সুশোভন অর্ক
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৪, ০৩:২৯ এএম
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪, ০৮:৪৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সাংবাদিক ছদ্মবেশে ক্ষমতাশালী প্রতারক

সাংবাদিক ছদ্মবেশে ক্ষমতাশালী প্রতারক

ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে গোয়েন্দা কার্যালয়, র‌্যাব থেকে পিবিআই—সাংবাদিক পরিচয়ে এসব কার্যালয়ে তার অবাধ বিচরণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বড় কর্মকর্তাদের সঙ্গে রয়েছে ছবি, যা ফেসবুকে প্রচার করে নিজেকে জাহির করেন ক্ষমতাবানদের কাছের মানুষ হিসেবে। এসব ছবি ব্যবহার করেই ফাঁদ পাতেন প্রতারণার। সবাইকে বলে বেড়ান, পুলিশের বড় কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক টেবিলে বসে চা পান করি। যে কাউকে দিতে পারেন চাকরি বা বিভিন্ন সংস্থার প্রকল্প থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে বাগিয়ে এনে দিতে পারেন কাজ। এভাবেই প্রতারণার মাধ্যমে দুই বছরেই হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া এ প্রতারকের নাম নাজমুল হোসেন ইমন। তিনি নিজেকে পরিচয় দেন ‘মুক্তির লড়াই’ নামে একটি অনলাইনের রিপোর্টার হিসেবে।

গত কয়েক বছরে ভুঁইফোড় কিছু অনলাইনের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন ইমন। আর এর আড়ালে চালিয়ে যান প্রতারণা। ইমনের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন বহু মানুষ। তাদের মধ্যে একজন ভুক্তভোগী মোছা. নুরবানু। চাকরি দেওয়া এবং প্রকল্পের কাজ এনে দেওয়ার কথা বলে ওই নারী এবং স্বজনদের কাছ থেকে ইমন হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকার ওপরে।

নুরবানু জানান, নাছিরা নামে এক নারীর মাধ্যমে ইমনের সঙ্গে তার পরিচয়। ওই নারী ইমনকে সঙ্গে নিয়ে ২০২১ সালে একটি ভুয়া সংগঠন তৈরি করেন। সেই সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেন তার ছেলে এবং মেয়েকে। এমনকি সম্মাননা হিসেবে তার ছেলেমেয়েদের ক্রেস্টও দেন। মূলত এ সংগঠন ছিল প্রতারণার কৌশল। এর মাধ্যমেই লোকদের বিভিন্ন ফাঁদে ফেলতেন ইমন।

নুরবানু বলেন, নিজেকে একজন উচ্চমানের কর্মকর্তা এবং সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া ইমন আমাকে বলেন, তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ এনে দেবেন। এরপর তার কথা বিশ্বাস করে ২০২২ সালে আমিসহ আমার বিভিন্ন আত্মীয়র কাছ থেকে ১ কোটি ৬ লাখ টাকা এনে দিই তাকে।

তিনি বলেন, টাকা দেওয়ার পর অনেকদিন চলে গেলেও তিনি কাজ দেওয়ার বিষয়ে কিছু না জানালে তাকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। এরপর বিভিন্ন সময় তাকে তাগিদ দিলেও তিনি এ বিষয়ে কিছুই করেননি। পরে জানতে পারি তিনি বড় প্রতারক। এরপর বিভিন্ন সময় তার কাছে টাকা চাইলেও তিনি বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দেন।

ইমনের প্রতারণার শিকার মো. ফয়সাল কালবেলাকে বলেন, আমার কাছ থেকে তিনি চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৩ লাখ টাকা নেন। ইমন নিজেকে বড় সাংবাদিক এবং বড় কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তবে চাকরি না দিয়ে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এরপর টাকা চাইলে তিনি দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন। এরপর তার নামে ভাটারা থানায় অভিযোগ করলে বৃহস্পতিবার পুলিশ তাকে আটক করে। তবে প্রভাবশালীদের সুপারিশে তিনি দফারফার চেষ্টা করেন।

ইমনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রাজন কুমার সাহা বলেন, অভিযোগ কিংবা আটকের বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছি।

ইমন সম্পর্কে জানতে ‘মুক্তির লড়াই’ পত্রিকার অফিসিয়াল মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করা হয়নি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঘুষি মেরে বিমানের মনিটর ভেঙে ফেললেন লন্ডন প্রবাসী

ইসরায়েলের যে কারাগারে বন্দি শহিদুল আলম

আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান, টিটিপি প্রধান নিহতের গুঞ্জন

বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কাবুল

এককভাবে সরকার গঠন করবে বিএনপি : এমরান চৌধুরী

‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে রংপুর অচল করে দিতে বাধ্য হবো’

নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না : লায়ন ফারুক

ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের পা বিচ্ছিন্ন

বৃহত্তর মিরপুরে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত ওলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত

দেশ বাঁচাতে হলে বিএনপির বিকল্প নেই : টুকু

১০

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা / বস্তিবাসী ও শহীদ পরিবারের ন্যায্য দাবি মেনে নিন

১১

মা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যা

১২

রাজধানীতে ১৭ ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জাগপা ছাত্রলীগের বৈঠক

১৩

হাত-মুখ বেঁধে শিশুকে ধর্ষণ, যুবককে খুঁজছে পুলিশ

১৪

এনসিটিবির নামে ‘নকল’ ছাপাখানা, আটক ৫ 

১৫

পচা চাল ক্রয়, বাচ্চু মিয়াকে বাধ্যতামূলক অবসর

১৬

শহিদুল আলমসহ নৌবহর থেকে আটক ব্যক্তিদের কারাগারে বন্দি

১৭

পা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন আইসক্রিম বিক্রেতা রফিকুল

১৮

গুণগত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা তারেক রহমানের অঙ্গীকার : সাঈদ

১৯

চাকসু নির্বাচনের প্রচারে এগিয়ে ছাত্রদলের প্যানেল

২০
X