দীর্ঘদিন নকল পেমেন্ট স্লিপ (রিয়া) তৈরি করে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করছিল একটি প্রতারক চক্র। ব্যাংক কর্মকর্তাদের ফাঁকি দিতে এজন্য তারা অবলম্বন করত অভিনব পদ্ধতি। প্রথমে একটি ব্যাংক টার্গেট করে রেমিট্যান্স অফিসারের স্বাক্ষরের নমুনা সংগ্রহ করা হতো। এরপর স্বাক্ষর জাল করে নকল রিয়া পেমেন্ট স্লিপ তৈরি করে সহজেই ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা উত্তোলন করে নিত প্রতারকরা। এভাবে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে প্রতারক চক্রটি। এ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ। পুলিশ বলছে, চক্রটি দীর্ঘদিন দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রতারণামূলকভাবে টাকা উত্তোলন করে আসছিল। এর মধ্যে ১১টি ব্যাংকে অর্থ জালিয়াতির ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব ব্যাংক থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে তারা। গতকাল রোববার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সেখানে পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জালিয়াতি করে টাকা উত্তোলন করেছে চক্রটি। এমন অনেক ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। পরে গাজীপুর, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। গ্রেপ্তাররা হলেন রিপন মিয়া ওরফে হোন্ডা রিপন, রহিম মুন্সি, মো. জুয়েল, কুলসুম বেগম ও আসাদুজ্জামান স্বপন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৩ মে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের হাসনাবাদ শাখা থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা ভুয়া ভাউচারে তুলে নেয় একটি প্রতারক চক্র। পরে দৈনিক লেনদেন হিসাব করতে গিয়ে গরমিল লক্ষ্য করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় ১২ জুন ব্যাংকের এপি জুনিয়র অফিসার মো. মহিউদ্দিন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, তারা দীর্ঘদিন দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা থেকে রিয়া পেমেন্ট স্লিপ জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল।
মন্তব্য করুন