‘টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ ধ্বংস করে পর্যটন চলতে পারে না। হাওরের পরিবেশ যদি বজায় না থাকে তাহলে পর্যটকরাও আর আসবেন না। তাই পর্যটনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এতে স্থানীয় মানুষ কোনোভাবে উপকৃত হচ্ছে না। স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করে পর্যটন গড়ে তুলতে হবে।
শনিবার (২১ জুন) দুপুরে টাঙ্গুয়ার হাওর তীরবর্তী জয়পুর গ্রামে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পীযূষ পুরকায়স্থ টিটুর সঞ্চালনায় সভায় টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ারের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
তারা জানান, হাওরের পর্যটকবাহী নৌকার বাদ্যযন্ত্র ও মাইকের শব্দে তাদের অসুস্থ রোগী, ছাত্রছাত্রীসহ সকল মানুষ অতিষ্ঠ। অন্যদিকে পর্যটকরা যত্রতত্র প্লাস্টিক বোতল, গ্লাস ও কাচের বোতল ফেলার কারণে হাওরের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, মূল টাঙ্গুয়ার হাওরের ইঞ্জিনচালিত নৌকা প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। যদি মূল টাঙ্গুয়ার হাওরে ইঞ্জিনচালিত নৌকা প্রবেশ না করে তবে শব্দদূষণ, পানিদূষণ এবং প্লাস্টিক দূষণ অনেকাংশে কমে যাবে। একইসঙ্গে হাতে চালিত নৌকায় মূল টাঙ্গুয়ার হাওরে যদি পর্যটকরা ঘুরেন তাহলে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাই অতি দ্রুত মূল টাঙ্গুয়ার হাওরে ইঞ্জিন চালিত নৌকা প্রবেশ বন্ধ করার জন্য তারা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর একটি প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা। এখানে সবার আগে পরিবেশকে গুরুত্ব দিতে হবে। টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটনের কারণে স্থানীয় মানুষ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। কিন্তু তারা নানা ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। হাওরের সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে। এভাবে পর্যটন চলতে পারে না।
তিনি বলেন, স্থানীয় মানুষের স্বার্থ অবশ্যই দেখতে হবে। এখানে নৌকাগুলোকে একটি নির্দিষ্ট রুটে চলাচল করতে হবে এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা মূল টাঙ্গুয়ার হাওরের ঢোকার আগেই থামিয়ে দিতে হবে। এটা যদি সম্ভব না হয় তাহলে এখানে পরিবেশ বিপর্যেয়র কারণে একসময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পর্যটন বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা আশা করি সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।
সভায় গ্রামবাসীর মধ্যে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গুয়ার হাওর সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. নূরে আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক খসরুল আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমদ কবির, আলী আহমদ, গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হালিম, আল আমিন, নূর মিয়া, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার গ্রিন ক্লাবের সদস্য মাহফুজ আহমেদ, ইয়াসিন আলী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন