গাজীপুরে ছাত্র ও পরিবহন শ্রমিকের মারামারি, বাস চলাচল বন্ধ
গাজীপুরে তুচ্ছ ঘটনার জেরে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) ছাত্র ও শ্রমিকদের সঙ্গে মারামারি ও বাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে গাজীপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে ঢাকার সঙ্গে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে অন্যান্য রোডের বাস চলাচল স্বাভাবিক আছে। সদর থানার ওসি (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী জানান, গত রাত একটার দিকে ডুয়েটের তিনজন শিক্ষার্থী মোটরসাইকেলে শিববাড়ি মোড় থেকে ডুয়েট যাওয়ার সময়ে বাস স্ট্যান্ড এলাকায় পেছন থেকে মোটরসাইকেলটিকে প্রায় ধাক্কা লাগিয়ে দেয়। এতে ওই শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে  শ্রমিকদের ওপর চড়া হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে ডুয়েট শিক্ষার্থীরা এসে বাস স্ট্যান্ড এলাকায় কয়েকটি বাসের জানালা-কাচ ভাঙচুর করে এবং শ্রমিকদের ওপর হামলা করে। এই ঘটনার জেরে সকাল থেকে গাজীপুর বাস স্ট্যান্ডের শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করে বাস চলাচল বন্ধ রাখে। তবে অন্যান্য সকল পরিবহন স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি সুরাহা করে বাস চালানোর চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।
০৩ মে, ২০২৪

দিনভর ভোগান্তি শেষে পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত
বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা পরিবহন ধর্মঘট ১২ ঘণ্টার মাথায় স্থগিত ঘোষণা করেছে। গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভার পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় ঐক্য পরিষদ। এর আগে ধর্মঘট কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে বৈঠক ডাকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ঐক্য পরিষদের সদস্যরাও উপস্থিত ছিল। দুপুরে শুরু হওয়া এ আলোচনা শেষ হয় ৬টার দিকে। আলোচনায় কিছু দাবি তুলে ধরেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে ধর্মঘট স্থগিত করেন তারা। বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছা বলেন, আপাতত আমরা ধর্মঘট স্থগিত করেছি। কিন্তু আমরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে আমাদের নিরাপত্তা চাই। এখন থেকে কাপ্তাই সড়কে পুলিশ পাহারা দেওয়া হবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। যদি আমাদের কোনো গাড়িতে ফের হামলা হয়, সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে দিনভর দুর্ভোগে পড়েন হাজারো মানুষ। নতুন ব্রিজ এলাকায় বাস-মিনিবাস না পেয়ে চট্টগ্রাম থেকে বাড়ির পথে যেতে কেউ ব্যাগ নিয়ে উঠে পড়েন ট্রাকে, কেউ ভাড়া করেন মিনি ট্রাক। তুলনামূলক কাছাকাছি দূরত্বে যারা পাড়ি দিচ্ছিলেন, তাদের ভরসা ছিল ভ্যানগাড়ি কিংবা বাইক। বাইক-ট্রাক-ভ্যানগাড়িতে করে অনেকেই গন্তব্যে যেতে পারলেও তল্পিতল্পা হাতে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ফুটপাত কিংবা সড়কে। জেলা-উপজেলা থেকে কোনো গণপরিবহনও নগরীতে প্রবেশ করেনি। দূরপাল্লার গণপরিবহনেরও একই পরিস্থিতি। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে গতকাল সকাল থেকে সড়কপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে চট্টগ্রাম অঞ্চল। এরপর বেলা গড়াতেই গণপরিবহন সংকটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তপ্ত রোদ যেন সেই দুর্ভোগে বাড়তি মাত্রা যোগ করে। নগরের অন্যতম প্রবেশমুখ কাপ্তাই রাস্তা এলাকা। রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, রাঙামাটি, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, রাজস্থলীসহ আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে এই প্রবেশমুখ দিয়েই প্রতিদিন শহরে যাতায়াত করে অন্তত ৮ লাখ মানুষ। দুর্ঘটনায় চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা কেন্দ্র করে টানা চার দিন সড়কটি অবরুদ্ধ ছিল। গত ২২ এপ্রিল চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েট শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং তাওফিক হোসাইন নিহত হন। সহপাঠী মৃত্যুর ঘটনায় টানা চার দিন আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অবরুদ্ধ ছিল চট্টগ্রাম-কাপ্তাই আঞ্চলিক মহাসড়ক। এর মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল সব একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বরে থাকা ও মূল ফটকে রাখা দুটি বাসে তারা আগুন ধরিয়ে দেন। পরে ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণা থেকে সরে আসে চুয়েট কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে ঘোষণা হয় ৯ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত বাসের ক্ষতিপূরণ দাবিসহ বিভিন্ন দাবিতে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দেয় চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

চট্টগ্রামে উত্তেজনা বাড়ছে, এবার ডাক পরিবহন ধর্মঘটের
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে এবার পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থী ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। শিক্ষার্থীর আন্দোলনের মুখে এবার পুড়িয়ে দেওয়া যানবাহনের ক্ষতিপূরণ দাবিসহ নানা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। অন্যদিকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরাও তাদের অবস্থানে অনড়। এ প্রেক্ষাপটে চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম। টানা পাঁচ দিন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ বলছে, আজ রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলায় বাস, মিনিবাস, হিউম্যান হলার, অটোরিকশা ও অটোটেম্পো চলাচল বন্ধ থাকবে। দূরপাল্লার কোনো বাস এসব জেলা ও মহানগর থেকে ছাড়বে না এবং ঢুকতেও পারবে না। এর আগে শনিবার সংগঠনের কার্যালয়ে জরুরি সভা শেষে ৪৮ ঘণ্টার এ ধর্মঘটের এ সিদ্ধান্ত হয়। মালিক-শ্রমিকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন নেতারা। গণপরিবহন মালিক শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো—চুয়েটে দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে ৪-৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও তিনটি বাস জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা গ্রহণ, ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং চুয়েটের তিন শিক্ষার্থীকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি নিবন্ধিত ছিল কি না, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল কি না, তিনজন একই সঙ্গে মোটরসাইকেলে ওঠার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন হয়েছে কি না এবং তারা মাদকাসক্ত ছিল কি না—এসব বিষয় তদন্তে কমিটি গঠন করা। ঐক্য পরিষদে যুক্ত সংগঠন পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী বলেন, আমাদের দাবি হচ্ছে, বাসের যেভাবে তদন্ত হচ্ছে, একইভাবে মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রেও তদন্ত করতে হবে। এ ছাড়া দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে পাঁচ লাখ করে ১০ লাখ টাকা এবং আহত শিক্ষার্থীকে তিন লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাস মালিক সমিতি। এর পরও চুয়েটের শিক্ষার্থীরা চার দিন ধরে সড়ক অবরোধ করে গাড়ি চলাচল করতে দেননি। চার-পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তিনটি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের এসব কর্মকাণ্ডও তো আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ মামলা করতে গেলেও থানা সেটা গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় ঐক্য পরিষদ বাধ্য হয়ে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করেছে। এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ থেকে ৯ মে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে চুয়েট কর্তৃপক্ষ। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুক্র, শনিবার ও মে দিবসের বন্ধসহ ১৫ দিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। গত শুক্রবার রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয় আন্দোলন স্থগিত করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কর্তৃপক্ষের ঘোষণার পরও নিরাপদ সড়কের দাবিতে নিজেদের অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধ করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি না বাড়িয়ে এখন তারা ‘পরিমার্জিত আন্দোলনের’ কথা বলছেন। এরই মধ্যে শনিবার ফের ক্যাম্পাস জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় লাইভে এসে তারা দাবি করেন, সড়ক অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি থেকে সরে এসেছেন তারা। কিন্তু বিভিন্ন ধাপে আন্দোলন চলবে। দাবি আদায় না হলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের মতো কর্মসূচি থাকতে পারে। আন্দোলনকারীদের পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম তামিম কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনটি মূলত নিরাপদ সড়কে আন্দোলন। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসেছিলাম। কোনো সুরাহা হয়নি। পরে ৯ মে পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থায় আমাদের দাবি আদায়ের ব্যাপার থেকে আমরা সরে আসিনি। শাহ আমানত বাসসহ আরও একটি কোম্পানির বাস চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কে বেশ বেপরোয়া গতিতে চলে। এর আগে এ দুই পরিবহন বাসের কারণে আমাদের অনেক সহপাঠী আহত হয়েছেন। এখন দুজনকে হারিয়েছি আমরা, আরও একজন হাসপাতালে ভর্তি। সড়ক অবরোধের মতো কঠিন কর্মসূচি দিলে মানুষের ভোগান্তি হতে পারে। আমাদের দাবিগুলো মানা না হলে নির্দিষ্ট সময়ের পর আমরা আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করব।’ গত ২২ এপ্রিল চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েট শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং তাওফিক হোসাইন নিহত হন। সহপাঠী মৃত্যুর ঘটনায় টানা চার দিন আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অবরুদ্ধ ছিল চট্টগ্রাম-কাপ্তাই আঞ্চলিক মহাসড়ক। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সব একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় প্রশাসন। এতে ছাত্রদের বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে ও ছাত্রীদের শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ঘোষণার পরপর শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বরে থাকা ও মূল ফটকে রাখা দুটি বাসে তারা আগুন ধরিয়ে দেন। পরে ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণা থেকে সরে আসে চুয়েট কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে ঘোষণা হয় ৯ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট 
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে এবার পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থী ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুড়িয়ে দেওয়া যানবাহনের ক্ষতিপূরণ দাবিসহ নানা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।  অন্যদিকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরাও তাদের অবস্থানে অনড়। চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উতপ্ত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম। টানা পাঁচ দিন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) পরিবহন সংগঠনের কার্যালয়ে জরুরি সভা শেষে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রোববার (২৮ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ভোর ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলায় বাস, মিনিবাস, হিউম্যান হলার, অটোরিকশা ও অটোটেম্পু চলাচল বন্ধ থাকবে। দূরপাল্লার কোনো বাস এসব জেলা ও মহানগর থেকে ছাড়বে না এবং ঢুকতেও পারবে না। এ ছাড়া গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো- চুয়েটে দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে ৪-৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও ৩টি বাস জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা গ্রহণ, ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং চুয়েটের তিন শিক্ষার্থীকে বহনকারী মোটরসাইকেলটির নিবন্ধন, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স, তিনজন একসঙ্গে মোটরসাইকেলে ওঠার নিয়ম ও তারা মাদকাসক্ত ছিল কি না এসব বিষয় তদন্ত কমিটি গঠন করা। পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, আমাদের দাবি হচ্ছে, বাসের যেভাবে তদন্ত হচ্ছে, একইভাবে মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রেও তদন্ত করতে হবে। এ ছাড়া দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে পাঁচ লাখ করে ১০ লাখ টাকা এবং আহত শিক্ষার্থীকে তিন লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাস মালিক সমিতি। তিনি বলেন, এরপরও চুয়েটের শিক্ষার্থীরা চারদিন ধরে সড়ক অবরোধ করে গাড়ি চলাচল করতে দেয়নি। ৪/৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে তারা। এ ছাড়া ৩টি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের এসব কর্মকাণ্ড তো আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ মামলা করতে গেলেও থানা সেটা গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় ঐক্য পরিষদ বাধ্য হয়ে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করেছে। এ পরিস্থতিতে রোববার (২৮ এপ্রিল) থেকে ৯ মে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে চুয়েট কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চুয়েট কর্তৃপক্ষের ঘোষণার পরও নিরাপদ সড়কের দাবিতে নিজেদের অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২৭ এপ্রিল) নিরাপদ সড়কের দাবিতে ফের ক্যাম্পাস জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম তামিম কালবেলাকে বলেন, আমাদের আন্দোলনটি মূলত নিরাপদ সড়কে আন্দোলন। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনায় করেছিলাম। কোনো সুরাহা হয়নি। পরে ৯ মে পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থায় আমাদের দাবি আদায়ের ব্যাপার থেকে আমরা সরে আসিনি। তিনি বলেন, শাহ আমানত বাসসহ আরও একটি কোম্পানির বাস চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কে বেশ বেপোরোয়া গতিতে চলে। এর আগে এ দুই পরিবহন বাসের কারণে আমাদের অনেক সহপাঠী আহত হয়েছেন। এখন দুজনকে হারিয়েছি আমরা, আরও একজন হাসপাতালে ভর্তি। সড়ক অবরোধের মতো কঠিন কর্মসূচি দিলে মানুষের ভোগান্তি হতে পারে। তাই অবরোধ কর্মসূচি থেকে সরে আসা হয়েছে। আমাদের দাবিগুলো মানা না হলে নির্দিষ্ট সময়ের পর আমরা আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করব। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- পলাতক চালক ও সহযোগীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা, ক্যাম্পাসে আধুনিক চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা দেওয়া, রাস্তার মাথা এলাকা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত চার লেন মহাসড়ক করা, প্রতিটি বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার কাগজপত্র ও চালকদের লাইসেন্স নিয়মিত যাচাই করা, ছাত্রকল্যাণ পরিষদকে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং ছাত্র প্রতিনিধিদল গঠন করা, নিহত ও আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া। এর আগে সোমবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েট শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং তাওফিক হোসাইন নিহত হন। সহপাঠী মৃত্যুর ঘটনায় টানা চারদিন আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় অবরুদ্ধ ছিল চট্টগ্রাম-কাপ্তাই আঞ্চলিক মহাসড়ক।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভেঙে ঢুকে গেল বাস, নিহত প্রকৌশলী
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে ঢুকে পড়ে রাইদা পরিবহনের বেপরোয়া একটি বাস। এ ঘটনায় সিভিল এভিয়েশনের সিনিয়র এক ইঞ্জিনিয়ার নিহত হন। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত এ কর্মকর্তার নাম মাইদুল ইসলাম সিদ্দিকী। তিনি সিভিল এভিয়েশনের সিনিয়র সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র দাস বলেন, আজ সকাল ১০টার দিকে রাইদা পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তৃতীয় টার্মিনালের নিরাপত্তা বাউন্ডারি ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়। এ সময় রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন সিভিল এভিয়েশনের সিনিয়র সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মাইদুল ইসলাম। তার মোটরসাইকেলটি রাইদা পরিবহনের বাসের নিচে চলে যায়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সুমন চন্দ্র দাস বলেন, নিহতের মরদেহের সুরতহাল চলছে। সুরতহাল শেষে মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ঘটনায় জড়িত বাসচালক, হেলপার পালিয়ে গেছে। তবে বাসটিকে জব্দ করা হয়েছে। এই বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সড়কের অবস্থা ভালো, গাড়ির সংখ্যাও বেশি : সড়ক সচিব
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী বলেছেন, ঈদে অনেক লোক রাস্তায় নামে। তাদের যাত্রা নির্বিঘ্ন ও যানজট নিরসনে গতবারের চেয়ে এবার ভালো ব্যবস্থাপনা থাকবে। এবার সড়কের অবস্থা ভালো, গাড়ির সংখ্যাও বেশি। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে গাজীপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সচিব এসব কথা বলেন। ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। লক্কড় ঝক্কড় মার্কা গাড়ি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চাই না এ গাড়িগুলো রাস্তায় আসুক। ঈদে এমন পরিস্থিতি হয় মানুষ রাস্তায় পড়ে থাকে। গাড়ি পাচ্ছে না তখন কিন্তু নাছোড়বান্দা হয়ে সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু এবার কঠোর হবো যেন এ গাড়িগুলো যেতে না পারে। জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় সওজ অধিদপ্তর প্রধান প্রকৌশলী, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি, জেলা পুলিশ সুপার, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, হাইওয়ে পুলিশসহ সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সভায়, আসন্ন ঈদুল ফিতর উদযাপনে সড়ক ও রেলযাত্রীদের সার্বিক সুবিধা-অসুবিধা মনিটরিং, সার্বিক নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ সাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার নানা দিক আলোচনা হয় এবং ঈদের তিন দিন আগ থেকে পণ্য পরিবহনের ট্রাক বন্ধ থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়।
০৫ এপ্রিল, ২০২৪

প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে নৈরাজ্য বাড়বে
বিদ্যমান সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন করে শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ কমালে রাস্তায় নৈরাজ্য ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়বে। আইনটি সংশোধনের এ উদ্যোগকে আত্মঘাতী আখ্যা দিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল বৃহস্পতিবার টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, তরুণ শিক্ষার্থীদের অভূতপূর্ব আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা হলেও তা কার্যকর করা হয়নি। ফলে সড়কে বিশৃঙ্খলা, অনাচার ও নিরাপত্তাহীনতার মাত্রা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। জনস্বার্থ বিবর্জিত প্রস্তাবিত সংশোধনীর ফলে আইনটি উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত ও দুর্বল হয়ে পড়বে। মালিক-শ্রমিক পক্ষের হাতে সড়ক ব্যবস্থাপনার জিম্মিদশা আরও বাড়বে। বিদ্যমান আইনের অন্তত ১২টি ধারায় পরিবর্তন এনে এবং অধিকাংশ ধারায় চালক ও চালকের সহকারীদের জেল-জরিমানা ও শাস্তি কমিয়ে গত ১৩ মার্চ সড়ক পরিবহন সংশোধন আইন-২০২৪-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এমন সংশোধনীকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা এনে তা জনগণের জন্য নিরাপদ করে তুলতে যেখানে জরিমানা ও শাস্তির বিধান যৌক্তিকভাবে বাড়ানো প্রয়োজন ছিল, সেখানে সংশোধনীর মাধ্যমে শাস্তি কমিয়ে দেওয়া হলে সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়াবে এবং জনগণের জন্য আরও বেশি অনিরাপদ হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে, চালক-শ্রমিকদের আইন না মানার প্রবণতার পাশাপাশি সড়কে অনিয়মকেও উৎসাহিত করবে। সড়ককে নিরাপদ করে তুলতে নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও, অবস্থাদৃষ্টে সরকারের অবস্থান ঠিক তার উল্টো বলে প্রতীয়মান হয়। তবে সড়ক পরিবহন আইন ২০২৪-এ যানবাহনের বীমা বাধ্যতামূলক করা, সুপারভাইজার সংযুক্ত করা এবং গণপরিবহনে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন বা নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় সংক্রান্ত ধারা লঙ্ঘনের দণ্ড আলাদাভাবে করা হয়েছে। এ তিনটি সংশোধনীকে টিআইবি সতর্ক সাধুবাদ জানিয়েছে। টিআইবির সাম্প্রতিক গবেষণায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকপক্ষের হাতে সড়ক ব্যবস্থাপনার জিম্মিদশার প্রকটতার বিষয়টি উঠে আসে উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সড়ক আইন সংশোধনের মাধ্যমে শাস্তি ও জরিমানা কমিয়ে আনার বিষয়টি এ জিম্মিদশার সঙ্গে দৃশ্যত সম্পর্কিত। আইনে সংশোধন এনে শাস্তি কমানোর পেছনে সরকারের ওপর রাজনৈতিক মদদপুষ্ট মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের যে প্রভাব রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। এই সংশোধনী সংসদে গৃহীত হলে জনগণের স্বার্থ ভূলুণ্ঠিত হবে। এ আত্মঘাতী পথ থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
২৯ মার্চ, ২০২৪

প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে নৈরাজ্য-নিরাপত্তাহীনতা বাড়বে : টিআইবি
বিদ্যমান সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন করে শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ কমালে সড়কে নৈরাজ্য ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়বে। আইনটি সংশোধনের এমন উদ্যোগকে আত্মঘাতীমূলক আখ্যা দিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতে এমন উদ্বেগ জানানো হয়েছে।  তরুণ শিক্ষার্থীদের অভূতপূর্ব আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা হলেও কার্যকর ও বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে সড়কে বিশৃঙ্খলা, অনাচার ও নিরাপত্তাহীনতার মাত্রা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। জনস্বার্থ বিবর্জিত প্রস্তাবিত সংশোধনীর ফলে আইনটি উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যূত ও দুর্বল হয়ে পড়বে। ফলে মালিক-শ্রমিক পক্ষের হাতে সড়ক ব্যবস্থাপনার জিম্মিদশা আরও বাড়বে বলে মনে করছে সংস্থাটি। বিদ্যমান আইনের অন্তত ১২টি ধারায় পরিবর্তন এনে এবং অধিকাংশ ধারায় চালক ও চালকের সহকারীদের জেল জরিমানা ও শাস্তি কমিয়ে গত ১৩ মার্চ সড়ক পরিবহন সংশোধন আইন-২০২৪ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এমন সংশোধনী উদ্বেগজনক উল্লেখ করে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলায় এনে তা জনগণের জন্য নিরাপদ করে তুলতে যেখানে জরিমানা ও শাস্তির বিধান যৌক্তিকভাবে বাড়ানো প্রয়োজন ছিল, সেখানে সংশোধনীর মাধ্যমে শাস্তি কমিয়ে দেওয়া হলে সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়াবে এবং জনগণের জন্য আরও বেশি অনিরাপদ হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে, চালক-শ্রমিকদের আইন না মানার প্রবণতার পাশাপাশি সড়কে অনিয়মকেও উৎসাহিত করবে। সড়ককে নিরাপদ করে তুলতে নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও, অবস্থাদৃষ্টে সরকারের অবস্থান ঠিক তার উল্টোদিকে বলে প্রতীয়মান হয়। এমন সংশোধনের ফলে সড়কে অনিয়ম-দুর্নীতি, নৈরাজ্য আরও বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি যেমন সৃষ্টি হবে, তেমনি সড়ক-মহাসড়কে অনাকাঙ্ক্ষিত মর্মান্তিক মৃত্যুর মিছিল কেবল দীর্ঘই করবে।’ তবে সড়ক পরিবহন আইন ২০২৪-এ যানবাহনের বিমা বাধ্যতামূলক করা, সুপারভাইজার সংযুক্ত করা এবং গণপরিবহনে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন অথবা নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায়সংক্রান্ত ধারা লঙ্ঘনের দণ্ড আলাদাভাবে করা হয়েছে। এ ৩টি সংশোধনীকে টিআইবি সতর্ক সাধুবাদ জানিয়েছে। টিআইবির সাম্প্রতিক গবেষণায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকপক্ষের হাতে সড়ক ব্যবস্থাপনার জিম্মিদশার প্রকটতার বিষয়টি উঠে আসে উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সড়ক আইনের সংশোধনের মাধ্যমে শাস্তি ও জরিমানা কমিয়ে আনার বিষয়টি এ জিম্মিদশার সঙ্গে দৃশ্যত সম্পর্কিত। আইনে সংশোধন এনে শাস্তি কমানোর পেছনে সরকারের ওপর রাজনৈতিক মদদপুষ্ট মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের যে প্রভাব রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। এই সংশোধনী সংসদে গৃহীত হলে জনগণের স্বার্থ ভূলুণ্ঠিত হবে। এ আত্মঘাতী পথ থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
২৮ মার্চ, ২০২৪

ঈদে বাড়তি ভাড়া না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি পরিবহন মালিকদের
আসন্ন ঈদযাত্রায় সড়কপথে যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা। পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে লক্কর-ঝক্কর যানবাহন মহাসড়কে না চালানোরও কথা দিয়েছেন তারা।  মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়ক পথে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। হাইওয়ের পুলিশের এই আয়োজনে অংশ নিয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা এসব প্রতিশ্রুতি দেন। হাইওয়ে পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজি মো. শাহাবুদ্দিন খান এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি (অপারেশনস্) শ্যামল কুমার মুখার্জী। সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী সকল মহাসড়ক হাইওয়ে পুলিশের নিয়ন্ত্রণাধীন করার প্রস্তাব দেন। এছাড়াও ঈদে যাত্রী পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজধানীর আশপাশের জেলাসমূহের পুলিশ সুপারদের সঙ্গে সমন্বয় করে যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশকে কাজ করার আহ্বান জানান। চালকদের আইন-শৃঙ্খলা মেনে রাস্তায় গাড়ি চালানোর আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন সমিতির কার্যকরি সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ফিটনেসবিহীন যানবাহন যেন ঈদের সময় চলাচল করতে না পারে। পাশাপাশি যানজট নিরসনে ড্রোন ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি। নিরাপদ সড়ক চাই-নিসচা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, থ্রি হুইলার মহাসড়কের দুর্ঘটনার বড় একটি কারণ। এসব যানবাহন চালাচল বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হাইওয়ে পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।   সভায় ডিআইজি (উত্তর) ও অতিরিক্ত দায়িত্ব (অপারেশনস্) মাহ্ফুজুর রহমান, চালকদেরকে নির্ধারিত আসনের অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করার অনুরোধ জানান। ঈদযাত্রায় ফিটনেসবিহীন যানবাহন না চালাতে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের সহযোগিতা চেয়ে হাইওয়ে পুলিশ প্রধান শাহাবুদ্দিন খান বলেন, মহাসড়ক নিরাপদ ও যান চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে এবং অপরাধ দমনে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, মহাসড়কে নিয়ম শৃঙ্খলা রক্ষায় চালকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। চালকদের যথাযথ সচেতনতাই মহাসড়কে যানজট ও দুর্ঘটনা কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়াও মহাসড়কে সকল প্রকার চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর নির্দেশ দিয়ে হাইওয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, বডি ওর্ন ক্যামেরা ছাড়া হাইওয়ে পুলিশের কোনো সদস্য মহাসড়কে ডিউটি করতে পারবে না। তিনি বলেন, পণ্য পরিবহনে মালিক-শ্রমিক পক্ষ যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়, এ বিষয়ে সবাইকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সভায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির পরিচালক এফবিসিসিআই কার্যকরী সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ বখতিয়ার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
১৯ মার্চ, ২০২৪

‘সড়ক পরিবহন আইন ঢিলা হলে নৈরাজ্য আরও বাড়বে’ 
সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের সরকারি উদ্যোগে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, আইন সংশোধন হলে সড়ক দুর্ঘটনা আরও বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) এক বিবৃতিতে তিনি এ শঙ্কার কথা জানান। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সড়কে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নতুন যে সড়ক পরিবহন আইন পাস করা হয়েছিল, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে বাস্তবে সে আইন কার্যকরী হয়নি। ফলে পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে।  তিনি আরও বলেন, পত্রিকার হিসাব অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘনায় প্রতি মাসে সারা দেশে গড়ে তিনশোর উপরে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, আর আহত হচ্ছে এর কয়েক গুণ; অসংখ্য মানুষকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে। সাইফুল হক ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের চাপে এখন পরিবহন আইনের ১২টি ধারা পরিবর্তন করে শাস্তি কমানো ও জামিনের আওতা বৃদ্ধি পেলে মালিক ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা যে আরও বেপরোয়া হবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়। বাস্তবে পরিবহন সেক্টরে এক ধরনের নৈরাজ্য চলছে। এরা কেবল জনগণকে নয়, সরকারকেও জিম্মি করে ফেলেছে। এই জিম্মিদশায় পরিবহন মালিকদের চাহিদামতো এখন এই আইন সংশোধিত হয়ে ঢিলা করা হলে সড়ক-মহাসড়কে অনাকাঙ্ক্ষিত মর্মান্তিক মৃত্যুর মিছিল কেবল দীর্ঘই করবে। বিবৃতিতে পরিবহন সংশ্লিষ্ট সবার মতামত না নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন থেকে বিরত থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই সাধারণ সম্পাদক।
১৪ মার্চ, ২০২৪
X