আফতাবনগরে পশুরহাট বসানোয় নিষেধাজ্ঞা
রাজধানীর আফতাবনগরে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুরহাট বসানোর ইজারার বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। বুধবার (৮ মে) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে কোরবানির ঈদে আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট বসানো যাবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় হওয়ায় আদালত এ আদেশ দিয়েছে বলে জানা গেছে। আদালতে এ রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক ও অ্যাডভোকেট এস এম শামীম হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। এর আগে আফতাবনগরে গরুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ওই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ঢালী। গত ৪ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ঈদুল আজহা ২০২৪ উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেন। ওই বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান ভূমি অফিসারসহ ৯ জনকে বিবাদী করা হয়। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) ২০০৯ আইনের ধারা ৩ (২) ও ১ম তপশিল অনুযায়ী আফতাবনগর (ইস্টার্ন হাউজিং) বাড্ডা থানার ৩৭ নং ওয়ার্ড অধীন, যা ঢাকা নর্থ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অন্তর্ভুক্ত।
০৮ মে, ২০২৪

পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত
পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ভারত। গতকাল শনিবার দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার তথ্য জানিয়েছে। এর দিন কয়েক আগে পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করে ভারত সরকার। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ডিসেম্বরে তারা প্রথম পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু তারপর অনির্দিষ্টকালের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য (মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইস-এমইপি) নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫০ ডলার। এই নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে। ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচন। এর মধ্যেই পণ্যটি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলো। ভারতে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় মহারাষ্ট্রে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই মহারাষ্ট্রের চাষিরা এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছিলেন। এবার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রপ্তানি একেবারে বন্ধ করেনি ভারত। এপ্রিলে বাংলাদেশসহ ৬ দেশে প্রায় এক লাখ টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেয় তারা। বাকি পাঁচটি দেশ হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটান, বাহরাইন, মরিশাস ও শ্রীলঙ্কা।
০৫ মে, ২০২৪

ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানিতে থাকছে না নিষেধাজ্ঞা
প্রায় ৬ মাস পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রাখার পর অবশেষে তা তুলে নিল ভারত সরকার। শনিবার (৪ মে) দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য নিশ্চিত করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়—রপ্তানি করা প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য (মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইস- এমইপি) ধার্য করা হয়েছে ৫৫০ ডলার, যা নির্ধারণ করে ডিজিএফটি। পেঁয়াজ রপ্তানির এমন সিদ্ধান্ত ভারতীয় রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, চলমান লোকসভা নির্বাচনের কারণে কেন্দ্রীয় সরকারে আসীন দল বিজেপি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে ভারত সরকারের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন কৃষকরা। গত বছর ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। এ সময় দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের কৃষকদের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ক্ষোভ বাড়ে। অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে রাজ্যটির প্রতিটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপি প্রার্থীরা, যা সামাল দিতেই এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে বলে ধারণা অনেক রাজনীতি বিশ্লেষকের। ভারতের মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়ে থাকে। দেশটির মোট উৎপাদিত পেঁয়াজের বেশিরভাগ আসে এই রাজ্য থেকে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পর বাংলাদেশ, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরিশাসসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করে ভারত। উল্লেখ্য, গত বছর ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। প্রথম পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত হলেও পরে তা আরও বাড়ানো হয়। তার আগে ২০২৩ সালের আগস্টে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছিল নয়াদিল্লি।
০৪ মে, ২০২৪

এবার আমেরিকা-ব্রিটেনের বিরুদ্ধে ইরানের নিষেধাজ্ঞা
এবার আমেরিকা ও ব্রিটেনের বিরুদ্ধে শুরু হলো ইরানের অ্যাকশন। দেশ দুটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তেহরান। গতকাল বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা আসে। গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে, তাতে মদদ দিচ্ছে এই দুটি দেশ। আর শুরু থেকেই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে উপসাগরীয় দেশ ইরান। অভিযোগ রয়েছে—তেহরানের অস্ত্র আর প্রশিক্ষণ পেয়েই ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছিল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীরা। সেই সব যোদ্ধাদের নির্মূলের নামে গাজায় নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে তেল আবিব। যার বলি হতে হয়েছে ৩৪ হাজারের বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনিকে। ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির এমন অপরাধকে অন্ধভাবে সমর্থন করে আসছে লন্ডন ও ওয়াশিংটন। ফলে দেশ দুটির বিরুদ্ধে অ্যাকশনে গেল ইরান।  বার্তাসংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মার্কিন ও ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইরান। বিশ্লেষকরা বলছেন, কূটনৈতিকভাবে দেশ দুটিকে অপমান করতেই ইরানের এমন চতুর কৌশল। এর মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞাকেই হাস্যকর জিনিষে রূপান্তর করতে চাইছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী এই দেশটি।   ইসরাইলের চিরশত্রু ইরান তার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের নামে গাজার নিরীহ মানুষের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে তেল আবিব। মানবতাবিরোধী এই অপরাধকে নির্লজ্জভাবে সমর্থন করায় কিছু ব্রিটিশ ও মার্কিন কর্মকর্তাদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা।  বিবৃতিতে আরও বলা হয়— আমেরিকার বিশেষ অপারেশন কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল ব্রায়ান পি ফেন্টন ও মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহরের সাবেক কমান্ডার ভাইস অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপারসহ সাতজনকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা সেক্রেটারি অব স্টেট গ্রান্ট শাপস, ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কৌশলগত কমান্ডের কমান্ডার জেমস হকেনহুল ও লোহিত সাগরে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল নেভিকে নিষেধাজ্ঞা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এ ছাড়া মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিন ও শেভরন এবং ব্রিটিশ সমকক্ষ এলবিট সিস্টেমস, পার্কার মেগিট ও রাফায়েল ইউকের বিরুদ্ধেও শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে ‘ইরানের আর্থিক ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অ্যাকাউন্ট ও লেনদেন ব্লক, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের এখতিয়ারের মধ্যে সম্পদ ব্লক এবং সেই সঙ্গে ভিসা প্রদান ও ইরানের ভূখণ্ডে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা। কিন্তু ব্যক্তি বা সংস্থার ওপর এ পদক্ষেপগুলোর প্রভাব, সেইসঙ্গে তাদের সম্পদ বা ইরানের সঙ্গে লেনদেন। সব কিছু অস্পষ্ট রয়ে গেছে।
০৩ মে, ২০২৪

নিষেধাজ্ঞা শেষে মধ্য রাতে নদীতে নামছে জেলেরা
এক বুক স্বপ্ন নিয়ে মধ্য রাত থেকেই চাঁদপুরের পদ্মা মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম শেষ হওয়ায় ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরার আশায় নদীতে নামবেন জেলেরা। নিষেধাজ্ঞার মার্চ-এপ্রিল এই দুই মাস অনেকটা অলস সময় কাটিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জেলা টাস্কফোর্সের কর্মকর্তারা জানিয়েছে সম্মিলিত অভিযানে জাটকা প্রতিরোধ অনেকাংশ সফল হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুর সদরের ইব্রাহীমপুর, লক্ষ্মীপুর মডেল, হানারচর ইউনিয়ন ও হাইমচর উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়ন, মেঘনা পাড়ের জেলে পল্লীগুলোতে ইলিশ ধরার প্রস্তুতি নিয়ে জেলেদের মাঝে উৎসবের আমেজ কাজ করছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ মে মধ্যরাত থেকে আবারও নদীতে মাছ ধরার জন্য জেলার প্রায় ৪৪ হাজার নিবন্ধিত জেলে নৌকা এবং জাল মেরামত শেষে বড় বড় ইলিশ ধরতে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে। হাইমচর উপজেলার লামচরী গ্রামের জেলে সাদ্দাম মাল জানান, যখন আমি বুঝতে শিখেছি তখন থেকে মাছ ধরার কাজে জড়িত এবং এখন পর্যন্ত এই পেশায় আছি। বছরের দুটি সময় মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। তখন আমাদের অন্য কাজ করে সংসার চালাতে হয়। আবার যখন মাছ ধরা শুরু হয় এর আগ থেকেই ঋণ করে বিভিন্নভাবে নৌকা মেরামত ও জাল ক্রয় করে নদীতে নামি। তবে ইলিশ পাওয়ার বিষয়টি আল্লাহর ওপর। নদীতে নামলে অনেক সময় ইলিশ পাওয়া যায়, আবার অনেক সময় খালি হাতে ফিরতে হয়। তিনি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞা দিলে আমরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকি। তবে সরকার থেকে যে সহায়তা দেওয়া হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। যে কারণে অন্য কাজ করে উপার্জন করি। এ বছর ইটের ট্রলারে কাজ করেছি। সরকার জাটকা রক্ষায় যে অভিযান দেয়, তা আরও কঠোর এবং কারেন্টজালের ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা দরকার। তাহলে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। সদর উপঝেলার ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের নিবন্ধিত জেলে সাইফুল ইসলাম, সফিক গাজী, মালেক শেখ। তারা নদীতে নামার জন্য জাল ও নৌকা মেরামতের কাজ করছেন। তারা বলেন, দুই মাস মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকায় আমাদের সংসার অনেক কষ্টে চলেছে। কারণ আমরা মাছ ধরা ছাড়া অন্য কোনো কাজ করতে পারি না। যে কারণে ইলিশ পাওয়ার আশা নিয়ে এখন আবার জাল মেরামত করে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তারা বলেন, আমাদের প্রতিটি নৌকায় ১০ থেকে ১২ জন্য জেলে থাকে। ১২ জনের ১২ পরিবার। আমাদের মাছ পাওয়ার ওপর নির্ভর করে সংসার। মাছ পাওয়া গেলে সংসার ভালো চলে। না পাওয়া গেলে কষ্ট করেই চলতে হয়। অনেকে সন্তানদের নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করেন। হাইমচর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রশীদ জানান, জাটকার সবচাইতে বড় বিচরণ কেন্দ্র হাইমচর। এখানে কঠোর অভিযান হওয়ায় জেলেরা নদীতে নামতে পারেনি। বাইরের জেলেদের প্রতিরোধ করা হয়েছে। এর সুফল এ অঞ্চলের জেলেরা পাবে। চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর চাঁদপুরের অভয়াশ্রম এলাকার জেলেরা সচেতন ছিল। যে কারণে বাইরের জেলেরা জাটকা নিধন করতে পারেনি। আমরা এখন জেলেদের বৈধ জাল দিয়ে মাছ ধরার জন্য উৎসাহ দিচ্ছি। চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান দুই মাসের জাটকা রক্ষার অভিযান সম্পর্কে বলেন, এ বছর ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় অভয়াশ্রম এলাকায় ১০টি স্পিডবোট দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ এ বছর রমজান মাসেও দিনরাতে নদীতে অবস্থান করেছে। রমজান মাসজুড়ে নদীতে ছিল আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তিনি বলেন, এ বছর জেলা টাস্কফোর্সের কঠোর অবস্থান থাকায় জেলেরা নদীতে নেমেছে কম। তারপরেও যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নেমেছে তার মধ্যে প্রায় ৩ শতাধিক জেলেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়েছি। দুই মাসে প্রায় ৫০ লাখ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্টসহ অন্যান্য জাল, ৩ টন জাটকা ও ৬০টি মাছ ধরার নৌকা জব্দ করা হয়েছে। আটক জেলেদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকা। জব্দকৃত নৌকাগুলো পরবর্তীতে নিলামে বিক্রি করা হবে।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ দেশের সমুদ্রসীমায় 
আগামী ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেছেন, ৬৫ দিন সব ধরনের মৎস্য নৌযান যে কোনো প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সভাপতিত্বে এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় এ সম্পর্কিত একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই আহরণের স্বার্থে সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে শুধু আইন প্রয়োগ নয় বরং জেলেদের জীবিকা নির্বাহের জন্য এ সময় ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা হবে। উল্লেখিত সময়ে সমুদ্রে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী মৎস্য আহরণে বিরত থাকা মৎস্যজীবীদের আপদকালীন বিকল্প আয় বা খাদ্য সহায়তা হিসেবে ভিজিএফ চাল বিতরণ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করেন।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

লুটপাট লুকাতে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের নিষেধাজ্ঞা : রিজভী
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রী ও ঘনিষ্ঠজনদের দুর্নীতি, লুটপাট লুকিয়ে রাখার জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ব‌লে মন্তব্য ক‌রে‌ছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তি‌নি ব‌লেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের নাকি প্রবেশ নিষেধ। কেন? ব্যাংকে কত টাকা লুট হয়েছে? এই লুটকারীরা হচ্ছে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী নাহলে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন। এই লুট ও দুর্নীতির তথ্য যাতে সাংবাদিকরা না পায় এই কারণে ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধ করেছে।  রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএন‌পির কার্যল‌য়ের সাম‌নে সাবেক ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাদের আয়োজনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি নেতা হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলসহ কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শে‌ষে এক সং‌ক্ষিপ্ত সমা‌বে‌শে তি‌নি এসব কথা ব‌লেন। রিজভী বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তির লোকজন, যারা সত্যের পথে কথা বলে তারা আজ কারাগারে। যারা ব্যাংক ডাকাতি করছে লুটপাট করছে নদী-নালা খাল-বিল দখল করছে অন্যায়-অবিচার দুর্নীতি করছে তারা আজ দুর্দান্ত প্রতাপে সারাদেশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা সবাই ক্ষমতাসীন দলের লোকজন এটা প্রমাণিত।  এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে তারা দেশের জনগণের ঘরবাড়িও বিক্রি করে দিবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই সরকার লুটপাটের সরকার। দুর্নীতির সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের জনগণের ঘরবাড়িও বিক্রি করে দেবে।  রিজভী বলেন, এই খরতাপে আগুনের মতো পরিবেশে আপনারা আপনাদের কণ্ঠকে উচ্চারিত করেছেন এ রকম যে ,কোনো প্রতিকূল পরিবেশে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করার আগ পর্যন্ত সংগ্রাম করে যেতে হবে। রিজভী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশে চিরদিনের জন্য বাকশাল কায়েম করার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে ছাড়ব। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহঅর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, যুবদলের সহসভাপতি জাকির হোসেন সিদ্দিকী, ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি রফিক হাওলাদার, আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সম্পাদক সওগাত উল ইসলাম সগির, আশরাফ উদ্দিন রুবেল, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক আজিজুর রহমান মুসাব্বিরসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

‘দুর্নীতি আড়াল করতেই তথ্য সংগ্রহে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা’
তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধকারী হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে সাংবাদিক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) এক যুক্ত বিবৃতিতে বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকদের নিষেধাজ্ঞা আরোপ একটি নজিরবিহীন ঘটনা। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এ ধরনের সিদ্ধান্ত স্বাধীন সাংবাদিকার ওপর প্রত্যক্ষ হুমকি। ব্যাংকিং খাতসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে যে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা চলছে- তা আড়াল করার জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহে বাধা প্রদান করছে।   বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত পাঁচ দশক থেকে সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ব্যাংকে অবাধে যাতায়াত করে দুর্নীতি ও নানা অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরেছে। এর ফলে দুর্নীতিবাজরা সব সময় তটস্থ থেকেছে। কিন্তু হঠাৎ তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোন রাঘববোয়ালদের রক্ষার অপচেষ্টা করছেন তা বোধগম্য নয়। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান। অন্যথায় স্বাধীন সাংবাদিকতার অধিকার আদায়ে সাংবাদিক সমাজ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

উত্তর কোরিয়া থেকে অস্ত্র নিয়ে চীনা বন্দরে রুশ জাহাজ
উত্তর কোরিয়া থেকে অস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল একটি কার্গো জাহাজ। উদ্দেশ্য রাশিয়ার হাতে সেই অস্ত্র তুলে দেওয়া। সরাসরি মস্কোয় অস্ত্র পাঠালে পড়তে হতে পারে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায়। তাই জাহাজটিকে নেওয়া হয় চীনের বন্দরে। পরিকল্পনা ছিল, সেখান থেকেই চালানটি পাঠানো হবে মস্কোয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশেষ এক প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।  বলা হচ্ছে, যুদ্ধের প্রথম দিকে কিছুটা বেকায়দায় পড়লেও চীন ও উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র এবং গোলাবারুদে আবারও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে রুশ সেনারা। যুদ্ধের ময়দানে পুতিন বাহিনীর দাপটে একের পর এক ভূমি হারাচ্ছে ইউক্রেন। পশ্চিমাদের দাবি, পুতিন বাহিনীর এমন সাফল্যের পেছনে রয়েছে শি জিনপিং ও কিম জং উনের দেশের অস্ত্র সরবরাহ।  বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হাতে আসা স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে সেই দৃশ্য। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে চীনের দেওয়া সমর্থন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বাড়তে থাকার মধ্যেই সামনে এলো এই খবর।  ব্রিটেনের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট বলেছে, রুশ জাহাজ আঙ্গারা ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে রাশিয়ার বন্দরে হাজার হাজার কন্টেইনারে করে উত্তর কোরিয়ার গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তথ্য বলছে, জাহাজটিকে গেল ফেব্রুয়ারি থেকে চীনের পূর্বাঞ্চলীয় ঝেজিয়াং প্রদেশের শিপইয়ার্ডে নোঙর করে থাকতে দেখা গেছে। চীনের বন্দরে এ জাহাজের উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্রদেশগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জকেই সামনে নিয়ে এসেছে, যারা রাশিয়ার প্রতি সামরিক এবং অর্থনৈতিক সমর্থনের রাশ টেনে ধরার চেষ্টায় আছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তারা বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে খবর পেয়েছে যে, আঙ্গারা নামের ওই জাহাজ চীনের একটি বন্দরে নোঙর করা আছে। বিষয়টি চীন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, জাতিসংঘের বিধি অনুযায়ী কোনো সদস্য রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার সাথে বাণিজ্য করতে পারবে না। তাই, চীন ও রাশিয়ার প্রতি সংস্থাটির আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।  রয়টার্স জানায়, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহের মাধ্যমে দেখা গেছে, রুশ জাহাজ আঙ্গারা চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের ঝুশান সিনিয়া শিপইয়ার্ডে নোঙর করে রয়েছে। জাহাজের ট্রান্সপন্ডার স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যাওয়ায় এটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়।  জানা গেছে, ২০২২ সালের মাঝামাঝি রুশ জাহাজটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ওয়াশিংটন। নিষেধাজ্ঞার পরও এটি অন্তত ১১ বার উত্তর কোরিয়ার রাজিন বন্দর থেকে রাশিয়ার বন্দরে প্রায় ১১ বার যাতায়াত করেছে।   
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা স্বেচ্ছাচারিতামূলক : টিআইবি
আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান এবং জনগণের অর্থের শেষ অবলম্বন বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ আরোপের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এমন পদক্ষেপকে জনস্বার্থে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের তথ্য প্রকাশে গণমাধ্যমের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পথে অভূতপূর্ব প্রতিবন্ধকতা উল্লেখ করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।  শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) টিআইবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের তথ্য সংগ্রহে গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীরা বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশের ক্ষেত্রে এক মাস ধরে বাধার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। এক্ষেত্রে নিরুপায় হয়ে সমস্যা সমাধানে গভর্নরের সহায়তা চাইলেও ইতিবাচক কোনো ফল আসেনি। এটিকে জনগণের তথ্য জানার আইনসিদ্ধ অধিকার নিশ্চিতের পথে অনৈতিক ও স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রশ্ন রাখেন, ‘খেলাপি ঋণ, আর্থিক প্রতারণা ও জালিয়াতি এবং সার্বিক সুশাসনের অভাবসহ নানাবিধ সংকটে ব্যাংকিং খাত যখন জর্জরিত তখন তথ্যের অবাধ প্রবাহ বন্ধের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ নেতৃত্ব সবার কাছে কী বার্তা দিতে চান? কিংবা এর মাধ্যমে  বাংলাদেশ ব্যাংক কী অর্জন করতে চায়? তবে কি খাদের কিনারায় উপনীত ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিজেদের ব্যর্থতার তথ্য গোপন করতেই এই উদ্যোগ? না-কি যারা ঋণখেলাপি ও জালিয়াতিসহ এ খাতের সংকটের জন্য দায়ী তাদের স্বার্থ সুরক্ষার প্রয়াস এটি।’   বিগত কয়েক বছরে আর্থিক খাতের হাজার হাজার কোটি টাকা কেলেঙ্কারির যেসব তথ্য জনস্বার্থে প্রকাশিত হয়েছে তার বেশিরভাগই এসেছে গণমাধ্যমকর্মীদের বাংলাদেশ ব্যাংকে অবাধ প্রবেশাধিকারের সূত্র ধরে, এমন কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ড. জামান বলেন, ‘তবে কী ধরে নিতে হবে, বাংলাদেশ ব্যাংক এ খাতের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ঋণখেলাপি, জালিয়াতি ও অর্থপাচারের মতো অপরাধী মহলের অব্যাহত সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে এবং চক্রটির হাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি ও নেতৃত্ব যে জিম্মি হয়ে পড়েছে, তা গোপন করতেই এহেন নিন্দনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।’ ব্যাংকিং খাত নিয়ে জনমনে যখন আস্থার প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, কিংবা ব্যাংকের গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষার নামে ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেই দৃশ্যমান কিংকর্তব্যবিমূঢ়, তখন গোপনীয়তার ঘেরাটোপ আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে মনে করে টিআইবি।  গণমাধ্যমকর্মীরা নিরুপায় হয়ে সমস্যা সমাধানে গর্ভনরের সহায়তা চাইলে ব্যাংকিং খাতের তথ্যের স্পর্শকাতরতা বিষয়ে গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের প্রশিক্ষণের নামে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার মাধ্যমে মূল বিষয়কে এড়িয়ে বাস্তবে সাংবাদিকদের বাধাহীন তথ্য সংগ্রহের সুযোগ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে যে বাংলাদেশ ব্যাংক নারাজ, তা পরিষ্কার বলে উদ্বেগ প্রকাশ করছে টিআইবি।  যা শুধু স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশই নয়, বরং ঔপনিবেশিক মানসিকতারও পরিচায়ক আখ্যা দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলছেন, ‘সমস্যার সমাধান না করে গভর্নর যে পাসনির্ভর ব্যবস্থা চালু করার কথা বলছেন, প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিচ্ছেন, তা আর যা-ই হোক, গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত দায়িত্ব, বিশেষ করে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বাস্তবে অপ্রতিরোধ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপই শুধু নয়, বরং এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তাই সাংবাদিকদের সাক্ষাৎ প্রদানে বিরত থাকতে চাইবেন। কেননা সাক্ষাতের পর সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক প্রতিবেদন প্রকাশ করলে নির্দিষ্ট কর্মকর্তাকে যে প্রশাসনিক জবাবদিহির নামে হয়রানির মুখোমুখি হতে হবে, তা না বললেও চলে। অর্থাৎ তথ্য প্রাপ্তির সুযোগ কার্যত রুদ্ধ হবে, জনগণ ব্যাংকিং খাতে কী হচ্ছে, কেন এবং কারা জনগণের অর্থ লোপাটের ফলে লাভবান হচ্ছেন, তা জানার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। যা কোনোভাবেই সুবিবেচকের কাজ হতে পারে না। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মনে রাখতে হবে, তাঁরা জনস্বার্থের সুরক্ষার ভূমিকা পালনের কথা, ঋণখেলাপি আর ব্যাংকিং খাতের সংকটের জন্য দায়ী মহলের নয়। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশের পরিস্থিতি নিশ্চিতে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণার মাধ্যমে অবাধ তথ্য প্রকাশের পথকে সুগম করবেন- এমনটাই প্রত্যাশা করে টিআইবি।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪
X