কুষ্টিয়ায় ব্যাংক থেকে টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র
কুষ্টিয়া ভেড়ামারার গোলাপনগর অগ্রণী ব্যাংক থেকে অভিনব কায়দায় টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় প্রতারকরা দুটো নকল ভাউচারের মাধ্যমে মোট ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।  আটককৃতরা হলেন মো. মামুন শেখ, কেরামত খান ও মো. সাইমন। তাদের তিনজনের বাড়িই মাদারীপুরে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।  গোলাপনগর অগ্রণী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক ইদ্রিস আলী বলেন, ফরেন রেমিট্যান্সের টাকা দুটো ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে কবির ও মনির সই জালিয়াতি করে নিয়ে যায়। তারা যথাক্রমে ১ লাখ ৫ হাজার এবং ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে তোলে। আরও একটি ভাউচার সাবমিট করার সময় আমাদের লোকজন বুঝতে পেরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের ধরি। দুজন টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে, বাকি তিনজনকে আমরা আটক করতে পেরেছি। ভেড়ামারা থানার ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের পরিদর্শক টিম রয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত চলছে। থানায় এ বিষয়ে এখনো কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
০৪ এপ্রিল, ২০২৪

আখাউড়ায় সরকারি ভাতার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র
‘এক মাস ধরে আমার নাতিনটার অসুখ। অপেক্ষায় আছিলাম এই মাসে আমার ভাতার টেহা (টাকা) তুলে নাতিনঢারে ডাক্তার দেখামু। কিন্তু টেহা মোবাইলে আইছেনা শুনে অফিসে আইছি খবর নিতে। অফিসের মানুষ কইতাছে টেহা জমা অইছে। টেহা তোলাও অইছে। আমিত বাবা টেহা তুলি নাই। তবে গত বুধবারে একটা ফোন আইছিল মোবাইলে, অফিসের লোক পরিচয় দিয়ে কইছে একটা নম্বর আইছে তা বলার জন্য। আমি বুঝি না তখন আমার মাইয়ারে কইছি আমার মাইয়া কথা কইয়া নম্বরটা দিছে।’   ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সরকারি ভাতার টাকা হারিয়ে কান্না জড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন উপজেলার খলা পাড়া গ্রামের ৮১ বছর বয়সি বৃদ্ধা জোবেদা। প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেক সুবিধাভোগী সরকারি ভাতার টাকা হারাচ্ছেন। প্রতারক চক্র নানা কৌশলে তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে গত এক সপ্তাহে থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। এর বাইরেও কলেজ পাড়ার তাজেরা বেগম, মনিয়ন্দের সুলেমান, ধরখারের মাজেদা বেগম ও আনোয়ার পুরের রানু বেগমসহ ৮০ থেকে ৮৫ জন ভুক্তভোগী সমাজসেবা কার্যালয়ে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরের সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সারা দেশে দুস্থ, বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি সুবিধাভোগী ভাতা চালু করা হয়। আখাউড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৪ হাজার ৯২৭ জন বয়স্ক, ১ হাজার ৫২৭ জন বিধবা, ২ হাজার ৭৯৩ জন প্রতিবন্ধী, ১৪৬ জন দলিত, ৪৮ জন দলিত শিক্ষা উপবৃত্তি ১২৫ জন। প্রতিবন্ধি শিক্ষাসহ মোট ৯ হাজার ৫৬৬ জন সরকারি সুবিধাভোগীর ভাতার কার্ড রয়েছে। কার্ডধারী প্রত্যেক বিধবার নামে বরাদ্দ প্রতি মাসে ৫৫০ টাকা, বয়স্কদের ৬০০ টাকা, প্রতিবন্ধী ৮৫০ টাকা, দলিত ক্যাটাগরি অনুযায়ী ৭০০ থেকে ১৩০০ টাকা, দলিত শিক্ষা ৭০০ থেকে ১৩০০ ও প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপভিত্তি ৯০০ থেকে ১৩০০ টাকা। সেই হিসাবে ৩ মাস পরপর এক বছরে চার কিস্তিতে তাদের টাকা দেওয়া হয়। গত ২ বছর থেকে এসব কার্ডধারীদের মোবাইল ফোনে নগদ হিসাব নম্বর খুলে সেই হিসাব নম্বরে ভাতার টাকা পাঠানো হয়। বৃদ্ধা আয়েশা খাতুনের মোবাইল ফোনে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে একটা কল আসে। উপজেলা সমাজসেবা অফিসের স্টাফ পরিচয় দিয়ে তাকে জানানো হয়, তথ্য আপডেট না করলে তার বিধবা ভাতার টাকা বন্ধ হয়ে যাবে। তবে তথ্য আপডেট করলে আজই তিনি চলতি কিস্তির ৩ মাসের টাকা পাবেন। এজন্য এসএমএসের মাধ্যমে তথ্য আপডেট করতে হবে। সেক্ষেত্রে মোবাইল ফোনে একটি কোড যাবে এবং সেই কোড নম্বরটি বলতে হবে। উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন গ্রামের আয়েশা খাতুন সরল বিশ্বাসে তার মোবাইলের এসএমএস (খুদে বার্তা) আসা কোড নম্বরটি জানিয়ে দিলেন কলারকে। এরপরে তাকে জানানো হয় তার তথ্য আপডেট হয়েছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মোবাইলে ভাতার টাকা চলে যাবে। এরপরে আয়েশা খাতুন তার ব্যালান্স চেক করতে গিয়ে দেখেন অ্যাকাউন্ট শূন্য। ভাতার এক হাজার ৮০০ টাকা উধাও। প্রতারণার শিকার জোবেদা ও আয়েশা খাতুন আখাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। উপজেলা সমাজসেবা অফিসে মৌখিক অভিযোগ করেছেন পৌর শহরের কলেজ পাড়ার বাসিন্দা বিধবা তাজেরা বেগম। তিনি বলেন, আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে বলেন আমার নাম কি তাজেরা আমি বলছি জ্বি তখন আমাকে জিজ্ঞেস করেছে আমার পাশে শিক্ষিত লোক আছে কি না। আমি তখন আমার ছেলের কাছে দিলে তারা কথা বলে কী নম্বর চাইছে। ওই নম্বর দেওয়ার পর আমার ভাতার ১৬৫০ টাকাসহ ১৭৭০ টাকা চলে গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নূরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের কাছে গত ১৫ দিনে ৮০ থেকে ৮৫ জন ভাতা ভোগী মৌখিক অভিযোগ করেছে। তবে সমাজসেবা অফিস থেকে কখনোই কাউকে ফোন করা হয় না। এগুলো প্রতারক চক্রের কারসাজি। এ ধরনের অভিযোগ শুধু আখাউড়ায় নয়, সারা দেশে একই অবস্থা। তথ্যপ্রমাণের অভাবে প্রতারক চক্রকে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রতারক চক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ হচ্ছে না। আখাউড়া থানার ওসি মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে কথার ফাঁদে ফেলে মোবাইল অ্যাকাউন্ট থেকে সরকারি সুবিধাভোগীর ভাতার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।
২২ নভেম্বর, ২০২৩

টাকা না পেয়ে যুবককে কুপিয়ে যখম করল প্রতারক চক্র
টাকা দাবি করে না পাওয়ায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ফয়জুল ইসলাম নামে এক যুবককে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। আহত যুবক বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ফয়জুলের ভাই শাহীন জানান, রোববার সকালে কাজলার ভাঙ্গাপ্রেস থেকে লেগুনায় যাত্রাবাড়ী যাচ্ছিলেন ফয়জুল। ওই লেগুনায় একজন নারীসহ তিন যাত্রী ওঠেন। এক পর্যায়ে তারা ফয়জুলের কাছে ৫০০ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই তিনজন ফয়জুলকে লেগুনা থেকে নামিয়ে একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ওই নারী ফয়জুলের মোবাইল থেকে তার বাবাকে ফোন দিয়ে বলে, আপনার ছেলে অ্যাকসিডেন্ট করেছে, সে পঙ্গু হাসপাতালে আছে, আইসিইউতে ভর্তি করতে হবে। এজন্য বিকাশে ২০ হাজার টাকাও পাঠাতে বলা হয়। পরে ফয়জুলের চাচাতো ভাই ওই নম্বরে ফোন দিলে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ওই নারী। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে পরিবারের সদস্যরা ফয়জুল কোন হাসপাতালে আছে জানতে চান। তখন আরেকজন রামপুরা বেটার লাইফ হাসপাতালে আছে এবং জরুরিভাবে ২৫ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায়। পরে এক ব্যক্তি ফোন করে জানান, ফয়জুল মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ র্যাম্পের পাশে পড়ে আছে। সেখান থেকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তার স্বজন। জ্ঞান ফেরার পর ফয়জুল জানান, সেখানে তাকে স্টিলের ধারালো পাইপ দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোও হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, ধারণা করা হচ্ছে, সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে ফয়জুলকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। যাত্রাবাড়ী থানায় খবর দেওয়া হয়েছে। যাত্রাবাড়ী থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানান, তারা এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাননি।
০৯ অক্টোবর, ২০২৩

দিশেহারা বিনিয়োগকারী / ধরাছোঁয়ার বাইরে প্রতারক চক্র
ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে এমটিএফই নামে বিদেশি অ্যাপের খপ্পরে পড়ে প্রায় শত কোটি টাকা খুইয়েছেন কুমিল্লার ২০ হাজার বিনিয়োগকারী। দুবাইভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বা এমএলএম পঞ্জি মডেলে ব্যবসা করত। ১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা করে লাভ পাওয়া যাবে—এমন লোভনীয় প্রস্তাবের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। বলা হচ্ছে, প্রতারণা করা এমটিএফইর প্রতিষ্ঠাতা দুবাইপ্রবাসী মাসুদ আল ইসলাম। মাসুদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর গ্রামে। প্রতারণার কাহিনি জানাজানির পর আত্মগোপনে চলে গেছেন পরিবারের সব সদস্য। তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি পরিবারের কাউকে। প্রতিবেশীরা জানান, গত সোমবার চিকিৎসার কথা বলে বাড়ি ছেড়েছে পরিবারের সবাই। স্থানীয়রা জানান, একসময় ভাই মাহবুবের সঙ্গে আইটি পেশায় জড়িত ছিলেন মাসুদ এবং পারদর্শী ছিলেন মোবাইল ব্যাংকিং হ্যাকিংয়ে। বিকাশ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আছে মাহবুবের নামেও। এর জেরে চট্টগ্রামে হত্যার শিকার হন মাসুদের ভাই মাহবুব। সাত বছর ধরে এমটিএফই নামে বিদেশি অ্যাপটি বাংলাদেশে চলছে। প্রথমে সফটওয়্যার আপডেটের নামে টাকা উত্তোলন করা বন্ধ ছিল। তারপর হঠাৎ করেই সবার অ্যাপের অ্যাকাউন্টে জমা থাকা ডলারের সমপরিমাণ উল্টো দেনা দেখাচ্ছে। এর পর থেকেই কুমিল্লা শহরে এমটিএফই গ্রাহকদের মধ্যে নীরব হাহাকার শুরু হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, শুরুতে গ্রাহকদের ৩ হাজার টাকায় এমটিএফই প্ল্যাটফর্মে খুলে দিচ্ছে একটি অ্যাকাউন্ট। আর প্রতিটি অ্যাকাউন্টে ‘রেফার’ হিসেবে ব্যবহার করছে টিম লিডারের হিসাব। এর পর গ্রাহকরা এই অ্যাপে ডলার ডিপোজিট করেন। এর পরই তিনি দেখতে পান, লাভের বদলে তার ব্যালেন্স শূন্য হয়ে গেছে। রাতারাতি ধনী হতে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন তারা। মূলত এমটিএফই নামে অ্যাপটিতে কাজ করত সংঘবদ্ধ একটি চক্র। এ চক্রটি গ্রাহকদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে নানা তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে অ্যাপটি পরিচালনা করত। চলতি বছর এই অ্যাপটি যুব সমাজের মধ্যে ঝড় তুলেছিল। কয়েকজন বিনিয়োগকারী জানান, কুমিল্লায় এমটিএফইতে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার হবে। কোনো কাজ না করে রাতারাতি ধনী হওয়ার লোভে তারা একের পর এক অ্যাকাউন্ট খুলতে থাকেন। টিম লিডার নামধারী একটি চক্র কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন মার্কেটে অফিস নিয়েও এই অ্যাপের কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। এমটিএফইর মূলহোতা মাসুদ ছাড়াও তথাকথিত ‘টিম লিডারদের’ অনেকের বাড়ি কুমিল্লায়। তাদের একজন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামের সাইফুল। তিন শতাধিক মানুষের টাকা নিয়ে পালানোর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। সাইফুলের স্ত্রী ‘সিইও পদপ্রত্যাশী’ পাপিয়াকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সবার মতো ভুক্তভোগী আমি এবং আমার স্বামী। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পাপিয়াও এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। এদিকে, অভিযুক্ত প্রবাসী মাসুদ আল ইসলাম দুবাই থেকে এক ভিডিও বার্তা ছেড়েছেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, অ্যাপটির মালিক তিনি নন। তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগও ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, তিনি শুরু করার আগে ১০ লাখের বেশি মানুষ এমটিএফইতে ছিল। তিনি সিইও হওয়ার আগে বাংলাদেশে এমটিএফইর আরও দুজন সিইও ছিলেন। কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আহমেদ সনজুর মোর্শেদ বলেন, আসলে অ্যাপের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে যুবকরা প্রতারিত হয়েছে—এ রকম কোনো বিষয় আমার জানা নেই। যদি কেউ অভিযোগ করে, তাহলে খোঁজখবর নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৬ আগস্ট, ২০২৩

ব্যাংক থেকে রেমিট্যান্সের ৭০ লাখ টাকা হাতিয়েছে প্রতারক চক্র
দীর্ঘদিন নকল পেমেন্ট স্লিপ (রিয়া) তৈরি করে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করছিল একটি প্রতারক চক্র। ব্যাংক কর্মকর্তাদের ফাঁকি দিতে এজন্য তারা অবলম্বন করত অভিনব পদ্ধতি। প্রথমে একটি ব্যাংক টার্গেট করে রেমিট্যান্স অফিসারের স্বাক্ষরের নমুনা সংগ্রহ করা হতো। এরপর স্বাক্ষর জাল করে নকল রিয়া পেমেন্ট স্লিপ তৈরি করে সহজেই ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা উত্তোলন করে নিত প্রতারকরা। এভাবে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে প্রতারক চক্রটি। এ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ। পুলিশ বলছে, চক্রটি দীর্ঘদিন দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রতারণামূলকভাবে টাকা উত্তোলন করে আসছিল। এর মধ্যে ১১টি ব্যাংকে অর্থ জালিয়াতির ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব ব্যাংক থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে তারা।  গতকাল রোববার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সেখানে পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জালিয়াতি করে টাকা উত্তোলন করেছে চক্রটি। এমন অনেক ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। পরে গাজীপুর, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। গ্রেপ্তাররা হলেন রিপন মিয়া ওরফে হোন্ডা রিপন, রহিম মুন্সি, মো. জুয়েল, কুলসুম বেগম ও আসাদুজ্জামান স্বপন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৩ মে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের হাসনাবাদ শাখা থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা ভুয়া ভাউচারে তুলে নেয় একটি প্রতারক চক্র। পরে দৈনিক লেনদেন হিসাব করতে গিয়ে গরমিল লক্ষ্য করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় ১২ জুন ব্যাংকের এপি জুনিয়র অফিসার মো. মহিউদ্দিন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, তারা দীর্ঘদিন দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা থেকে রিয়া পেমেন্ট স্লিপ জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল।  
১৭ জুলাই, ২০২৩

সামাজিক মাধ্যমে প্রতারক চক্র থেকে সাবধান
বর্তমানে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর অপব্যবহার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতারক চক্রের দৌরাত্ম্য। প্রতারণার মাধ্যম হিসেবে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তথ্যপ্রযুক্তি যেমন আপডেট হচ্ছে, তাদের কৌশলও পরিবর্তন হচ্ছে। যার ফলে প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে। অনেক হ্যাকার ফেসবুক, মেসেঞ্জার, টুইটার, ইমু হ্যাকড করে ব্ল্যাকমেইল করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেই চলছে। হোক সেটা ব্যক্তিগত কিংবা আর্থিক। পাসওয়ার্ড হ্যাক করে অনেকেই টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছে। অনলাইন সেবা মানুষকে অনেক সুবিধা দিয়েছে, সেটা অস্বীকার করা যাবে না। ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে সব সেবা, এর ফাঁকেই ঢুকে যাচ্ছে প্রতারকরা। ফেসবুকে সমস্যাটা দিন দিন জটিল হচ্ছে। বিশেষ করে নারীদের নামে ফেক অ্যাকাউন্ট খুলে গভীর বন্ধুত্ব স্থাপন করে, কৌশলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। এগুলোর শেষ কোথায়? অনলাইনে কেনাকাটায় অসংখ্য প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। অনেক ভুক্তভোগী প্রতিকারের পথ পাচ্ছে না। তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা অস্বীকার করা যাবে না। যুগের সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠালে সঙ্গে সঙ্গে গ্রহণ না করে ভালোভাবে বোধবুদ্ধি দিয়ে যাচাই করতে হবে—কেন ও কী কারণে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠানো হয়েছে। বন্ধুত্ব মানে ফ্যান্টাসি বা অযাচিত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া নয়। এর মধ্যে নীতি, নৈতিকতা, মূল্যবোধ বজায় থাকতে হবে। ফেসবুকের পাতার অপর পৃষ্ঠার ব্যক্তিটি বন্ধু, নাকি বন্ধুবেশী প্রতারক তা শুধু ছবি দেখে আর সংক্ষিপ্ত চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে বোঝা সম্ভব নয়। প্রতারিত হয়ে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারস্থ হওয়ার আগেই সতর্ক হওয়া বাঞ্ছনীয়। আমরা আশা করব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ ধরনের প্রতারণার বিষয়গুলো নিয়মিত মনিটরিং করবে এবং প্রতারক চক্রগুলোকে শনাক্ত করার আরও উদ্যোগ গ্রহণ করবে। পাশাপাশি এ বিষয়ে আমাদের প্রত্যেকের সচেতন হতে হবে। মোস্তফা কামাল শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
১৭ জুন, ২০২৩
X