এবার রমজান মাসে হঠাৎ বেগুনের দাম কমে গেছে। যেই লম্বা বেগুনের দাম গত কয়েকদিন আগেও ৪০ থেকে ৫০ টাকা ছিল লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে। এখন সেই বেগুন পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩ টাকা কেজি দরে। গোল বেগুনের পাইকারি কেজি ছয় থেকে আট টাকা। খুচরা ১০ টাকা কেজি। গতকাল শুক্রবার আদিতমারী সবজি গ্রাম খ্যাত কুমড়িরহাট পাইকারি বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, প্রতি বছর রমজান মাসে বেগুনসহ অন্যান্য সবজির দাম বেড়ে যায়। রমজানে ইফতারিতে বেগুনি ছাড়া যেন জমে না। বিগত বছরগুলোতে বেগুনের বাজার দর বেশি থাকায় রমজানে বেগুনের বেগুনি নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছে। ভালো মুনাফা পেতে রমজানকে ঘিরে বেগুন চাষাবাদ করেন অনেক চাষি। এ বছর ঘটেছে বিপত্তি। প্রথম রমজানে পাইকারি বাজারে বেগুন ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও ছয়-সাত রমজান থেকে দরপতন ঘটে। বেগুন এখন পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩ টাকা কেজি দরে। ফলে ক্ষেত থেকে বেগুন সংগ্রহ করার শ্রমিকের খরচই উঠছে না চাষিদের।
চাষিরা জানান, এ বছর উৎপাদন খুব বেশি হয়নি। তবু বাজারে চাহিদা নেই। চাহিদা কম থাকায় দাম কম। বাজারে নিলে ক্রেতা নেই বেগুনের। অথচ প্রথম রমজানেও প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পাইকারি বিক্রি হয়েছে। লালমনিরহাটের সবজি গ্রাম খ্যাত কুমড়িরহাটে সবজি বিক্রিতে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। আগে বহিরাগত ব্যবসায়ীরা এসে ক্ষেত থেকে চাষিদের সবজি কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় সবজির বাজারে বিক্রি করতেন। বর্তমানে বাজারে বহিরাগত ব্যবসায়ীরা না আসায় এ অবস্থা।
লোকসান হলেও গাছ ভালো রাখতে বেগুন তুলতে হয় বলে জানান কৃষক সাহিন মিয়া। তিনি বলেন, ২৫ শতাংশ জমিতে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে বেগুন চাষ করে এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। বর্তমানে চাহিদা নেই; তাই দাম কম। কাঁচাবাজার এমনই, সকালের সঙ্গে বিকেলের মিল থাকে না।
কৃষক শাহের আলী বলেন, গত সপ্তাহেও ভালো দাম ছিল। তিন-চার দিন ধরে বেগুনের ক্রেতাই নেই পাইকারি বাজারে। তবে স্থানীয় খুচরা বাজারেও সাত-আট টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। আগে দাম ভালো পাওয়ায় বর্তমান বাজার মন্দা হলেও বেগুন চাষিদের লোকসান হয়নি।
কম দামে বেগুন কিনে খুশি ক্রেতা ছমির উদ্দিন। তিনি বলেন, বর্তমান বাজারে সবচেয়ে সস্তা সবজি হলো বেগুন। মাত্র ১৫ টাকা দিয়ে পাঁচ কেজি কিনেছি।