

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার উত্তর আঁচলছিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ নেই। বিদ্যালয়ের সামনে জলাশয় থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশ, খেলাধুলাসহ অন্যান্য কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি সারাবছর জলাশয়ে পানি থাকায় ঝুঁকিতে রয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও। বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের দাবি দ্রুত জলাশয়ে মাটি ভরাট করা হোক। জানা গেছে, বিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষক রয়েছেন। আর শিক্ষার্থী রয়েছে ১২০ জন। নিয়মিত প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকে। বিদ্যালয়ের সামনে জলাশয় থাকায় শিক্ষার্থীরা দৌড়ঝাঁপসহ খেলাধুলা করতে পারছে না। এ ছাড়া প্রাত্যহিক সমাবেশসহ পিটি করতে পারছে না। এতে শিশুদের যথাযথ শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হচ্ছে না।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের সামনের জায়গাজুড়েই রয়েছে জলাশয়। তাই শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। বিদ্যালয়ে এসে সারাদিন শ্রেণিকক্ষ ও বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রাত্যহিক সমাবেশে পিটি চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বৃষ্টির দিনে জলাশয়ে পানিতে টইটম্বুর থাকে। বছরের অন্যান্য সময়েও জলাশয়ে পানি থাকে। বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বলে, মাঠ না থাকায় আমরা খেলাধুলা করতে পারি না। এজন্য আমাদের মন ভালো থকে না। তাছাড়া সামনে পানি থাকায় ভয়ে থাকি। পা পিছলে পড়ে গেলেই ডুবে মরতে হবে। আমাদের দাবি, বিদ্যালয়ের মাঠটি ভরাট করা হোক। আমরা যাতে খেলাধুলাসহ প্রাত্যহিক সমাবেশ করতে পারি।
অভিভাবকরা বলেন, জলাশয়ে সারাবছর পানি থাকায় ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে সবসময় উদ্বিগ্ন থাকতে হয়। এ ছাড়া খেলাধুলা করতে না পারায় শিশু মনের যথাযথ বিকাশ হয় না। তাদের কৈশোরের বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলার স্মৃতি থাকছে না। আমাদের দাবি, দ্রুত জলাশয়ের মাটি ভরাট করে মাঠ সংস্কার করা হোক।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ বলেন, আমাদের বিদ্যালয় মাঠ না থাকায় বারান্দায় প্রাত্যহিক সমাবেশের কার্যক্রম করাতে হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলাধুলায় অংশগ্রহণে পিছিয়ে পড়ছে। তাই আমরা আশা করছি, প্রশাসন বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের উদ্যোগ নেবেন।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মামুন মিয়া বলেন, আমাদের উপজেলার ১১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধশত বিদ্যালয়ে মাঠের সমস্যা রয়েছে, বলতে গেলে এসব বিদ্যালয়ে মাঠ নেই। এসব বিদ্যালয়ের মাঠগুলো সংস্কার করে খেলার উপযোগী করলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতো। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশ ঘটত।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া করব।
মন্তব্য করুন