সাবধান! ঢাকার রাস্তায় ভয়ংকর প্রতারক চক্র, হারাবেন সর্বস্ব
প্রতিদিন নিত্য-নতুন প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন ঢাকাবাসী। মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টিসহ বিভিন্ন প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন। নতুন করে আরেকটি চক্রের সন্ধান মিলেছে, যারা প্রথমে একটি কাগজ ধরিয়ে পড়ে দিতে বলে; তারপরই ঘটে আসল ঘটনা। কাগজটি পড়া ব্যক্তি মুহূর্তে হারান নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ, চলে যান প্রতারক চক্রের কব্জায়। প্রতারকদের দিয়ে দেন সবকিছু। অনেক সময় অজ্ঞানও হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী। তেমনই একটি ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন, রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা পূর্ণেন্দু তালুকদার। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) পূর্ণেন্দু তালুকদার তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জানান, ‘একটুর জন্য বেঁচে আসলাম; আজকে অফিসের পর শ্যামলীতে এক হাসপাতালে যাই অসুস্থ এক ফ্রেন্ডকে দেখতে। আসার পথে বাসে করে আসতেছিলাম। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোডের মোড়ে নামি, রাস্তা ক্রস করে শংকর যাব। জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হবো ঠিক তখনই পেছন থেকে কেউ আমাকে হাত দিয়ে ডাক দেয় এবং পিছেনে তাকানোর আগেই তার একটা হাতে কাগজ এবং ওইটা আমার মুখ বরাবর নিয়ে আসতে চায়। সে বলে উঠল দেখেন তো এইটা কি?’ তিনি আরও জানান, ‘কয়েকদিন আগে ফেসবুকে সেম একটা কাহিনি পড়ি। গত ২ দিন আগে একটা দোকানে কোল্ড ড্রিংকস কিনতে গিয়ে শুনি সেম কাহিনি হয় একটি ছেলের সাথে। সে না-কি সবকিছু দিয়ে দিয়েছে তার কাছে যা ছিল। ওই দোকান থেকে ১০ হাজার টাকাও তুলতে চেয়েছিল কিন্তু দোকানদার তার অবস্থা দেখে টাকা তুলতে দেয়নি, বরং বাসায় পাঠিয়ে দেয়।’ পূর্ণেন্দু তালুকদার বলেন, ‘এই দুইটি ঘটনা জানি বলেই, পেছন থেকে কাগজসহ ওই হাতটা দেখে আমি ১ সেকেন্ডের ও কম সময়ে মুখটা সরিয়ে নেই। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। রাস্তা পার হতে হতেই আমার পা অবশ হতে থাকে পরে আমার হাত। আমি বুঝতে পারি আমার সাথে বাজে কিছু একটা হতে যাচ্ছে। আমি পেছনে ফিরে লোকটাকে এক পলক দেখেও নেই। ভিক্ষুকের মতো দেখতে। লুঙ্গি আর সাদা শার্ট পড়া। মুখে দাড়ি, শার্টের বোতাম খোলা। রাস্তা পার হয়েই দেখি কতগুলো রিকশা, আমি রিকশায় উঠে পড়ি। রিকশায় উঠে আমি আর বলতে পারছি না কোথায় যাব। রিকশা চালক বলার আগেই দেখলাম রিকশা টান দেওয়ার একটা ভাব। হয়তোবা সিন্ডিকেট মেম্বার, তখন কাউকে বিশ্বাস করার মতো অবস্থা ছিল না। রিকশায় বসে ব্রেনকে একটিভ রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাই আর ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেই যেন সেন্স না যায়। বুকের ভেতর কেমন যেন খালি হয়ে যাচ্ছে।’  তিনি বলন, ‘কাগজটার দিকে তাকাই নাইও ভালো করে, তাও এই অবস্থা। শংকর আসতে আসতে নিজেকে কন্ট্রোলে আনতে পারি। রিকশা জ্যামের মধ্যে দাঁড়ায়। আমি নেমে যাই এবং বাসার নিচে পর্যন্ত চলে আসি। রিকশায় থাকা অবস্থায় আমি ফোনটা বের করে কাউকে যে কল দিব, সেই অবস্থাটুকু ছিলো না।’  পূর্ণেন্দু তালুকদার বলেন, ‘বাসার নিচে এসে পরিচিত এক বড় ভাইকে পাই এবং ওনাকে সব ঘটনা খুলে বলি। তারপর উনি আর আরেক ভাইকে নিয়ে বের হই তাকে খুঁজে বের করার জন্যে। মোটামুটি ভালো এরিয়া কভার করি কিন্তু খুঁজে পাইনি।’  সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘এইবারের মতো কিছু হয়নি। রিকশা থেকে নামার পর থেকেই আমি মোটামুটি সুস্থ। আমার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন যারাই আমার ফ্রেন্ডলিস্ট এ আছেন, কখনো কেউ এরকম কাগজ দিলে তাকাবেনও না। আর যদি এমন হয়েও যায় আশপাশে যেকোন শো রুম বা বিশ্বস্ত জায়াগায় চলে যান। বিলিভ মি এক মিলি সেকেন্ডও লাগবে না আপনাকে বশ করতে। আমি বেঁচে আসতে পেরেছি তার কারণ আগেই বললাম, ‘ব্রেন ওয়ার্ক্স লাইক প্যাটার্ন’। এই জিনিসগুলো পড়েছি এবং শুনেছি। তাই কাগজ দেখার সাথে সাথে ব্রেন বুঝে ফেলেছে এবং সাব কন্সাস মাইন্ড আমার মুখটা সরিয়ে নেয়। কারণ ঘটনা এত দ্রুত হবে আপনি বুঝে কিছু করতে পারবেন না, ততক্ষণে অনেক দেরি। কাগজটা হাতে নিলে বা আরেকটু সময় থাকলে হয়তো কোন রাস্তায় সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে থাকতাম। আর আমি সাথে সাথে কোন একশন বা ছবি তোলার মতো কোনো কাজ করতে পারিনি, কারণ আমি বুঝতে পেরেছি বাসায় পৌঁছাই আগে, তারপর যা হওয়ার হবে। আপনারা নিজেও সতর্ক থাকুন, অন্যদেরও সতর্ক রাখুন।’ প্রসঙ্গত, স্কোপোলামিন নামে এক ধরণের ভয়ংকর নেশা জাতীয় রাসায়নিক উপাদান দিয়ে মানুষকে বশ করা হয়। যা  ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ বা ‘ডেভিলস ব্রেদ’ নামেও পরিচিত। এটি মস্তিষ্কের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। দুর্বৃত্তরা লোকজনকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুটে নিতে এটি ব্যবহার করে। বর্তমানে এটি মাদক হিসাবে বা হেলুসিনেটিক ড্রাগ হিসাবে খুব ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ক্ষতির মাত্রা কোকেন থেকে বহুগুণ বেশি। বাংলাদেশের নয়া আতঙ্ক হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে এ মাদক। এর প্রভাব এতটাই ভয়ংকর যে, কোনো ব্যক্তিকে সেকেন্ডেই নিজের নিয়ন্ত্রণে অনায়াসেই আনা যায়। ফলে অনেক ব্যবসায়িক এবং করপোরেট সেক্টরেও কর্তাব্যক্তিদের এটি প্রয়োগ করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে থাকে প্রতারক চক্র। অন্যের আদেশ পালন করতে বাধ্য করানোই হলো এ মাদকের মূলমন্ত্র। ভুক্তভোগীরা হেপনোটাইজ হয়ে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যান। নানাভাবে ও নানা কৌশলে এটি প্রয়োগ করা হয়। যেমন, হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে, ঘ্রাণের মাধ্যমে, খাবারের সঙ্গে, চিরকুটের মাধ্যমে, কোমল পানীয়র সঙ্গে, বাতাসে ফুঁ দিয়ে। কলম্বিয়ায় উৎপন্ন হওয়া এ মাদকটি নিয়ে ১৮৮০ সালে সর্বপ্রথম জার্মান বিজ্ঞানী আলবার্ট লাদেনবার্গ গবেষণা শুরু করেন। ১৯২২ সালে এটি সর্বপ্রথম কারাবন্দিদের ওপর প্রয়োগ করা হয়।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

কুষ্টিয়ায় ব্যাংক থেকে টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র
কুষ্টিয়া ভেড়ামারার গোলাপনগর অগ্রণী ব্যাংক থেকে অভিনব কায়দায় টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় প্রতারকরা দুটো নকল ভাউচারের মাধ্যমে মোট ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।  আটককৃতরা হলেন মো. মামুন শেখ, কেরামত খান ও মো. সাইমন। তাদের তিনজনের বাড়িই মাদারীপুরে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।  গোলাপনগর অগ্রণী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক ইদ্রিস আলী বলেন, ফরেন রেমিট্যান্সের টাকা দুটো ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে কবির ও মনির সই জালিয়াতি করে নিয়ে যায়। তারা যথাক্রমে ১ লাখ ৫ হাজার এবং ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে তোলে। আরও একটি ভাউচার সাবমিট করার সময় আমাদের লোকজন বুঝতে পেরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের ধরি। দুজন টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে, বাকি তিনজনকে আমরা আটক করতে পেরেছি। ভেড়ামারা থানার ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের পরিদর্শক টিম রয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত চলছে। থানায় এ বিষয়ে এখনো কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
০৪ এপ্রিল, ২০২৪

ফুটপাত থেকে ‘রাজপ্রাসাদে’ / ‘ভুয়া’ আপসনামায় জামিন পান সেই প্রতারক মোস্তাফিজ
প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া রাজশাহীর গ্রিন প্লাজা রিয়েল এস্টেট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান ‘ভুয়া’ আপসনামা দেখিয়ে আদালতে জামিন নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলার বাদী এজাজুল হক এ দাবি করেছেন। তিনি বিষয়টি আদালতের নজরে আনবেন বলেও জানিয়েছেন। এজাজুল হকের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায়। এজাজুল হক গত ২১ মার্চ ভোররাতে মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা করেন। মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, মোস্তাফিজুরের কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট নিতে তিনি ১২ লাখ টাকা দেন। কিন্তু তিনি চুক্তিপত্রের শর্ত ভেঙে ফ্ল্যাটটি অন্যজনের কাছে বিক্রি করে দেন। এ কারণে এজাজুল টাকা ফেরত চাইলে তা দিতে অস্বীকার করেন মোস্তাফিজুর। এর পরই মোস্তাফিজুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেই দিন সকালেই তাকে থানা থেকে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিকেলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ মোস্তাফিজুর রহমানের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম তার জামিন আবেদন করেন। এ সময় বিচারক মহিদুল ইসলাম আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। এ দিন স্বাধীনতা দিবসের ছুটি থাকার কারণে আদালতের কর্মচারীরা ছিলেন না। দায়িত্বে থাকা পুলিশ এই মামলার নথিপত্র আদালতের কাছে উপস্থাপন করে। আসামির জামিন পাওয়ার কথা শুনে অবাক হন বাদী এজাজুল হক। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) আদালত পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে মামলার নথিপত্র তুলে দেখেন, আসামিপক্ষ একটি আপসনামা জমা দিয়েছে। যাতে স্বাক্ষর রয়েছে ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বরের। আপসনামাটিতে উল্লেখ আছে, ‘ফ্ল্যাটের ক্রেতা এজাজুল হক চুক্তি বাতিল করছেন। চুক্তিপত্র অনুযায়ী মোস্তাফিজুর রহমান ১০ শতাংশ টাকা কেটে বাকি ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করলেন। এজাজুলের আর কোনো দাবি থাকল না।’  এ বিষয়ে এজাজুল হক বলেন, তিনি এক টাকাও ফেরত পাননি। কোনো আপসনামাও হয়নি। মামলার নথিতে থাকা এই আপসনামাটি ভুয়া। সেখানে থাকা তার স্বাক্ষরটি জাল। তিনি বলেন, ‘আমার নামে ভুয়া আপসনামা আদালতে দেওয়ার কারণে আমি মামলা করব।’ এজাজুল হক আরও বলেন, আসামি মোস্তাফিজুরের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম তার পূর্বপরিচিত। মোস্তাফিজুরকে আদালতে নেওয়ার পর তিনি আপস করার জন্য কয়েকদফা ফোন করেন। আইনজীবী শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও এজাজুল হক শোনান। এতে শফিকুল ইসলামকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি থাকলে তোমার টাকা তো পাবাই। ১২ লাখ টাকায় তুমি কোটিপতি হয়ে যাবা? মানুষের মানসম্মান আছে না?’ এজাজুল বলেন, ‘এই প্রতারকের জন্য আপনি অনুরোধ করছেন কেন?’ একপর্যায়ে আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বাদী এজাজুল হককে বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে। তোমাকে আমি আর অনুরোধ করব না। তুমি চুপ থাকো। তুমি এই মামলাতে পারলে জেল দিও।’ ভুয়া আপসনামা দিয়ে আসামির জামিন করানোর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপসনামা আমি দেব কেন? আমার মক্কেল দিয়েছে। আসল না নকল সেটা সে বলতে পারবে। আমি বলতে পারব না।’ জামিন শুনানির আগে বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আপসের জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। আদালতে নথিপত্র উপস্থাপন করেছিলেন আরএমপির আদালত পরিদর্শকের কার্যালয়ের (জিআরও) বোয়ালিয়া ও মতিহার থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান। আপসনামাটি দেখে তিনি বলেন, ‘এই আপসনামা আসামি মোস্তাফিজুরের আইনজীবী দিয়েছেন।’ আপসনামাটি জাল, বাদীর এমন দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা তো আমি বলতে পারব না। এ রকম হয়ে থাকলে বাদী বিষয়টি আদালতের নজরে আনবেন।’ তিনি জানান, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাজির হওয়ার শর্তে আসামিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। রাজশাহী জেলা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী পারভেজ তৌফিক জাহেদী জানান, মামলাটি পেনাল কোডের ৪২০, ৪০৬ ও ৫০৬ ধারায় করা হয়েছে।  এই তিন ধারার মধ্যে ৪০৬ ধারাটি অজামিনযোগ্য। তবে বাদীর সঙ্গে আসামির আপস হলে আদালত জামিন কিংবা মামলা নিষ্পত্তি করতে পারেন। আপসনামাটির কারণেই আসামি জামিন পেয়েছেন। এটি ভুয়া হলে মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখে বাদী বিষয়টি আদালতের নজরে আনতে পারেন। জানা গেছে, মোস্তাফিজুর রহমান রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক পরিচালক। বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট। ২০১০ সালের দিকে রাজশাহীতে পলিটেকনিকে ভর্তি হয়ে পড়াশোনার খরচ চালাতে তিনি এক নিঃসন্তান দম্পতির বাসায় পালক ছেলে হিসেবে আশ্রয় নেন। ২০১৯ সালে তিনি ডেভেলপার ব্যবসায় নাম লেখান। এখন তিনি দামি হ্যারিয়ার গাড়িতে চড়েন। ফ্ল্যাট বিক্রির নামে তার বিরুদ্ধে বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি করেন এজাজুল হক। পরে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দিনগত রাতে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে। এই মামলার বাদীর নাম মো. রুবেল। ফ্ল্যাট বিক্রির নামে মোস্তাফিজুর তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। বিষয়গুলো নিয়ে মামলার আসামি মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে বুধবার সন্ধ্যায় তাকে ফোন করা হয়। তবে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, মাত্র ১০-১২ বছর আগেও রাজশাহীর একটি বেসরকারি কোম্পানির অফিস সহকারী ছিলেন মোস্তাফিজ। পড়াশোনার খরচ জোগাতে প্রয়াত এক ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে বাবা এবং তার স্ত্রী নাসরিন সুলতানাকে মা পাতিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। তাদের নিকট থেকেও প্রতারণা করে ৯০ লাখ টাকা এবং ৩ কাঠার একটি জমি আবাসন ব্যবসার নাম করে নেন মোস্তাফিজ। এরপর থেকে মোস্তাফিজের উত্থান শুরু হয় রাজশাহী নগরীতে। একের পর এক প্রতারণা করে মাত্র পাঁচ-সাত বছরের মাথায় সেই প্রতারক মোস্তাফিজ যান কোটিপতি বনে। আর এই প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জন করে অল্প সময়েই ফুটপাত থেকে পৌঁছে যান রাজপ্রাসাদে। চড়েন বিলাসবহুল গাড়িতে। যাপন করেন আভিজাত্যপূর্ণ চাকচিক্যময় চোখ ধাঁধানো জীবন। বাগিয়ে নিয়েছিলেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের মতো প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের পদও। এই প্রতারককে নিয়ে গত শনিবার (২৩ মার্চ) ‘প্রতারণা করে ফুটপাত থেকে রাজপ্রাসাদ’ শিরোনামে কালবেলায় একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। একই শিরোনামে কালবেলার মাল্টিমিডিয়াতেও মোস্তাফিজের প্রতারণার বিষয়টি উঠে আসে। চাঞ্চল্যকর এই খবর প্রকাশিত হলে রাজশাহীতে সৃষ্টি হয় ব্যাপক তোলপাড়। এরপরই এই প্রতারকের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা মামলা করে।
২৮ মার্চ, ২০২৪

চীনে পড়তে গিয়ে প্রতারক হিসেবে দেশে ফিরেছে ওরা
রাকিবুল ইসলাম রাতুল, আসাদুজ্জামান রাজু আর মামুন হাওলাদার—এ তিন তরুণ চীনে গিয়েছিলেন উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু তারা তা শেষ না করে দেশে ফিরেছেন প্রতারণার বিদ্যা রপ্ত করে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু এই তিন শিক্ষার্থীই নন, দেশটিতে পড়তে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থীই চায়না প্রতারক গুরুদের খপ্পরে পড়ে শিখছে প্রযুক্তিমাধ্যম প্রতারণা। এরপর তাদের নিজ দেশে পাঠিয়ে গুরুরা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। গত শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সদস্যরা ওই তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর এই তথ্য বেরিয়ে আসে। এই প্রতারকরা অনলাইন জুয়া, মাল্টি লেভেল মার্কেটিং ও পণ্য বিক্রির নামে ভুয়া সাইট ও অ্যাপস খুলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। তাদের গুরু চায়না নাগরিক গিগা চিংচং, যিনি চীনে বসে এসব সাইট ও অ্যাপসের সার্ভার নিয়ন্ত্রণ করেন। কয়েকদিন আগে এই চক্রের আরও ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল ডিবি। গতকাল শনিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ওই তিন প্রতারককে গ্রেপ্তারের তথ্য দেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, চায়নিজরা যেহেতু এ দেশের ভাষা জানে না, তাই তারা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের যারা সেখানে পড়তে যাচ্ছে তাদের প্রতারণার কাজে লাগাচ্ছে। কিছু শিক্ষার্থীকে সেখানে আবার অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে এই প্রতারণার কাজ করানো হচ্ছে। প্রতারণার টাকা সরাতে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টগুলো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে পরিচালিত করানো হচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান বলেন, ‘যে তিনজন গ্রেফতার হয়েছে, তারা চীনে গিয়ে সেই দেশের ভাষা শিখেছে। তাদের সঙ্গে চায়না প্রতারক চক্র সখ্য গড়ে তোলে। এরপর তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয় প্রতারণার জন্য। তারা অনলাইন মাধ্যমে কিছু মানুষকে প্রলোভন দেখায়। স্বল্প সময়ে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা আয় করে সেই টাকা আবার তারা ক্রিপটোকারেন্সির মাধ্যমে চীনে পাঠাত। তারা মার্কেটিং সাইট, ব্যাটিং সাইট খুলে প্রতারণা করত। ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের ফাইন্যান্সিয়াল ইনভেস্টিগেশন টিমের এডিসি সাইফুর রহমান আজাদ জানান, গ্রেপ্তার তিনজন অনলাইনে মাল্টি লেভেল মার্কেটিংয়ে প্রতারণা ছাড়াও অনলাইন ফাইন্যান্সিং, বিট সাইট, সি-ফাইন্যান্সিং এবং লোন অ্যাপসের মতো সাইট চালিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। এ কাজে তারা বাংলাদেশি মোবাইল ফোন অপারেটর ছাড়াও প্রতিবেশী দেশের সিমকার্ড ব্যবহার করত। তিনি জানান, চক্রটি প্রযুক্তিতে এতটাই দক্ষ যে, বিশেষ ধরনের অ্যাপসের মাধ্যমে একটি মোবাইল ফোনেই একসঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের শতাধিক অ্যাপস খুলে প্রতারণা করছিল। ডিবি সূত্র জানায়, প্রতারক চক্রের চায়না গুরু চীনে অবস্থান করলেও চক্রটির অনেক চায়নিজ নাগরিক বাংলাদেশে নানা জায়গায় চাকরির আড়ালে অবস্থান করছে। তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
১৭ মার্চ, ২০২৪

গোপনে ছাড়ছিলেন দেশ বিমানবন্দরে ধরা প্রতারক
রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার মৃত শাহজাহানের ছেলে মো. সোহেল। প্রতারণাকেই বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। বাড়ি বিক্রি, ফ্ল্যাট মর্গেজ দেওয়ার ফাঁদ পেতে শত শত মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে শুধু হাজারীবাগ থানায় কয়েক ডজন প্রতারণার মামলা রয়েছে। মামলা ও পাওনাদারদের হাত থেকে বাঁচতে গোপনে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন সোহেল। শেষ রক্ষা হয়নি। বুধবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ছাড়ার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতারক সোহেলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানান হাজারীবাগ থানার ওসি নুর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, সোহেলের বিরুদ্ধে বহু মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত শুধু হাজারীবাগ থানায়ই ১৮টি মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে। সে মূলত ফ্ল্যাট বিক্রি, বাড়ি বিক্রি, ফ্ল্যাট মর্গেজ দেওয়ার নামে প্রতারণা করত। তার বিরুদ্ধে এত ওয়ারেন্ট থাকার পরও তাকে নানাভাবে চেষ্টা করেও গ্রেপ্তার করা যাচ্ছিল না। বুধবার বিদেশে যাওয়ার চেষ্টাকালে ইমিগ্রেশন পুলিশের সহযোগিতায় বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

পুলিশ পরিচয়ই প্রতারক হারুনের হাতিয়ার
পুলিশ পরিচয় দিয়ে করেছেন প্রেম ও বিয়ে। মানুষকে রাস্তাঘাটে ভয়ভীতি হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। পুলিশ সদস্য না হয়েও দীর্ঘদিন ধরে এ পরিচয় দিয়ে বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন মো. বাবুল ওরফে হারুন। তবে অবশেষে তিনি ধরা পড়েছেন আসল পুলিশের হাতে। সম্প্রতি পুলিশের পোশাক ব্যবহার করে প্রতারণার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার হারুন জামালপুরের সরিষাবাড়ির চরসাতারিয়া এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ বলছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন হারুন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর রমনায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আশরাফ হোসেন। ডিসি আশরাফ বলেন, নরসিংদীর হেলেনা বেগম ও তার বান্ধবী রিনা বেগম ১৩ তারিখ চিকিৎসক দেখাতে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে আসেন। এ সময় হাসপাতালের সামনে এসে পুলিশের পোশাক পরিহিত হারুনকে দেখতে পান। তিনি চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে হেলেনাকে ডাক্তার দেখাতে সহযোগিতা করেন। হেলেনা চেম্বারে প্রবেশ করলে রিনা ও হারুন বাইরে অপেক্ষা করেন। তখন রিনা হাতের ব্যাগ রেখে টয়লেটে যান। ফিরে এসে দেখেন হারুন নেই। রেখে যাওয়া ব্যাগে ২৭ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিল। পরে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন হেলেনা। তিনি আরও বলেন, ১৫ জানুয়ারি মামলার পর তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে নেমে রাজধানীর বিমানবন্দরের গোলচত্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হারুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তে ধানমন্ডি থানা পুলিশ জানতে পারে, হারুন নিজেকে ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত থাকার পরিচয় দেন। পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে হারুন শিউলি বেগমের সঙ্গে এক বছর ধরে প্রেম করে প্রায় দুই মাস আগে বিয়ে করেন। তিনি বলেন, হারুনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে তিনটি মামলা এবং বিভিন্ন অপরাধে বিভিন্ন থানায় মামলার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

বিনামূল্যে দর্জি প্রশিক্ষণের ফাঁদে নারীরা, টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক
গোপালগঞ্জে দর্জি প্রশিক্ষণের নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে নিজেদের টাকা হারিয়েছেন স্থানীয় গৃহবধূ ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া তরুণীরা। এ কাজে ভুক্তভোগীদের চোখে ধুলো দিতে একটি বিদ্যালয়কে ব্যবহার করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর শহরে মাইকিং করে গৃহবধূ ও স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের দর্জি প্রশিক্ষণ দেওয়ার তথ্য প্রচার করা হয়। প্রতারকরা ঘোষণা করে, আত্মকর্মসংস্থান তৈরি করতে বিনামূল্যে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তবে ১০০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এ ঘোষণায় শতাধিক নারী আকৃষ্ট হন। রংধনু স্কুল ও ল্যাবরেটরি বিদ্যালয়ে তাদের ২২ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করা হয়। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান ব্যক্তিদের বিনামূল্যে সেলাই মেশিন পুরস্কার দেওয়ার কথা জানায় তারা।  সে সঙ্গে প্রশিক্ষক এনি ইসলাম সেলাই মেশিন কম দামে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক গৃহবধূ ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া তরুণীদের কাছ থেকে জনপ্রতি কমপক্ষে তিন হাজার করে টাকা অগ্রিম নেন। এরপরই হঠাৎ আয়োজকরা উধাও হয়ে যান।  এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইতি রানিবালা, মানসুরা খানম, নাহিদা খানম, ফাহিমা ইসলাম, সোনিয়া আক্তার ও  স্মৃতি খানম বলেন, শহরের মৌলভী পাড়ার ল্যাবটারি স্কুলের নাম ও স্থান ব্যবহার করে ১০০ টাকা রেজিস্ট্রেশনের বিনিময়ে বিনামূল্যে দর্জি প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন দেওয়া হবে বলে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হয়। এতে আকৃষ্ট হয়ে ওই স্কুলে গিয়ে ১০০ টাকার বিনিময়ে আমরা প্রশিক্ষণে ভর্তি হই। তারা আরও জানান, প্রায় দেড় শতাধিক গৃহিনী ও ছাত্রী এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে। পরে তাদের ভুল বুঝিয়ে প্রতিজনের কাছ থেকে কমপক্ষে তিন হাজার টাকা করে অগ্রিম নেওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানির পরে ভুক্তভোগীরা শহরের রংধনু স্কুল ও ল্যাবরেটরি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করেন। পরে এ বিষয়ে রংধনু স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম কে আনোয়ার বলেন, খুলনা থেকে একটি এনজিও গ্রুপ গোপালগঞ্জের নারীদের  ১০০ টাকার বিনিময়ে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে বলে আমাকে জানায় । পরে আমি তাদের  স্কুলের একটি কক্ষ ভাড়া দেই।  এর বেশি কিছু জানি না।  প্রশিক্ষক এনজিওর নাম  ঠিকানা  জানতে চাওয়া হলে  কালবেলা প্রতিবেদকের এই প্রশ্নের উত্তরটি তিনি এড়িয়ে যান।  এ বিষয়ে  ল্যাবটারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, প্রতি বছর আমার স্কুলে এ রকম  নারীদের দর্জি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে এনজিও গ্রুপগুলো।  ল্যাবটারি স্কুলের নাম  ঠিকানা স্থান ব্যবহার করে শহরের মাইকিং করার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীরা যে অর্থ দিয়েছে এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে  বিষয়টি আমি জানার পরে এনি ইসলাম নামের ওই প্রশিক্ষককে আর আমি খুঁজে পাইনি। তার মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়। এনজিওর নামটাও আমি ভুলে গেছি।
০৯ জানুয়ারি, ২০২৪

পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারক আটক
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার এক ব্যবসায়ীর নিকট থেকে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএমের নাম সম্বলিত পত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় জনতার হাতে বলয় কুমার হালদার (৩৫) নামের এক যুবক আটক হয়েছে।  শনিবার (২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া বাজারে এমন ঘটনা ঘটে। পরে আটক ওই যুবকে স্থানীয়রা পুলিশে সোপর্দ করেন। আটক ওই যুবক জীবননগর উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের বালিহুদা গ্রামের শ্রী ভবেশ হালদারের ছেলে বলয় কুমার হালদার। জীবননগর পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বালিহুদা গ্রামের শ্রী ভবেশ হালদারের ছেলে বলয় কুমার হালদার নিজেকে জীবননগর পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারি পরিচয় দিয়ে এলাকার বিভিন্ন মানুষকে বৈদ্যুতিক লাইন দেওয়ার কথা বলে কৌশলে টাকা পয়সা নিয়ে আত্মসাৎ করে আসছিল। বলয় কুমার হালদার একইভাবে উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের কুলতলা গ্রামের জিয়ারত আলীর ছেলে আতিয়ার রহমানের সেচ কাজে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিবে মর্মে কথাবার্তা বলে জীবননগর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম মোহাম্মদ মুহাইমিনুন ইসলামের সাক্ষরবিহীন নাম সম্বলিত একটি চিঠি প্রস্তুত করে তা দেখিয়ে শনিবার বেলা ১১টার দিকে উক্ত আতিয়ার রহমানের নিকট থেকে আন্দুলবাড়ীয়া বাজারে টাকা আনতে যায়। সেখানে চিঠি ভুয়া সন্দেহ হওয়ায় তাকে আটকিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে জানান। মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জীবননগর জোনাল অফিসের এজিএম মোহাম্মদ মুহাইমিনুন ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে যাই এবং বলয় কুমার হালদার সকলের সামনে পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারি পরিচয় দিয়ে প্রতারণাপূর্বক মানুষকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে। তাকে থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। জীবননগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাইদ বলেন, ঘটনার ব্যাপারে থানায় লিখিত এজাহার পাওয়া গেছে। মামলা রুজুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

প্রভাষক থেকে এখন প্রতারক সাইদুল গ্রেপ্তার
জাপানে পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে সাইদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ওয়েসিস নেটলিঙ্ক লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। গতকাল বৃহস্পতিবার মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন এসব তথ্য জানান। জানা যায়, সাইদুল ইসলাম মেহেরুন্নেছা গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক ছিলেন, অধ্যাপনা করেছেন ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজেও। জাপানে পাঠানোর নামে ৫০ জনের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। ওসি বলেন, সাইদুল তার প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসডব্লিউ এবং টিআইটিপি ক্যাটাগরিতে ওয়ার্কিং ভিসায় জাপানে লোক পাঠানো হয় বলে বিজ্ঞাপন দিতেন। অথচ তার প্রতিষ্ঠান শুধু জাপানি ভাষা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই লাইসেন্সপ্রাপ্ত। জাপানে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রেশন, ভিসা প্রসেসিং ফি, মেডিকেল ফিসহ অন্যান্য খরচ বাবদ জনপ্রতি এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত নিতেন সাইদুল। টাকা দেওয়ার দুই মাসের মধ্যেই তাদের জাপানে পাঠানোর কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ নানা টালবাহানা শুরু করে। ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করলে গ্রেপ্তার করা হয় সাইদুলকে। তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালে ব্যবসায় নামেন। কয়েকটি ব্যবসায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তিনি এই প্রতারণার পথ বেছে নেন। তার বিরুদ্ধে এর আগেও তিনটি মামলা রয়েছে।
০১ ডিসেম্বর, ২০২৩
X