতার থেকে আসা একটি মেডিকেল টিম এই মেডিকেল ক্যাম্পে অংশ নিয়েছে। দেশের বিশিষ্ট পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট ও হেলথ ক্যাম্পের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ডা. নুরুন নাহার ফাতেমা বলেন, আমরা বেশ কয়েক বছর ধরেই কাতার চ্যারিটির সঙ্গে কাজ করছি। জন্মগত হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত এসব শিশুরা খুবই দরিদ্র পরিবারের। ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা বহন করার সামর্থ্যই এদের অভিভাবকদের নেই। কাতার চ্যারিটি সম্পূর্ণ ব্যয়বহন করে দরিদ্র এই পরিবারগুলোর সন্তানদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তারা এখন একটি সম্পূর্ণ সুস্থ জীবন ফিরে পাবে। জর্ডান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসক পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট আইয়াদ আমরী বলেন, কাতার চ্যারিটির এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে জন্মগতভাবে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত ১০০-এর বেশি শিশুকে প্রয়োজনীয় ডিভাইস দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গত ৪ দিনে আমরা ৩৫ জনের বেশি শিশুর দেহে ডিভাইস স্থাপন করেছি। সবাই সুস্থ আছে। কাতার চ্যারিটির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. আমিন হাফিজ ওমর বলেন, কাতারের ডোনারদের সহায়তায় অসহায় ও গরীব শিশুদের সুস্থ জীবন উপহার দিতে এই হেলথ ক্যাম্প। কাতার চ্যারিটির এই উদ্যোগ আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ভাঙা ঘরেই ৪৫ বছর ধরে দিচ্ছেন বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা
নাটোরের গরিবের ডাক্তার বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান (৭১)। একটি ভাঙা মাটির ঘরে ৪৫ বছর ধরে বিনামূল্যে তিনি দরিদ্র রোগীদের দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসাসেবা। এখন পর্যন্ত কয়েক লাখ রোগী তার চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন।  দীর্ঘদিন ধরে এই সেবা দিয়ে আসলেও কারও কাছ থেকে কোনো আর্থিক বা অন্যকোনো সহযোগিতা তিনি গ্রহণ করেন না। নিজ এলাকা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা আসেন তার কাছে চিকিৎসাসেবা নিতে। দরিদ্র রোগীসহ তার চিকিৎসাসেবা পেয়ে সবাই খুশি।  নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম সোনাপাতিল গ্রামে ভাঙা মাটির দেওয়ালের একটি ঘর। এই ঘরে বসেই গত ৪৫ বছর ধরে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন গরিবের ডাক্তার মজিবর রহমান। যেখানে অন্যান্য চিকিৎসকরা উচ্চহারে ফিস নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেন, ঠিক সেই সময়ে বিনামূল্যে তিনি রোগী দেখেন ও ব্যবস্থাপত্র দেন। জেলার বাইরে থেকেও অনেক রোগী তার কাছে আসেন চিকিৎসাসেবা নিতে। তিনিও হাসি মুখে তাদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যেন কৃতার্থ হন। এলাকাবাসী ও তার কাছে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা জানান, শহরের ডাক্তারদের কাছে গেলে নানা রকম পরীক্ষা দিয়ে তিন/চার হাজার টাকা খরচ করান। কিন্তু এই ডাক্তার কাছে এলে তিনি কোনো পরীক্ষা ছাড়াই যত্নসহকারে রোগী দেখেন ও ব্যবস্থাপত্র দেন। তার ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ খেয়ে তারা ভালোও হয়ে যান। এই ডাক্তার গরিবের ডাক্তার। আমরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে আসি চিকিৎসার জন্য। তার কাছে এলে তিনি বাচ্চাদের আদর করেন।  সোনাপাতিল গ্রামের ডা. শেখ মজিবর রহমান সাধারণত মা ও শিশুদের চিকিৎসা দেন। ছোটবেলা থেকেই দেখছি এই ডাক্তার বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। এই এলাকা ও আশপাশের জেলা থেকেও অনেক রোগী তার কাছে আসেন চিকিৎসা নিতে। সব ওষুধ কোম্পানি তাকে বিনামূল্যে ওষুধ দিতে চাইলেও তিনি নেন না। ভালো ভালো কোম্পানির ওষুধ তিনি বিনামূল্যে নেন এবং সেগুলো আবার গরিব রোগীদের বিনামূল্যে দিয়ে দেন। আসলে এই সমাজে তার মতো এমন নির্লোভ মানুষ সচরাচর দেখা যায় না। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী রানা আহম্মেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। কোনো দিন কারও কাছ থেকে তিনি একটা টাকাও নেননি। এখানে এলে ডাক্তার যত্ন সহকারে বাচ্চাদের দেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসেবা দেন। নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জাম আসাদ জানান, ডা. মজিবর রহমান একজন অত্যন্ত সৎ ব্যাক্তি। দীর্ঘদিন ধরে তারা দেখছেন একটি ভাঙা ঘরে বসে তিনি চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ তার কাছে এসে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে যাচ্ছেন। তার যেটুকু আছে তাই দিয়েই কাজ করে। অভাব অনটনের মধ্যেই তিনি চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। নাটোর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও গরিবের ডাক্তার মজিবর রহমানের চিকিৎসাকেন্দ্রটির অবস্থা ভঙ্গুর। সেটি সংস্কার করা প্রয়োজন। আমি বিষয়টি নিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলে নতুন ঘরের ব্যাপারে চেষ্টা করব। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা ও ডাক্তার মজিবর রহমান বলেন, বিনা খরচে চিকিৎসা দেওয়ার একটাই কারণ- গ্রামের লোক চিকিৎসা পায় না। গ্রামের লোকের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। ঠিক করেছি যতদিন বাঁচব ততদিন এই কার্যক্রম চালিয়ে যাব। নাটোর, গাইবান্ধা, রংপুরসহ দেশের বাইরের রোগীদেরও চিকিৎসাসেবা দিয়েছি। তবে যেভাবে এই মাটির ঘরটি ভেঙে যাচ্ছে, তাতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। সরকার বা যে কেউ যদি নতুন একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়, তাহলে যতদিন বাঁচব ততদিন এই সেবা দিয়ে যেতে পারব।
০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X