উত্তর কোরিয়া থেকে অস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল একটি কার্গো জাহাজ। উদ্দেশ্য রাশিয়ার হাতে সেই অস্ত্র তুলে দেওয়া। সরাসরি মস্কোয় অস্ত্র পাঠালে পড়তে হতে পারে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায়। তাই জাহাজটিকে নেওয়া হয় চীনের বন্দরে। পরিকল্পনা ছিল, সেখান থেকেই চালানটি পাঠানো হবে মস্কোয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশেষ এক প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বলা হচ্ছে, যুদ্ধের প্রথম দিকে কিছুটা বেকায়দায় পড়লেও চীন ও উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র এবং গোলাবারুদে আবারও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে রুশ সেনারা। যুদ্ধের ময়দানে পুতিন বাহিনীর দাপটে একের পর এক ভূমি হারাচ্ছে ইউক্রেন। পশ্চিমাদের দাবি, পুতিন বাহিনীর এমন সাফল্যের পেছনে রয়েছে শি জিনপিং ও কিম জং উনের দেশের অস্ত্র সরবরাহ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হাতে আসা স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে সেই দৃশ্য। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে চীনের দেওয়া সমর্থন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বাড়তে থাকার মধ্যেই সামনে এলো এই খবর।
ব্রিটেনের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট বলেছে, রুশ জাহাজ আঙ্গারা ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে রাশিয়ার বন্দরে হাজার হাজার কন্টেইনারে করে উত্তর কোরিয়ার গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য বলছে, জাহাজটিকে গেল ফেব্রুয়ারি থেকে চীনের পূর্বাঞ্চলীয় ঝেজিয়াং প্রদেশের শিপইয়ার্ডে নোঙর করে থাকতে দেখা গেছে। চীনের বন্দরে এ জাহাজের উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্রদেশগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জকেই সামনে নিয়ে এসেছে, যারা রাশিয়ার প্রতি সামরিক এবং অর্থনৈতিক সমর্থনের রাশ টেনে ধরার চেষ্টায় আছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তারা বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে খবর পেয়েছে যে, আঙ্গারা নামের ওই জাহাজ চীনের একটি বন্দরে নোঙর করা আছে। বিষয়টি চীন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, জাতিসংঘের বিধি অনুযায়ী কোনো সদস্য রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার সাথে বাণিজ্য করতে পারবে না। তাই, চীন ও রাশিয়ার প্রতি সংস্থাটির আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রয়টার্স জানায়, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহের মাধ্যমে দেখা গেছে, রুশ জাহাজ আঙ্গারা চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের ঝুশান সিনিয়া শিপইয়ার্ডে নোঙর করে রয়েছে। জাহাজের ট্রান্সপন্ডার স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যাওয়ায় এটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
জানা গেছে, ২০২২ সালের মাঝামাঝি রুশ জাহাজটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ওয়াশিংটন। নিষেধাজ্ঞার পরও এটি অন্তত ১১ বার উত্তর কোরিয়ার রাজিন বন্দর থেকে রাশিয়ার বন্দরে প্রায় ১১ বার যাতায়াত করেছে।
মন্তব্য করুন