শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জাতীয় মাল্টিমিডিয়া ক্যাম্পেইন উদ্বোধন
প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি বলেন, শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে জাতীয় মাল্টিমিডিয়া ক্যাম্পেইনের নির্মিত চারটি পাবলিক সার্ভিস অ্যানাউন্সমেন্ট (পিএসএ) কুসংস্কার ও নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক মনোভাব দূরীকরণে ভূমিকা রাখবে।  এসিলেরাটিং প্রটেকশন ফর চিলড্রেন (এপিসি) প্রকল্পের আওতায় নির্মিত শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জাতীয় মাল্টিমিডিয়া ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন ইউনিসেফের সহযোগিতায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে এর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।  প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে দেশ গড়ার নেতৃত্ব দিবে আজকের শিশুরাই। তাই শিশুরা যেন সৃজনশীল, মননশীল এবং মুক্ত মনের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠতে পারে সেই পরিবেশ আমাদেরই তৈরি করে দিতে হবে।  দীর্ঘদিনের কুসংস্কার ও নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক মনোভাবের ফলে সৃষ্ট নারী নির্যাতনের মতো সামাজিক সমস্যা সরকারের পক্ষে এককভাবে সমাধান করা সম্ভব নয়। তিনি নারী নির্যাতন প্রতিরোধে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সব ধরনের  লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এই সংক্রান্ত আইন সম্পর্কে প্রচার বাড়ানো, স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাবিরোধী প্রচারে পুরুষদের সম্পৃক্ত করার মনোভাব ব্যক্ত করেন তিনি।  অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারক, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান,  বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সভাপতি লাকী ইনাম, মহাপরিচালক আনজির লিটন প্রমুখ।  
১১ মার্চ, ২০২৪

মতলবে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল শিক্ষার্থী 
মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল ডিংগাভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনির এক শিক্ষার্থী। এলাকাবাসী জানায়, উপাদী উত্তর ইউনিয়নের ডিংগাভাংগা গ্রামে অবস্থিত মুন্সি বাড়ির বাসিন্দা মোতালেব মুন্সির মেয়ে সুমি আক্তারের (১৬) বিয়ের তোরজোড় চলছিল। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সচেতন মহল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ প্রধানকে অবগত করেন। পরে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে বিয়ের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন ইউপি চেয়ারম্যান। স্থানীয় প্রশাসন ও ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ হওয়ায় সচেতন মহল উক্ত কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ প্রধান বলেন, বাল্যবিবাহের বিষয়টি আমাকে অবগত করার পর, আমি সাথে সাথে ওই বাড়িতে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে বিয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ করেছি। মেয়ের প্রাপ্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত যেন বিয়ে না দেয়, এ বিষয়ে তার অভিভাবকদের নির্দেশ প্রদান করেছি। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজনীন আফরোজ বলেন, বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক অন্যায়। সমাজ থেকে বাল্যবিবাহ প্রতিহত করা আমাদের দায়িত্ব। বিবাহের বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। বিয়ে বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ সময় সার্বিক সহযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন, মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ রিপন বালাসহ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যবৃন্দ।   
২০ জানুয়ারি, ২০২৪

প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো বাল্যবিবাহ
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে।  বুধবার (৬ ডিসেম্বর) উপজেলার সিদলাই ইউনিয়নের বেড়াখোলার ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স. ম. আজহারুল ইসলাম। এ ছাড়া বাল্যবিবাহের আয়োজন করার অপরাধে কনের অভিভাবককে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা লুৎফা ইয়াসমিন ও থানা পুলিশের একটি দল সেখানে উপস্থিত ছিল।  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স. ম. আজহারুল ইসলাম বলেন, সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে বিদেশে থাকা ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। অভিভাবকরা মনে করেন, মেয়েকে বিয়ে দিয়ে কোনো রকমে পার করে দিতে পারলেই দায়িত্ব শেষ। তাই কেবল বিয়ে বন্ধই না, মোবাইল কোর্টে ওই সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবককে অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে অপ্রাপ্ত বয়সে আবারও মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে কারাদণ্ড দেওয়া হবে। 
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

নিজের বাল্যবিবাহ নিজেই ঠেকিয়ে দিল শিক্ষার্থী
পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন জানিয়ে নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে দিয়েছেন এক ছাত্রী। পরে প্রশাসনের কাছে ছাত্রীর পিতা ১৮ বছরের আগে তার মেয়েকে বিয়ে দেবেন না বলে লিখিত অঙ্গীকার করেন। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পিরোজপুর সদর উপজেলা কদমতলা ইউনিয়নের এ কদমতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পিরোজপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা  আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদের হস্তক্ষেপে এ বিয়ে বন্ধ হয়।  শিক্ষার্থী নাজমিন আক্তার (১৫) পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের এ কদমতলা গ্রামের মো. মোতালেব খানের মেয়ে। সে কদমতলা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী।  মাদ্রাসাছাত্রী নাজমিন আক্তার জানান, ‘তার পরিবার থেকে তার বিবাহ ঠিক করেছিল। কিন্তু তার বয়স কম এবং এটি বাল্যবিবাহ বলে আমি এই বিয়েতে রাজি হইনি। পরিবর্তীতে বিষয়টি আমার মাদ্রাসার সুপারকে জানালে তিনি ইউএনওর কাজে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে তাকে লিখিত আবেদনসহ সেখানে পাঠান।’  পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিয়েটি বন্ধ করে দেন। তার বাল্যবিবাহ বন্ধ হওয়ায় খুশি হয়েছে বলে জানান ছাত্রী নাজমিন আক্তার। কদমতলা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মুহা: আজাহার উদ্দিন জানান, ‘প্রশাসন থেকে বাল্যবিবাহ বন্ধ করার জন্য শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে সচেতন করে আসছিল। এ ছাড়া পিরোজপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেও বাল্যবিবাহ রোধে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাই নাজমিন তার বাল্যবিবাহের কথা জানালে আমি তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠালে তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেন। প্রশাসনের তাৎক্ষণিক কর্মকাণ্ডে স্থানীয় সব সচেতন মানুষ খুশি হয়েছে।’ পিরোজপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদ জানান, ‘শিক্ষার্থী নাজমিন তার কাছে নিজের বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য লিখিত একটি আবেদন করে। পরে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে তার বাড়িতে পাঠিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’ পিরোজপুর সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, ‘শিক্ষার্থীর লিখিত আবেদনের কারণে তাদের বাড়ি কদমতলায় গিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে শিক্ষার্থীর পিতা তার মেয়ের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না বলে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন।’ এ বিষয়ে শিক্ষার্থীর পিতা মো. মোতালেব হোসেন জানান, ‘তার মেয়ের বিয়ের কোনো আয়োজন তাদের বাড়িতে ছিল না। শুধু তার মেয়েকে দেখতে আসার কথা ছিল। তার এলাকায় তার মেয়ের চেয়ে বয়সে ছোট অনেকের বিয়ে হয়েছে। তাই আমার  মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছি মাত্র।’  
১০ অক্টোবর, ২০২৩
X