আশিয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ভূইয়া বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তার নেতৃত্বে দেশের মানুষ একদলীয় শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছিল। তিনিই স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন স্বনির্ভর বাংলাদেশের। ১৯৮১ সালের ৩০ মে কিছু বিপথগামী সেনাসদস্যের গুলিতে তাকে শহীদ করার মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষকে ভারতের তাঁবেদারে পরিণত করা হয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও চব্বিশে হাজারো ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। দেশের মানুষ আশা করে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে শহীদ জিয়ার স্বনির্ভর বাংলাদেশের সেই স্বপ্ন আবারও এ দেশে বাস্তবায়ন হবে।
শুক্রবার (৩০ মে) আশিয়ান মেডিকেল কলেজ মাঠে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আশিয়ান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মেজর জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন, আশিয়ান গ্রুপের পরিচালক জাহিদুল ইসলাম ভূইয়া, উপদেষ্টা সম্পাদক বিপ্লব রহমানসহ স্থানীয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে আবেগাপ্লুত নজরুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, এ এলাকায় তার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। খুব কাছ থেকে তাকে দেখে একজন নির্লোভ, সাধারণ জীবনযাপনের নেতাকেই আমার মনে পড়ে। তখন থেকেই বুকে গেঁথে আছে তার ছবি। তার দৃঢ় নেতৃত্ব, সিদ্ধান্ত এবং আদর্শ আজও আমাকে অনুপ্রাণিত করে।
তিনি আরও বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, উদার গণতন্ত্রের অগ্রনায়ক, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শহীদ রাষ্ট্রপতির আদর্শের শিকড় এতটাই মজবুত যে, আজও কোটি তরুণ-তেজী প্রাণকে উদ্দীপ্ত করে চলেছে। তারই আদর্শে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তার সুযোগ্য সন্তান ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরিচালনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) সুসংগঠিত করেছে বিশ্বব্যাপী। ফলে গত ১৭ বছরের বঞ্চনা ও প্রতিকূল পরিবেশেও শহীদ জিয়ার জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন হয়নি একটুও।
তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারত তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ দেশের শিল্পকারখানার সম্পদ তারা লুণ্ঠন করে ভারতে নিয়ে যায়। এমন কোনো মূল্যবান জিনিস বাদ রাখেনি, যা তারা আত্মসাৎ করেনি। একাত্তরে কতিপয় ব্যক্তির ভূমিকা নিয়ে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা দেখেছি এমন কতিপয় ব্যক্তিকে ফ্যাসিস্ট সরকার মুক্তিযোদ্ধা খেতাব দিয়েছে, যারা এলাকার নিরীহ মানুষকে ধরে নিয়ে হত্যা করে বিলের পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছে। অথচ তারাই আজ বিরাট মুক্তিযোদ্ধা। বড় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি। এদের দেখলে জনগণের লজ্জা ও ঘৃণা হয়।
নজরুল ইসলাম ভূইয়া আরও বলেন, বিএনপি কখনো সহিংসতার রাজনীতি করে না। তারা মারামারি হানাহানি করতে জানে না। এ জন্য তারা দীর্ঘ ১৭ বছর নির্যাতিত হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত এলাকার মানুষের শান্তি বিনষ্ট করেছে, তাদের ধন-সম্পদ লুণ্ঠন করেছে, চাঁদাবাজি করেছে, মানুষ হত্যা করেছে। যারা এসব অপকর্ম করেছে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর সেসব সন্ত্রাসীরাই আবার খোলস পাল্টে নিজেদের বিএনপিকর্মী দাবি করে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রশাসনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার দোসরদের আমরা চিনি এবং আপনারাও চেনেন। দীর্ঘ ১৭ বছর এলাকাবাসী নির্যাতিত হয়েছে। কেউ প্রতিবাদ না করে শান্তি-শৃঙ্খলার নষ্ট হওয়ার ভয়ে মুখ বুজে সব সহ্য করে গেছে। আপনাদের প্রতি অনুরোধ আওয়ামী লীগের দালাল যারা বর্তমানে ভোল পাল্টে বিএনপির নাম করে এলাকার শান্তিপ্রিয় জনগণের ওপর অত্যাচার, চাঁদাবাজি, দখলবাজি করছে তাদের আপনারা আইনের আওতায় নিয়ে মানুষের সুখ-শান্তি নিশ্চিত করুন। এ সময় দোয়া-মাহফিলে উপস্থিত সবাই তার বক্তব্যের সমর্থন দিয়ে করতালির মাধ্যমে তাকে সাধুবাদ জানান।
মন্তব্য করুন