কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নির্বাচনী প্রচারে দেওয়া যে ৭ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে চান ট্রাম্প

নির্বাচনী প্রচারণায় দেওয়া যে ৭ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত
নির্বাচনী প্রচারণায় দেওয়া যে ৭ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে ফের হোয়াইট হাউসে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারের সময় তিনি যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে তার মনোভাব দৃঢ়।

নির্বাচনের পরদিন (৬ নভেম্বর) ট্রাম্প জানান, ‘আমি একটি সাধারণ লক্ষ্য নিয়ে দেশ পরিচালনা করব। যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, সেগুলো পূর্ণ করব।’ তার এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে তিনি সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা বলেছেন, যা তার প্রথম মেয়াদে শুরু হওয়া কাজগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে।

দেখে নেওয়া যাক ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে দেওয়া সাতটি প্রতিশ্রুতি:

১. অবৈধ অভিবাসীদের ফিরিয়ে দেওয়া অবৈধ অভিবাসী নিয়ে ট্রাম্প একাধিকবার ঘোষণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করবেন তিনি। তার কথায়, ‘মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শেষ করব’। যা তার প্রথম মেয়াদে শুরু হয়েছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বিশাল উদ্যোগ বাস্তবায়নে আইনগত এবং লজিস্টিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। তাছাড়া এটি দেশের অর্থনীতির গতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

২. অর্থনীতিতে মনোযোগ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে থেকে ট্রাম্প দেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ভোটারদের কাছে মূল্যস্ফীতি কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং নিত্যপণ্যের দাম কমানোর জন্য পদক্ষেপ নিতে চান। এ ছাড়া ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ‘বিদেশি পণ্যের ওপর অন্তত ১০% শুল্ক আরোপ করতে’ এবং ‘চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক ৬০% বাড়াতে’। তবে এতে মার্কিন ভোক্তাদের ওপর নতুন চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

৩. জলবায়ু নীতিতে কাটছাঁট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পরিবেশ সুরক্ষা নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেন এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন। এবারও নির্বাচনী প্রচরণায় তিনি পরিবেশ নীতিতে কাটছাঁট করার ঘোষণা দিয়েছেন আগে থেকেই, যা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি শিল্পকে সহায়তা করার জন্য। এছাড়া ইলেকট্রিক গাড়ির বিরোধী হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলেছেন।

৪. ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে শত শত কোটি ডলার সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এই বিষয়ে বরাবরই কড়া সমালোচনা করে আসছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচরণায় তিনি তার প্রতিশ্রুতিতে বলেছেন, যদি তিনি আবার ক্ষমতায় আসেন, তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাবেন।

তবে ট্রাম্প ফিলিস্তিনের গাজা যুদ্ধের প্রসঙ্গে নিজেকে ইসরায়েলের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেন তারা দ্রুত এই যুদ্ধ থামানোর উদ্যোগ নেয়। একইসঙ্গে লেবাননে যুদ্ধ থামানোর পক্ষে তার অবস্থান স্পষ্ট। প্রচারণায় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতিতে বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল আর্থিক সহায়তা ও অস্ত্র সরবরাহের বিরুদ্ধে এবং সমঝোতার পক্ষে অবস্থান নেবেন।

৫. গর্ভপাতের অধিকার রদ গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে ট্রাম্পের সমর্থকরা তার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। ২০২২ সালে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার খারিজ করেছিল। এ বিষয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ক্ষমতায় এলে গর্ভপাতের অধিকার রদসংক্রান্ত আইন পরিবর্তন করবেন না, তবে তার শাসনামলে কড়া গর্ভপাত নীতি বজায় থাকবে।

৬. দাঙ্গাকারীদের ক্ষমা যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করার লক্ষ্যে ২০২১ সালে ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালিয়েছিল ট্রাম্পের সমর্থকরা। এতে বেশ কিছু প্রাণহানিও ঘটে। ট্রাম্প বলেছেন, ‘বিভিন্ন অভিযোগে আটক হওয়া তার সমর্থকদের ক্ষমা করবেন’ এবং তাদের অকারণে বন্দি করার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন’।

৭. বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথকে চাকরিচ্যুত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলার তদন্ত করছেন বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ। ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হামলা এবং সরকারি গোপন নথি সরানোর অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ট্রাম্প একসময় বলেছিলেন, ‘হোয়াইট হাউসে বসার সঙ্গে সঙ্গে আমি জ্যাক স্মিথকে চাকরিচ্যুত করব।’ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি তিনি নাকচ করে দিয়েছেন।

উল্লিখিত প্রতিশ্রুতিগুলো নিয়ে ট্রাম্পের সামনে রয়েছে বৃহত্তর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ। তবে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার লক্ষ্যগুলোর বাস্তবায়নে রিপাবলিকান পার্টির সিনেটের সমর্থন তাকে সহায়তা করতে পারে। এই সাতটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তিনি নানা বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করবেন, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জাবি শিক্ষার্থী রাচির পরিবারকে ৩ কোটি ক্ষতিপূরণ দিতে নোটিশ

সার্কের পুনরুজ্জীবনে আরও কাজ করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

বাংলাদেশ কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে : মাহমুদুর রহমান

বাউবি বিএ-বিএসএস পরীক্ষার প্রথম দিনে ৪৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

‘মমতার বক্তব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ’

রাজশাহীতে ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশে দিল ছাত্রদল

সবুজায়নের লক্ষ্যে ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

ঢাবি থেকে ৩৫ জনের পিএইচডি ও ১৯ জনের এমফিল ডিগ্রি অর্জন

সংখ্যালঘু ইস্যুর ‘ভুল ধারণা’ কূটনীতিকদের জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

খেজুরের তৈরি বিশ্বের প্রথম কোমল পানীয় মিলাফ কোলা

১০

ঢাকায় ঘরের বাতাসে মৃত্যু ঝুঁকি : গবেষণা

১১

জমির বিরোধে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন

১২

যৌনকর্মীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে আইন পাস বেলজিয়ামে

১৩

বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ভারতের দুঃখ প্রকাশ

১৪

গাজীপুর উপপুলিশ কমিশনারকে স্মারকলিপি প্রদান করেন সাদ অনুসারীরা

১৫

আগামী নির্বাচন অনেক কঠিন হতে যাচ্ছে : তারেক রহমান

১৬

আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা

১৭

সাভারে প্রাইভেট কার-বাস সংঘর্ষে নিহত ৩

১৮

‘আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে’

১৯

চট্টগ্রামে বুধবার থেকে ৬ দিনব্যাপী ফার্নিচার মেলা, থাকবে বিশেষ ছাড়

২০
X