লিওনেল মেসি—নামটি শুনলে চোখে ভেসে বাঁ পায়ের অসাধারণ ড্রিবলিং, সব প্রতিরোধ ভেঙে চুড়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণে হানা, নিজের গোল করার সুযোগ সতীর্থকে দিয়ে দেওয়া। বিশ্বজয়ী সেই মেসির ঠাই এখন কিংবদন্তির কাতারে। আর এই কিংবদন্তি হওয়ার উত্থানটা স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার হাত ধরে।
গল্পটা সকলের জানা। কীভাবে একটি ন্যাপকিন পেপারে মেসি-বার্সার চুক্তি হয়েছিল। এরপর তৈরি হয় ইতিহাস। এর মাঝে নতুন খবর মেসি-বার্সার সেই ঐতিহাসিক চুক্তিটি নিলামে উঠতে যাচ্ছে।
চলতি বছর মার্চে ব্রিটিশ অকশন হাউস বোনহামসের মাধ্যমে এটির নিলাম হবে। যার ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
নিলাম প্রসঙ্গে বোনহামসের দুষ্প্রাপ্য বই ও পাণ্ডুলিপি বিভাগের প্রধান বলেন, তিনি একটি নিলাম পরিচালনা করতে যাচ্ছেন। যার মধ্যে একটি ন্যাপকিন পেপার রয়েছে। নিলামের জন্য আসার জিনিসগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে রোমাঞ্চকর। যার মাধ্যমে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল মেসির। এটি বার্সার ভবিষ্যৎ আর মেসির জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছিল। ফুটবলে বিশ্বের কোটি সমর্থককে চমৎকার মুহূর্ত উপহার দিয়েছে।
২০০০ সালে হয় বার্সা-মেসির সেই ঐতিহাসিক চুক্তি। তখন মেসির বয়স ছিল ১৩ বছর। বার্সেলোনার ট্রায়ালে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। এরপর তার পরিবার মেসিকে নিয়ে স্পেন থেকে আর্জেন্টিনার রোজারিওতে ফেরত আসে।
এরপর হঠাৎ একদিন মেসির পরিবারকে দুপুরের খাবারের আমন্ত্রণ জানায় বার্সার তৎতকালীন ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাস। সেখানেই হয় এই ঐতিহাসিক চুক্তি। রেক্সাস ছাড়াও সেই ন্যাপকিন পেপারে স্বাক্ষর করেন এজেন্ট হোরাশিও গ্যাগিওলি ও বার্সার দলবদল বিষয়ক পরামর্শক জোসেফ মিনগেলা।
এই এজেন্ট গ্যাগিওলিওই প্রথম মেসির নাম সুপারিশ করেছিলেন। তখন কাতালান ক্লাবটির সভাপতি ছিলেন হুয়ান গাসপোর্ত। চুক্তির লেখা ছিল এমন, ‘বার্সেলোনায় ১৪ ডিসেম্বর, ২০০০ সালে মিনগেলা, হোরাশিও আর বার্সার ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাসের উপস্থিতিতে পূর্ণ দায়িত্বের সঙ্গে নির্দিষ্ট অঙ্কে লিওনেল মেসিকে স্বাক্ষর করানোর ব্যাপারে একমত হওয়া গেল।’
এরপর থেকে বেশ যত্ন সহকারেই সংরক্ষণ করা হয় মেসির চুক্তির ন্যাপকিন পেপারটি। অবশেষে সেটি উঠতে যাচ্ছে নিলামে। ধারণা করা হচ্ছে, ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ডে বিক্রি হতে পারে এটি।
২০২১ সালে আর্থিক সংকটে পড়ে ক্লাব ইতিহাসের সেরা তারকাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় বার্সেলোনা। ক্লাব ছাড়ার আগে বার্সা হয়ে ৭৭৮ ম্যাচে ক্লাব ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৬৭২ গোল করেছেন মেসি। ১০টি লা লিগার সঙ্গে জিতেছে চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা। ব্যক্তিগত অর্জনে রয়েছে বর্ষসেরা পুরস্কার।
মন্তব্য করুন