

নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর গণহত্যার অভিযোগ তুলে সামরিক অভিযানের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে নাইজেরিয়া এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বলে জানিয়েছে। খবর আলজাজিরার।
রোববার ট্রাম্প বলেন, ‘ওরা খ্রিষ্টানদের গণহারে হত্যা করছে। এটা হতে দেওয়া হবে না।’
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র নাইজেরিয়ায় সেনা পাঠানো বা বিমান হামলার মতো বিকল্প বিবেচনা করছে।
এর জবাবে নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিমিয়েবি ইমোমোটিমি এবিয়েনফা বলেন, আমাদের দেশে কোনো খ্রিষ্টান গণহত্যা ঘটছে না। সন্ত্রাসীরা ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ হত্যা করছে—খ্রিষ্টান, মুসলিম, এমনকি ঐতিহ্যবাহী উপাসকরাও নিহত হচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, নাইজেরিয়া সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহায়তা চায়, তবে কোনোভাবেই সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হবে না।
নাইজেরিয়া সরকার স্পষ্ট করে বলেছে, এসব হত্যাকাণ্ড সরকারি অনুমোদনে হচ্ছে না। বরং দায়ী বোকো হারাম, আলকায়দা ও আইএস-সম্পর্কিত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো, যারা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশজুড়ে হামলা চালাচ্ছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু ট্রাম্পের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, নাইজেরিয়া ধর্মীয় সহনশীলতার দেশ। মুসলিম ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তিনি সাম্প্রতিক সময়েই এক খ্রিষ্টান জেনারেলকে নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
মানবাধিকার সংগঠন ও বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের খ্রিষ্টান গণহত্যা দাবি তথ্যভিত্তিক নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা অ্যাকলেডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে নাইজেরিয়ায় ১,৯২৩টি হামলার মধ্যে ধর্মীয় কারণে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে হামলার সংখ্যা মাত্র ৫০টি।
বিশ্লেষক বুলামা বুকারতি আলজাজিরাকে বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর প্রচারিত একটি বিপজ্জনক মিথ। নাইজেরিয়ার সংঘাত ধর্মীয় নয়; এটি রাজনৈতিক ক্ষমতা, ভূমি, জাতিগত ও দস্যুতার জটিল সংঘর্ষ।
ওয়াশিংটনভিত্তিক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের আফ্রিকা বিষয়ক গবেষক এবেনেজার ওবাদারে বলেন, নাইজেরিয়াকে দমন নয়, বরং সহায়তা করা উচিত। মার্কিন আগ্রাসন উল্টো পরিস্থিতি খারাপ করবে।
মন্তব্য করুন