রমজানে বিখ্যাত মার্কিন র‌্যাপারের ইসলাম গ্রহণ
রমজানের প্রথম জুমায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন বিখ্যাত মার্কিন র‌্যাপার ও প্রযোজক লিল জন। ক্যালিফোর্নিয়ার একটি মসজিদে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। রোববার (১৭ মার্চ) ডেইলি সাবাহর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলসের কিং ফাহাদ মসজিদে যান তিনি। সেখানে প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেন বিখ্যাত এ র‌্যাপার।  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, লিল জন প্রথমে আরবিতে শাহদত তথা কালিমা উচ্চারণ করেন। এরপর তিনি ইংরেজিতে কালেমা পাঠ করেন। এ সময় মসজিদের ইমাম তাকে তত্ত্বাবধান করেন।  বিখ্যাত এ মার্কিন র‌্যাপার জর্জিয়ার আটলান্টায় ১৯৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম জনাথন এইচ স্মিথ। আমেরিকান লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট শস কিংয়ের পর লিল জন দ্বিতীয় বিখ্যাত মার্কিনি যিনি রজমানের প্রথম সপ্তাহে ইসলাম গ্রহণ করেন।  লিল জন ২০০০ এর দশকের গুরুর দিকে তিনি হিপ হপ সংগীতের বাণিজ্যিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ক্রঙ্ক গ্রুপ লিল জন এবং ইস্ট সাইড বয়েজের ফ্রন্টম্যান ছিলেন, যার সাথে তিনি পাঁচটি অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। 
১৭ মার্চ, ২০২৪

নিলামে মেসি-বার্সার সেই বিখ্যাত দলিল
লিওনেল মেসি—নামটি শুনলে চোখে ভেসে বাঁ পায়ের অসাধারণ ড্রিবলিং, সব প্রতিরোধ ভেঙে চুড়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণে হানা, নিজের গোল করার সুযোগ সতীর্থকে দিয়ে দেওয়া। বিশ্বজয়ী সেই মেসির ঠাই এখন কিংবদন্তির কাতারে। আর এই কিংবদন্তি হওয়ার উত্থানটা স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার হাত ধরে।  গল্পটা সকলের জানা। কীভাবে একটি ন্যাপকিন পেপারে মেসি-বার্সার চুক্তি হয়েছিল। এরপর তৈরি হয় ইতিহাস। এর মাঝে নতুন খবর মেসি-বার্সার সেই ঐতিহাসিক চুক্তিটি নিলামে উঠতে যাচ্ছে।  চলতি বছর মার্চে ব্রিটিশ অকশন হাউস বোনহামসের মাধ্যমে এটির নিলাম হবে। যার ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা। নিলাম প্রসঙ্গে বোনহামসের দুষ্প্রাপ্য বই ও পাণ্ডুলিপি বিভাগের প্রধান বলেন, তিনি একটি নিলাম পরিচালনা করতে যাচ্ছেন। যার মধ্যে একটি ন্যাপকিন পেপার রয়েছে। নিলামের জন্য আসার জিনিসগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে রোমাঞ্চকর। যার মাধ্যমে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল মেসির। এটি বার্সার ভবিষ্যৎ আর মেসির জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছিল। ফুটবলে বিশ্বের কোটি সমর্থককে চমৎকার মুহূর্ত উপহার দিয়েছে। ২০০০ সালে হয় বার্সা-মেসির সেই ঐতিহাসিক চুক্তি। তখন মেসির বয়স ছিল ১৩ বছর। বার্সেলোনার ট্রায়ালে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। এরপর তার পরিবার মেসিকে নিয়ে স্পেন থেকে আর্জেন্টিনার রোজারিওতে ফেরত আসে। এরপর হঠাৎ একদিন মেসির পরিবারকে দুপুরের খাবারের আমন্ত্রণ জানায় বার্সার তৎতকালীন ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাস। সেখানেই হয় এই ঐতিহাসিক চুক্তি। রেক্সাস ছাড়াও সেই ন্যাপকিন পেপারে স্বাক্ষর করেন এজেন্ট হোরাশিও গ্যাগিওলি ও বার্সার দলবদল বিষয়ক পরামর্শক জোসেফ মিনগেলা।  এই এজেন্ট গ্যাগিওলিওই প্রথম মেসির নাম সুপারিশ করেছিলেন। তখন কাতালান ক্লাবটির সভাপতি ছিলেন হুয়ান গাসপোর্ত। চুক্তির লেখা ছিল এমন, ‘বার্সেলোনায় ১৪ ডিসেম্বর, ২০০০ সালে মিনগেলা, হোরাশিও আর বার্সার ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাসের উপস্থিতিতে পূর্ণ দায়িত্বের সঙ্গে নির্দিষ্ট অঙ্কে লিওনেল মেসিকে স্বাক্ষর করানোর ব্যাপারে একমত হওয়া গেল।’ এরপর থেকে বেশ যত্ন সহকারেই সংরক্ষণ করা হয় মেসির চুক্তির ন্যাপকিন পেপারটি। অবশেষে সেটি উঠতে যাচ্ছে নিলামে। ধারণা করা হচ্ছে, ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ডে বিক্রি হতে পারে এটি। ২০২১ সালে আর্থিক সংকটে পড়ে ক্লাব ইতিহাসের সেরা তারকাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় বার্সেলোনা। ক্লাব ছাড়ার আগে বার্সা হয়ে ৭৭৮ ম্যাচে ক্লাব ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৬৭২ গোল করেছেন মেসি। ১০টি লা লিগার সঙ্গে জিতেছে চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা। ব্যক্তিগত অর্জনে রয়েছে বর্ষসেরা পুরস্কার।   
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

লোহিত সাগরে জাহাজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত বিখ্যাত পশ্চিমা কোম্পানির
ফিলিস্তিন ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা। দলটির হামলার কারণে এ সাগরপথে জাহাজ পরিচালনা বন্ধ করে দেয় বিখ্যাত পশ্চিমা কোম্পানি মার্স্ক। তবে পুনরায় এ পথে জাহাজ পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে বিখ্যাত কোম্পানিটি। বৃহম্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার বিখ্যাত এ কোম্পানিটি আবারও লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এশিয়া ও ইউরোপে চলাচলকারী জাহাজগুলো তারা সুয়েজ খাল দিয়েই পরিচালনা করবে। তবে সীমিত সংখ্যক জাহাজ আফ্রিকা ঘুরেও চলাচল করবে।  লোহিত সাগরে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার কারণে মার্স্কসহ বেশিরভাগ কোম্পানি এ পথ দিয়ে জাহাজ পরিচালনা বন্ধের ঘোষণা দেয়। এর বদলে তারা আফ্রিকার কেপ অব গুড হোপ দিয়ে জাহাজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। নতুন এ পথে জাহাজ পরিচালনার জন্য তাদের অতিরিক্তি সাড়ে তিন হাজার ন্যাটিকাল মাইল পাড়ি দিতে হতো। যার জন্য জাহাজগুলোকে অতিরিক্তি ১০ দিন ব্যয় করতে হতো।  হুতিদের এমন হামলার ‍মুখে লোহিত সাগরের নিরাপত্তায় একটি অ্যাল্যায়েন্স গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি  এ পথে তাদের রণতরী মোতায়েন করেছে। এ ছাড়া তারা জোটে যোগদান করতে বিভিন্ন দেশকে আহ্বান জানিয়ে আসছে। 
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

ইয়েমেনিদের ভয়ে লোহিত সাগরের পথ পাল্টেছে বিখ্যাত পশ্চিমা কোম্পানি
গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় সোচ্চার রয়েছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা। লোহিত সাগরে একের পর এক জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে এ গোষ্ঠীটি। ইয়েমেনের এ গোষ্ঠীর হামলায় পিছু হঠেছে পশ্চিমা কোম্পানি শিপিং জায়েন্ট মার্স্ক। তারা তাদের যাতায়াতের পথও পাল্টে ফেলেছে। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  বিখ্যাত এ কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা এখন আর লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ পরিচালনা কররে না। এর পরিবর্তে তারা এখন আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল ঘুরে যাত্রা করবে। হুতি সেনাদের ক্রমাগত হামলার কারণে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে কোম্পানিটি।  মার্স্ক জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে তারা লোহিত সাগরের এ পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। ইয়েমেন থেকে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা অব্যাহত থাকায় এ পথ পরিহার করা হয়েছে।  এর আগে গত মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) কোম্পানিটি জানায়, তারা নিরাপত্তার কারণে তাদের সব জাহাজকে ঘুরিয়ে দেবে। অতিদ্রুত তাদের সব জাহাজ পরিবর্তিত পথে যাত্রা শুরু করবে।  বিখ্যাত এ কোম্পানিটি সমুদ্রপথে নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক নীতিকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা বলছে, সুয়েজ খাল ও লোহিত সাগর দিয়ে ঠিক কবে জাহাজ পরিচালনা করা সম্ভব হবে তা নিশ্চিত নয়।  সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) কোম্পানিটি জানিয়েছে, বর্তমানে তাদের ২০টি জাহাজ লোহিত সাগরের পথে যাত্রা স্থগিত করেছে। এগুলোর অর্ধেক এডেন উপসাগরের পূর্বে অপেক্ষায় রয়েছে। এলাকাটি ইয়েমেনের দক্ষিণে অবস্থিত। এছাড়া বাকিগুলো সুয়েজ খালের শেষপ্রান্তে অপেক্ষমাণ।   উল্লেখ্য, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধের শুরু থেকেই হামাসের সমর্থনে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। আরবের সুন্নি রাষ্ট্রগুলোর মতো শুধু কথায় নয় বরং সরাসরি সামরিক পদক্ষেপও নিতে শুরু করেছে ফিলিস্তিনপন্থি এ গোষ্ঠীটি। তারই ধারাবাহিকতায় লোহিত সাগরে ইসরায়েলি মালিকানাধীন জাহাজে হামলা ও জব্দ করে আসছে হুতি সদস্যরা। এমনকি আরব ও লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী যে কোনো জাহাজ তাদের হামলার বৈধ লক্ষ্যবস্তু বলে গণ্য হবে বলেও সতর্ক করেছে বিদ্রোহ গোষ্ঠীটি। এরপর থেকে সেখানে একের পর এক হামলা করে চলেছে গোষ্ঠীটি। এমন পরিস্থিতির মধ্যে এই ধরেনর সিদ্ধান্তের কথা জানাল মার্স্ক। শুক্রবার এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বৃহস্পতিবার আমাদের জিব্রাল্টার জাহাজে প্রায় হামলা হয়েছিল। শুক্রবার আবার একটি কন্টেইনার জাহাজে হামলা হয়েছে। এসব ঘটনার জেরে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরকে সংযোগকারী বাব এল মান্দেব প্রণালি দিয়ে চলাচলকারী আমাদের সব জাহাজকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত যাত্রাবিরতি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিখ্যাত ফিলিস্তিনি কবি নিহত
গাজায় অব্যাহত বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ অঞ্চলে ইসরায়েলের বিমান হামলা ২ মাস পার করেছে। ইসরায়েলের এ বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের বিখ্যাত কবি রিফাত আলারি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে  এ তথ্য জানানো হয়েছে।   রিফাত আলারি ফিলিস্তিনের বিখ্যাত কবি ছিলেন। তবে কিছু কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিতও হয়েছিলেন। তিনি গাজার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য অধ্যাপক ছিলেন। গাজার যুবকদের সংগঠিত করার জন্য কাজ করাদের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। বুধবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজা সিটিতে বেশ কয়েকজন পরিবাবের সদস্যসহ তিনি নিহত হন।              View this post on Instagram                       A post shared by Mosab Abu-Toha Poetry (@mosab_abutoha) গাজার কবি মোসাব আবু তোহা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।  আলারি উই আর নট নাম্বারস প্রজেক্টের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। এটি মূলত গাজার তরুণদের লেখনীর ওপর কর্মশালা করিয়ে আসছে।  প্রতিষ্ঠানটির আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা পাম বেইলি আলজাজিরাকে বলেন, তার মৃত্যুতে বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। অসংখ্য মানুষ তার লেখা আর কবিতার মধ্য দিয়ে তাকে জানত। তার জন্য অনেক লোক তাকে ভালোবাসত বলেই আজ আপনারা তার কথা শুনছেন। তিনি গাজার মানুষের সংগ্রামকে মানবিক আকারে তুলে ধরেছেন। 
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম আম্পায়ার / ‘এখানে বিখ্যাত হতে আসিনি’
দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ফিল্ড আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। আজ ইংল্যান্ড-আফগানিস্তান ম্যাচে মাঠে আম্পায়ারিং করবেন তিনি। ভারতে যাওয়ার আগে আম্পায়ারিং ক্যারিয়ারের শুরু, বাংলাদেশে এই পেশার চ্যালেঞ্জ—এসব নিয়ে কালবেলার স্পোর্টস রিপোর্টার ওমর ফারুককে দেওয়া তার সাক্ষাৎকার... কালবেলা: আম্পায়ারিংয়ের শুরুটা কীভাবে হয়েছিল? সৈকত: আমি একটা সময় জাতীয় দলের হয়ে খেলেছি, অনেকে হয়তো জানেন না। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়কও ছিলাম। ইচ্ছা ছিল বড় ক্রিকেটার হওয়ার, কিন্তু ১৯৯৪ বিশ্বকাপ কোয়ালিফাই খেলতে কেনিয়া যাওয়ার পর একটা ব্যাক ইনজুরি হয়েছিল। ’৯৭-এ যখন বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি জিতল, সে দলে আমি ছিলাম না। তখন চিন্তা করলাম আমি ভিন্ন কিছু করতে পারি, যেটা দিয়ে ক্রিকেটের মধ্যেই থাকতে পারব। সেখান থেকেই আম্পায়ারিংয়ের চিন্তা। আমি তখনই চিন্তা করেছি, বাংলাদেশ যেহেতু বিশ্বকাপে খেলবে, তাহলে আম্পায়ারিং করার একটা সুযোগ আসতে পারে। ২০০০ সাল থেকেই আম্পায়ারিং শুরু করি। অনেক আগে থেকেই চিন্তা করছি। তখন মাথায় ছিল বাংলাদেশ হয়তো একদিন টেস্ট স্ট্যাটাস পাবে, আমিও টেস্ট আম্পায়ার হতে পারব। তারপর তো অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে এখন হয়তো সাফল্য দেখছি। কালবেলা: আম্পায়ারিংয়ে মোটিভেশন পাওয়া? সৈকত: একদিন ক্রিকেট বোর্ড থেকে আমায় বলা হলো, সকালে আবাহনী মাঠে যেতে হবে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ আছে। একজন আম্পায়ার অসুস্থ, তখন আমি আম্পায়ার্স ম্যানেজার। এটি একটি রেলিগেশন লিগের ম্যাচ ছিল, ওই খেলাটা আর শেষ হতে পারেনি (ঝামেলা হওয়ায়)। এটি আমার প্রিমিয়ার লিগের আম্পায়ার হিসেবে অভিষেক ম্যাচ ছিল। তখন আমি ভাবলাম, আমাকে যখন অভিষেকই করা হয়েছে, তাহলে আমার আম্পায়ারিংই করা উচিত। এরপর এক সময় আলিম দার (সাবেক আইসিসি এলিট প্যানেল আম্পায়ার) এসেছিলেন, তিনি আমাকে বললেন, ‘তোমার আম্পায়ার ছাড়ার প্রয়োজন নেই, নিয়মিত করে যাওয়া উচিত।’ কালবেলা: আম্পায়ারিংকে পেশা হিসেবে নেওয়া কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল? সৈকত: একটা সময় আম্পায়ারিং ছেড়ে দেব ভাবছিলাম, তখন ক্রিকেট বোর্ডে ঢুকলাম। আম্পায়ার্স ম্যানেজার হলাম। তখন নিরপেক্ষতার কথা ভেবে আমি চিন্তা করলাম, আমার আম্পায়ারিং করা উচিত নয়। তার পরও আমাকে জোর করে আম্পায়ারিং করানো হয়েছে। তখন আমি চিন্তা করলাম, না এটিকে নিলে গুরুত্ব সহকারেই নিতে হবে। তারপর ২০১০-এ চাকরি ছাড়ার পর আমি আন্তর্জাতিক ম্যাচের আম্পায়ার হলাম। তারপর থেকে তো চলছে ১৩ বছর ধরে। আমি বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স ম্যানেজারের চাকরি ছেড়েছি। একটা সময় রবিতেও কাজ করেছিলাম, সেটিও ছেড়েছি। তখন চিন্তা করলাম, আমি আম্পায়ারিংই করব; এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমি এখানে বিখ্যাত হতে আসিনি, আমার সংসার চালাতেও আসিনি। আমি শুধু লোগো লাগাতে এ পেশায় আসিনি। আমি এটি শুধুই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। ওই চ্যালেঞ্জে আলহামদুলিল্লাহ মনে হয় পাস করেছি। কালবেলা: ‘বিখ্যাত’ শব্দটা বললেন, আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা না যাওয়ার কারণ? সৈকত: আমি তো বিখ্যাত হয়েছিলাম ’৯৪ সালে যখন খেলি, তখনই। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। এরপর এআইইউবিতে এমবিএ করেছি। পড়াশোনা করে যা না শিখেছি, আমি আম্পায়ারিং করতে এসে জীবনের যে পাঠ শিখছি, তা অন্যরকম। এখানে মানুষ অনেক সমালোচনা করে, পারসেপশন ডেভেলপমেন্ট করে। সব কিছুই আমাদের চাকরির সঙ্গে নিয়ে আসে। শুরুর দিকেই আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে, এটি আসলে ফেসবুক নয়, ফেকবুক। আমরা যেভাবে গড়ে উঠেছি, আমরা তারকা হতে পারি না। মানুষ খেলা দেখতে আসে খেলোয়াড়দের, আমাদের না। কিন্তু আম্পায়ারিং যে অনেক কঠিন চাকরি, এটি মানুষ বোঝে না। আম্পায়ারদের সব সময় লো প্রোফাইল মেইনটেইন করতে বলছে। আপনি দেখাতে পারবেন না যে, আমি স্টার। টিকিট কেটে মানুষ খেলা দেখতে আসবে আম্পায়ারকে না। আর আম্পায়ারিং ফেসবুক দিয়ে হয় না। আমার লক্ষ্যটা বড় ছিল, সে কারণে আমি ফেসবুকে না। আমি কখনো বাস্তব দুনিয়া থেকে বিচ্যুত হতে চাইনি, সে কারণে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় যাইনি। কালবেলা: আম্পায়ারিং নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ কীভাবে দেখেন? সৈকত: আমাদের দেশে আম্পায়ারিং নিয়ে মানুষের ধারণা খুব কম। তারা মনে করে, আউট আর নকআউট সিদ্ধান্তই আম্পায়ারিংয়ে সীমাবদ্ধ। ব্যাপারটা আসলে সেরকম নয়। আম্পায়ারিংয়ে মাত্র ৪২টা ল। তারপরও আমরা ভুল করি, ২০ বছর ধরে একই ল পড়ছি, তারপরও পরিস্থিতিতে গিয়ে আমাদের ভুল হয়। কতটা কঠিন আর চ্যালেঞ্জিং হলে এমন হতে পারে, চিন্তাও করতে পারবেন না। মানুষ বলে পাড়ার ক্রিকেটে নাকি এরকম আম্পায়ার পাওয়া যায়, তাহলে উনারা কই। এটি যে কতটা চাপ, আপনি হয়তো টিকতেও পারবেন না। আমি এসব কারণে বাইরের বিষয়গুলোতে প্রভাবিত হই না। মানুষ না বুঝেই তুলনা করে উনি ভালো, উনি খারাপ; এমন পর্যবেক্ষণ নিয়ে আমি চিন্তিত নই। মানুষ আলিম দারকেও তো নানাভাবে গালি দেয়; কিন্তু তার সাফল্যের জন্য তাকে তো হাজার বছরেও কেউ ছুঁতে পারবে না। কালবেলা: এবার বিশ্বকাপ আম্পায়ারিং প্রসঙ্গে আসি। আপনার কি মনে হয় না এই অ্যাপয়েন্টমেন্ট আরও আগেই আসা উচিত ছিল? সৈকত: আমারও তা-ই মনে হয়। কারণ, আমরা সাত নম্বর বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছি। এই জায়গায় নিশ্চয়ই আমরা ওইভাবে দৃষ্টি দিইনি বলেই আমরা এ পর্যন্ত আসতে পারিনি। আমরা সব সময় ক্রিকেট কালচার নিয়ে কথা বলি, সেটিও শুধু খেলোয়াড়দের বিষয়াদির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখি। এর বাইরে কিন্তু আমরা আসলে যেতে পারি না। আম্পায়ারিং যে একটা সেক্টর, এটির মাধ্যমেও যে বৈশ্বিক পর্যায়ে নিজেদের উজ্জ্বল করতে পারি, ওইভাবে আমরা কখনো চিন্তা করিনি বলেই এত পরে এসেছে। আম্পায়ার কিন্তু ট্রেনিং দিয়ে হয় না, এটি একটি প্রসেসের মাধ্যমেই হয়। কালবেলা: এখান থেকে কতদূর যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন? সৈকত: একটা সময় শুনতাম, দশ বছর ধরে আমি একই জায়গায় আটকে আছি। কথা বিশ্বাসও করতে শুরু করেছিলাম, তবে কখনো ভেঙে পড়িনি, আত্মবিশ্বাস হারাইনি। একটা সময় মনে হয়েছিল আমি বোধহয় টেস্ট ম্যাচ কখনো পাব না। কারণ, আমার সামনেই অনেক আম্পায়ারকে টেস্ট অভিষেক করতে দেখেছি বাংলাদেশে এসে। আমি ফোর্থ আম্পায়ার ছিলাম, অনেকের তখন ডেব্যু হতো এখানে। কিন্তু আমি মনোবল হারাইনি। কারণ, আমি জানতাম যে যাদের অভিষেক হচ্ছে, তাদের চেয়ে আমি পিছিয়ে নেই। একটা সময় টেস্ট ম্যাচ হলো, এখন বিশ্বকাপও এলো। বাকি পূর্ণতা হলো যদি হয়তো এলিট আম্পায়ার হতে পারি। হতেই হবে এমন না, কিন্তু একটা মানুষ যতটুকু চাইতে পারে, ততটুকু চাওয়া। এরপরও জায়গা আছে, সে পথটুকু পার হওয়া খুব কঠিন। কালবেলা: আম্পায়ারদের উন্নতির জন্য আপনার চাওয়া? সৈকত: আমি চাই একটা সুন্দর কাঠামো। মেরিট বেজ আম্পায়ারিং সিস্টেম, সহজ না। চাপমুক্ত আম্পায়ারিং সিস্টেম ও আর্থিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতে হবে। যাতে ভালো ছেলেরাও ওপরের দিকে আসতে পারে, এখানে হবে কী সব আম্পায়ারই বুঝে যাবে, সে আসলে কেমন, কত উপরে আসতে পারবে কিংবা পারবে না। সিস্টেমে সুন্দরভাবে কাজ করতে সবাই সবার অবস্থান বুঝতে পারবে। আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির কোনো প্যানেল নেই, যেটি সব দেশে আছে। যেখানে টেস্ট ম্যাচের গুরুত্ব বেশি, সেখানে কিন্তুটাও আছে।
১৫ অক্টোবর, ২০২৩

বেনামি কোম্পানির যন্ত্রে বিখ্যাত ব্র্যান্ডের স্টিকার!
সরকারি হাসপাতালকে বলা হয় গরিবের চিকিৎসাকেন্দ্র। নিম্ন ও মধ্যবিত্তের ভরসার কেন্দ্রবিন্দু। এসব প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু সরবরাহ করেছেন বিখ্যাত ব্র্যান্ডের ভুয়া স্টিকার লাগানো মানহীন যন্ত্রপাতি। কার্যাদেশের বিপরীতে কখনো বা দিয়েছেন রিকন্ডিশন (পুরোনো) মেডিকেল সামগ্রী। কালবেলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ডেনমার্ক ও জাপানের বিখ্যাত ব্র্যান্ডের ভুয়া স্টিকার লাগানো নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) বেড, অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি, ফ্রিজার, এনালাইজারসহ বিভিন্ন মানহীন পণ্য সরবরাহ করেছে মিঠু চক্র। এতে একদিকে সরকারি টাকা লুটপাট করেছে। অন্যদিকে, রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ভুল ফল আসছে। ফলে আস্থা সংকটে পড়ছে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসকদের সেবা নিয়েও আঙুল তুলছেন রোগী ও তার স্বজনরা। ভুল চিকিৎসার অজুহাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও ঘটে। এসব ভুলের মূলে রয়েছে হাসপাতালের যন্ত্রপাতির মান। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মোতাজ্জেরুল ইসলাম (মিঠু) দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, দিনাজপুর, বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মৌলভীবাজার জেনারেল হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আইএসটিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিদেশি নামিদামি ব্র্যান্ডের ভুয়া স্টিকার লাগানো/নিম্নমানের রিকন্ডিশন মেশিন সরবরাহের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎসহ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে মোতাজ্জেরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে ছুটছেন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে। অনেকে শেষ সম্বল ভিটেমাটি বিক্রি করে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছর দেশের অন্তত প্রায় ২০ লাখ রোগী ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। দিন দিন এ সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশে রোগীদের চিকিৎসা গ্রহণের নেপথ্যে ভুল ডায়াগনসিস। আর ভুল ডায়াগনসিসের নেপথ্যে ভুয়া স্টিকার লাগানো নিম্নমানের যন্ত্রপাতি। এসব যন্ত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষার দায়টা শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের ওপর পড়ে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, মানুষের রোগ নির্ণয়ের মূল উপাদান আধুনিক যন্ত্রপাতি। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রোগ নির্ণয়ের পর চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র লেখেন। রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতি যদি ভুয়া হয়, চিকিৎসক কীভাবে সঠিক চিকিৎসা দেবেন! ভুল চিকিৎসার পথ তৈরি হয়। ভুল রিপোর্টে ওষুধ লিখলে রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটে। রোগ না সারলে আর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তখন চিকিৎসকের ওপর রোগীর আস্থা সংকট তৈরি হয়। এতে একদিকে যেমন রোগীর শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতি হয়, অন্যদিকে চিকিৎসকের দুর্নাম হয়। ভুল ডায়াগনসিসের কারণে রোগী এবং রোগীর পরিবারকে পদে পদে হয়রানি হতে হয়। কখনো বা রোগীর মৃত্যুও হয়। কালবেলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে মিঠুচক্র জাপানের ইয়োংগটাই ব্র্যান্ডের এলসি-১০০ মডেলের লো স্প্রিড সেন্ট্রিফিউজ (১২ হোল), এলসি ১০ সি মডেলের লো স্প্রিড সেন্ট্রিফিউজ (১২ হোল), কেডিসি ৪০ মডেলের লো স্প্রিড সেন্ট্রিফিউজ (২৪ হোল), টিজিএল ১৬ মডেলের রেফ্রিজারেটেড সেন্ট্রিফিউজ মেশিন, এলসি ১০০ মডেলের লো স্প্রিড সেন্ট্রিফিউজ (১২ হোল), জাপানের কেডিসি ৪০ মডেলের লো স্প্রিড সেন্ট্রিফিউজ (২৪ হোল), জাপানের ফিজিওমেড ব্র্যান্ডের ফিজিওপ্লাস মডেলের শর্ট ওয়েব থেরাপি মেশিন সরবরাহ করেন। কিন্তু জাপানে এসব প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই। ভুয়া স্টিকার লাগিয়ে এসব সরবরাহ করা হয়। জার্মানির হাইয়ার ব্র্যান্ডের ডিএস ২ মডেলের ফার্মাসিউটিক্যাল রেফ্রিজারেটর (ডাবল ডোর), এইচওয়াইসি-৯৪০ মডেলের ফার্মাসিউটিক্যাল রেফ্রিজারেটর (স্টান্ডার্ড ফর রিসেন্ট প্রিজার্ভেশন), এইচওয়াইসি-৩৬০ মডেলের ফার্মাসিউটিক্যাল রেফ্রিজারেটর (স্টান্ডার্ড ফর রিসেন্ট প্রিজার্ভেশন), ব্র্যান্ডের এইচবিডি ২৮৬ মডেলের ভ্যাকসিন অ্যান্ড আইস প্যাক ফ্রিজার, এইচএক্সসি ১৫৮/৩৫৮ মডেলের ব্লাডব্যাংক রেফ্রিজারেটর, এইচওয়াইসি-৩৬০ মডেলের ফার্মাসিউটিক্যাল রেফ্রিজারেটার, এইচবিডি ২৮৬ মডেলের ভ্যাকসিন অ্যান্ড লিও প্যাক ফ্রিজার-২৫সি, এইচওয়াইসি-৩৬০ ফার্মাসিউটিক্যাল রেফ্রিজারেটর, এইচওয়াইসি-৯৪০ মডেলের ফার্মাসিউটিক্যাল রেফ্রিজারেটর (ডাবল ডোর), জার্মানির শিনভ্যা ব্র্যান্ডের এসএক্সটিআই৫০০এফজেডকিউ/এস এক্সটি ৩০০এফডিকিউ হেভি ডার্টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়াশিং মেশিন (ক্লথ), এমএসডি.বি মডেলের স্টালাইজার ভ্যাকুম টাইপ, ডেভিড ব্র্যান্ডের এইচকেএন ৯০১০ মডেলের রেডিয়েন্ট ওয়ার্মার, ডিরুই ব্র্যান্ডের এইচ ৫০০ মডেলের সেমি অটোমেটেড ইউরিন কেমিস্ট্রি অ্যানালাইজার ও আইএমএস ব্র্যান্ডের আইএমএস৯৭২এ মডেলের ইলেকট্রোলাইট অ্যানালাইজার। এ ছাড়া জার্মানির এইচসিবি-০৪এলওয়াই মডেলের গাইনোকোলজি বিভাগের টেবিল, এইচসিবি-০৪এলওয়াই মডেলের টেবিল ফর গাইনোকোলজি সরবরাহ করা হয়। অথচ জার্মানিতে এসব কোম্পানির অস্তিত্ব নেই। আবার ডেনমার্কের লিনাক ব্র্যান্ডের আরএস ১০১ মডেলের আইসিইউ বেড, আরএস ১০১ মডেলের প্রেশেন্ট এক্সামিনেশ বেড স্টান্ডার্ড, আরএস ১০১ মডেলের আইসিইউ বেড, ডিএস-২ মডেলের অপারেটিং টেবিল আই, ডিএস ২ মডেলের অপারেটিং টেবিল আই, আরএস ১০১ মডেলের প্রেশেন্ট এক্সামিনেশন বেড সরবরাহ করা হয়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, জার্মানিতে এ ব্র্যান্ডের অস্তিত্ব নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেরি ব্র্যান্ডের জেরি-এইচপ্লাস মডেলের পালস অক্সিমিটার, এক্সসি-এ৩০০ মডেলের অটোমেটেড ইএসআর অ্যানালাইজার এবং যুক্তরাজ্যের ড্রাগন ব্র্যান্ডের ডি ৩০২৪ মডেলের হাই স্প্রিড মাইক্রো সেন্ট্রিফিউজ, ডি ৩০২৪ মডেলের হাই স্প্রিড মাইক্রো সেনট্রিফিউজ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এসব ব্র্যান্ডের অস্তিত্ব যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পাওয়া যায়নি। এখানেই শেষ নয়, ২০১৬ সালের ২৯ মে রংপুর সিভিল সার্জন অফিসে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে ১৮৪৫/৭ স্মারকের এক টেন্ডারে ২৪ কোটি ৮৮ লাখ ৫৪ হাজার ৯৯০ টাকার কার্যাদেশ পাওয়ার পরদিন (২০১৬ সালের ৩০ মে) ভুয়া বিল চালান দাখিল করে বিল তুলে নেওয়া হয়। একইভাবে একই টেন্ডারে আরও এক কার্যাদেশে ১৭ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকার ভুয়া বিল চালান দাখিল করে বিল তুলে নেয় মিঠু চক্র। একই টেন্ডারে এক খাতে দুই দফায় মোট ৪২ কোটি ৪৪ লাখ ২৫ হাজার ২৯০ টাকার বিল তুলে আত্মসাৎ করে। একটি সিভিল সার্জন কার্যালয়ে কীভাবে এত টাকার যন্ত্রপাতি লাগে, তা নিয়ে বিস্মিত স্বাস্থ্য খাতের সংশ্লিষ্টরা। জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ডা. ফয়জুল হাকিম কালবেলাকে বলেন, স্বাস্থ্যসেবা খাতে কেনাকাটার নামে সবচেয়ে বড় পুকুর চুরির ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে ঘটেছে। এ চক্রের হাত ধরে অপ্রয়োজনীয়, অপ্রচল, ভুয়া স্টিকারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতিতে সরকারি হাসপাতাল সয়লাব। এ ক্ষেত্রে ঠিকাদার, দুর্নীতিবাজ কেনাকাটা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও লুটেরা রাজনীতিবিদরা দায় এড়াতে পারেন না। মিঠু স্বাস্থ্য খাতে অতীতের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেছে। তবু তার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এখন সময় এসেছে গরিবের চিকিৎসা খাতে কেনাকাটার নামে দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

প্রতারণা / মানবিক থেকে মাধ্যমিক পাস করে বিখ্যাত চিকিৎসক!
মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন শিবলী সাদিক। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) স্কুলের এ বিভাগ থেকে মাধ্যমিক (এসএসসি) পাস করেন। এরপর ২০০০ ও ২০০১ সালে দুবার উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা দিলেও উত্তীর্ণ হতে পারেননি; কিন্তু সেখানে দমে যাননি তিনি। প্যারামেডিক ডিপ্লোমা ডিগ্রি নিয়ে বনে যান চিকিৎসক। এরপর দাবি করেন, চীনের বেইহুয়া ইউনিভার্সিটির জিলিন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। সেই ভুয়া সনদে বাগিয়ে নেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন ও চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সদস্যপদ। এরপর গাজীপুরে কাশিমপুর ডক্টরস হাসপাতাল বানিয়ে নামেন চিকিৎসা নামের ব্যবসায়। সেখানে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে পাঁচতলা বাড়ি, দামি গাড়ি, হাসপাতালসহ গড়ে তুলেছেন বিপুল সম্পদ। এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই চলছিল; কিন্তু বিপত্তি ঘটে গেল বছরের জানুয়ারিতে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জালে ধরা পড়ে ভুয়া সনদধারী একদল চিকিৎসক। তাদের সূত্র ধরেই শিবলীকে নিজ হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিছুদিন কারাবাসের পর জামিনে বেরিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গেই ফেরেন পুরোনো পেশায়। এখনো নিজের হাসপাতালে চিকিৎসার নামে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন শিবলী। গত মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর ডক্টরস হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, সেদিনও রোগী দেখেছেন তিনি। সরেজমিন দেখা যায়, গাজীপুরের কাশিমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে একটু সামনে এগিয়ে গেলে জিতার মোড়। আশপাশে অগণিত তৈরি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করা স্বল্প শিক্ষিত ও নিম্ন আয়ের মানুষ ঘিরেই গড়ে উঠেছে কাশিমপুর ডক্টরস হাসপাতাল। সেখানে নিয়মিত রোগী দেখেন শিবলী। পরিচয় দেন মেডিসিন ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে। গত ২১ আগস্ট রোগী দেখে তার দেওয়া একটি ব্যবস্থাপত্র এসেছে কালবেলার হাতে। সেখানে উল্লেখ করা, এমবিবিএস করেছেন ঢাকা থেকে! অথচ তিনি নিজেই দাবি করেন চীনের বেইহুয়া ইউনিভার্সিটির জিলিন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। পিজিটি (মেডিসিন ও পেডিয়াট্রিক), এমডি ইন কোর্স করেছেন চীন থেকে। ডিএমইউডি (কনসালট্যান্ট সনোলজিস্ট) সিসিডি করেছেন বারডেম হাসপাতাল থেকে। বিএমএর সদস্য বলেও এতে উল্লেখ আছে। ব্যবস্থাপত্রে উল্লিখিত বিএমডিসি নিবন্ধন নম্বর ৭৩৩২৬। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্যারামেডিকেল কোর্স আর বিদেশি ভুয়া সনদে চিকিৎসক বনে যাওয়া শিবলী সাদিক ছয় থেকে সাতজন নিয়ে কাশিমপুরের ওই এলাকায় দুই তলা ভবনে ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে হাসপাতাল গড়ে তুলেছেন। এর চেয়ারম্যানও তিনি। রোগী দেখার টাকায় এখন চড়েন টয়োটা প্রিমিয়ো গাড়িতে। সাভারের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় বানিয়েছেন পাঁচতলা বাড়ি। এ ছাড়া আছে কৃষিজমি ও বিপুল সম্পদ। দুদক সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৯ জানুয়ারি এমবিবিএস পাসের ভুয়া সনদ ব্যবহার করে চিকিৎসক হিসেবে রেজিস্ট্রেশন নেওয়া সাত চিকিৎসককে রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সূত্র ধরেই ২৯ জানুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর ডক্টরস হাসপাতালে অভিযান চালায় সংস্থার উপপরিচালক সেলিনা আখতার মনির নেতৃত্বে একটি টিম। গ্রেপ্তার করা হয় হাসপাতালের চেয়ারম্যান শিবলী সাদিককে। এর আগে ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর ভুয়া ১২ চিকিৎসক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক। ওই মামলায়ও শিবলী সাদিককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেইহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জিলিন মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির যোগ্যতায় প্রথম শর্তে বলা হয়েছে, আবেদনকারীকে অবশ্যই অতীতের পাঠ্যক্রমে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যাসহ সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যাথমেটিকস (এসটিইএম) পড়ে আসতে হবে; কিন্তু শিবলী সাদিক বিকেএসপি স্কুল থেকে মানবিকে এসএসসি পাস করেন। এরপর তিনি আর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেননি। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০-এর ২৯ (১) ধারায় বলা হয়েছে, এ আইনের অধীনে নিবন্ধন করা কোনো মেডিকেল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক এমন কোনো নাম, পদবি, বিবরণ বা প্রতীক ব্যবহার বা প্রকাশ করবেন না, যার ফলে তার কোনো অতিরিক্ত পেশাগত যোগ্যতা আছে বলে মনে করতে পারে, যদি না তা কোনো স্বীকৃত মেডিকেল চিকিৎসা-শিক্ষা যোগ্যতা বা স্বীকৃত ডেন্টাল চিকিৎসা-শিক্ষা যোগ্যতা হয়। ন্যূনতম এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে অভিযোগে রয়েছে, ভুয়া চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএমডিসির ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশ রয়েছে। কেননা, তাদের সম্পৃক্ততা না থাকলে সবার চোখের সামনে চিকিৎসাসেবার মতো সংবেদনশীল কর্মকাণ্ড অবৈধভাবে পরিচালনা সম্ভব নয়। আইনের উপধারা (২)-এ বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি উপধারা (১)-এর বিধান লঙ্ঘন করলে ওই লঙ্ঘন হবে একটি অপরাধ এবং সেজন্য তিনি ৩ (তিন) বছর কারাদণ্ড বা ১ (এক) লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। সেই অপরাধ অব্যাহত থাকলে প্রতিবার তার পুনরাবৃত্তির জন্য ন্যূনতম ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বর্ণিত দণ্ডের অতিরিক্ত হিসেবে দণ্ডিত হবেন। সেই হিসেবে চিকিৎসাশাস্ত্রে কোনো ডিগ্রি না নিয়ে কিংবা বিএমডিসি সনদ ছাড়া চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া অবৈধ ও বেআইনি। এজন্য শাস্তিরও ব্যবস্থা রয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে শিবলী সাদিক কালবেলাকে বলেন, আমার ব্যাকগ্রাউন্ড আটর্স ছিল। বেহুয়া মেডিকেল কলেজ থেকে প্রি-মেডিকেল কোর্স করেছিলাম। এরপর ২০০৮-০৯ সেশনে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হই। ২০১৪ সালে এমবিবিএস পাস করেছি। সেখানে পড়াশোনা করে এসে বিএমডিসিতে পরীক্ষা দিয়ে নিবন্ধন নিয়েছি। বিএমডিসি সেটা অ্যাপ্রুভ করেছে। তারা আমার সনদের সত্যতা তিন থেকে চারবার ভেরিফাই করেছে। এর পরও দুদকের ঝামেলার কারণে বিএমডিসি সনদ টেম্পোরারি হোল্ড করেছে। এ নিয়ে আমি একটা আবেদন জমা দিয়েছি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে দ্রুত সনদ ঠিক করে দেবে। এ সময় তিনি বিএমডিসির নিবন্ধন ফিরে পেতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বরাবরও আবেদন করেছেন বলে দাবি করেন। তবে সেই আবেদনের কপি দেখতে চাইলে এতে অপারগতা জানান তিনি। এ ছাড়া চীনের তাইশান মেডিকেলের এমবিবিএসের ভুয়া সনদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেন। গাজীপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. খায়রুজ্জামান বলেন, ভুয়া চিকিৎসক কিংবা হাসপাতালের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি। শিবলী সাদিক ভুয়া চিকিৎসক হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিএমডিসির শৃঙ্খলা কমিটির চেয়ারম্যান ও বিএমএর মহাসচিব এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, প্রি-মেডিকেল বলে কোনো কোর্সের অস্তিত্ব নেই। প্যারামেডিক কোর্স বিজ্ঞান-মানবিক যে কোনো বিভাগের শিক্ষার্থীরা করতে পারেন। তবে এ কোর্স করেও এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির কিংবা চিকিৎসক হওয়ার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে কেউ এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে থাকলে নিশ্চয়ই তার সনদ ভুয়া। এ প্রসঙ্গে বিএমডিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. লিয়াকত হোসেন বলেন, মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি কিংবা এইচএসসি পাস করে কোনোভাবেই এমবিবিএস পড়ার সুযোগ নেই। প্রি-মেডিকেল করেও এমবিবিএস করার সুযোগ নেই। শিবলী সাদিকের বিষয়ে তিনি বলেন, দুদক গত বছর তাকে ভুয়া চিকিৎসক হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার বিএমডিসির নিবন্ধন সনদ স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এর পরও তিনি চিকিৎসাসেবা দিয়ে গেলে সেটা নিয়মবহির্ভূত। তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ডায়ানার বিখ্যাত জাম্পার নিলামে বিক্রি
যুবরানি ‘প্রিন্সেস অব ওয়েলস’ ডায়ানার পোশাকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল লাল জাম্পার। যেটি ভেড়ার পালের ডিজাইন দিয়ে সজ্জিত। সেই জাম্পারটি এবার নিউইয়র্কে নিলামে ১.১ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা নিলামে ওঠা সবচেয়ে মূল্যবান সোয়েটার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে এটি। খবর দ্য গার্ডিয়ানের। নিলামে অনুমান করা হয়েছিল যে, জাম্পারটি ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার ডলারে বিক্রি হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডায়ানার স্টাইল আবারো আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে ওঠায় এমন চড়া দামে বিক্রি হয়েছে। ওয়ার্ম অ্যান্ড ওয়ান্ডারফুল কোম্পানি এই জাম্পারটি তৈরি করেছিল। কোম্পানিটি ১৯৭৯ সালে স্যালি মুইর এবং জোয়ানা ওসবোর্ন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি এই জুটির প্রথম ডিজাইনগুলোর মধ্যে একটি। ওসবোর্ন বলেছিলেন, আমরা উলের জাম্পার তৈরি করতে আগ্রহী ছিলাম, ডিজাইনে আমরা ভেড়াকে বেছে নিয়েছিলাম।  ওসবোর্ন জানান, তারা জানতেন না যে, ১৯ বছর বয়সী যুবরানি ডায়ানা এই জাম্পারটি পরতে চলেছেন। যখন তারা জানলেন তখন তারা এটিকে ‘সোনালি মুহূর্ত’ হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। তবে এটি পরার প্রায় এক মাস পরে ওসবোর্ন বাকিংহাম প্যালেস থেকে একটি চিঠি পান। চিঠিতে বলা হয়েছিল যে, জাম্পারটিতে কিছু ত্রুটি দেখা গেছে। ওসবোর্ন বলেন, আমরা বরং আতঙ্কিত ছিলাম তাই আমরা অবিলম্বে এটি পরিবর্তন করে দেই।  তিনি বলেন, সাদা ট্রাউজার্সের সঙ্গে ডায়ানা যখন লাল জাম্পারটি পরতেন তাকে আরও আত্মবিশ্বাসী দেখাতো। এই বছরের শুরুতে ডায়ানার সংগৃহীত পোশাক থেকে একটি মখমল ভিক্টর এডেলস্টেইনের পোশাক ৬ লাখ ৪ হাজার ৮০০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল, যা তার অনুমানের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। মুইর এবং ওসবোর্ন ভেবেছিলেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়ত পুরনো জাম্পারটি হারিয়ে গেছে। কিন্তু গত মার্চ মাসে নিজের দোকানের তাক পরিষ্কার করার সময় পুরনো জাম্পারটি খুঁজে পান ওসবোর্ন। জাম্পারটিতে একঝাঁক সাদা ভেড়ার মধ্যে একটি কালো ভেড়া রয়েছে। এর সঙ্গে মানানসই বেল্ট এবং টুপি বিক্রি হতে থাকে ২৭০ পাউন্ডে। সোয়েটারটি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল এটির নাম হয়ে যায় ‘ডায়ানা সংস্করণ’।
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X