সীতাকুণ্ডে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিলেন সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী মো. ফয়সাল মুন্সি ক্ষমা চেয়েছেন। সে সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছেন।তিনি উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের জানে উল্লাহ মুন্সিবাড়ির বাসিন্দা। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিক নেতা ও অভিযুক্তের পক্ষের লোকজনের মধ্যস্থতায় এ সমাধান করা হয়। এর আগে দৈনিক কালবেলার সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রতিনিধি এস এম ইকবাল হোসাইন ১২ ডিসেম্বর পেশাদার দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে ভাটিয়ারী ইউনিয়নের বিটিসি গেট এলাকায় যান। সেখানে ফকরিজ ইটভাটায় অবৈধভাবে কাঠ পোড়ানোর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় ইটভাটায় কাঠ সরবরাহকারী মো. ফয়সাল মুন্সি কালবেলা প্রতিনিধির ওপর হামলা চালান। পরে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি জিডি করেন ভুক্তভোগী। ঘটনার পর থেকে ফয়সাল মুন্সী ও তার লোকজন সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের নেতা ও কালবেলা প্রতিনিধির কাছে ক্ষমার জন্য ধরনা দিতে থাকেন। শনিবারের মধ্যস্থতায় অভিযুক্ত ব্যক্তি কালবেলা প্রতিনিধি ও প্রেস ক্লাব নেতাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দেন। এ বিষয়ে সাংবাদিক এস এম ইকবাল হোসাইন বলেন, সাংবাদিক হলো জাতির দর্পণ। অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এই ধরনের ঘটনা থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান তিনি। এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, উভয়পক্ষ মীমাংসা হওয়াতে জিডিটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরে এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩

কালবেলার সীতাকুণ্ড প্রতিনিধির ওপর হামলা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ইটভাটার তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দৈনিক কালবেলার সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি এস এম ইকবাল হোসাইন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের বিটিসি গেট এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ফকরিস ইটভাটায় ওই ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিক বর্তমানে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিৎসাধীন। হামলার শিকার ইকবাল হোসাইন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরির অভিযোগ ফকরিস ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে। এর ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ভাটায় কাঠ সরবরাহকারী এবং স্থানীয় সন্ত্রাসী ফয়সাল আমার ওপর হামলা চালায়। আমি অতর্কিত হামলার কারণ জানতে চাইলে হামলাকারী হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ‘ইটভাটায় গাছ দিব, দেখি কার ক্ষমতা আছে নিষেধ করার!’ সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানান স্থানীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি সৌমিত্র চক্রবর্তী। সীতাকুণ্ড থানার ওসি কামাল উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি জিডি করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। সার্বিক বিষয় তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধী যেই হোক আইনের আওতায় আনা হবে।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

ছাত্রদল নেতাকে না পেয়ে ক্রীড়াবিদ ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার তালিকাভুক্ত ক্রীড়াবিদ কাজী নাজিম উদ্দিনকে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (৩ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের নতুন পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার কাজী নাজিম উদ্দিন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কাজী সেলিম উদ্দিনের ছোট ভাই। তাকে একটি নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।  সীতাকুণ্ড ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা ক্রীড়াবিদ ফজলে এলাহি পায়েল কালবেলাকে বলেন, কাজী নাজিম উদ্দিন ক্রীড়াবিদ। সে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য, উপজেলা প্রথম বিভাগ দলের অধিনায়ক ও চট্টগ্রাম ক্রীড়া সংস্থার তালিকাভুক্ত আম্পায়ার। আমার জানামতে সে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। এ ছাড়াও আমি সীতাকুণ্ড থানার এসআই নাসির উদ্দিনকে অনুরোধ করেছিলাম কাজী নাজিম উদ্দিন কোনো রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয় এবং তার নামে কোনো মামলাও নেই। ভাইয়ের কারণে তাকে ধরে নেওয়া ঠিক হয়নি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ছাত্রদলের আহ্বায়ক কাজী সেলিম উদ্দিন কালবেলাকে জানান, পুলিশের নানান হয়রানির কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থাকতে পারি না। আমার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক মামলাও আছে। পুলিশ হন্যে হয়ে আমাকে খুঁজছে। রাজনীতি করা অপরাধ হলে আমি করেছি। কিন্তু আমার ভাই তো কোনো অপরাধ করেনি। আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কেন, কোনো ধরনের মামলা নেই। কাজী সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আত্মীয়স্বজন সকাল ৬টা থেকে আমার ভাইকে ছাড়ানোর জন্য থানায় ধরনা দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ তাকে চালান করে দিয়েছে। আমার কারণে সে গ্রেপ্তার হওয়ায় নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে।’ কাজী নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে থানায় আগের কোনো মামলা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে একটি নাশকতার মামলায় তাকে এখন আসামি করা হয়েছে। সীতাকুণ্ড থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, কাজী নাজিম উদ্দিন সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নাশকতা মামলার সন্দেহজনক আসামি। যদি তিনি আসামি না হতেন, তাহলে তার এলাকার জনপ্রতিনিধি কিংবা স্বজনরা তাকে ছাড়ানোর জন্য তদবির করতেন। চালানপত্র প্রস্তুত হওয়ার পর তার এক আত্মীয় এসে কাজী নাজিমকে নির্দোষ দাবি করে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন, কিন্তু তখন আর সম্ভব হয়নি। 
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

অনুমোদনহীন পানির জারে সীতাকুণ্ড বাজার সয়লাব
যেখানে একটি জারে (২০ লিটার) পানি সরবরাহ করে ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে সর্বমোট খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা। সেখানে খুচরা বাজারে এক জার পানি বিক্রি হচ্ছে শুধু ১০ থেকে ১৫ টাকা। প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসাকে কার থেকে সস্তা বিক্রি করবে তা নিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছে পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এ দ্বারা বোঝার আর অবকাশ থাকে না যে কতটুকু বিশুদ্ধ পানি ভোক্তারা পান করছে। আদৌ কি ভোক্তারা জানে এই পানি কতটুক নিরাপদ স্বাস্থ্যের জন্য। এই ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীরা মানহীন পানি সরবরাহ করে ভোক্তাদের কাছ থেকে প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। পানিতে জমে থাকে শেওলা, অনেক সময় মিলে বিভিন্ন পোকাও। আর এইসব মানহীন পানি পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ছে ভোক্তারা। এগুলো যেন দেখার কেউ নেই।  এভাবেই তদারকি সংস্থার অবহেলার কারণেই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে প্রয়োজনীয় মান পরীক্ষা ছাড়াই উৎপাদিত পানি বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে এইসব পানি। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে নামে বেনামে ১৫-২০টি মানহীন পানির সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তাদের কাছে নেই কোনো বিএসটিআইয়ের অনুমোদনের সনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র। প্রতিদিন পানি ভর্তি শত শত জার বিভিন্ন অফিস, দোকান, রেস্টুরেন্ট ও আবাসিক হোটেলে সরবরাহ করা হচ্ছে।  বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) চট্টগ্রামের মাধ্যমে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডের মধ্যে বিএসটিআই অনুমোদিত কোনো পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নেই। নিজস্ব লোকবল সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ঠিকমতো তদারকি করতে পারছে না।  ভোক্তাদের অভিযোগ, এসব পানি পান করে পেটের সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হল, সোনাইছড়ি এলাকায় অবস্থিত একোয়া ওয়ান ও একোয়া টু, কুমিরা এলাকায় অবস্থিত নীল, পৌরসভার দোয়ীপাড়ায় অবস্থিত চট্টলা, সৈয়দপুর এলাকায় অবস্থিত সততা, বাড়বকুণ্ড এলাকায় অবস্থিত আরও ড্রিংকিং ওয়াটার, ফৌজদারহাট এলাকায় অবস্থিত তৃপ্তি ড্রিংকিং ওয়াটার, বাঁশবাড়িয়া এলাকায় অবস্থিত রবি ড্রিংকিং ওয়াটার, এস কে এম এলাকায় অবস্থিত ম্যাক্স ড্রিংকিং ওয়াটার, বাড়বকুণ্ড এলাকায় এন আর ড্রিংকিং ওয়াটার, এ ছাড়াও বেনামে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।  সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কুমিরা এলাকায় নীল নামক একটি পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে নোংরা পরিবেশে পানি বোতলজাত করা হচ্ছে। ভোক্তাদের কাছে পানি নিয়ে যাওয়ার আগে যেসব শর্তাবলি আছে তার বিন্দুমাত্র মানা হচ্ছে না। উপজেলার মধ্যে প্রায় সব পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের চিত্র একই। সীতাকুণ্ড পৌরসভা এলাকার দোকানদার দিলীপ বলেন, একধরনের বাধ্য হয়ে এইসব পানি পান করতে হচ্ছে। পানিতে অনেক সময় ময়লা, পোকা ও শ্যাওলা জমে থাকে। রনি নামের আরেক দোকানদার বলেন, জারের পানিতে বেশ কয়েকবার পোকা ও ময়লা পাওয়া গিয়েছে। তাই বাড়ি থেকে পানি নিয়ে আসি। তৃপ্তি ড্রিংকিং ওয়াটারের মালিক কাদের বলেন, সবকিছু ম্যানেজ করেই চলছি।  একোয়া ড্রিংকিং ওয়াটারের মালিক মামুন চৌধুরী বলেন, বিএসটিআইর নিবন্ধন নেই। তবে অনেক ধরনের কাগজপত্র রয়েছে। আর বাকি প্রক্রিয়াগুলো করে ফেলব। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুরু উদ্দিন রাশেদ কালবেলাকে বলেন, এ ধরনের পানি বেশির ভাগই অপরিশোধিত ও নিরাপদ নয়। এ পানি ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগ টাইফয়েড, হেপাটাইটিস, ভাইরাস, ডায়রিয়া, কলেরা রোগের ঝুঁকি রয়েছে। এ ধরনের পানির মধ্যে আর্সেনিকের মতো বিষাক্ত ধাতু থাকতে পারে, যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন এ ধরনের পানি ব্যবহারের ফলে ত্বক, কিডনি ও লিভারের ক্ষতি হতে পারে। রয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকিও। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রানা দেবনাথ কালবেলাকে বলেন, বিএসটিআইয়ের সনদ ছাড়া পানি উৎপাদন ও বিপণন সম্পূর্ণ অবৈধ। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে। বিএসটিআইয়ের চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মোস্তাক আহমেদ কালবেলাকে বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিএসটিআইয়ের নিবন্ধন করতে হবে। যদি তা না করে, তাহলে সেটি হবে অবৈধ। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানকে মালামাল ক্রোক এবং জরিমানা করি।
১৬ নভেম্বর, ২০২৩

এমপি হতে সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান পদ ছাড়লেন মামুন
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ ছাড়লেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আল মামুন। একই সঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৪ সংসদীয় আসনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন তিনি। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এ বিষয়টি উপজেলা পর্যায়ে জানাজানি হলে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও খুশির আমেজ দেখা যায়। এ তথ্য কালবেলাকে নিশ্চিত করে এস এম আল মামুন বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে আরও বড় পরিসরে জনসেবা করে যাব। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। এস এম আল মামুন স্বাক্ষরিত কাগজে বলেছেন, আমি আমার পারিবারিক/ব্যক্তিগত কারণে চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করতে পারছি না। তাই ওই পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করছি। আল মামুন কালবেলাকে বলেন, আমি সীতাকুণ্ড উপজেলার চেয়ারম্যান পদে দুবার নির্বাচিত হয়েছি। আমার বাবাও এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। বাবার সাজানো বাগান এই আসন। আমি যুবলীগের সভাপতি ছিলাম। সীতাকুণ্ডের মানুষ আমার প্রাণ। জনগণকে বৃহৎ পরিসরে সেবা করতে চাই। তিনি বলেন, গেলবার চট্টগ্রাম থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম, সেবারও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে থাকায় দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়ন পাইনি। আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে তার উন্নয়নযাত্রার সহযোগী করবেন। এই এলাকার জনগণই আমাকে এমপি পদে দেখতে চায়। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের তৃণমূল নেতারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সীতাকুণ্ডে মাঠের রাজনীতি করেন মামুন। তার সঙ্গে তৃণমূলের রাজনীতিবিদসহ জনগণের যোগাযোগ রয়েছে। মামুন সংসদ নির্বাচন করেবেন শুনে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত। অন্যদিকে উপজেলা যুবলীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আল মামুন। এতে উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এসএম রাশেদুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক মো শাহজাহানসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
৩১ অক্টোবর, ২০২৩

পদত্যাগ করলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আল মামুন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানান। সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে এস এম আল মামুন স্বাক্ষরিত পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগ পত্রে তিনি উল্লেখ করে বলেন, পরপর দুইবার চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করছি। এমতাবস্থায়, আমাকে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ হতে পদত্যাগ পত্র গ্রহণপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া প্রসঙ্গে এস এম আল মামুন বলেন, ‘সামনেই সংসদ নির্বাচন, সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পদ ছেড়েছি। গতবারও একাদশ নির্বাচনে আমি মনোনয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থাকায় মনোনয়ন পাইনি। আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবা দুইবারের সংসদ সদস্য প্রয়াত আবুল কাশেম মাস্টার। আমার বাবা সীতাকুণ্ডে সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় উপজেলার মধ্যে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এখন সীতাকুণ্ডের সর্বস্তরের জনগণ আমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চায়। জনগণের এই আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করতে আমি নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চাইব। আমি শতভাগ আশাবাদী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মূল্যায়ন করবেন।’
৩০ অক্টোবর, ২০২৩

সীতাকুণ্ড ডিসি পার্কে অবৈধ দখল উচ্ছেদ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ফৌজদারহাট এলাকায় অবস্থিত ডিসি পার্কের জায়গায় অবৈধ দখলে থাকা ১৩টি স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।  বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দিন এ অভিযান পরিচালনা করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট্র মো. আলাউদ্দিন জানান, উপজেলার ফৌজদারহাটে গড়ে তোলা ডিসি পার্কের দক্ষিণ দিকের সীমানার মধ্যে বেশকিছু অবৈধ স্থাপনা আছে। ডিসি পার্কের চলমান উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখতে এই স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়া খুবই জরুরি। এ কারণে তাদের বারবার সরে যাওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তারা ওই জায়গা ছাড়ছিল না। এতে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। তাই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তিনি ১৩টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জায়গাটি দখল মুক্ত করেন। অভিযানকালে সহযোগিতা করেন সীতাকুণ্ড মডেল থানার সদস্যরা।
১২ অক্টোবর, ২০২৩

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এতিমখানায় ট্রাক, আহত ১৩
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এতিমখানার ছাত্রাবাসে ঢুকে পড়েছে। এতে ট্রাকের হেলপারসহ ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কজনক। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিরা ইউনিয়ন এলাকায় অবস্থিত হাম্মাদিয়া জামে মসজিদ নূরানি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে।  কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতরা হলেন মো. নাজিম (৯), মেহেদী হাসান (১২), জাহিদুল করিম (৯), সাজিদ আলম (১১), মো. নাইম (১১), ওমর ফারুক (১০), জাহিদুল ইসলাম (১১), সাইফুল ইসলাম (১১), আল আমিন (১০), আবদুল্লাহ (৮), মো. ওয়ালিদ (১২), মো. ইমরান (১২) ও ট্রাকের হেলপার মো. ফাহিম (১৮)। স্থানীয় সূত্র জানা যায়, দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা নিজেদের রুমে বিশ্রাম করছিল। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রামে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাদ্রাসায় ঢুকে পড়ে। এতে ১২ জন শিক্ষার্থীসহ ট্রাকের হেলপার আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ কালবেলাকে বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাঠানো হয়।  সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার নুর উদ্দিন রাশেদ কালবেলাকে বলেন, আহত ১৩ জনের মধ্যে ১২ জন সবাই ক্ষুদে শিক্ষার্থী ও হেফজখানার ছাত্র। চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাম্মাদিয়া মাদ্রাসা শিক্ষক শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষে বিশ্রাম করছিল এতিমখানা শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাদ্রাসায় ঢুকে পড়ে। ১২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সীতাকুণ্ড ডিসি পার্ক দেখে মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় অবস্থিত ডিসি পার্ক পরিদর্শনে মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তিনি ডিসি পার্কে এসে সাগর উপকূলীয় মনোরম পরিবেশে উদ্ধারকৃত খাস জায়গায় সুবিশাল একটি মনোমুগ্ধকর বিনোদনমূলক পার্ক তৈরি করায় জেলা প্রশাসকের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। ডিসি পার্ক পরিদর্শন শেষে তিনি সেখানে একটি বৃক্ষরোপণ করেন। পরিদর্শনের সময় সুবিশাল সরকারি খাস জায়গা উদ্ধার করে জনসাধারণের জন্য একটি বিনোদন পার্ক গড়ে তোলায় চট্টগ্রামের ডিসিকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। এ ধরনের অনন্য উদ্যোগ নিতে সব জেলার ডিসিদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) শেখ ইউসুফ হারুন, বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মোকাম্মেল হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ তোফায়েল ইসলাম, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম, সীতাকুণ্ড উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালাউদ্দিন।
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ফায়ার সার্ভিসের দাবি / সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের পর্যটন স্পট যেন মৃত্যুকূপ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে একাধিক ঝরনা। এর সঙ্গে সীতাকুণ্ড উপকূলে রয়েছে সমুদ্রসৈকত। অনেকে একা, বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে আসেন পর্যটন স্পটগুলোতে। কিন্তু প্রকৃতির রূপ উপভোগ করতে এসে কেউ কেউ ফিরছেন দুর্ঘটনার বিষাদ অভিজ্ঞতা নিয়ে। কেউ কেউ পাড়ি দিচ্ছেন না ফেরার জগতে। পর্যটন স্পটগুলো পরিণত হয়েছে মৃত্যুকূপে। মিরসরাইয়ের পর্যটন কেন্দ্রে গত ৬ বছরে ১৬ পর্যটক মারা গেছেন। আর সীতাকুণ্ডে চলতি বছরই প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ পর্যটক। অথচ পর্যটকের সুরক্ষায় তেমন ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। ফায়ার সার্ভিস বলছে, স্পটের বিপজ্জনক স্থানগুলো সম্পর্কে পর্যটকদের না জানা ও খামখেয়ালিপনায় ঘটছে এসব দুর্ঘটনা। জানা গেছে, মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডের খইয়াছড়া, নাপিত্তাছড়া, সহস্রধারা, সুপ্তধারা, বাড়বকুণ্ড ঝরনা, বাওয়াছড়া, রূপসী, ঝরঝরি, বোয়ালিয়া, হরিণাকুণ্ড ও সোনাইছড়ি ঝরনা নজর কেড়েছে ভ্রমণপিপাসুদের। সেইসঙ্গে মিরসরাইয়ের মহামায়া লেক, সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া এবং গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে প্রতিনিয়ত ভিড় করেন ভ্রমণপিপাসুরা। কিন্তু এসব স্থানে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আনন্দ করতে এসে লাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে অনেককে। পর্যটকরা বলছেন, স্পটগুলোর ইজারাদাররা এসব মৃত্যুর দায় এড়াতে পারেন না। ইজারাদাররা শুধু কাউন্টার থেকে টিকিট দেন; কিন্তু রাস্তাঘাটের তেমন কোনো সংস্কার করেন না। যেসব স্থান ঝুঁকিপূর্ণ সেসব স্থানে সচেতনতা কিংবা নিষেধ করতে ইজারাদারদের কোনো লোক থাকে না। স্পটগুলোতে পর্যটকরা কেন মারা যাচ্ছে—এ বিষয়ে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে পর্যটকদের অসাবধানতার কারণে। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে ভারি বৃষ্টি হলে। বিপজ্জনক স্থানে উঠতে গিয়েই বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। এসব বিপজ্জনক স্থান চিহ্নিত করে ব্যানার বা চিহ্ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, কিছু স্থানে বাস্তবায়ন করা হলেও বেশিরভাগ স্থানে এখনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, মিরসরাইয়ে গত ৬ বছরে বিভিন্ন পর্যটন স্পটে মারা গেছেন কমপক্ষে ১৬ জন। আহত হয়েছেন শতাধিক। এর মধ্যে গত ২ জুলাই বড় কমলদহ রূপসী ঝরনার কূপে ডুবে মারা গেছেন দুই বন্ধু। এর আগে ২০২২ সালের ১৯ জুন নাপিত্তাছড়া ঝরনায় তৌফিক আহম্মেদ তারেক, মাসুদ আহম্মেদ তানভীর, ইশতিয়াকুর রহমানসহ তিনজন নিখোঁজ হন। ২০ জুন দুজনের ও ২১ জুন আরেকজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২০২০ ও ২০২১ সালে দুই বছরে করোনা মহামারির কারণে ঝরনাগুলোতে পর্যটকের যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। এর আগে ২০১৯ সালে মহামায়া লেক ও ঝরনায় মারা যান ছয়জন, ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর নাপিত্তাছরা ঝরনায় সাঁতার কাটার সময় চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন মামুন মারা যান। পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর বিভাগের মিরসরাই রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহানশাহ নওশাদ বলেন, পর্যটন কেন্দ্রের বিপজ্জনক স্থান চিহ্নিত করে ব্যানার লাগানোর পরও সেগুলোকে পাত্তা না দিয়ে পর্যটকরা সেখানে চলে যান। টিকিট দেওয়ার সময় বিপজ্জনক স্থানগুলোতে না যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পর্যটকদের গাইড নিয়ে এসব স্থানে যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়; কিন্তু পর্যটকরা উদাসীন থাকেন। তিনি আরও বলেন, রূপসী ঝরনার উপরের কূপটি আলাদা। এর উপরের সব ঝরনার পানি প্রবল বেগে এ কূপে এসে পড়ে। এর গভীরতাও অনেক। অনেকে এ কূপের গভীরতা ও আকার না জেনে লাফ দেয়। অন্যদিকে চলতি বছরে সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে মারা গেছেন পাঁচ পর্যটক। গতকাল বুধবার বাঁশবাড়িয়া ঝরনায় ঘুরতে আসা এ কে এম নাইমুল হাসান নামে এক পর্যটক পানিতে ডুবে মারা যান। এর আগে ২৮ আগস্ট পাহাড়ি ঝরনা এলাকা থেকে সোহানুর রহমান নামে একজনের লাশ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ২৪ জুলাই বাঁশবাড়িয়া এলাকায় আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী সাগরে ডুবে মারা যান। গত ৫ জুলাই গুলিয়াখালী বিচে স্কুলছাত্র মেহেদী হাসান সাগরে নেমে মারা যান। সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা নুরুল আলম দুলাল কালবেলাকে বলেন, সাঁতার না জানা অনেকেই আসছেন সাগর এলাকার স্পটগুলোতে। এ কারণে মারা যাচ্ছে বেশি। এ ছাড়া পর্যটন এলাকাগুলোর ইজারাদারদেরও যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে। তারা সরকারি কোনো নির্দেশনা মানছেন না। পর্যটকদের লাইফ জ্যাকেটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ করার কথা থাকলেও তারা তা দিচ্ছেন না। পর্যটন এলাকাগুলোতে নেই ট্যুরিস্ট পুলিশ। চট্টগ্রাম উত্তর বিভাগের বারৈয়ারঢালা রেঞ্জ কর্মকর্তা এ কে এম আলতাফ হোসেন কালবেলাকে বলেন, কেন্দ্রগুলো ইজারা নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা আছে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে। কিন্তু ইজারাদারা তা মানছেন না। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, স্পটগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সাগর উপকূল ও ঝরনাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ স্পট চিহ্নিত করে বিশেষ নজরদারিতে আনা হবে। ইজারাদাররা আইন না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সহস্রধারা ঝরনার ইজারাদার এ এইচ এন্টারপ্রাইজের পরিচালক নাজমুল হাসান পিন্টু বলেন, বলব না পর্যটকদের শতভাগ নিরাপত্তা দিয়ে থাকি; কিন্তু সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। পর্যটকদের অনুরোধ করা হয় ট্যুরিস্ট গাইড সঙ্গে নিতে; কিন্তু অধিকাংশ পর্যটক সেটি নিতে চান না। আমাদের এখানে নিরাপত্তার জন্য লাইফ জ্যাকেট রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আমরা এক বছরের জন্য মাত্র ইজারা পাই। ইজারা যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য দেওয়া হতো, তাহলে নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা আরও বিনিয়োগ করতে পারতাম।
০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X