কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৪৭ এএম
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১০:১১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

গাজায় তীব্র রূপ ধারণ করেছে দুর্ভিক্ষ, অনাহারে মৃত্যু ৩১৩ জনের

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পুষ্টি ও অনাহারে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। এই নিয়ে গাজায় অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১৩ জনে। এদের মধ্যে ১১৯ জন শিশু। তীব্র অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে আরও এক লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি শিশু।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলের অবরোধ ও অব্যাহত হামলার কারণে জীবন বাঁচাতেক পারে এমন সাহায্য প্রবেশ করতে না পারায় শিশুদের ক্রমবর্ধমানভাবে না খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।

বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া এক বিবৃতিতে কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজায় দুর্ভিক্ষ ও ব্যাপক ক্ষুধা ইচ্ছাকৃতভাবে সৃষ্ট মানবসৃষ্ট বিপর্যয়।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক উপপ্রধান জয়েস মুসুইয়া জানান, উত্তর-মধ্য গাজায়, বিশেষ করে গাজা সিটিতে দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এটি দক্ষিণের দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহার, দারিদ্র্য ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছেন। সেপ্টেম্বরের শেষে এই সংখ্যা ৬ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গাজার কার্যত কোনো মানুষই ক্ষুধার হাত থেকে বাঁচতে পারছেন না।

মুসুইয়া আরও জানান, পাঁচ বছরের কম বয়সী অন্তত ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ হাজারেরও বেশি শিশু আগামী মাসগুলোতে জীবন-সংকটের মুখোমুখি হবে। তিনি বলেন, এটি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা খরার কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ নয়। এটি সম্পূর্ণ মানবসৃষ্ট একটি সংঘাতের পরিণতি, যা বিপুল প্রাণহানি, আহত, ধ্বংসযজ্ঞ ও বাস্তুচ্যুতি ডেকে এনেছে।

এর আগে বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে। এতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১৩ জনে, যার মধ্যে ১১৯ শিশু।

অন্যদিকে, ইসরায়েল জাতিসংঘ সমর্থিত দুর্ভিক্ষ পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)–কে গাজার দুর্ভিক্ষ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এডেন বার টাল ওই প্রতিবেদনকে ত্রুটিপূর্ণ, অপেশাদার ও আন্তর্জাতিক সংস্থার জন্য প্রত্যাশিত মানের বাইরে বলে মন্তব্য করেছেন।

তবে বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বাকি ১৪ সদস্য দেশ আইপিসির প্রতিবেদনকে সমর্থন জানায়। তাদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় দুর্ভিক্ষ অবিলম্বে অবসান ঘটাতে হবে। একইসঙ্গে অবিলম্বে, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বানও জানিয়েছে তারা।

গাজার ক্লিনিকগুলো কঙ্কালসার শিশুতে ভর্তি, তারা এতটাই দুর্বল যে তারা ব্যথায় কাঁদতেও পারছে না। অনেকেই নিস্তব্ধ হয়ে আছে, ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছে।

আরও পড়ুন: গাজাবাসীর জন্য রোজা থাকছেন বিশ্বের ১৫০ আলেম

অ্যাশিং জানান, আগে শিশুদের আঁকায় শান্তি, শিক্ষা আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা যেত, কিন্তু এখন তারা শুধু খাবারের ছবি আঁকে। সম্প্রতি অনেক শিশু এমনকি মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষাও প্রকাশ করছে। একটি শিশুর লেখা তুলে ধরে তিনি বলেন- ইশ, আমি যদি আমার মায়ের কাছে স্বর্গে থাকতে পারতাম। সেখানে ভালোবাসা আছে, খাবার আছে, পানি আছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কৃষকদের হাত আরও শক্তিশালী করবে বিএনপি : তারেক রহমান

রাজশাহী সদরে এবি পার্টির প্রার্থী সাঈদ নোমান

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিতে শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে আডা লাভলেস প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা

জীবগাঁও কলেজে শতভাগ ফেল, অধ্যক্ষ বললেন ‘হতাশাজনক’

আম্মু হাসপাতালে, সবাই দোয়া করবেন : তমা মির্জা

লক্ষ্মীপুরে কালবেলার ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

দেশের ইতিহাসে এর চেয়ে স্বচ্ছ বিচার কখনো হয়নি : অ্যাটর্নি জেনারেল 

রংপুরে ৩য় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে বক্তারা / অনুসন্ধান করে ঘটনার ভেতরের সত্য প্রকাশ করে ‘কালবেলা’ 

৩ ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সতর্ক করল ইউজিসি

শিক্ষার্থী চারজন, পরীক্ষা দেওয়া দুজনের কেউ পাস করেনি

১০

ধারাবাহিকের মূল ভূমিকায় হেদায়েত উল্লাহ তুর্কী 

১১

রাকসু নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৭০ শতাংশ

১২

খতমে নবুওয়তের চেতনায় সত্য ও ন্যায়ের পথে এগিয়ে যাক কালবেলা : মুহিউদ্দীন রাব্বানী

১৩

এইচএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণ আবেদন করবেন যেভাবে

১৪

চট্টগ্রামে আগুন ৪ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, ২৫ শ্রমিককে উদ্ধার

১৫

চীনে ৩০ পাদরি গ্রেপ্তার, বড় অভিযানের আশঙ্কা

১৬

মোস্তারির অর্ধশতকে অজিদের বিপক্ষে বাংলাদেশের লড়াকু সংগ্রহ

১৭

‘ভর্তির পরে সবার বিয়ে হয়ে গেছে, তাই কেউ পাস করেনি’

১৮

সর্বপ্রথম কোথায় আজান হয়েছিল, কার কণ্ঠে?

১৯

নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের পথ মসৃণ হবে : মির্জা ফখরুল

২০
X